রবিবার, ২৬ মার্চ ২০২৩, ১২ চৈত্র ১৪২৯ বঙ্গাব্দ

করোনায় গায়ের রঙ কালো হয়ে গেল দুই ফর্সা চীনা ডাক্তারের!

মামুন বাবু ।। 

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বেঁচে ফিরলেও গায়ের রঙ কালো হয়ে গেছে দুজন ফর্সা চীনা ডাক্তারের। তারা দুজনই করোনাভাইরাসের উৎপত্তিস্থল উহান শহরের রোগীদের সেবা দিতে গিয়ে করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম মেট্রো।

ডা. ইয়ে ফ্যান এবং ডা. হু ওয়েফেং নামে ওই দুজন ডাক্তারের গত ১৮ জানুয়ারি কোভিড-১৯ ধরা পড়েছিল। তাদের উভয়ের বয়সই ৪২ বছর। চীনের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম সিসিটিভির খবরে বলা হয়, মারাত্মক অসুস্থ ওই দুই চিকিৎসককে উহান পালমোনারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল এবং সেখান থেকে দুবার তাদের বদলি করা হয়েছিল।

এই দুই ব্যক্তির ত্বকের বর্ণ পরিবর্তিত হওয়ার বিষয়ে সিসিটিভি জানিয়েছে, করোনার সংক্রমণে তাদের হরমোনের ভারসাম্যহীনতা তৈরি হয়েছিল। ফলে গায়ের রঙ ফর্সা থেকে কালো হয়ে গেছে। তবে একজন ডাক্তারের সন্দেহ, চিকিৎসার শুরুতে তাদের যে সব ড্রাগ দেওয়া হয়েছিল তার প্রভাবেই তাদের ত্বকের রঙ কালো হয়ে গেছে।

ডা. ই ফ্যান এবং ডা. হু দুজনেই করোনার প্রথম সতর্ককারী ডা. হুইসেল-ব্লোয়ার লি ওয়েনল্যাংয়ের সঙ্গে কাজ করেছিলেন। তিনি করোনাভাইরাসের বিষয়ে সতর্ক করার কারণে শাস্তি পেয়েছিলেন এবং ৭ ফেব্রুয়ারি এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যান ডা. হুইসেল।

ডা. ইয়ে বলছিলেন, ‘যখন আমি প্রথম সচেতনতা অর্জন করেছি, বিশেষত আমার অবস্থা সম্পর্কে জানার পরে আমি ভয় পেয়েছিলাম। এটা এমন একটা বিষয় ছিল যে, পুরো ব্যাপারটা আমার কাছে প্রায়শই দুঃস্বপ্ন হয়ে দেখা দেয়।’

কার্ডিওলজিস্ট ডাক্তার ইয়ে হাসপাতালে ইসিএমও-তে জড়িত ছিলেন। তাকে এক্সট্রাকোরোরিয়াল মেমব্রেন অক্সিজেনেশন মেশিনের মাধ্যমে ৩৯ দিন লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল। মেশিনটি ওপেন-হার্ট সার্জারিতে ব্যবহৃত হার্ট-ফুসফুস বাইপাস মেশিনের অনুরূপ। এটা শরীরের বাইরে রোগীর রক্ত ​​পাম্প করে এবং অক্সিজেনেট করে।

তার চিকিৎসক ডা. লি শুশেঞ্জের মতে, হু নামে একজন ইউরোলজিস্ট ৯৯ দিন ধরে শয্যাশায়ী এবং ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ২২ মার্চ পর্যন্ত তাকে টানা ইসিএমও থেরাপি দেওয়া হয়েছে। তারপরও লোকটি এখনো বেশ দুর্বল। তিনি ১১ এপ্রিল কথা বলার ক্ষমতা ফিরে পেয়েছেন।ডা. লি বলেছেন, লিভারের কার্যকারিতার উন্নতি হলে চিকিৎসকদের গায়ের রঙ স্বাভাবিক হয়ে উঠবে বলে আশা করা হচ্ছে।

আপনার মন্তব্য লিখুন

লেখকের সম্পর্কে

Shahriar Hossain

জনপ্রিয়

করোনায় গায়ের রঙ কালো হয়ে গেল দুই ফর্সা চীনা ডাক্তারের!

