শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

খুলছে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার, প্রস্তাবনা পাঠিয়ে আগ্রহ প্রকাশ

আব্দুল লতিফ # # করোনাভাইরাস পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই ফের উন্মুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা জাগাচ্ছে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার। এরই মধ্যে গত ১০ ফেব্রুয়ারি শ্রমিক নেওয়ার আগ্রহ দেখিয়ে বাংলাদেশ সরকারকে একটি প্রস্তাবনা পাঠিয়েছে মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়। ওই প্রস্তাবনায় ‘কতসংখ্যক এজেন্সি কর্মী পাঠাবে’ তা নির্ধারণের কথা বলা হয়েছে। 
মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার কবে বাংলাদেশিদের জন্য খুলবে, কোন প্রক্রিয়ায় কর্মী যাবে- তা নির্ধারণে মঙ্গলবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুই দেশের জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের (জেডব্লিউজি) সভা হবে বলে জানিয়েছেন প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রী।  শ্রমবাজার উন্মুক্ত হলে মাত্র ছয় মাসে প্রায় চার লাখ শ্রমিক পাঠানো সম্ভব হবে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৪টায় অনলাইনে জেডব্লিউজির সভা হবে। মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ মুখ্য সহকারী সচিব সালিনা মোহাম্মদ সালি লুডিন ইমেইলে কুয়ালালামপুরের বাংলাদেশ হাইকমিশনের সভার যে আলোচ্যসূচি পাঠিয়েছেন, তাতে চারটি এজেন্ডা রয়েছে। এক নম্বরেই রয়েছে কতসংখ্যক এজেন্সি কর্মী পাঠাবে, তা নির্ধারণ। এরপর পর্যায়ক্রমে রয়েছে কর্মী নিয়োগের অনলাইন পদ্ধতি, বিদ্যমান সমঝোতা স্মারকের মেয়াদ শেষে নতুন চুক্তি এবং নতুন সমঝোতা স্মারক সইয়ের তারিখ।

এর আগে ২০০৯ সালে বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেওয়া বন্ধ করে দেয় মালয়েশিয়া। দীর্ঘ আলোচনার পর ২০১২ সালে সরকারি ব্যবস্থাপনায় (জিটুজি) কর্মী নিতে রাজি হয়। কিন্তু এ পদ্ধতি সফল না হওয়ায় ২০১৬ সালে বেসরকারি রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোকে যুক্ত করে জিটুজি প্লাস পদ্ধতিতে কর্মী নিয়োগের বিষয়ে দুই দেশ সমঝোতা স্মারক সই করে। আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি এর মেয়াদ শেষ হবে।

অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী হওয়ার পাশাপাশি, আধুনিক জীবনযাত্রা, ভালো উপার্জন আর সাংস্কৃতিক মিল থাকায় নিরিবিলি বসবাসের স্বপ্ন নিয়ে প্রতি বছর মালয়েশিয়ায় যান অসংখ্য কর্মী। বর্তমানে দেশটিতে রয়েছেন ১০ লাখেরও বেশি বাংলাদেশি।

সরকারি হিসাবে, সর্বশেষ ২০১৮ সালে কর্মী যাওয়ার সংখ্যা প্রায় এক লাখ ৭৬ হাজার। কিন্তু ওই বছরই সেপ্টেম্বরে দেশটির নতুন সরকার কর্মী নেওয়া বন্ধ করে দেওয়ায় এবং গত বছরজুড়ে করোনাভাইরাসের কারণে সেখানে কর্মী যাওয়ার সংখ্যা ছিল নামমাত্র। আবার দেশে ছুটি কাটাতে এসে সেখানে কর্মরত প্রায় ২৫ হাজার বাংলাদেশি করোনার কারণে আটকে রয়েছেন। এসব কর্মী এখন দিন গুনছেন ফিরে যাওয়ার।

শহিদুল ইসলাম নামে এক মালয়েশিয়া প্রবাসী বলেন, ৯৫ শতাংশ মালয়েশিয়ান প্রবাসীর ভিসা শেষ হয়ে গেছে। আমরা সরকারিভাবে সেগুলো অটোভাবে রিনিউউ করতে হবে।

চাহিদা থাকায় দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই শ্রমবাজারটি উন্মুক্ত হলে সরকারের বেঁধে দেওয়া খরচে কর্মী পাঠানোর কথা জানান এ খাতের ব্যবসায়ী ও বিশেষজ্ঞরা।

বায়রার মহাসচিব শামীম আহমেদ চৌধুরী নোমান বলেন, যারা বর্তমানে অবৈধভাবে মালয়েশিয়ায় অবস্থান করছেন তাদের বৈধ করার চেষ্টা চলছে। একই সঙ্গে করোনার কারণে যারা বাংলাদেশে অবস্থান করছেন তাদের পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে।

তবে, এবারের সুযোগ কাজে লাগাতে সিন্ডিকেটের ব্যাপারে সচেতন থাকার পরামর্শ তাদের।

ইস্টার্ট বে বাংলাদেশের স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন বাবুল বলেন, ওরা (মালয়েশিয়া) ২৫ অথবা ৩০ লাইসেন্সটা দিয়ে লোকবল নেবে। শ্রমিকরা এক লাখ ৬০ হাজার টাকার মধ্যে সেখানে যেতে পারবে। দেশটির কৃষি ও নির্মাণ খাতে প্রায় ৬ লাখ লোক পাঠানো যাবে।

সূত্রঃ সময় টিভি

আপনার মন্তব্য লিখুন

লেখকের সম্পর্কে

Shahriar Hossain

ইসরায়েল ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র আক্রমণ’ও চালায়,তার জবাব হবে কঠোর-ইরানের প্রেসিডেন্ট

