শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

ভারতে মন্ত্রী-সাংবাদিকসহ তিন শতাধিক ব্যক্তির ফোন হ্যাক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক ।।
ভারতের বিভিন্ন মন্ত্রী, বিরোধী নেতা, সাংবাদিকসহ গুরুত্বপূর্ণ তিন শতাধিক ব্যক্তির ফোন হ্যাক হয়েছে। ইসরায়েলি স্পাইওয়্যার পেগাসাস ব্যবহার করে এসব ফোন হ্যাক করা হয়েছে। ঘটনার শিকার ব্যক্তিদের তালিকায় রয়েছেন দ্য হিন্দুস্তান টাইমস, ইন্ডিয়া টুডে, নেটওয়ার্ক ১৮, দ্য হিন্দু এবং ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস-সহ প্রথম সারির বেশ কিছু সাংবাদমাধ্যমের শীর্ষস্থানীয় সাংবাদিকরা। রয়েছেন রাজনীতিক, ব্যবসায়ী, সরকারি কর্মকর্তা, বিজ্ঞানী, সমাজকর্মীরাও। সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়্যার-এর তথ্য বলছে, বেশিরভাগ হ্যাক করা হয়েছে ২০১৮ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে।
হ্যাকিংয়ের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের তালিকায় রয়েছেন ৪০ জনেরও বেশি সাংবাদিক। তিন জন বিরোধী নেতা। দুই জন মোদি সরকারের মন্ত্রী। রয়েছেন ভারতের নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর বর্তমান ও সাবেক প্রধান এবং বহু ব্যবসায়ী।
বিভিন্ন দেশের ‘কর্তৃত্ববাদী’ সরকারগুলোর বিরুদ্ধে এনএসও গ্রুপ থেকে এই স্পাইওয়্যার কিনে নিজ দেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ওপর নজরদারির অভিযোগ নতুন নয়। এনএসও গ্রুপ-ও বলছে, শুধু সরকারি ক্রেতাদের কাছেই এই ফোন হ্যাকিং সফটওয়্যার বিক্রি করা হয়। তবে মোদি সরকারের দাবি, ভারতের সরকারি এজেন্সিগুলোর তরফে ‘কোনও অনুমোদনহীন নজরদারি’ চালানো হয়নি। সরকারের বিরুদ্ধে হ্যাকিংয়ের যে অভিযোগ করা হচ্ছে সেটিই বরং ভিত্তিহীন।
মোদি সরকারের তরফে আরও বলা হয়েছে, ভারত একটি মজবুত গণতান্ত্রিক দেশ। এখানে সব নাগরিকের গোপনীয় রক্ষার বিষয়টি সুনিশ্চিত করা হয়। এই প্রতিশ্রুতি বজায় রাখতে ২০১৯-এ পার্সোনাল ডেটা প্রোটেকশন বিল আনা হয়েছে। ২০২১-এ আনা হয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি আইন, যাতে প্রত্যেকের ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষিত থাকে।
 বিজেপি-র রাজ্যসভার সদস্য সুব্রহ্মণ্যম স্বামী অভিযোগ তোলেন, পেগাসাস আড়ি পাতছে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের ফোনে। পাশাপাশি, আড়ি পাতা হচ্ছে মোদির মন্ত্রিসভার সদস্যদের ফোনে এবং আরএসএস নেতাদের ফোনেও। তিনি লেখেন, এই বিষয়ে একটি রিপোর্টও নাকি শিগগিরই প্রকাশ পাবে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে।
বিস্ফোরক এই দাবি করে টুইটে স্বামী লেখেন, কাদের ফোনে আড়ি পাতা হচ্ছে, সেই তালিকা বিস্তারিত পেলেই তিনি প্রকাশ করবেন। সেই টুইটের পাল্টা উত্তর দেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন। তিনি ওই আড়িপাতার তালিকায় শুধু যুক্ত করে দেন অনেক বিরোধী দলের সদস্যও’। অর্থাৎ, বিরোধী দলের সদস্যদের ফোনেও আড়ি পাতা হচ্ছে বলে তার অভিযোগ।
টুইট করেন পি চিদাম্বরমের পুত্র কার্তি চিদাম্বরমও। তিনিও পেগসাসের কথা উল্লেখ করেন। তবে স্বামীর মতো স্পষ্ট করে নয়। তিনি টুইটারে লেখেন, ‘…পেগাসাস বিস্ফোরণ ঘটাতে চলেছে।’
২০১৯ সালের অক্টোবর মাসে খবরের শিরোনামে আসে পেগাসাস। সেখানে বলা হয়, সারা পৃথিবীর প্রায় এক হাজার ৪০০ জনের ফোনে আড়ি পাতা হয়েছিল। সেই তালিকায় ছিলেন কূটনীতিক, নেতা, সাংবাদিক ও সরকারি কর্মকর্তারা। ভারতের ব্যবহারকারীরাও ফাঁদে পা দিয়েছিলেন। তালিকায় ছিলেন গবেষক, দলিত আন্দোলনকারী ও সাংবাদিকরা। সেই সময়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ দাবি করেছিলেন, কেন্দ্রীয় সরকার পেগাসাসের কোনও অনৈতিক ব্যবহার করেনি। সূত্র: দ্য ওয়ার, আনন্দবাজার, হিন্দুস্তান টাইমস, এনডিটিভি।

