বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫, ৫ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সাভারে অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিস্ফোরণে একই পরিবারের ৩ জনের মৃত্যু

সাজ্জাদুল ইসলাম সৌরভ:/=

সাভারের আশুলিয়ায় অবৈধ গ্যাসের লাইন লিকেজ থেকে বিস্ফোরণে দগ্ধ হয়ে স্বামী-স্ত্রী ও শিশু সন্তানের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার পর বিষয়টি ও স্থানীয় প্রভাবশালীরা।

বুধবার দুপুরে এক পরিবারের তিনজনের মৃত্যুর কথা নিশ্চিত করেন মৃতদের স্বজন আজিজুল ইসলাম। এর আগে গত শনিবার ভোরে আশুলিয়ার দুর্গাপুর পূর্বচালা এলাকায় শহীদ হাজির মালিকানাধীন দোতলার বাড়ির নিচতলায় এ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।

মৃতরা হলেন- আবুল কাশেম (২৮), তার স্ত্রী ফাতেমা বেগম (২২) ও তাদের ছয় বছরের মাদরাসা পড়ুয়া সন্তান আল-আমিন। তাদের বাড়ি ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার চণ্ডিপাশা গ্রামে। আবুল কাশেম কন্টিনেন্টাল নামে স্থানীয় এক পোশাক কারখানায় কাজ করতেন। তার স্ত্রী একই এলাকার সাউদার্ন নামে একটি পোশাক কারখানার শ্রমিক ছিলেন।

মৃতদের প্রতিবেশী অটোচালক শহিদুল ইসলাম বলেন, তিন মাস আগে আবুল কাশেম পরিবার নিয়ে আশুলিয়ার দুর্গাপুর এলাকায় শহীদ হাজির দোতলা বাড়ির নিচতলার একটি কক্ষ ভাড়া নেন। তারা উভয়ে কারখানায় কাজ করতেন। শনিবার ভোরে কারখানায় যাওয়ার জন্য ঘুম থেকে ওঠেন তারা। এ সময় রান্নার ঘরে আগুন জ্বালালে বিস্ফোরণ ঘটে। তাদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় আবুল কাশেম, স্ত্রী ফাতেমা ও সন্তান আল-আমিনকে উদ্ধার করে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।

মৃত কাশেমের মামা আজিজুল ইসলাম বলেন, ভাগিনা কাশেমসহ তার পুরো পরিবার অগ্নিদগ্ধ হয়েছেন। রবিবার রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কাশেমের সন্তান আল-আমিন মারা যায়। পরদিন এনাম মেডিকেলে চিকিৎসাব্যয় বহন করা সম্ভব নয় চিন্তা করে কাশেম ও তার স্ত্রীকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে নেয়ার চেষ্টা করি। কিন্তু হাসপাতালে নেয়ার পথে কাশেমের মৃত্যু হয়। পরে ফাতেমার অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। মঙ্গলবার বিকেল ৪টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তারও মৃত্যু হয়।

এদিকে, এতবড় দুর্ঘটনা ঘটলেও বাড়ির মালিক ও স্থানীয় প্রভাবশালীরা ঘটনাটি ধামাচাপা দেন। ঘটনার তিনদিন পর পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তবে প্রভাবশালীদের ভয়ে এ নিয়ে মুখ খোলেননি কেউ।

আশুলিয়া থানার এসআই সামিউল ইসলাম বলেন, বিস্ফোরণে অগ্নিদগ্ধ হয়ে একই পরিবারের তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে যান। এর আগে ঘটনার দিন বিষয়টি জানানো হয়নি। প্রাথমিক তদন্তে গ্যাস লাইনের লিকেজ থেকে বিস্ফোরণের ঘটনার বিষয়টি জানা গেলেও অধিকতর তদন্ত ছাড়া নিশ্চিত করে কিছুই বলা যাচ্ছে না। তবে এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আপনার মন্তব্য লিখুন

