মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫, ৩০ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মানুষ করোনা টেস্ট করাতে হাসপাতাল-কেন্দ্রগুলোতে ভিড় করছে: ফখরুল

ফাইল ছবি

স্টাফ রিপোর্টার ।।

সরকারের অব্যবস্থাপনার কারণে বেশিরভাগ মানুষ করোনা টেস্ট করতে পারছে না বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। রোববার রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির মহাসচিব এ অভিযোগ করেন।

এ সময় বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘শনিবার বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে স্থায়ী কমিটির সভা পর্যবেক্ষণ করে যে, ভারতীয় ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট সারাদেশে ভয়াবহভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট সংক্রমণের হার দ্রুত গতিতে বৃদ্ধি পাওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।’

তিনি বলেন, ‘মানুষ করোনা পরীক্ষার জন্য জেলা হাসপাতাল ও পরীক্ষা কেন্দ্রগুলোতে ভিড় করছে। কিন্তু সরকারের নীতি ও অব্যবস্থাপনার কারণে বেশিরভাগ মানুষ করোনা টেস্ট করাতে পারছে না। শুরু থেকেই স্বাস্থ্য অধিদপ্তর করোনা টেস্টের ক্ষেত্রে চূড়ান্তভাবে ব্যর্থ হচ্ছে। ফলে দেশের মানুষের কাছে সঠিক তথ্য প্রকাশিত হচ্ছে না। অন্য দিকে সংক্রমিত ব্যক্তিরা হাসপাতালে বেড ও অক্সিজেন পাচ্ছে না।’

তিনি বলেন, ‘সরকার উদ্দেশ্যমূলকভাবে সংক্রমণের সংখ্যা এবং মৃত্যুর সংখ্যার প্রকৃত তথ্য না দিয়ে জনগণের সাথে প্রতারণা করছে। হাসপাতালে সংবাদকর্মীদের তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে বিভিন্ন বাধা নিষেধ আরোপ করেছে। ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের ভয়ে সংবাদকর্মীগণ প্রকৃত তথ্য তুলে ধরতে পারছেন না। অন্য দিকে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় পরিস্থিতি আরো জটিল আকার ধারণ করেছে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দেশের নাগরিকদের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক টিকা সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও বিতরণের সুনির্দিষ্ট রোড ম্যাপ সরকার এখন পর্যন্ত জনগণের সামনে দিতে পারেনি।’

তিনি বলেন, ‘সরকার অবলীলায় জনগণকে ভুল তথ্য দিয়ে প্রতারণা করছে। এক দিকে সরকার বলছে প্রতি সপ্তাহে ৬০ লাখ টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে, অথচ গত ৭ মাসেও ৬০ লাখ টীকা দিতে পারেনি।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সরকার টিকা প্রাপ্তির কোনো নিশ্চয়তা ছাড়াই প্রতি মাসে ১ কোটি টিকা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। যা জনগণের সাথে প্রতারণা ব্যতীত কিছুই নয়।’

তিনি বলেন, ‘প্রতি মাসে ১ কোটি টিকা দেওয়ার জন্য টিকা প্রাপ্তির উৎস সরকার এখন পর্যন্ত জানাতে পারেনি। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর এইসব উক্তি এখন হাস্যকর হয়ে উঠেছে। এগুলো যে ফাঁকা বুলি, তা বুঝতে বাকি নেই জনগণের।’ এসব ফাঁকা বুলি না আওড়িয়ে অবিলম্বে আবারো টিকা সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও বিতরণের সুনির্দিষ্ট রোড ম্যাপ জনগণের সামনে তুলে ধরার আহ্বান জানান তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘অপরিকল্পিত লকডাউনে জনগণের ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে। বিএনপি এরআগে অনেকবার বলেছে, দিন আনে দিন খাওয়া প্রান্তিক মানুষ, অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কর্মরত, পরিবহন শ্রমিক, মাঝি, রিকশা ও ভ্যান শ্রমিকসহ সকল প্রকার নিম্ন আয়ের মানুষের খাদ্য সহায়তা এবং আর্থিক সহায়তা ব্যতীত লকডাউন কখনও কার্যকর হবে না। এজন্যই বিএনপি এসব মানুষের জন্য এককালীন ১৫ হাজার টাকা অনুদান হিসেবে প্রদানের প্রস্তাব করেছিল। সরকার সেদিকে না গিয়ে দলীয় লোকদের ২ হাজার ৫০০ টাকা করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দুর্গত মানুষের কাছে এই সহযোগিতা পৌঁছাচ্ছে না।’

