ইমরান হোসেন আশা ##
গণধর্ষণের অভিযোগ নিতে গড়িমসি করলেও গণধর্ষণের শিকার দলিত তরুণীর দেহ রাতারাতি দাহ করে ফেলল ভারতের উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। এ ঘটনায় রাজ্যটির পুলিশের বিরুদ্ধে চরম অমানবিকতার অভিযোগ উঠল।
উত্তরপ্রদেশে হাথরসে এলাকায় দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার ওই তরুণী ১৫ দিন ধরে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করার পর মঙ্গলবার মারা যান। এ ঘটনায় ভারতজুড়ে তীব্র ক্ষোভের শিকার হয়।
এর মধ্যে পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ, পরিবারের সকলকে ঘরে তালাবন্ধ করে রেখে রাত আড়াইটার সময় তার দেহ সৎকার করে পুলিশ। এ নিয়ে নতুন করে তীব্র বিতর্ক শুরু হয়েছে।
ডয়েচে ভেলে অনলাইন জানায়, মা এবং ভাই বোনদের সঙ্গে ক্ষেতে কাজ করতে গিয়েছিলেন ১৯ বছর বয়সী ওই দলিত কন্যা। সেখানে চারজন উচ্চবর্ণের যুবক তাকে ধর্ষণ করে। ধর্ষণের পাশাপাশি তার উপর অমানুষিক অত্যাচারও চালানো হয়। কেটে দেওয়া হয় জিভ। পরিবারের অভিযোগ, ঘটনার পর প্রথমে এফআইআর নিতে চায়নি পুলিশ। পরে বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন মহলে বিতর্ক শুরু হলে পুলিশ এফআইআর গ্রহণ করে। চার অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারও করা হয়।
উত্তর প্রদেশে চিকিৎসায় অবহেলার শিকার হওয়া ওই নারীকে দিল্লির একটি হাসপাতালে এ নিয়ে আসা হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাকে বাঁচানো যায়নি।
ধর্ষিতার পরিবারের অভিযোগ, মৃত্যুর পরে দেহ বাজেয়াপ্ত করে পুলিশ। পরিবারের হাতে তা তুলে দেওয়া হচ্ছিল না। এর প্রতিবাদে থানার সামনে অবস্থান ধর্মঘটে বসে পড়েন ধর্ষিতার আত্মীয় এবং গ্রামের মানুষেরা।দীর্ঘ অপেক্ষার পর দেহ পরিবারের হাতে দিতে পুলিশ রাজি হয়। পরিবার জানিয়ে দেয়, বিচার না পাওয়া পর্যন্ত ধর্ষিতার দেহ সৎকার করা হবে না। এ নিয়ে ফের পুলিশের সঙ্গে বচসা শুরু হয়।
একপর্যায়ে পরিবার দেহ সৎকারে সম্মত হলেও তারা পুলিশকে জানায়, রাতে নয়, সকালে দেহ সৎকার করা হবে নিয়মরীতি মেনে। প্রাথমিকভাবে সে কথা শুনে পুলিশ গ্রাম থেকে চলেও যায়। কিন্তু মাঝ রাতে ফের এলাকায় ফিরে আসে পুলিশ।
গ্রামবাসী এবং পরিবারের সঙ্গে পুলিশের তীব্র বাদানুবাদ হয়। এরপরেই পরিবারের সকলকে বাড়িতে তালা বন্ধ করে ধর্ষিতার বাবাকে গাড়িতে তুলে শ্মশানে পৌঁছে যায় পুলিশ। সেখানে পুলিশই তার দেহ সৎকার করে দেয়।
সংবাদসংস্থা পিটিআইয়ের কাছে ধর্ষিতার ভাই বলেছেন, ‘পুলিশ ঠিকভাবে দিদির দেহ সৎকার পর্যন্ত করতে দিল না।’
তবে পুলিশের দাবি, পরিবারের অনুমতিতেই তারা দেহ সৎকার করেছে। কিন্তু রাতের যে ফুটেজ মিলেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, পুলিশকে সৎকারের অনুমতি দেয়নি পরিবার।
বিজেপি নেতা যোগী আদিত্যনাথ সরকারের উত্তরপ্রদেশে উচ্চবর্ণের হিন্দুদের দ্বারা বরাবরই নিপীড়নের শিকার হয়ে আসছে দলিতরা। দলিতের সঙ্গে খারাপ ব্যবহারের অভিযোগ আছে পুলিশের বিরুদ্ধেও। সুত্র :- দেশ রুপান্তর