নজরুল ইসলাম #
চট্রগ্রাম বন্দরে মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে ইলেকট্রনিক পণ্যের পরিবর্তে আমদানি করা হয়েছে নেসলের নিডো ব্র্যান্ডের শুঁড়ো দুধ। পরে গোপন সুত্রে খবর পেয়ে কাস্টমস কর্মকর্তরা গুড়ো দুধের চালানটি আটক করে। শেডে গুঁড়ো দুধ পরীক্ষা না করিয়ে অন্য এক আমদানিকারকের ইলেকট্রনিক পণ্য পরীক্ষা করিয়ে আড়াই লাখ টাকা শুল্ককরও পরিশোধ করা হয়। শেষে খালাসের জন্য দুইটি কার্ভাড ভ্যানে বোঝাই করা হয়। কিন্তু বেরসিক কাস্টমস কর্মকর্তারা গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কার্ভাড ভ্যান আটক করে।
তাতে দেখা যায়, ইলেকট্রনিক পণ্য নয়, তাতে রয়েছে প্রায় সাড়ে আট মেট্রিক টন গুঁড়ো দুধ। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে মিথ্যা ঘোষণার এমন একটি পণ্য আটক করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাতে হাউসের অডিট, ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড রিসার্চ টিম (এআইআর) চালানটি আটক করেছে। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের সহকারী কমিশনার রেজাউল করিম হিল্লোল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, আমদানিকারক রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোড এলাকার প্রাইম ট্রেডিং (ঠিকানা: ১২৪/এ, ড. খুদরত-ই-খুদা রোড, নিউ মার্কেট থানা, ঢাকা)। প্রতিষ্ঠানটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই হতে ইলেকট্রনিক পণ্য ঘোষণায় দুই মেট্রিক টন পণ্য আমদানি করেন। নিয়ম অনুযায়ী, পণ্যসমূহ কন্টেইনার থেকে নামিয়ে বন্দরের ১২ নম্বর শেডে সংরক্ষণ করা হয়। পণ্য খালাসের লক্ষ্যে আমদানিকারকের সিএন্ডএফ এজেন্ট কুলগাঁও ট্রেডার্স লিমিটেড ১০ সেপ্টেম্বর বিল অব এন্ট্রি দাখিল করে।
রেজাউল করিম জানান, কাস্টমস কর্মকর্তারা পণ্য পরীক্ষা করতে গেলে সিএন্ডএফ এর প্রতিনিধি শেডে সংরক্ষিত অপর একটি ইলেকট্রনিক পণ্য পরীক্ষা করান বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। পরবর্তীতে ইলেকট্রনিক পণ্যের বিপরীতে আড়াই লাখ টাকা শুল্ককর পরিশোধ করা হয়। পরে দুইটি কাভার্ড ভ্যানে পণ্য বোঝাই করে খালাসের অপচেষ্টা করা হলে হাউসের অডিট, ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড রিসার্চ টিম (এআইআর) গাড়ি দুইটি আটক করে। পরবর্তীতে এআইআর কর্তৃক পণ্য পরীক্ষায় ইলেকট্রনিক পণ্যের পরিবর্তে প্রায় সাড়ে আট মেট্রিক টন গুঁড়ো দুধ পাওয়া যায়। যার আনুমানিক শুল্ককর ২৮ লাখ টাকা।
তিনি আরও জানান, গুঁড়ো দুধ আমদানির ক্ষেত্রে আমদানি নীতি অনুযায়ী মোড়কের গায়ে ‘মায়ের দুধের বিকল্প নেই’ উল্লেখ থাকতে হবে এবং বিএসটিআই এর মাধ্যমে খাবার উপযোগী কিনা তা পরীক্ষা করতে হবে। এক্ষেত্রে দুটি শর্তই পূরণ করা হয়নি। কাস্টম হাউস কর্তৃক পণ্য খালাসের অপচেষ্টা রোধ করা না গেলে পণ্যগুলো মানব স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর কিনা তা অজানা থেকে যেত। শুল্ককর ফাঁকির বিষয়ে মামলা দায়েরের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।