প্রফেসর জিন্নাত আলী ।।
ঘুম আমাদের জীবনের সঙ্গে যেন অঙ্গাঅঙ্গি ভাবে জড়িত। প্রতিদিন কমপক্ষে ৭ ঘণ্টা ঘুম না হলে তা মানুষের শরীর-স্বাস্থ্য এমনকি মস্তিস্কের ওপরও কুপ্রভাব ফেলে। আমাদের শরীর স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত জরুরি ঘুম।
ঘুম নিয়ে গবেষণায় বিজ্ঞানীরা বলছেন, প্রতিদিন সুস্থ স্বাভাবিক এবং আরামদায়ক ঘুম না হলে তা আমাদের মনের উপর যেমন প্রভাব ফেলে, তেমনই এর কুপ্রভাব লক্ষ্য করা যায় আমাদের দৈনন্দিন কাজকর্মের ক্ষেত্রেও।
সম্প্রতি লুকে কোটিনহো নামের একজন লাইফস্টাইল বিশেষজ্ঞ জানিয়েছেন, ঘুম আমাদের জীবনে স্বাভাবিক একটি বিষয়। কাজকর্মের অবসরে ঘুম আসা বা ঝিমুনি ধরাও মস্তিস্কের একটি স্বাভাবিক ক্রিয়া। ফলে শরীর এবং মনের প্রশান্তির জন্য সুস্থ সুন্দর ঘুম একজন মানুষের অবশ্যই জরুরি। দীর্ঘদিন যা না হলে আমাদের শরীরের পাশাপাশি মস্তিস্কের স্ন্যায়ুতন্ত্রের উপর ব্যাপক কুপ্রভাব ফেলে।একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের সুস্থ সুন্দর ঘুম কেন আবশ্যক এবং তা নাহলে আমাদের শরীরের কি কি ক্ষতি হতে পারে- চলুন তা জেনে নিই।
সারাদিন ক্লান্তিভাব লাগা প্রতিদিন ঠিকমত ঘুম না হলে আমাদের শরীরে তার কুপ্রভাব পড়তে বাধ্য। আর দীর্ঘদিন এইরকম চলতে থাকলে শরীরে ক্লান্তিভাবের উদয় হয়। মানসিক শান্তি মেলে না। রাতে ঠিকমত না ঘুম হওয়ার কারণে, সারাদিন ঘুম ঘুম ভাব আসতে থাকে। কাজের প্রতি উৎসাহ হারিয়ে যেতে থাকে।
দিনের কাজের ওপর চাপ পড়ে রাতে আরামদায়ক এবং যদি শান্তিপূর্ণ ঘুম হয় তাহলে যেকোনো বয়সের মানুষের জন্য তা ভীষণ ভালো একটি লক্ষন। কারণ, গবেষণা বলছে, রাতে ভালো ঘুমালে পরের দিন অফিস হোক বা শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা সবকিছুতেই আমাদের শরির-মন ভালো কাজ করে।
অসুস্থতা বাড়িয়ে তোলে অপর্যাপ্ত ঘুম আমাদের দেহে নানা রোগের উৎসের মূলে রয়েছে ঘুম। কারণ, নিয়মিত ৭ থেকে ৯ ঘণ্টা ঘুম না-হলে মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে আমাদের শরীরের উপর। দীর্ঘ সময় কোনো মানুষের যদি ভালো ঘুম না হয় তাহলে তিনি, মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন। এছাড়াও স্ন্যায়ুর রোগ থেকে শুরু করে অকালে দৃষ্টিশক্তি হ্রাসের মতোও রোগ বাসা বাঁধতে পারে।
মোটা হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ায় গবেষকরা জানাছেন, দীর্ঘদিন ধরে কোনো ব্যক্তির অপর্যাপ্ত ঘুম তার মোটা হওয়ার সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে তোলে। এছাড়াও ঘুম ভালো না হলে হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক সহ অন্যান্য রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে।
হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা বাড়ে ভালো ঘুম না হওয়া যেমন আমাদের স্বাস্থ্যের উপর কুপ্রভাব ফেলে, তেমনই এর জেরে হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা বাড়ে। সঙ্গে কাজের প্রতি উৎসাহ হারিয়ে ফেলা এবং শরীরে ইমিউনিটি কমে যাওয়ার মতো সমস্যা দেখা দেয়।