মঙ্গলবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আকরাম খান করোনায় আক্রান্ত

স্পোর্টস রিপোর্টার ## করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন বিসিবি পরিচালক ও বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক আকরাম খান।

শনিবার (১০ এপ্রিল) সকালে সময়নিউজকে তিনি নিজেই নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেছেন, গতকাল টেষ্ট করার পর সন্ধ্যায় রিপোর্ট পাওয়ার পর তিনি জানতে পারেন যে তার করোনা পজিটিভ। এরপর থেকে তিনি বাসাই আইসোলেশনে আছেন। এছাড়া আজকে তার সহধর্মিনি সাবিনা আকরামের করোনা টেষ্ট করা হবে। একই সঙ্গে তাদের দুই সন্তানকে সুরক্ষিত জায়গায় রাখা হয়েছে।

গত ৩/৪ দিন গলা ব্যাথা ও ঠাণ্ডায় ভুগছিলেন। এই লক্ষণ দেখা দেওয়াই তিনি করোনা পরীক্ষা করেন। এরপরেই তিনি করোনা পজিটিভ হন।

আকরাম খানের পরিবার একটি ক্রিকেটীয় পরিবার। চট্টগ্রামের আন্টি খ্যাত নুসরাত ইকবাল ববি তার ভাবি। তার ভাতিজা নাফিস ইকবাল এবং তামিম ইকবাল বাংলাদেশ জাতীয় দলের হয়ে খেলেছেন। তারা দুই জনই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান। তামিম ইকবাল বর্তমান বিশ্ব ক্রিকেটে অতি মারমুখী ব্যাটসম্যানদের মধ্যে একজন।

আকরাম খান ১৯৯৮ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত ৮টি টেস্ট ও ৪৪টি একদিনের আন্তর্জাতিক খেলায় বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন। তিনি ১৫টি সীমিত ওভারের একদিনের খেলায় বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেন। মারখুটে ব্যাটসম্যান আকরাম খান প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে চট্টগ্রাম বিভাগ দলের হয়ে খেলেন।

ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের উদ্বোধনী টেস্ট ম্যাচে আকরাম খান দলে ছিলেন। উদ্বোধনী টেস্ট থেকে শুরু করে তিনি বাংলাদেশের হয়ে ৮টি টেস্ট ম্যাচ খেলেছেন। তার ব্যাটিং গড় ১৬.১৮ এবং সর্বোচ্চ রান ৪৪ যা ২০০১ সালে হারারেতে হয়েছিল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে।

১৯৮৮ সালের অক্টোবর মাসে আকরাম খানের একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচে অভিষেক ঘটে তার শহর চট্টগ্রামেই। তিনি সেদিন ৮ নম্বর অবস্থানে খেলতে নামেন এবং দুর্দান্ত পাকিস্তানি বোলারদের মোকাবেলা করে ৩৫ বলে ২১ রান করেন।

১৯৯৫ সালে শারজায় অনুষ্ঠিত এশিয়া কাপে তিনি বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেন। তার প্রথম অর্ধ-শতরান আসে কলম্বোয় ১৯৯৭ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে। তিনি এবং আতহার আলী খান ১১০ রানের জুটি গড়েন। তার সর্বোচ্চ একদিনের আন্তর্জাতিক রান ৬৫ আসে ১৯৯৯ সালে কেনিয়ার বিপক্ষে ঢাকায়।

তিনি ১৯৯৯ এবং ২০০৩ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করেন। ৪২ রান করে ১৯৯৯ সালে বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে স্মরণীয় জয়ে তিনি বড় অবদান রাখেন।

১৯৯৪ থেকে ৯৫ মৌসুমে অত্যন্ত প্রতিকূল সময়ে আকরাম খান বাংলাদেশ জাতীয় দলের অধিনায়কত্ব গ্রহণ করেন। যখন দল সবেমাত্র আইসিসি ট্রফি ১৯৯৪ থেকে হতাশাব্যাঞ্জক ফলাফল করে ফিরেছে এবং দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে তখন ঐক্যের অভাব ও অসন্তোষ ছিল। যদিও অধিনায়ক হিসেবে তার তেমন কোন অভিজ্ঞতা ছিল না তবু এই ঝুঁকি নেন তিনি।

১৯৯৪ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত চারদেশীয় ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় তার দল ফাইনাল খেলে এবং তিনি সেই ম্যাচে সাহসিকতাপূর্ন ব্যাটিং করে ৬৬ রান করেন যদিও ৫২ রানে বাংলাদেশ দল ভারত এ দলের কাছে পরাজিত হয়।

তার অধিনাকয়ত্বে বাংলাদেশ ক্রিকেটের সবচেয়ে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জয়টি আসে ১৯৯৭ সালে মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে অনুষ্ঠিত আইসিসি ট্রফি চ্যাম্পিয়ন হওয়া। যার মাধ্যমে বাংলাদেশ দল বিশ্বকাপ ক্রিকেটে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে। ১৯৯৮ সালে আকরাম খানের হাত ধরেই কেনিয়ার বিপক্ষে বাংলাদেশ তার প্রথম একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে জয় পায়।

আপনার মন্তব্য লিখুন

লেখকের সম্পর্কে

Shahriar Hossain

জনপ্রিয়

পঞ্চগড়ে কৃষকের অধিকার ও অন্তর্ভুক্তিকরন এবং নারী ও শিশুর সহিংসতারোধে গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত

