
রোকনুজ্জামান রিপন:/=
ঢাকা কাস্টমস বন্ড কমিশনারেটের একজন সহকারী কমিশনার করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। শরীফ মোহাম্মদ ফয়সাল নামের এ কর্মকর্তা বিসিএস (কাস্টমস অ্যান্ড এক্সাইজ) ৩১ ব্যাচের কর্মকর্তা। বর্তমানে এ কর্মকর্তা বাসায় থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তিনি করোনা আক্রান্ত হয়েছেন।
ফয়সাল মঙ্গলবার বিকেলে শেয়ার বিজকে বলেন, ‘ঈদের আগে অফিস করেছি। ঈদের বন্ধের ২-৩ দিন পর থেকে প্রচন্ড জ্বর। জ্বর ১০২-১০৩ ডিগ্রী পর্যন্ত উঠেছে। শরীর খুবই দুর্বল। করোনা উপসর্গ দেখা দেয়ার পর থেকেই আমি ওষধ খাওয়া শুরু করেছি। কমিশনার স্যারের সহায়তায় নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘রোববার (৭ জুন) রাতে নমুনা পজেটিভ আসে। কমিশনার স্যার একজন চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করিয়ে দিয়েছেন। নিয়মিত তার সাথে যোগাযোগ রেখে ওষধ খাচ্ছি। কমিশনার স্যার সারাক্ষণ যোগাযোগ রাখছেন। আগের চেয়ে ভালো আছি। সবার কাছে দোয়া চাই।’
ঢাকা কাস্টমস বন্ড কমিশনারেটের কমিশনার ডা: এস এম হুমায়ুন কবীর শেয়ার বিজকে বলেন, ‘চিকিৎসা চলছে। আগের চেয়ে ভালো আছে। আমরা সার্বক্ষনিক যোগাযোগ রাখছি। আল্লাহ ভরসা।’
কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের সূত্রমতে, মঙ্গলবার (৯ জুন) পর্যন্ত কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের ৬৬ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে তিনজন ক্যাডার কর্মকর্তা। তিনজনের মধ্যে ইমাম গাজ্জালী নামের একজন ডেপুটি কমিশনার (ডিসি) আক্রান্ত। ৩০ তম ব্যাচের এ কর্মকর্তা রংপুর ভ্যাট কমিশনারেটে কর্মরত। দুইজন সহকারী কমিশনার (এসি)। এর মধ্যে ৩১ তম ব্যাচের উম্মে নাহিদা আক্তার। তিনি ঢাকা কাস্টম হাউসে কর্মরত। এছাড়া ৩১ তম ব্যাচের শরীফ মোহাম্মদ ফয়সাল আক্রান্ত। এছাড়া ২৮ জন সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা, ২৪ জন রাজস্ব কর্মকর্তা, দুইজন সাব-ইন্সপেক্টর, পাঁচজন সেপাই, একজন কম্পিউটার অপারেটর, একজন উচ্চমান সহকারী, একজন অফিস সহকারী ও একজন ড্রাইভার।
অপরদিকে, জসিম উদ্দিন মজুমদার নামে একজন রাজস্ব কর্মকর্তা করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। তিনি কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগে করোনায় প্রথম মৃত্যুবরণকারী কর্মকর্তা। বুধবার (৩ জুন) রাত ২টা ৫ মিনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাজধানীর আনোয়ার খান মর্ডান হাসপাতালে তিনি মারা যান।
সূত্রমতে, মঙ্গলবার পর্যন্ত নতুন করে সিলেট ভ্যাট কমিশনারেট চারজন সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা আক্রান্ত হয়েছে। ঢাকা কাস্টমস বন্ড কমিশনারেটের একজন রাজস্ব কর্মকর্তা। এলটিইউ (ভ্যাট) এর একজন রাজস্ব কর্মকর্তা সপরিবারে আক্রান্ত। তার স্ত্রী, কন্যাসহ পরিবারের ছয়জন করোনা আক্রান্ত।
৬৬ জনের মধ্যে কাস্টম হাউস ও ভ্যাট কমিশনারেটভিত্তিক হিসাবে দেখা যায়, চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে ২৫ জন, ঢাকা কাস্টম হাউসে ছয়জন, আইসিডি, কমলাপুরে তিনজন, চট্টগ্রাম ভ্যাট কমিশনারেটে একজন, ঢাকা উত্তর ভ্যাট কমিশনারেটে তিনজন, ঢাকা পশ্চিম ভ্যাট কমিশনারেটে একজন, ঢাকা দক্ষিণ ভ্যাট কমিশনারেটে পাঁচজন, রংপুর ভ্যাট কমিশনারেটে একজন, ঢাকা পূর্ব ভ্যাট কমিশনারেটে দুইজন, সিলেট ভ্যাট কমিশনারেটে ছয়জন, ঢাকা কাস্টমস বন্ড কমিশনারেটে চারজন, চট্টগ্রাম কাস্টমস বন্ড কমিশনারেটে একজন, কাস্টমস গোয়েন্দায় দুইজন, মোংলা কাস্টম হাউসে একজন, কুমিল্লা ভ্যাট কমিশনারেটে একজন, কাস্টমস অ্যান্ড ভ্যাট ট্রেনিং একাডেমিতে একজন, যশোর ভ্যাট কমিশনারেটে একজন, পানগাঁও কাস্টম হাউসে একজন, বৃহৎ করদাতা ইউনিট (এলটিইউ) একজন।
৬৬ জনের মধ্যে চারজন কর্মকর্তা সুস্থ হয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকা পশ্চিম ভ্যাট কমিশনারেটের একজন সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের একজন রাজস্ব কর্মকর্তা, দুইজন সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা।