বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

চাঁদা আদায়কে কেন্দ্র করে লালমনিরহাটে সংঘর্ষ -আহত ২

মোস্তাফিজুর রহমান, লালমনিরহাটপ্রতিনিধিঃ/=  গতকাল মঙ্গলবার রাত ৮ টায় জেলার কেন্দীয় বাসষ্ট্যান্ড ও ঢাকা বাসষ্ট্যান্ডে চাঁদা আদায়কে কেন্দ্র করে শ্রমিকদের মধ্যে ঘন্টা ব্যাপী কয়েক দফা ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় মূহুর্তে বাসষ্ট্যান্ড এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণিত হয়ে যায়। পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় এবং তাদের ছত্রভঙ্গ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। এবং কেন্দ্রীয় বাসষ্ট্যান্ড ঢাকা বাসষ্ট্যান্ডে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করেন।আন্দোলনরত শ্রমিক নেতারা জানায়, মালিকরা নির্ধারিত ১৫শ টাকা চেইন আদায় করলেও সরকারী নির্দেশনার অযুহাতে শ্রমিকদের কল্যাণ ট্রাস্টের ১শ ১০টাকা আদায় করতে বাধা দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।পরে জেলা কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকায় দুই গ্রুপের সমর্থীতরা একত্রিত হয়। এবং ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার শুর করেন।
অন্যদিকে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগ অফিস থেকে ঘটনাস্থলে আসার পথিমধ্যে ছাত্রলীগ কর্মী ও শ্রমিক নেতা কর্মীদের মধ্যে বাকবিতন্ডায় সৃষ্টি হয় এক পর্যায়ে তা সংঘর্ষে রুপ নেয় এতে ছাত্রলীগ নেতা জাকির ও আওরঙ্গ আহত হয় । পরে তাদের কে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে ।সাধারণ শ্রমিক আন্দোলন কমিটির নেতা নুরনবী বকুল জানান, ১১ বছর ধরে বর্তমান কমিটি শ্রমিক কল্যাণ ফান্ডের কথা বলে কোটি কোটি টাকা উত্তোলণ করেছে। তারা করোনাপরিস্থিতিতে সাধারণ শ্রমিকের কোন খোঁজ নেয়নি। সরকার কোন চেইন চাঁদা উত্তোলণে নিষিদ্ধ করেছে। কিন্তু শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা তাদের গুন্ডাবাহিনী দিয়ে চেইনের নামে প্রতিটি গাড়ি হতে ২৭০ টাকা করে জোরপূর্বক উত্তোলণ করার চেষ্টা চালায়। তা আমরা বন্ধ করে দিয়েছি। আমরা সাধারণ শ্রমিক আমরা কোন রাজনীতি বুঝিনা। মালিক সমিতি ইউনিয়ন বুঝিনা। যারা আমাদের দুর্দিনে পাশে ছিল না। তাদের দিয়ে কি হবে। আমরা সরকারের সিদ্ধান্ত মেনে চলবো।শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক বুলবুল আহম্মেদ জানান, মটর মালিক সমিতির মদতে তথাকথিত শ্রমিক নামধারী গুন্ডারা বাসষ্ট্যান্ডের নিয়ন্ত্রণ নিতে চায়। আমরা শ্রমিকরা করোনাপরিস্থিতিতে মটরমালিক সমিতির কোন আর্থিক সহয়তা পাইনি। তাই মালিক সমিতি বাস হতে জিপির নামে চাঁদা উত্তোলন করে তা বন্ধ করার দাবি তুলেছি। সেই কারনে বাসষ্ট্যান্ড মালিক সমিতির গুন্ডারা দখলে নিতে চায়। এদিকে মটর মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম জানান, শ্রমিক আন্দোলনের সাথে মটরমালিকের কোন সর্ম্পক নেই। জিপির অর্থ মালিকদের মটর মালিকরা সিদ্ধান্ত নিয়ে আপদকালীণ এই অর্থ তুলে। এটা বন্ধ করার অধিকার মটরমালিকের শ্রমিকদের নেই। মটরমালিক সমিতির সদস্যরা যদি মনে করে জিপি দেবেনা। মালিক সমিতি নিবেনা।
ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার বিষয়ে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহফুজ আলম জানায়, আধিপত্য বিস্তারসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মালিক ও শ্রমিকদের দুই গ্রুপের মধ্যে গত কয়েকদিন ধরে উত্তেজনা চলে আসছিল। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ তৎপর রয়েছে। বর্তমানে সার্বিক পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রনে  রয়েছে।সংযুক্ত শ্রমিক ফেডারেশন লালমনিরহাট জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনির জেলার পরিবহন শ্রমিকদের দুই গ্রুপের আধিপত্য বিন্তারকে কেন্দ্র করে এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান, তিনি বলেন, পরিবহন শ্রমিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় রাজনৈতিক সমাধান হলে সাধারণ শ্রমিকরা প্রতারিত হবে, শ্রমিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় রাজনৈতিক সমাধান নয় আইনগত সমাধানের জন্য জেলা প্রসাশনের নিকট অনুরোধ করেন।

