রোকনুজ্জামান রিপন ## চিকিৎসকদের পরামর্শ পুরোপুরি না মেনেই সোমবার থেকে ফের নির্বাচনী প্রচারে নেমে পড়তে চলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে তার সফর শুরু হবে ঝাড়গ্রাম জেলা থেকে। প্রচারের সময় তিনি চলাফেরা করবেন হুইলচেয়ারে। সফরে বেরুনোর আগে রবিবার নন্দীগ্রাম দিবসে (১৪ মার্চ) বাড়ি থেকে তৃণমূলের নির্বাচনী ইশতাহার প্রকাশ করবেন মমতা। বৃহস্পতিবার ইশতাহার প্রকাশের কথা ছিল। কিন্তু তার আকস্মিক দুর্ঘটনায় কর্মসূচির পরিবর্তন করতে হয়। খবর আনন্দবাজারের।
এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে শুক্রবার সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরেন মুখ্যমন্ত্রী। বুধবার নন্দীগ্রামে মনোনয়ন জমা দেওয়ার পরে কেন্দ্র সফরের সময়ই গাড়ির দরজা থেকে বাঁ পায়ে গুরুতর আঘাত পেয়েছিলেন তিনি। আঘাত লাগে শরীরের আরও কয়েকটি জায়গায়। দ্রুত সেখান থেকে তাকে হাসপাতালে আনা হয়।
পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরে চিকিৎসকেরা আঘাত লাগা পায়ে প্রাথমিক প্লাস্টার করেছিলেন। সেই প্লাস্টার খুলে এ দিন ফের পরীক্ষার পর আর একটি প্লাস্টার করা হয়। দেওয়া হয় বিশেষ ধরনের ‘প্লাস্টার শ্যু’। চিকিৎসকেরা চেয়েছিলেন, মুখ্যমন্ত্রী আরও ৪৮ ঘণ্টা হাসপাতালে পর্যবেক্ষণে থাকুন। তাছাড়াও, অন্তত ৭ দিন বিশ্রামের পরামর্শ ছিল চিকিৎসকদের। মমতা কিছুটা জোর করেই বাড়ি ফিরে যান। তাকে ৭ দিনের মাথায় ফের পরীক্ষা করার কথা চিকিৎসকদের।
বাড়ি ফিরে তৃণমূল নেত্রী বলেন, ‘আঘাত, যন্ত্রণা সব কিছুর পরেও বলছি, মানুষের কাছে গিয়ে আমাকে দাঁড়াতেই হবে। কারণ নির্বাচন একটি বড় রাজনৈতিক সংগ্রাম। সেখানে মানুষই আমার শক্তি। তাই নিজের কষ্টের থেকে মানুষের সামনে পৌঁছানো আমার কাছে বেশি জরুরি।’
পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে মমতার ঘোরাফেরা সবই আপাতত হুইল চেয়ারে। বন্দোবস্ত করা হয়েছে দু’টি হুইল চেয়ারের। একটি তার গাড়ির ‘সিট’ খুলে সেখানে বসানো হবে। ওই হুইলচেয়ারেই তিনি ঢালু পথ বেয়ে উঠবেন কপ্টার বা বিমানে। মঞ্চে ওঠার জন্য একইভাবে থাকবে ঢালু পথ।
হুইলচেয়ারে বসে বক্তৃতা করবেন মমতা। নির্বাচনী সফরের সময় বিভিন্ন জেলায় যেসব হোটেল বা গেস্ট হাউসে তিনি রাত্রিবাস করবেন, সেখানেও প্রয়োজনীয় বন্দোবস্ত রাখা হবে। মুখ্যমন্ত্রীর কালীঘাটের বাড়িতে তার থাকার ঘরটি অপ্রশস্ত। সেই ঘরেই একটি হুইলচেয়ার তার শয্যার সমান সমান উচ্চতায় রাখা হয়েছে যাতে চেয়ার থেকে খাটে ওঠা একটু সহজ হয়।
আঘাতের কারণে শুক্র ও শনিবারের দু’দিনের নির্বাচনী কর্মসূচি বাতিল করতে হয়েছে মমতাকে। তা নিয়েও তিনি ‘পীড়িত’। আগামী কর্মসূচি অনুযায়ী সোমবার তার সভা করার কথা ঝাড়গ্রামের লালগড় ও গোপীবল্লভপুরে। পরদিন, মঙ্গলবার তিনি পশ্চিম মেদিনীপুরের গড়বেতা, কেশিয়াড়ি ও খড়্গপুর গ্রামীণ বিধানসভা কেন্দ্রে তিনটি সভা করবেন বলে স্থির আছে। সংশ্লিষ্ট জেলাগুলোর তৃণমূল নেতৃত্বকেও সে কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।