ইমরান হোসেন আশা:/=
মহামারি করোনাভাইরাসের ফলে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সহায়তার দৃঢ় প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যুক্তরাজ্য সরকারের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন বিষয়ক সেক্রেটারি সেক্রেটারি অ্যান-মেরি ট্র্যাভেলিয়ান।
বুধবার এক ভার্চুয়াল সফরে তিনি এই আশ্বাস দেন। করোনাভাইরাস মোকাবেলায় যুক্তরাজ্য কীভাবে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে কাজ করছে এবং সহায়তা দিচ্ছে তা ভিডিও কলের মাধ্যমে পরিদর্শন করেন তিনি। এটাকে ব্রিটিশ হাইকমিশন ভার্চুয়াল সফর বলছে। বাংলাদেশে এমন ভার্চুয়াল সফরে এই প্রথম যুক্তরাজ্যের একজন উচ্চ পর্যায়ের সেক্রেটারি অংশগ্রহণ করেন। ভার্চুয়াল এই সফরে যুক্তরাজ্যের এই সেক্রেটারি পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
যুক্তরাজ্যের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন বিষয়ক সেক্রেটারি বলেন, ‘করোনাভাইরাস সংক্রমণ এই প্রজন্মের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার জন্য সর্ববৃহৎ জরুরি অবস্থা। এই ভয়াবহ সংকটের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের জনগণ ও রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সহায়তা প্রদান করতে যুক্তরাজ্য অঙ্গীকারবদ্ধ। আমি বাংলাদেশে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়া রোধ করতে এবং সুবিধাবঞ্চিত মানুষের স্বাস্থ্যসেবা উন্নত করতে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার দারুণ কিছু কাজ দেখেছি। বাংলাদেশে সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জীবন বাঁচানোর জন্য এমন ভূমিকা পালন করতে পেরে যুক্তরাজ্য গর্বিত।’
যুক্তরাজ্য বাংলাদেশে করোনভাইরাস মোকাবেলায় কমপক্ষে ২১ মিলিয়ন পাউন্ড সহায়তা প্রদান করেছে। যুক্তরাজ্যের এই সহায়তা কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করা স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোকে মানুষের জীবন বাঁচাতে সাহায্য করবে এবং করোনাভাইরাসের দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার গতিকে কিছুটা হলেও হ্রাস করবে বলে মনে করে দেশটি।
এ সময় ট্র্যাভিলিয়ান কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির পরিদর্শন করার পাশাপাশি কক্সবাজারে স্থানীয় জনগণ ও রোহিঙ্গাদের করোনাভাইরাস মহামারির প্রভাব মোকাবেলায় যুক্তরাজ্যের সহায়তায় নির্মিত আইসোলেশন সেন্টার ও চিকিৎসা কেন্দ্র কীভাবে সাহায্য করছে তা ভার্চুয়াল উপায়ে পরিদর্শন করেন।
রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য অসাধারণ উদারতা ও সহায়তার জন্য বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন যুক্তরাজ্যের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন বিষয়ক সেক্রেটারি। তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায়, নিরাপদে, মর্যাদার সাথে রাখাইনে ফিরে যাওয়া জন্য সহায়তা প্রদান এবং তাদের না ফেরা পর্যন্ত তাদের সহায়তা জন্য যুক্তরাজ্য বাংলাদেশ সরকার, আন্তর্জাতিক অংশীদার এবং জাতিসংঘের নিরাপত্তা কাউন্সিলের সাথে কাজ করে যাবে।’
ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ হাই কমিশনার রবার্ট চ্যাটার্টন ডিকসন বলেন, ‘করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব বাংলাদেশের মানুষের স্বাস্থ্য, জীবিকা ও গতিশীলতার ওপর অনভিপ্রেত প্রভাব ফেলেছে। যুক্তরাজ্যের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন বিষয়ক সেক্রেটারির ভার্চুয়াল সফর বাংলাদেশের জন্য যুক্তরাজ্যের সহযোগিতার ব্যাপ্তি ও গভীরতাকে তুলে ধরেছে। করোনাভাইরাস চ্যালেঞ্জের মাঝে এই ভার্চুয়াল সফর বাংলাদেশের প্রতি যুক্তরাজ্যের দৃঢ় প্রতিশ্রুতির বহিঃপ্রকাশ।’
ট্র্যাভেলিয়ান যুক্তরাজ্যের ইমার্জেন্সি মেডিকেল টিমের লিডার সারাহ কলিসের সঙ্গেও ভার্চুয়ালি সাক্ষাৎ ছাড়াও বাংলাদেশে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির জরুরি খাদ্য বন্টন কর্যক্রম পরিদর্শন করেন।
ভার্চুয়াল সফরে যুক্তরাজ্যের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন বিষয়ক সেক্রেটারি ব্র্যাকের কর্মীদের সঙ্গেও কথা বলেন। যুক্তরাজ্যের সহায়তায় ব্র্যাকের ৫০ হাজার কমিউনিটি স্বাস্থ্যকর্মী বাংলাদেশের ৫০ লাখ সুবিধাবঞ্চিত মানুষের কাছে স্বাস্থ্য সম্পর্কিত তথ্য পৌঁছে দেওয়ার জন্য ও করোনাভাইরাস থেকে মানুষকে নিরাপদে রাখার জন্য কাজ করছে।