আপনার মন্তব্য লিখুন

লেখকের সম্পর্কে

Shahriar Hossain

চাঁদা আদায়কে কেন্দ্র করে লালমনিরহাটে সংঘর্ষ -আহত ২

প্রকাশের সময় : ০৮:১৫:৫২ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩ জুন ২০২০
মোস্তাফিজুর রহমান, লালমনিরহাটপ্রতিনিধিঃ/=  গতকাল মঙ্গলবার রাত ৮ টায় জেলার কেন্দীয় বাসষ্ট্যান্ড ও ঢাকা বাসষ্ট্যান্ডে চাঁদা আদায়কে কেন্দ্র করে শ্রমিকদের মধ্যে ঘন্টা ব্যাপী কয়েক দফা ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় মূহুর্তে বাসষ্ট্যান্ড এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণিত হয়ে যায়। পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় এবং তাদের ছত্রভঙ্গ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। এবং কেন্দ্রীয় বাসষ্ট্যান্ড ঢাকা বাসষ্ট্যান্ডে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করেন।আন্দোলনরত শ্রমিক নেতারা জানায়, মালিকরা নির্ধারিত ১৫শ টাকা চেইন আদায় করলেও সরকারী নির্দেশনার অযুহাতে শ্রমিকদের কল্যাণ ট্রাস্টের ১শ ১০টাকা আদায় করতে বাধা দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।পরে জেলা কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকায় দুই গ্রুপের সমর্থীতরা একত্রিত হয়। এবং ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার শুর করেন।
অন্যদিকে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগ অফিস থেকে ঘটনাস্থলে আসার পথিমধ্যে ছাত্রলীগ কর্মী ও শ্রমিক নেতা কর্মীদের মধ্যে বাকবিতন্ডায় সৃষ্টি হয় এক পর্যায়ে তা সংঘর্ষে রুপ নেয় এতে ছাত্রলীগ নেতা জাকির ও আওরঙ্গ আহত হয় । পরে তাদের কে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে ।সাধারণ শ্রমিক আন্দোলন কমিটির নেতা নুরনবী বকুল জানান, ১১ বছর ধরে বর্তমান কমিটি শ্রমিক কল্যাণ ফান্ডের কথা বলে কোটি কোটি টাকা উত্তোলণ করেছে। তারা করোনাপরিস্থিতিতে সাধারণ শ্রমিকের কোন খোঁজ নেয়নি। সরকার কোন চেইন চাঁদা উত্তোলণে নিষিদ্ধ করেছে। কিন্তু শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা তাদের গুন্ডাবাহিনী দিয়ে চেইনের নামে প্রতিটি গাড়ি হতে ২৭০ টাকা করে জোরপূর্বক উত্তোলণ করার চেষ্টা চালায়। তা আমরা বন্ধ করে দিয়েছি। আমরা সাধারণ শ্রমিক আমরা কোন রাজনীতি বুঝিনা। মালিক সমিতি ইউনিয়ন বুঝিনা। যারা আমাদের দুর্দিনে পাশে ছিল না। তাদের দিয়ে কি হবে। আমরা সরকারের সিদ্ধান্ত মেনে চলবো।শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক বুলবুল আহম্মেদ জানান, মটর মালিক সমিতির মদতে তথাকথিত শ্রমিক নামধারী গুন্ডারা বাসষ্ট্যান্ডের নিয়ন্ত্রণ নিতে চায়। আমরা শ্রমিকরা করোনাপরিস্থিতিতে মটরমালিক সমিতির কোন আর্থিক সহয়তা পাইনি। তাই মালিক সমিতি বাস হতে জিপির নামে চাঁদা উত্তোলন করে তা বন্ধ করার দাবি তুলেছি। সেই কারনে বাসষ্ট্যান্ড মালিক সমিতির গুন্ডারা দখলে নিতে চায়। এদিকে মটর মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম জানান, শ্রমিক আন্দোলনের সাথে মটরমালিকের কোন সর্ম্পক নেই। জিপির অর্থ মালিকদের মটর মালিকরা সিদ্ধান্ত নিয়ে আপদকালীণ এই অর্থ তুলে। এটা বন্ধ করার অধিকার মটরমালিকের শ্রমিকদের নেই। মটরমালিক সমিতির সদস্যরা যদি মনে করে জিপি দেবেনা। মালিক সমিতি নিবেনা।
ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার বিষয়ে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহফুজ আলম জানায়, আধিপত্য বিস্তারসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মালিক ও শ্রমিকদের দুই গ্রুপের মধ্যে গত কয়েকদিন ধরে উত্তেজনা চলে আসছিল। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ তৎপর রয়েছে। বর্তমানে সার্বিক পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রনে  রয়েছে।সংযুক্ত শ্রমিক ফেডারেশন লালমনিরহাট জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনির জেলার পরিবহন শ্রমিকদের দুই গ্রুপের আধিপত্য বিন্তারকে কেন্দ্র করে এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান, তিনি বলেন, পরিবহন শ্রমিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় রাজনৈতিক সমাধান হলে সাধারণ শ্রমিকরা প্রতারিত হবে, শ্রমিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় রাজনৈতিক সমাধান নয় আইনগত সমাধানের জন্য জেলা প্রসাশনের নিকট অনুরোধ করেন।