শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

দলীয় বিবেচনায় প্রশাসনে পছন্দের লোকদের পদোন্নতির হিড়িক চলছে : বিএনপি

মামুন বাবু :/=

আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে দলীয় বিবেচনায় ঢালাও নিয়োগ ও পদোন্নতি চলছে বলে অভিযোগ বিএনপির। দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, অনেক মেধাবী কর্মকর্তার যোগ্যতা থাকার পরেও তাদের পদোন্নতি হয়নি। আর এখন করোনার মধ্যে প্রশাসনে পছন্দের লোকদের পদোন্নতির হিড়িক চালাচ্ছে সরকার। মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে দলের পক্ষ থেকে আয়োজিত ভার্চুয়াল ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন তিনি। রিজভী বলেন, বাংলাদেশে এখন এই দুর্যোগের সময় করোনাকালেও চলছে মহাসমারোহে একদলীয় শাসনকে চূড়ান্ত রূপ দেয়ার আয়োজন। সরকার মনে হয় এক মহা অস্থিরতায় ভুগছে। তাই নিজেদের পছন্দের লোকদেরকে পদোন্নতি দেয়ার হিড়িক চালাচ্ছে। বিএনপির এই নেতা বলেন, গত কয়েকদিন আগে ১২৩ জন উপসচিবকে যুগ্ম সচিব পদে পদোন্নতি দেয়া হয়েছে। শুক্রবারে সরকারি ছুটির দিনে এই আদেশ দেয়াটাও নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। তিনি বলেন, পদ নেই তবুও পদোন্নতি চলছে আলোকের গতিতে। পর্যাপ্ত পদ না থাকায় বেশিরভাগ কর্মকর্তাকেই আগের পদে থাকতে হবে। সরকারের এই সুপারনিউমারি পদোন্নতি সম্পূর্ণভাবে রাজনৈতিক স্বার্থে।রিজভী অভিযোগ করে বলেন, পদোন্নতিপ্রাপ্তদের মধ্যে আছেন চারজন মন্ত্রীর একান্ত সচিব ও ছয়জন জেলা প্রশাসকসহ আওয়ামী ঘনিষ্ঠরা। এই ঘোর দুর্দিনে পদ না থাকা সত্ত্বেও এতগুলো পদোন্নতি দেয়ায় এটা সুপ্রমাণিত যে, সরকার জনগণের বাঁচা-মরাকে তোয়াক্কা করে না, শুধুমাত্র ক্ষমতাকে অনিশ্চয়তার হাত থেকে বাঁচানোর জন্য যত ধরনের স্বৈরাচারী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা দরকার তারা সেটিই করছে। বিএনপির এই নেতা বলেন, করোনাভাইরাস যখন ঝড়ের বেগে বাংলাদেশের মানুষকে আক্রান্ত করছে, প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ মারা যাচ্ছে, যে মূহুর্তে সবচেয়ে বড় প্রয়োজন অক্সিজেন সিলিন্ডার, বেড, আইসিইউ বেড, মাস্ক, গ্লাভস, ফেসশিল্ড, স্যানিটাইজারের, সেই মূহুর্তে পদ না থাকার পরেও এই বিশাল পদোন্নতি করোনায় উদ্বিগ্ন জনগণের প্রতি মস্তবড় তামাশা। দেশে লাশের সারি দীর্ঘ হলেও, হাসপাতালে চিকিৎসা না পেয়ে মানুষ আহাজারি করলেও সরকারের সেদিকে কোন ভ্রুক্ষেপ নেই। সরকারের গদি কিভাবে রক্ষা হবে, নব্য বাকশালী শাসন কিভাবে শক্তিশালী হবে সেদিকেই তারা এগিয়ে যাচ্ছে। রিজভী আরও বলেন, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকেই দলীয় বিবেচনায় ঢালাও নিয়োগ ও পদোন্নতি চলছে। অনেক মেধাবী কর্মকর্তা যোগ্যতা থাকার পরেও তাদের পদোন্নতি হয়নি। কুষ্ঠিনামা যাচাই করে শুধুমাত্র তাদেরকেই পদোন্নতি দেয়া হচ্ছে যারা ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে নানাভাবে যুক্ত। এই সরকারের পুরোটা সময় জুড়ে বঞ্চিত করা হয়েছে সৎ, যোগ্য ও মেধাবী কর্মকর্তাদের। তবে এই মূহুর্তে প্রশাসন ক্যাডারে এতগুলো কর্মকর্তার পদোন্নতি জনগণের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে। তিনি বলেন, যে মূহুর্তে একটি ভেন্টিলেটর, একটি অক্সিজেন সিলিন্ডার, একটি পিপিই সোনার হরিণের ন্যায়, সেই মূহুর্তে প্রয়োজনের অতিরিক্ত পদোন্নতি পাওয়া এতজন কর্মকর্তার জন্য সরকারিভাবে যে ব্যয় হবে সেই অর্থ দিয়ে করোনার হাত থেকে মুক্তি পাওয়ার সরঞ্জাম ক্রয়ে সহায়ক হতো। রিজভী বলেন, এই সরকার নিজেদের জনগণের শত্রু হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে, এখন জনপ্রশাসনকেও জনগণের বিরুদ্ধশক্তি হিসেবে দাঁড় করাচ্ছে।