লেখকের সম্পর্কে

Shahriar Hossain

জনপ্রিয়

সাভারে অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিস্ফোরণে একই পরিবারের ৩ জনের মৃত্যু

প্রকাশের সময় : ০৫:৪৫:৫৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ জুলাই ২০২০

সাজ্জাদুল ইসলাম সৌরভ:/=

সাভারের আশুলিয়ায় অবৈধ গ্যাসের লাইন লিকেজ থেকে বিস্ফোরণে দগ্ধ হয়ে স্বামী-স্ত্রী ও শিশু সন্তানের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার পর বিষয়টি ও স্থানীয় প্রভাবশালীরা।

বুধবার দুপুরে এক পরিবারের তিনজনের মৃত্যুর কথা নিশ্চিত করেন মৃতদের স্বজন আজিজুল ইসলাম। এর আগে গত শনিবার ভোরে আশুলিয়ার দুর্গাপুর পূর্বচালা এলাকায় শহীদ হাজির মালিকানাধীন দোতলার বাড়ির নিচতলায় এ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।

মৃতরা হলেন- আবুল কাশেম (২৮), তার স্ত্রী ফাতেমা বেগম (২২) ও তাদের ছয় বছরের মাদরাসা পড়ুয়া সন্তান আল-আমিন। তাদের বাড়ি ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার চণ্ডিপাশা গ্রামে। আবুল কাশেম কন্টিনেন্টাল নামে স্থানীয় এক পোশাক কারখানায় কাজ করতেন। তার স্ত্রী একই এলাকার সাউদার্ন নামে একটি পোশাক কারখানার শ্রমিক ছিলেন।

মৃতদের প্রতিবেশী অটোচালক শহিদুল ইসলাম বলেন, তিন মাস আগে আবুল কাশেম পরিবার নিয়ে আশুলিয়ার দুর্গাপুর এলাকায় শহীদ হাজির দোতলা বাড়ির নিচতলার একটি কক্ষ ভাড়া নেন। তারা উভয়ে কারখানায় কাজ করতেন। শনিবার ভোরে কারখানায় যাওয়ার জন্য ঘুম থেকে ওঠেন তারা। এ সময় রান্নার ঘরে আগুন জ্বালালে বিস্ফোরণ ঘটে। তাদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় আবুল কাশেম, স্ত্রী ফাতেমা ও সন্তান আল-আমিনকে উদ্ধার করে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।

মৃত কাশেমের মামা আজিজুল ইসলাম বলেন, ভাগিনা কাশেমসহ তার পুরো পরিবার অগ্নিদগ্ধ হয়েছেন। রবিবার রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কাশেমের সন্তান আল-আমিন মারা যায়। পরদিন এনাম মেডিকেলে চিকিৎসাব্যয় বহন করা সম্ভব নয় চিন্তা করে কাশেম ও তার স্ত্রীকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে নেয়ার চেষ্টা করি। কিন্তু হাসপাতালে নেয়ার পথে কাশেমের মৃত্যু হয়। পরে ফাতেমার অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। মঙ্গলবার বিকেল ৪টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তারও মৃত্যু হয়।

এদিকে, এতবড় দুর্ঘটনা ঘটলেও বাড়ির মালিক ও স্থানীয় প্রভাবশালীরা ঘটনাটি ধামাচাপা দেন। ঘটনার তিনদিন পর পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তবে প্রভাবশালীদের ভয়ে এ নিয়ে মুখ খোলেননি কেউ।

আশুলিয়া থানার এসআই সামিউল ইসলাম বলেন, বিস্ফোরণে অগ্নিদগ্ধ হয়ে একই পরিবারের তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে যান। এর আগে ঘটনার দিন বিষয়টি জানানো হয়নি। প্রাথমিক তদন্তে গ্যাস লাইনের লিকেজ থেকে বিস্ফোরণের ঘটনার বিষয়টি জানা গেলেও অধিকতর তদন্ত ছাড়া নিশ্চিত করে কিছুই বলা যাচ্ছে না। তবে এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।