সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫, ২ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সরকারি ঘর দেয়ার কথা বলে ১৩ পরিবার থেকে টাকা নেয়ার অভিযোগ

আবু রায়হান জিকো ## ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার কাষ্টভাঙ্গা ইউনিয়নে সরকারি ঘর দেয়ার কথা বলে হতদরিদ্র মানুষের কাছ থেকে টাকা নেয়ার অভিযোগ উঠেছে ইউপি চেয়ারম্যান চেয়ারম্যান আয়ুব হোসেন খানের বিরুদ্ধে। ২ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বর রাশেদুল ইসলামের যোগসাজসে চেয়ারম্যান হতদরিদ্র পরিবারগুলোর কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছে ১ লাখ ৬৯ হাজার টাকা। ঘর না পেয়ে পরিবারগুলো টাকা ফেরত চাইতে গেলে উল্টো হুমকি দেয়া হচ্ছে।

এ ঘটনায় ঝিনাইদহের জেলা প্রশাসক সরোজ কুমার নাথ ও কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবর অভিযোগ দিয়েছেন হতদরিদ্র ১৩ টি পরিবার।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ইউপি সদস্য রাশেদুল ইসলামের মাধ্যমে চেয়ারম্যান আয়ুব হোসেন ওই ইউনিয়নের সাতগাছী গ্রামের তরিকুল ইসলাম, গোষ্টগোপাল, স্বপন, কিরন, মোস্তফা, বিকাশ, ধীরেন, শরিফুল, রাশেদা খাতুন, জীতেন, কুমারহাটি গ্রামের মতিয়ার, তেতলুবাড়ী গ্রামের বুদো, রবিনের কাছ থেকে ১ বছর আগে সরকারি জমি আছে ঘর নেই প্রকল্প’র ঘর দেয়ার কথা বলে মোট ১ লাখ ৬৯ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এখন ঘর দেয়া তো দুরের কথা টাকাও ফেরত দিচ্ছে না। টাকা ফেরত চাইতে গেলে তাদের হুমকি দেয়া হচ্ছে।

ভুক্তভোগি তরিকুল ইসলাম বলেন, ১ বছর আগে ঘর দেয়ার কথা বলে আমার কাছ থেকে ২২ হাজার টাকা দাবি করে। আমি ঋণ নিয়ে ১৩ হাজার টাকা দিয়েছি। ১ বছর পার হয়ে গেল আজও আমার ঘর দেয়ার নাম নেই। টাকা ফেরত চাইতে গেলে আমাদের গালি-গালাজ করে চেয়ারম্যান। আমার ঘর দরকার নেই আমি টাকা ফেরত চাই।

ভুক্তভোগি গোষ্টগোপাল বলেন, আমি সহজ-সরল গরিব মানুষ। কর্ম করে খাই, আমার কোনো জমি নাই, বাবার যেটুকু আছে তাতেই কোনো মতে আছি। চেয়ারম্যান আয়ুব আর মেম্বর রাশেদুল সরকারি ঘর দেয়ার কথা বলে আমার কাছ থেকে টাকা নেয়। ঘর না পেয়ে আমি আমার টাকা ফেরত চাইতে গেলে টাকা না দিয়ে উল্টো দেবেন না জানিয়ে আমাকে ভয়ভীতি ও হুমকি দিচ্ছে।

অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান আয়ুব হোসেন খান বলেন, আমি কোন টাকা নিই নি। এ বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা। রাশেদুল নাকি টাকা নিয়েছে। কয়েকজন আমার কাছে নালিশ করেছিল।

অপরদিকে রাশেদুল ইসলাম মেম্বর জানান, অভিযোগের বিষয়টি মিথ্যা। সামনে ভোট আমার প্রতিপক্ষরা এসব ঘটনা সাজিয়ে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছে যাতে আমি আগামীতে ভোট করতে না পারি। কারো কাছ থেকে আমি টাকা নিয়েছি এটা প্রমাণ করতে পারলে তাদের জনপ্রতি আমি এক লাখ করে টাকা দিব এবং আমার যে শাস্তি হয় তা মাথা পেতে নিব। এছাড়া যে সময় এমন ঘটনা ঘটেছে সে সময় আমি পারিবারিক একটি মামলায় জেলে ছিলাম। আমি অপরাধী নয় আমি নির্দোষ। অভিযোগের বিষয়টি সাজানো বলে তিনি দাবি করেন।

এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুবর্না রানী সাহা বলেন, এ ঘটনায় একটি অভিযোগ পেয়েছি। আজ অফিসে বসতে পারেনি অফিসে এসে তদন্তকারী কর্মকর্তা নিয়োগ করা হবে। এরপর তদন্তের ফলাফল এলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