খুলছে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার, প্রস্তাবনা পাঠিয়ে আগ্রহ প্রকাশ

প্রকাশের সময় : ০২:০৫:২১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২১
আব্দুল লতিফ # # করোনাভাইরাস পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই ফের উন্মুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা জাগাচ্ছে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার। এরই মধ্যে গত ১০ ফেব্রুয়ারি শ্রমিক নেওয়ার আগ্রহ দেখিয়ে বাংলাদেশ সরকারকে একটি প্রস্তাবনা পাঠিয়েছে মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়। ওই প্রস্তাবনায় ‘কতসংখ্যক এজেন্সি কর্মী পাঠাবে’ তা নির্ধারণের কথা বলা হয়েছে। 
মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার কবে বাংলাদেশিদের জন্য খুলবে, কোন প্রক্রিয়ায় কর্মী যাবে- তা নির্ধারণে মঙ্গলবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুই দেশের জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের (জেডব্লিউজি) সভা হবে বলে জানিয়েছেন প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রী।  শ্রমবাজার উন্মুক্ত হলে মাত্র ছয় মাসে প্রায় চার লাখ শ্রমিক পাঠানো সম্ভব হবে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৪টায় অনলাইনে জেডব্লিউজির সভা হবে। মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ মুখ্য সহকারী সচিব সালিনা মোহাম্মদ সালি লুডিন ইমেইলে কুয়ালালামপুরের বাংলাদেশ হাইকমিশনের সভার যে আলোচ্যসূচি পাঠিয়েছেন, তাতে চারটি এজেন্ডা রয়েছে। এক নম্বরেই রয়েছে কতসংখ্যক এজেন্সি কর্মী পাঠাবে, তা নির্ধারণ। এরপর পর্যায়ক্রমে রয়েছে কর্মী নিয়োগের অনলাইন পদ্ধতি, বিদ্যমান সমঝোতা স্মারকের মেয়াদ শেষে নতুন চুক্তি এবং নতুন সমঝোতা স্মারক সইয়ের তারিখ।

এর আগে ২০০৯ সালে বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেওয়া বন্ধ করে দেয় মালয়েশিয়া। দীর্ঘ আলোচনার পর ২০১২ সালে সরকারি ব্যবস্থাপনায় (জিটুজি) কর্মী নিতে রাজি হয়। কিন্তু এ পদ্ধতি সফল না হওয়ায় ২০১৬ সালে বেসরকারি রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোকে যুক্ত করে জিটুজি প্লাস পদ্ধতিতে কর্মী নিয়োগের বিষয়ে দুই দেশ সমঝোতা স্মারক সই করে। আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি এর মেয়াদ শেষ হবে।

অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী হওয়ার পাশাপাশি, আধুনিক জীবনযাত্রা, ভালো উপার্জন আর সাংস্কৃতিক মিল থাকায় নিরিবিলি বসবাসের স্বপ্ন নিয়ে প্রতি বছর মালয়েশিয়ায় যান অসংখ্য কর্মী। বর্তমানে দেশটিতে রয়েছেন ১০ লাখেরও বেশি বাংলাদেশি।

সরকারি হিসাবে, সর্বশেষ ২০১৮ সালে কর্মী যাওয়ার সংখ্যা প্রায় এক লাখ ৭৬ হাজার। কিন্তু ওই বছরই সেপ্টেম্বরে দেশটির নতুন সরকার কর্মী নেওয়া বন্ধ করে দেওয়ায় এবং গত বছরজুড়ে করোনাভাইরাসের কারণে সেখানে কর্মী যাওয়ার সংখ্যা ছিল নামমাত্র। আবার দেশে ছুটি কাটাতে এসে সেখানে কর্মরত প্রায় ২৫ হাজার বাংলাদেশি করোনার কারণে আটকে রয়েছেন। এসব কর্মী এখন দিন গুনছেন ফিরে যাওয়ার।

শহিদুল ইসলাম নামে এক মালয়েশিয়া প্রবাসী বলেন, ৯৫ শতাংশ মালয়েশিয়ান প্রবাসীর ভিসা শেষ হয়ে গেছে। আমরা সরকারিভাবে সেগুলো অটোভাবে রিনিউউ করতে হবে।

চাহিদা থাকায় দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই শ্রমবাজারটি উন্মুক্ত হলে সরকারের বেঁধে দেওয়া খরচে কর্মী পাঠানোর কথা জানান এ খাতের ব্যবসায়ী ও বিশেষজ্ঞরা।

বায়রার মহাসচিব শামীম আহমেদ চৌধুরী নোমান বলেন, যারা বর্তমানে অবৈধভাবে মালয়েশিয়ায় অবস্থান করছেন তাদের বৈধ করার চেষ্টা চলছে। একই সঙ্গে করোনার কারণে যারা বাংলাদেশে অবস্থান করছেন তাদের পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে।

তবে, এবারের সুযোগ কাজে লাগাতে সিন্ডিকেটের ব্যাপারে সচেতন থাকার পরামর্শ তাদের।

ইস্টার্ট বে বাংলাদেশের স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন বাবুল বলেন, ওরা (মালয়েশিয়া) ২৫ অথবা ৩০ লাইসেন্সটা দিয়ে লোকবল নেবে। শ্রমিকরা এক লাখ ৬০ হাজার টাকার মধ্যে সেখানে যেতে পারবে। দেশটির কৃষি ও নির্মাণ খাতে প্রায় ৬ লাখ লোক পাঠানো যাবে।

সূত্রঃ সময় টিভি