আকরাম খান করোনায় আক্রান্ত

প্রকাশের সময় : ১০:৫২:৫১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১০ এপ্রিল ২০২১

স্পোর্টস রিপোর্টার ## করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন বিসিবি পরিচালক ও বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক আকরাম খান।

শনিবার (১০ এপ্রিল) সকালে সময়নিউজকে তিনি নিজেই নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেছেন, গতকাল টেষ্ট করার পর সন্ধ্যায় রিপোর্ট পাওয়ার পর তিনি জানতে পারেন যে তার করোনা পজিটিভ। এরপর থেকে তিনি বাসাই আইসোলেশনে আছেন। এছাড়া আজকে তার সহধর্মিনি সাবিনা আকরামের করোনা টেষ্ট করা হবে। একই সঙ্গে তাদের দুই সন্তানকে সুরক্ষিত জায়গায় রাখা হয়েছে।

গত ৩/৪ দিন গলা ব্যাথা ও ঠাণ্ডায় ভুগছিলেন। এই লক্ষণ দেখা দেওয়াই তিনি করোনা পরীক্ষা করেন। এরপরেই তিনি করোনা পজিটিভ হন।

আকরাম খানের পরিবার একটি ক্রিকেটীয় পরিবার। চট্টগ্রামের আন্টি খ্যাত নুসরাত ইকবাল ববি তার ভাবি। তার ভাতিজা নাফিস ইকবাল এবং তামিম ইকবাল বাংলাদেশ জাতীয় দলের হয়ে খেলেছেন। তারা দুই জনই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান। তামিম ইকবাল বর্তমান বিশ্ব ক্রিকেটে অতি মারমুখী ব্যাটসম্যানদের মধ্যে একজন।

আকরাম খান ১৯৯৮ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত ৮টি টেস্ট ও ৪৪টি একদিনের আন্তর্জাতিক খেলায় বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন। তিনি ১৫টি সীমিত ওভারের একদিনের খেলায় বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেন। মারখুটে ব্যাটসম্যান আকরাম খান প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে চট্টগ্রাম বিভাগ দলের হয়ে খেলেন।

ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের উদ্বোধনী টেস্ট ম্যাচে আকরাম খান দলে ছিলেন। উদ্বোধনী টেস্ট থেকে শুরু করে তিনি বাংলাদেশের হয়ে ৮টি টেস্ট ম্যাচ খেলেছেন। তার ব্যাটিং গড় ১৬.১৮ এবং সর্বোচ্চ রান ৪৪ যা ২০০১ সালে হারারেতে হয়েছিল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে।

১৯৮৮ সালের অক্টোবর মাসে আকরাম খানের একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচে অভিষেক ঘটে তার শহর চট্টগ্রামেই। তিনি সেদিন ৮ নম্বর অবস্থানে খেলতে নামেন এবং দুর্দান্ত পাকিস্তানি বোলারদের মোকাবেলা করে ৩৫ বলে ২১ রান করেন।

১৯৯৫ সালে শারজায় অনুষ্ঠিত এশিয়া কাপে তিনি বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেন। তার প্রথম অর্ধ-শতরান আসে কলম্বোয় ১৯৯৭ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে। তিনি এবং আতহার আলী খান ১১০ রানের জুটি গড়েন। তার সর্বোচ্চ একদিনের আন্তর্জাতিক রান ৬৫ আসে ১৯৯৯ সালে কেনিয়ার বিপক্ষে ঢাকায়।

তিনি ১৯৯৯ এবং ২০০৩ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করেন। ৪২ রান করে ১৯৯৯ সালে বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে স্মরণীয় জয়ে তিনি বড় অবদান রাখেন।

১৯৯৪ থেকে ৯৫ মৌসুমে অত্যন্ত প্রতিকূল সময়ে আকরাম খান বাংলাদেশ জাতীয় দলের অধিনায়কত্ব গ্রহণ করেন। যখন দল সবেমাত্র আইসিসি ট্রফি ১৯৯৪ থেকে হতাশাব্যাঞ্জক ফলাফল করে ফিরেছে এবং দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে তখন ঐক্যের অভাব ও অসন্তোষ ছিল। যদিও অধিনায়ক হিসেবে তার তেমন কোন অভিজ্ঞতা ছিল না তবু এই ঝুঁকি নেন তিনি।

১৯৯৪ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত চারদেশীয় ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় তার দল ফাইনাল খেলে এবং তিনি সেই ম্যাচে সাহসিকতাপূর্ন ব্যাটিং করে ৬৬ রান করেন যদিও ৫২ রানে বাংলাদেশ দল ভারত এ দলের কাছে পরাজিত হয়।

তার অধিনাকয়ত্বে বাংলাদেশ ক্রিকেটের সবচেয়ে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জয়টি আসে ১৯৯৭ সালে মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে অনুষ্ঠিত আইসিসি ট্রফি চ্যাম্পিয়ন হওয়া। যার মাধ্যমে বাংলাদেশ দল বিশ্বকাপ ক্রিকেটে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে। ১৯৯৮ সালে আকরাম খানের হাত ধরেই কেনিয়ার বিপক্ষে বাংলাদেশ তার প্রথম একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে জয় পায়।