
স্টাফ রিপোর্টার ## গোটা বিশ্বে ঝড় উঠেছিল পর্দার চিরন্তন গোপনীয়তাকে ঘিরে। প্রতিদিন প্রকাশিত হয় অভিনেত্রীদের পা পিছলানোর তথ্য। এবার একটু ঘুরিয়ে স্বজনপোষণ নীতি। নেপথ্যে আছেন সদ্য স্মৃতিই দেশে পাড়ি দেওয়া সুশান্ত সিং রাজপূত। খেলা শুরু ক্যামেরার পেছনে। বলিউডের বাতাস এসে পৌছালো টলিউডে। সেই বাতাসে জমকালো পাল তুললেন অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র।
রেখেঢেকে কাউকেই ছাড়েন নি তিনি। একেএকে সামনে আসতে শুরু করলো কেচ্ছার কালিমা। যদিও অনেকে মনে করছেন, বাজার টলমল হলে অনেকেই এসব করে আলোতে ফিরতে চান।
শিক্ষিতা,সাহসিনী, একাকিনী, স্পষ্টবাদী শ্রীলেখা মিত্র দাবি করেছেন, ক্ষমতার অপব্যবহারের শিকার হয়েছেন তিনি। একাধিকবার পর্দার নায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত ও হতাশ হয়েছেন। অভিযোগের লক্ষ্য অনেকেই। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরাজিতে এমএ সম্পূর্ণ হওয়ার আগেই হোটেল তাজ বেঙ্গলে চাকরি পান। মঞ্চের অভিনেতা বাবার প্রেরণাতে পর্দায় আসা।
তাকে শুনতে হতো “একা আসেন না কেন ? বাবাকে সঙ্গে নিয়ে আসেন কেন ফিল্ম পাড়ায়?” কোনও খুঁটি না বেঁধে একই লড়াই করতেহয়। ছেলেদেরও কাস্টিং কাউচের শিকার হতে হয়। ক্ষমতার অপপ্রয়োগ করে কিছু মানুষ। নিজের ইউটিউবে শ্রীলেখা ১ ঘণ্টা ৯ মিনিটের ভিডিওটি পোস্ট করেছিলেন। তিনি সেখানে অনেক বিতর্কিত কথা বলেন।
শ্রীলেখা বলেন, ‘‘জীবনে কোনওদিন কোনও রাজনৈতিক দল করিনি। দাদাকে মঞ্চে উঠে রাখি পরাইনি। প্রযোজক-পরিচালকের সঙ্গে বিছানায় যাই নি। আমি ভয় পাব কাকে? কী হারানোর আছে আমার? ইন্ডাস্ট্রিতে আমার কোনও গডফাদার ছিল না। কিছুর বিনিময়ে ছবি দেওয়ার কেউ ছিল না। প্রথমে সিরিয়াল। এরপরওড়িয়া ছবি থেকে বাংলা ছবি। নায়িকার চরিত্র ডাক পেতাম না। তখন ইন্ডাস্ট্রি মানে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়। আমি তার নায়িকা নই, বোনের চরিত্রে অভিনয় করছি। কারণ আমার কোনও গডফাদার নেই। আমার কোনও অভিনেতার সঙ্গে প্রেমও নেই। তখন ঋতুপর্ণার সঙ্গে প্রসেনজিৎ-এর প্রেম। বুম্বাদার পায়ে পরিচালকরা বসে থাকত।ঋতুপর্ণা দেরী করলেও সবাই ওর জন্য অপেক্ষা করতো। “
স্বস্তিকা জানান, “বেশ। তা আমি এক পরিচালকের সঙ্গে তার জীবনের ১৭টা ছবির মধ্যে আড়াইখানা ছবি করেছি। কিন্তু তার সাথে সৌমিক হালদার ১১টা, অনুপম রায় ৯টা, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় ৭টা, যিশু সেনগুপ্ত ৭টা, অনির্বাণ ভট্টাচার্য ৬টা এবং পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় ৬টা কাজ করেছেন। এরা নিশ্চয় আরও বেশি করে বিছানায় শুয়ে আর প্রেম করে কাজগুলো পেয়েছেন?”
প্রযোজক অশোক ধানুকা জানান , ”আমি ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তকে প্রথম ফোন করেছিলাম ‘অন্নাদাতা’ ছবির জন্য। ঋতুপর্ণা সেসময় আমেরিকাতে ছিলেন, তাই আমি শ্রীলেখা মিত্রকে নিয়েছিলাম। শ্রীলেখা ‘অন্নদাতা’র আগে কোনও ছবিতে নায়িকা হননি। তাই আমি শ্রীলেখার উপর ভরসা করতে পারিনি। বুম্বাদা কোনওদিনই কাকে নিতে হবে বলে ঠিক করে দেননি।”
এখানেই শ্রীলেখা থামেননি। সৃজিত মুখোপাধ্যায়, কৌশিক গঙ্গোপাধ্য়ায়, শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্য়ায়ের ছবিতেও কাজ না পাওয়া নিয়ে ক্ষোভ জানান। টলিউড ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির আরও অনেক বিষয় নিয়েই মুখ খোলেন শ্রীলেখা মিত্র। কৌশিক গাঙ্গুলির ছবি মানেই চূর্ণী গাঙ্গুলি থাকবেন। অন্যের পরিচালনার ছবিতে চূর্ণীর কাজ কই? আসলে তার তো মুনমুন সেন, অপর্ণা সেনের মতো মা নেই আবার রঞ্জিত মল্লিক, সন্তু মুখার্জীর মতো বাবা নেই।
ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত জানান, ২০০১ -১০১৫ সাল পর্যন্ত প্রসেনজিৎ-ঋতুপর্ণা জুটির আর কোনও ছবি হয়নি। তারপরেও তিনি ইন্ডাস্ট্রিতে বিভিন্ন ছবি করে নিজেকে টিকিয়ে রাখতে পেরেছেন। তবে এই বিষয় নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে রাজি হননি প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়।