শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

বিনা চিকিৎসায় ৮ বছর শিকলে বন্দি

নজরুল ইসলাম ##  বিনা চিকিৎসায় ৮ বছর ধরে শিকলে বন্দি আছেন মানসিক প্রতিবন্ধী মেহেরনাজ। অভাব-অনটনের কারণে তার চিকিৎসা করাতে পারছেন না স্বজনরা। মেহেরনাজকে নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন মা হাওয়া বেগম।

মেহেরনাজ শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলা সদর ইউনিয়নের উপজেলা সদরের কাচারীপাড়া মহল্লার গোলাম মোস্তফার মেয়ে। ৭ বছর বয়স থেকেই মেহেরনাজের অস্বাভাবিক আচরণ ধরা পড়ে। বাবা গোলাম মোস্তফা বেঁচে থাকা অবস্থায় সাধ্যমতো চিকিৎসা করালেও মারা যাওয়ার পর থেকে মেহেরনাজের চিকিৎসা বন্ধ হয়ে যায়।

হাওয়া বেগম জানান, দুই ছেলে, চার মেয়েকে নিয়ে তাদের আট সদস্যের পরিবার ছিল। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ছিলেন তার স্বামী। ২০১১ সালে এক সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান তিনি। এরপর থেকেই অর্থসংকটে পড়েন তারা। এর মধ্যেই তিন মেয়ের বিয়ে দেয়া হয়েছে। দুই ছেলেও বিয়ে করে আলাদা সংসার করছে। ছেলেদেরই সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয়। সহায়-সম্বল বলতে কোনো কিছুই নেই হাওয়া বেগমের। সরকারি খাস দুই শতাংশ জমির ওপর একটি ঘর করে থাকেন তিনি। বয়স ও শারীরিক দুর্বলতার কারণে কোনো কাজও করতে পারেন না। বর্তমানে শিকলে বাঁধা মেয়ে মেহেরনাজকে নিয়ে অনাহারে-অর্ধাহারে দিনাতিপাত করছেন তিনি। প্রতিবেশীরা যা দেয় ,তাই খেয়ে দিন চলছে তাদের।

হাওয়া বেগম আরও জানান, ১০ টাকা কেজির একটি চালের কার্ড, তার নামে একটি বিধবা ভাতা ও প্রতিবন্ধী মেয়ে মেহেরনাজের নামে একটি প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড চেয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে দীর্ঘদিন থেকে অনেক আবেদন করেছেন তিনি। কিন্তু তাদের ভাগ্যে কোনো সাহায্য-সহযোগিতা জোটেনি।

এ বিষয়ে ঝিনাইগাতী সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোফাজ্জল হোসেন চাঁন বলেন, এখন কোনো কিছু দেয়ার সুযোগ নেই। সরকারি সাহায্য এলে পরবর্তীতে দেয়া হবে।

আপনার মন্তব্য লিখুন

লেখকের সম্পর্কে

Shahriar Hossain

বিনা চিকিৎসায় ৮ বছর শিকলে বন্দি

প্রকাশের সময় : ০৪:২৪:০২ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ জানুয়ারী ২০২১

নজরুল ইসলাম ##  বিনা চিকিৎসায় ৮ বছর ধরে শিকলে বন্দি আছেন মানসিক প্রতিবন্ধী মেহেরনাজ। অভাব-অনটনের কারণে তার চিকিৎসা করাতে পারছেন না স্বজনরা। মেহেরনাজকে নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন মা হাওয়া বেগম।

মেহেরনাজ শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলা সদর ইউনিয়নের উপজেলা সদরের কাচারীপাড়া মহল্লার গোলাম মোস্তফার মেয়ে। ৭ বছর বয়স থেকেই মেহেরনাজের অস্বাভাবিক আচরণ ধরা পড়ে। বাবা গোলাম মোস্তফা বেঁচে থাকা অবস্থায় সাধ্যমতো চিকিৎসা করালেও মারা যাওয়ার পর থেকে মেহেরনাজের চিকিৎসা বন্ধ হয়ে যায়।

হাওয়া বেগম জানান, দুই ছেলে, চার মেয়েকে নিয়ে তাদের আট সদস্যের পরিবার ছিল। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ছিলেন তার স্বামী। ২০১১ সালে এক সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান তিনি। এরপর থেকেই অর্থসংকটে পড়েন তারা। এর মধ্যেই তিন মেয়ের বিয়ে দেয়া হয়েছে। দুই ছেলেও বিয়ে করে আলাদা সংসার করছে। ছেলেদেরই সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয়। সহায়-সম্বল বলতে কোনো কিছুই নেই হাওয়া বেগমের। সরকারি খাস দুই শতাংশ জমির ওপর একটি ঘর করে থাকেন তিনি। বয়স ও শারীরিক দুর্বলতার কারণে কোনো কাজও করতে পারেন না। বর্তমানে শিকলে বাঁধা মেয়ে মেহেরনাজকে নিয়ে অনাহারে-অর্ধাহারে দিনাতিপাত করছেন তিনি। প্রতিবেশীরা যা দেয় ,তাই খেয়ে দিন চলছে তাদের।

হাওয়া বেগম আরও জানান, ১০ টাকা কেজির একটি চালের কার্ড, তার নামে একটি বিধবা ভাতা ও প্রতিবন্ধী মেয়ে মেহেরনাজের নামে একটি প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড চেয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে দীর্ঘদিন থেকে অনেক আবেদন করেছেন তিনি। কিন্তু তাদের ভাগ্যে কোনো সাহায্য-সহযোগিতা জোটেনি।

এ বিষয়ে ঝিনাইগাতী সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোফাজ্জল হোসেন চাঁন বলেন, এখন কোনো কিছু দেয়ার সুযোগ নেই। সরকারি সাহায্য এলে পরবর্তীতে দেয়া হবে।