শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ১৯ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিএনপি নেতা দুলু ও তার স্ত্রীর ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছে দুদক

মো: আব্দুল লতিফ #

নাটোরের সাবেক এমপি ও বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু ও তার স্ত্রীর ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বিভিন্ন ব্যাংকে তাদের হিসাবে থাকা মোট ৭ কোটি ৩৬ লাখ ৮৫ হাজার ৭৮৪ টাকা জব্দ করা হয়েছে।

দুদক পরিচালক (জনসংযোগ) প্রনব কুমার ভট্টাচার্য্য এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, বিএনপি সরকারের আমলে সাবেক এমপি রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুর বিরুদ্ধে টেন্ডারবাজি ও ব্যবসায়িদের কাছ থেকে চাঁদা আদায়ের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০১৮ সালে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। দীর্ঘ অনুসন্ধানের পর তার বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা মিলেছে।

এই অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে এসব ব্যাংক হিসাব জব্দের জন্য দুদকের সহকারী পরিচালক ও অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা শফি উল্লাহ বাংলাদেশ ব্যাংকে চিঠি পাঠান। এর পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিএফআইইউ দুলু ও তার স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিনের নামে বিভিন্ন ব্যাংকে থাকা ৭ কোটি ৩৬ লাখ ৮৫ হাজার ৭৮৪ টাকা জব্দ করার নির্দেশ দিয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দলীয় নেতৃত্বে নির্বাচন থেকে শুরু করে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে প্রার্থী সমর্থন— কোনো কিছুতেই গণতান্ত্রিক কোনো প্রক্রিয়া মেনে চলেন না রুহুল কুদ্দুস।

ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে সর্বত্র তিনি আত্মীয়করণ করছেন। তিনি নিজে জেলা বিএনপির সভাপতি, তার স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমীন সহ-সভাপতি, বড় ভাই রুহুল আমিন তালুকদার পৌর বিএনপির সভাপতি ও জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক, চাচাতো ভাই আতিকুর রহমান তালুকদার নলডাঙ্গা উপজেলা বিএনপির সভাপতি, আরেক চাচাতো ভাই আবিদুর রহমান তালুকদার বিপ্রবেলঘরিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি, আবদুল হাই তালুকদার জেলা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক, খালাতো ভাই মাতিনুর রহমান মৃধা মাধনগর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা বিএনপির সিনিয়র দায়িত্বশীল এক নেতা বলেন, জেলাজুড়ে রুহুল কুদ্দুসের সেই আধিপত্য আর নেই। ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে নাটোরে এমন অপকর্ম নেই যা তিনি করেননি। তার সন্ত্রাসী বাহিনীর ভয়ে কেউ মুখ খোলেনি। তার ভয়ে সবাই বোবা হয়ে থাকতো। তবে নিজ দল বিএনপিতে তিনি এখনো একাধিপতি।

তিনি বলেন, তবে জেলার সেই চিত্র এখন বিপরীত। কেউ কাউকে মুখ বুজে সহ্য করেন না। বিনপির ভেতরে এতোদিন যারা বোবা হয়ে ছিলেন তারাও কথা বলতে শুরু করেছেন। ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে টেন্ডারবাজি ও ব্যবসায়িদের কাছ থেকে চাঁদা আদায়ের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার অবৈধ যে সম্পদ অর্জন করেছেন। সেসব দুর্নীতি, অনিয়মসহ বিভিন্ন বিষয়ে মানুষ এখন মুখ খুলতে শুরু করেছে

আপনার মন্তব্য লিখুন

লেখকের সম্পর্কে

Shahriar Hossain

জনপ্রিয়

ভূরুঙ্গামারীতে প্রা.বি.সহকারী শিক্ষকদের ১০ম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিতে মানববন্ধন

বিএনপি নেতা দুলু ও তার স্ত্রীর ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছে দুদক

প্রকাশের সময় : ০৩:২৯:১৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২০
মো: আব্দুল লতিফ #

নাটোরের সাবেক এমপি ও বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু ও তার স্ত্রীর ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বিভিন্ন ব্যাংকে তাদের হিসাবে থাকা মোট ৭ কোটি ৩৬ লাখ ৮৫ হাজার ৭৮৪ টাকা জব্দ করা হয়েছে।

দুদক পরিচালক (জনসংযোগ) প্রনব কুমার ভট্টাচার্য্য এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, বিএনপি সরকারের আমলে সাবেক এমপি রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুর বিরুদ্ধে টেন্ডারবাজি ও ব্যবসায়িদের কাছ থেকে চাঁদা আদায়ের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০১৮ সালে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। দীর্ঘ অনুসন্ধানের পর তার বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা মিলেছে।

এই অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে এসব ব্যাংক হিসাব জব্দের জন্য দুদকের সহকারী পরিচালক ও অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা শফি উল্লাহ বাংলাদেশ ব্যাংকে চিঠি পাঠান। এর পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিএফআইইউ দুলু ও তার স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিনের নামে বিভিন্ন ব্যাংকে থাকা ৭ কোটি ৩৬ লাখ ৮৫ হাজার ৭৮৪ টাকা জব্দ করার নির্দেশ দিয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দলীয় নেতৃত্বে নির্বাচন থেকে শুরু করে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে প্রার্থী সমর্থন— কোনো কিছুতেই গণতান্ত্রিক কোনো প্রক্রিয়া মেনে চলেন না রুহুল কুদ্দুস।

ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে সর্বত্র তিনি আত্মীয়করণ করছেন। তিনি নিজে জেলা বিএনপির সভাপতি, তার স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমীন সহ-সভাপতি, বড় ভাই রুহুল আমিন তালুকদার পৌর বিএনপির সভাপতি ও জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক, চাচাতো ভাই আতিকুর রহমান তালুকদার নলডাঙ্গা উপজেলা বিএনপির সভাপতি, আরেক চাচাতো ভাই আবিদুর রহমান তালুকদার বিপ্রবেলঘরিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি, আবদুল হাই তালুকদার জেলা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক, খালাতো ভাই মাতিনুর রহমান মৃধা মাধনগর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা বিএনপির সিনিয়র দায়িত্বশীল এক নেতা বলেন, জেলাজুড়ে রুহুল কুদ্দুসের সেই আধিপত্য আর নেই। ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে নাটোরে এমন অপকর্ম নেই যা তিনি করেননি। তার সন্ত্রাসী বাহিনীর ভয়ে কেউ মুখ খোলেনি। তার ভয়ে সবাই বোবা হয়ে থাকতো। তবে নিজ দল বিএনপিতে তিনি এখনো একাধিপতি।

তিনি বলেন, তবে জেলার সেই চিত্র এখন বিপরীত। কেউ কাউকে মুখ বুজে সহ্য করেন না। বিনপির ভেতরে এতোদিন যারা বোবা হয়ে ছিলেন তারাও কথা বলতে শুরু করেছেন। ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে টেন্ডারবাজি ও ব্যবসায়িদের কাছ থেকে চাঁদা আদায়ের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার অবৈধ যে সম্পদ অর্জন করেছেন। সেসব দুর্নীতি, অনিয়মসহ বিভিন্ন বিষয়ে মানুষ এখন মুখ খুলতে শুরু করেছে