আপনার মন্তব্য লিখুন

লেখকের সম্পর্কে

Shahriar Hossain

জনপ্রিয়

ঈদের ছুটিতে ৯৯৯-এ কল সোয়া ২ লাখ, সবচেয়ে বেশি মারামারির

সরকারি ঘর দেয়ার কথা বলে ১৩ পরিবার থেকে টাকা নেয়ার অভিযোগ

প্রকাশের সময় : ০৫:৫২:০৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ জানুয়ারী ২০২১

আবু রায়হান জিকো ## ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার কাষ্টভাঙ্গা ইউনিয়নে সরকারি ঘর দেয়ার কথা বলে হতদরিদ্র মানুষের কাছ থেকে টাকা নেয়ার অভিযোগ উঠেছে ইউপি চেয়ারম্যান চেয়ারম্যান আয়ুব হোসেন খানের বিরুদ্ধে। ২ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বর রাশেদুল ইসলামের যোগসাজসে চেয়ারম্যান হতদরিদ্র পরিবারগুলোর কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছে ১ লাখ ৬৯ হাজার টাকা। ঘর না পেয়ে পরিবারগুলো টাকা ফেরত চাইতে গেলে উল্টো হুমকি দেয়া হচ্ছে।

এ ঘটনায় ঝিনাইদহের জেলা প্রশাসক সরোজ কুমার নাথ ও কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবর অভিযোগ দিয়েছেন হতদরিদ্র ১৩ টি পরিবার।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ইউপি সদস্য রাশেদুল ইসলামের মাধ্যমে চেয়ারম্যান আয়ুব হোসেন ওই ইউনিয়নের সাতগাছী গ্রামের তরিকুল ইসলাম, গোষ্টগোপাল, স্বপন, কিরন, মোস্তফা, বিকাশ, ধীরেন, শরিফুল, রাশেদা খাতুন, জীতেন, কুমারহাটি গ্রামের মতিয়ার, তেতলুবাড়ী গ্রামের বুদো, রবিনের কাছ থেকে ১ বছর আগে সরকারি জমি আছে ঘর নেই প্রকল্প’র ঘর দেয়ার কথা বলে মোট ১ লাখ ৬৯ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এখন ঘর দেয়া তো দুরের কথা টাকাও ফেরত দিচ্ছে না। টাকা ফেরত চাইতে গেলে তাদের হুমকি দেয়া হচ্ছে।

ভুক্তভোগি তরিকুল ইসলাম বলেন, ১ বছর আগে ঘর দেয়ার কথা বলে আমার কাছ থেকে ২২ হাজার টাকা দাবি করে। আমি ঋণ নিয়ে ১৩ হাজার টাকা দিয়েছি। ১ বছর পার হয়ে গেল আজও আমার ঘর দেয়ার নাম নেই। টাকা ফেরত চাইতে গেলে আমাদের গালি-গালাজ করে চেয়ারম্যান। আমার ঘর দরকার নেই আমি টাকা ফেরত চাই।

ভুক্তভোগি গোষ্টগোপাল বলেন, আমি সহজ-সরল গরিব মানুষ। কর্ম করে খাই, আমার কোনো জমি নাই, বাবার যেটুকু আছে তাতেই কোনো মতে আছি। চেয়ারম্যান আয়ুব আর মেম্বর রাশেদুল সরকারি ঘর দেয়ার কথা বলে আমার কাছ থেকে টাকা নেয়। ঘর না পেয়ে আমি আমার টাকা ফেরত চাইতে গেলে টাকা না দিয়ে উল্টো দেবেন না জানিয়ে আমাকে ভয়ভীতি ও হুমকি দিচ্ছে।

অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান আয়ুব হোসেন খান বলেন, আমি কোন টাকা নিই নি। এ বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা। রাশেদুল নাকি টাকা নিয়েছে। কয়েকজন আমার কাছে নালিশ করেছিল।

অপরদিকে রাশেদুল ইসলাম মেম্বর জানান, অভিযোগের বিষয়টি মিথ্যা। সামনে ভোট আমার প্রতিপক্ষরা এসব ঘটনা সাজিয়ে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছে যাতে আমি আগামীতে ভোট করতে না পারি। কারো কাছ থেকে আমি টাকা নিয়েছি এটা প্রমাণ করতে পারলে তাদের জনপ্রতি আমি এক লাখ করে টাকা দিব এবং আমার যে শাস্তি হয় তা মাথা পেতে নিব। এছাড়া যে সময় এমন ঘটনা ঘটেছে সে সময় আমি পারিবারিক একটি মামলায় জেলে ছিলাম। আমি অপরাধী নয় আমি নির্দোষ। অভিযোগের বিষয়টি সাজানো বলে তিনি দাবি করেন।

এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুবর্না রানী সাহা বলেন, এ ঘটনায় একটি অভিযোগ পেয়েছি। আজ অফিসে বসতে পারেনি অফিসে এসে তদন্তকারী কর্মকর্তা নিয়োগ করা হবে। এরপর তদন্তের ফলাফল এলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।