প্রকাশের সময় : ০৪:৫০:৪৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ এপ্রিল ২০২০

মামুন বাবু ।। 

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বেঁচে ফিরলেও গায়ের রঙ কালো হয়ে গেছে দুজন ফর্সা চীনা ডাক্তারের। তারা দুজনই করোনাভাইরাসের উৎপত্তিস্থল উহান শহরের রোগীদের সেবা দিতে গিয়ে করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম মেট্রো।

ডা. ইয়ে ফ্যান এবং ডা. হু ওয়েফেং নামে ওই দুজন ডাক্তারের গত ১৮ জানুয়ারি কোভিড-১৯ ধরা পড়েছিল। তাদের উভয়ের বয়সই ৪২ বছর। চীনের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম সিসিটিভির খবরে বলা হয়, মারাত্মক অসুস্থ ওই দুই চিকিৎসককে উহান পালমোনারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল এবং সেখান থেকে দুবার তাদের বদলি করা হয়েছিল।

এই দুই ব্যক্তির ত্বকের বর্ণ পরিবর্তিত হওয়ার বিষয়ে সিসিটিভি জানিয়েছে, করোনার সংক্রমণে তাদের হরমোনের ভারসাম্যহীনতা তৈরি হয়েছিল। ফলে গায়ের রঙ ফর্সা থেকে কালো হয়ে গেছে। তবে একজন ডাক্তারের সন্দেহ, চিকিৎসার শুরুতে তাদের যে সব ড্রাগ দেওয়া হয়েছিল তার প্রভাবেই তাদের ত্বকের রঙ কালো হয়ে গেছে।

ডা. ই ফ্যান এবং ডা. হু দুজনেই করোনার প্রথম সতর্ককারী ডা. হুইসেল-ব্লোয়ার লি ওয়েনল্যাংয়ের সঙ্গে কাজ করেছিলেন। তিনি করোনাভাইরাসের বিষয়ে সতর্ক করার কারণে শাস্তি পেয়েছিলেন এবং ৭ ফেব্রুয়ারি এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যান ডা. হুইসেল।

ডা. ইয়ে বলছিলেন, ‘যখন আমি প্রথম সচেতনতা অর্জন করেছি, বিশেষত আমার অবস্থা সম্পর্কে জানার পরে আমি ভয় পেয়েছিলাম। এটা এমন একটা বিষয় ছিল যে, পুরো ব্যাপারটা আমার কাছে প্রায়শই দুঃস্বপ্ন হয়ে দেখা দেয়।’

কার্ডিওলজিস্ট ডাক্তার ইয়ে হাসপাতালে ইসিএমও-তে জড়িত ছিলেন। তাকে এক্সট্রাকোরোরিয়াল মেমব্রেন অক্সিজেনেশন মেশিনের মাধ্যমে ৩৯ দিন লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল। মেশিনটি ওপেন-হার্ট সার্জারিতে ব্যবহৃত হার্ট-ফুসফুস বাইপাস মেশিনের অনুরূপ। এটা শরীরের বাইরে রোগীর রক্ত ​​পাম্প করে এবং অক্সিজেনেট করে।

তার চিকিৎসক ডা. লি শুশেঞ্জের মতে, হু নামে একজন ইউরোলজিস্ট ৯৯ দিন ধরে শয্যাশায়ী এবং ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ২২ মার্চ পর্যন্ত তাকে টানা ইসিএমও থেরাপি দেওয়া হয়েছে। তারপরও লোকটি এখনো বেশ দুর্বল। তিনি ১১ এপ্রিল কথা বলার ক্ষমতা ফিরে পেয়েছেন।ডা. লি বলেছেন, লিভারের কার্যকারিতার উন্নতি হলে চিকিৎসকদের গায়ের রঙ স্বাভাবিক হয়ে উঠবে বলে আশা করা হচ্ছে।