আপনার মন্তব্য লিখুন

লেখকের সম্পর্কে

Shahriar Hossain

দলীয় বিবেচনায় প্রশাসনে পছন্দের লোকদের পদোন্নতির হিড়িক চলছে : বিএনপি

প্রকাশের সময় : ০৬:০৯:৩৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ জুন ২০২০

মামুন বাবু :/=

আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে দলীয় বিবেচনায় ঢালাও নিয়োগ ও পদোন্নতি চলছে বলে অভিযোগ বিএনপির। দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, অনেক মেধাবী কর্মকর্তার যোগ্যতা থাকার পরেও তাদের পদোন্নতি হয়নি। আর এখন করোনার মধ্যে প্রশাসনে পছন্দের লোকদের পদোন্নতির হিড়িক চালাচ্ছে সরকার। মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে দলের পক্ষ থেকে আয়োজিত ভার্চুয়াল ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন তিনি। রিজভী বলেন, বাংলাদেশে এখন এই দুর্যোগের সময় করোনাকালেও চলছে মহাসমারোহে একদলীয় শাসনকে চূড়ান্ত রূপ দেয়ার আয়োজন। সরকার মনে হয় এক মহা অস্থিরতায় ভুগছে। তাই নিজেদের পছন্দের লোকদেরকে পদোন্নতি দেয়ার হিড়িক চালাচ্ছে। বিএনপির এই নেতা বলেন, গত কয়েকদিন আগে ১২৩ জন উপসচিবকে যুগ্ম সচিব পদে পদোন্নতি দেয়া হয়েছে। শুক্রবারে সরকারি ছুটির দিনে এই আদেশ দেয়াটাও নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। তিনি বলেন, পদ নেই তবুও পদোন্নতি চলছে আলোকের গতিতে। পর্যাপ্ত পদ না থাকায় বেশিরভাগ কর্মকর্তাকেই আগের পদে থাকতে হবে। সরকারের এই সুপারনিউমারি পদোন্নতি সম্পূর্ণভাবে রাজনৈতিক স্বার্থে।রিজভী অভিযোগ করে বলেন, পদোন্নতিপ্রাপ্তদের মধ্যে আছেন চারজন মন্ত্রীর একান্ত সচিব ও ছয়জন জেলা প্রশাসকসহ আওয়ামী ঘনিষ্ঠরা। এই ঘোর দুর্দিনে পদ না থাকা সত্ত্বেও এতগুলো পদোন্নতি দেয়ায় এটা সুপ্রমাণিত যে, সরকার জনগণের বাঁচা-মরাকে তোয়াক্কা করে না, শুধুমাত্র ক্ষমতাকে অনিশ্চয়তার হাত থেকে বাঁচানোর জন্য যত ধরনের স্বৈরাচারী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা দরকার তারা সেটিই করছে। বিএনপির এই নেতা বলেন, করোনাভাইরাস যখন ঝড়ের বেগে বাংলাদেশের মানুষকে আক্রান্ত করছে, প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ মারা যাচ্ছে, যে মূহুর্তে সবচেয়ে বড় প্রয়োজন অক্সিজেন সিলিন্ডার, বেড, আইসিইউ বেড, মাস্ক, গ্লাভস, ফেসশিল্ড, স্যানিটাইজারের, সেই মূহুর্তে পদ না থাকার পরেও এই বিশাল পদোন্নতি করোনায় উদ্বিগ্ন জনগণের প্রতি মস্তবড় তামাশা। দেশে লাশের সারি দীর্ঘ হলেও, হাসপাতালে চিকিৎসা না পেয়ে মানুষ আহাজারি করলেও সরকারের সেদিকে কোন ভ্রুক্ষেপ নেই। সরকারের গদি কিভাবে রক্ষা হবে, নব্য বাকশালী শাসন কিভাবে শক্তিশালী হবে সেদিকেই তারা এগিয়ে যাচ্ছে। রিজভী আরও বলেন, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকেই দলীয় বিবেচনায় ঢালাও নিয়োগ ও পদোন্নতি চলছে। অনেক মেধাবী কর্মকর্তা যোগ্যতা থাকার পরেও তাদের পদোন্নতি হয়নি। কুষ্ঠিনামা যাচাই করে শুধুমাত্র তাদেরকেই পদোন্নতি দেয়া হচ্ছে যারা ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে নানাভাবে যুক্ত। এই সরকারের পুরোটা সময় জুড়ে বঞ্চিত করা হয়েছে সৎ, যোগ্য ও মেধাবী কর্মকর্তাদের। তবে এই মূহুর্তে প্রশাসন ক্যাডারে এতগুলো কর্মকর্তার পদোন্নতি জনগণের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে। তিনি বলেন, যে মূহুর্তে একটি ভেন্টিলেটর, একটি অক্সিজেন সিলিন্ডার, একটি পিপিই সোনার হরিণের ন্যায়, সেই মূহুর্তে প্রয়োজনের অতিরিক্ত পদোন্নতি পাওয়া এতজন কর্মকর্তার জন্য সরকারিভাবে যে ব্যয় হবে সেই অর্থ দিয়ে করোনার হাত থেকে মুক্তি পাওয়ার সরঞ্জাম ক্রয়ে সহায়ক হতো। রিজভী বলেন, এই সরকার নিজেদের জনগণের শত্রু হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে, এখন জনপ্রশাসনকেও জনগণের বিরুদ্ধশক্তি হিসেবে দাঁড় করাচ্ছে।