রাজনীতিতে নাম লেখাতে যাচ্ছেন সানিয়া মির্জা

ভারতে মন্ত্রী-সাংবাদিকসহ তিন শতাধিক ব্যক্তির ফোন হ্যাক

প্রকাশের সময় : ১০:৩২:৪০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৯ জুলাই ২০২১
আন্তর্জাতিক ডেস্ক ।।
ভারতের বিভিন্ন মন্ত্রী, বিরোধী নেতা, সাংবাদিকসহ গুরুত্বপূর্ণ তিন শতাধিক ব্যক্তির ফোন হ্যাক হয়েছে। ইসরায়েলি স্পাইওয়্যার পেগাসাস ব্যবহার করে এসব ফোন হ্যাক করা হয়েছে। ঘটনার শিকার ব্যক্তিদের তালিকায় রয়েছেন দ্য হিন্দুস্তান টাইমস, ইন্ডিয়া টুডে, নেটওয়ার্ক ১৮, দ্য হিন্দু এবং ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস-সহ প্রথম সারির বেশ কিছু সাংবাদমাধ্যমের শীর্ষস্থানীয় সাংবাদিকরা। রয়েছেন রাজনীতিক, ব্যবসায়ী, সরকারি কর্মকর্তা, বিজ্ঞানী, সমাজকর্মীরাও। সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়্যার-এর তথ্য বলছে, বেশিরভাগ হ্যাক করা হয়েছে ২০১৮ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে।
হ্যাকিংয়ের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের তালিকায় রয়েছেন ৪০ জনেরও বেশি সাংবাদিক। তিন জন বিরোধী নেতা। দুই জন মোদি সরকারের মন্ত্রী। রয়েছেন ভারতের নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর বর্তমান ও সাবেক প্রধান এবং বহু ব্যবসায়ী।
বিভিন্ন দেশের ‘কর্তৃত্ববাদী’ সরকারগুলোর বিরুদ্ধে এনএসও গ্রুপ থেকে এই স্পাইওয়্যার কিনে নিজ দেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ওপর নজরদারির অভিযোগ নতুন নয়। এনএসও গ্রুপ-ও বলছে, শুধু সরকারি ক্রেতাদের কাছেই এই ফোন হ্যাকিং সফটওয়্যার বিক্রি করা হয়। তবে মোদি সরকারের দাবি, ভারতের সরকারি এজেন্সিগুলোর তরফে ‘কোনও অনুমোদনহীন নজরদারি’ চালানো হয়নি। সরকারের বিরুদ্ধে হ্যাকিংয়ের যে অভিযোগ করা হচ্ছে সেটিই বরং ভিত্তিহীন।
মোদি সরকারের তরফে আরও বলা হয়েছে, ভারত একটি মজবুত গণতান্ত্রিক দেশ। এখানে সব নাগরিকের গোপনীয় রক্ষার বিষয়টি সুনিশ্চিত করা হয়। এই প্রতিশ্রুতি বজায় রাখতে ২০১৯-এ পার্সোনাল ডেটা প্রোটেকশন বিল আনা হয়েছে। ২০২১-এ আনা হয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি আইন, যাতে প্রত্যেকের ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষিত থাকে।
 বিজেপি-র রাজ্যসভার সদস্য সুব্রহ্মণ্যম স্বামী অভিযোগ তোলেন, পেগাসাস আড়ি পাতছে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের ফোনে। পাশাপাশি, আড়ি পাতা হচ্ছে মোদির মন্ত্রিসভার সদস্যদের ফোনে এবং আরএসএস নেতাদের ফোনেও। তিনি লেখেন, এই বিষয়ে একটি রিপোর্টও নাকি শিগগিরই প্রকাশ পাবে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে।
বিস্ফোরক এই দাবি করে টুইটে স্বামী লেখেন, কাদের ফোনে আড়ি পাতা হচ্ছে, সেই তালিকা বিস্তারিত পেলেই তিনি প্রকাশ করবেন। সেই টুইটের পাল্টা উত্তর দেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন। তিনি ওই আড়িপাতার তালিকায় শুধু যুক্ত করে দেন অনেক বিরোধী দলের সদস্যও’। অর্থাৎ, বিরোধী দলের সদস্যদের ফোনেও আড়ি পাতা হচ্ছে বলে তার অভিযোগ।
টুইট করেন পি চিদাম্বরমের পুত্র কার্তি চিদাম্বরমও। তিনিও পেগসাসের কথা উল্লেখ করেন। তবে স্বামীর মতো স্পষ্ট করে নয়। তিনি টুইটারে লেখেন, ‘…পেগাসাস বিস্ফোরণ ঘটাতে চলেছে।’
২০১৯ সালের অক্টোবর মাসে খবরের শিরোনামে আসে পেগাসাস। সেখানে বলা হয়, সারা পৃথিবীর প্রায় এক হাজার ৪০০ জনের ফোনে আড়ি পাতা হয়েছিল। সেই তালিকায় ছিলেন কূটনীতিক, নেতা, সাংবাদিক ও সরকারি কর্মকর্তারা। ভারতের ব্যবহারকারীরাও ফাঁদে পা দিয়েছিলেন। তালিকায় ছিলেন গবেষক, দলিত আন্দোলনকারী ও সাংবাদিকরা। সেই সময়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ দাবি করেছিলেন, কেন্দ্রীয় সরকার পেগাসাসের কোনও অনৈতিক ব্যবহার করেনি। সূত্র: দ্য ওয়ার, আনন্দবাজার, হিন্দুস্তান টাইমস, এনডিটিভি।