তিনি বলেন, ‘একদিকে গণপরিবহন বন্ধ, অন্যদিকে কারখানায় কাজে যোগ দেওয়ার নির্দেশে তারা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটা প্রহসন ছাড়া আর কিছু নয়। অন্যদিকে ঢাকার বাইরের শ্রমিকরা এবং ঢাকার জনগণ ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের ভয়াবহ সংক্রমণের শিকার হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ছে।’

মির্জা ফখরুল দলের পক্ষ থেকে অবিলম্বে এই পরিস্থিতির পরিবর্তনের জন্য সরকারকে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘অযোগ্যতা, দুর্নীতি পরায়ণতা এবং আন্তরিকতার অভাবে এসব আত্মহননকারী সিদ্ধান্ত সরকার গ্রহণ করছে। করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় চরম ব্যর্থতার জন্য সকল দায় নিয়ে সরকারের পদত্যাগ করা উচিত।’

জনপ্রিয়

পেট্টাপোলে বিজিবি-বিএসএফ সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত

মানুষ করোনা টেস্ট করাতে হাসপাতাল-কেন্দ্রগুলোতে ভিড় করছে: ফখরুল

প্রকাশের সময় : ০২:৩৭:০১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ অগাস্ট ২০২১

স্টাফ রিপোর্টার ।।

সরকারের অব্যবস্থাপনার কারণে বেশিরভাগ মানুষ করোনা টেস্ট করতে পারছে না বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। রোববার রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির মহাসচিব এ অভিযোগ করেন।

এ সময় বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘শনিবার বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে স্থায়ী কমিটির সভা পর্যবেক্ষণ করে যে, ভারতীয় ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট সারাদেশে ভয়াবহভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট সংক্রমণের হার দ্রুত গতিতে বৃদ্ধি পাওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।’

তিনি বলেন, ‘মানুষ করোনা পরীক্ষার জন্য জেলা হাসপাতাল ও পরীক্ষা কেন্দ্রগুলোতে ভিড় করছে। কিন্তু সরকারের নীতি ও অব্যবস্থাপনার কারণে বেশিরভাগ মানুষ করোনা টেস্ট করাতে পারছে না। শুরু থেকেই স্বাস্থ্য অধিদপ্তর করোনা টেস্টের ক্ষেত্রে চূড়ান্তভাবে ব্যর্থ হচ্ছে। ফলে দেশের মানুষের কাছে সঠিক তথ্য প্রকাশিত হচ্ছে না। অন্য দিকে সংক্রমিত ব্যক্তিরা হাসপাতালে বেড ও অক্সিজেন পাচ্ছে না।’

তিনি বলেন, ‘সরকার উদ্দেশ্যমূলকভাবে সংক্রমণের সংখ্যা এবং মৃত্যুর সংখ্যার প্রকৃত তথ্য না দিয়ে জনগণের সাথে প্রতারণা করছে। হাসপাতালে সংবাদকর্মীদের তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে বিভিন্ন বাধা নিষেধ আরোপ করেছে। ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের ভয়ে সংবাদকর্মীগণ প্রকৃত তথ্য তুলে ধরতে পারছেন না। অন্য দিকে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় পরিস্থিতি আরো জটিল আকার ধারণ করেছে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দেশের নাগরিকদের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক টিকা সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও বিতরণের সুনির্দিষ্ট রোড ম্যাপ সরকার এখন পর্যন্ত জনগণের সামনে দিতে পারেনি।’

তিনি বলেন, ‘সরকার অবলীলায় জনগণকে ভুল তথ্য দিয়ে প্রতারণা করছে। এক দিকে সরকার বলছে প্রতি সপ্তাহে ৬০ লাখ টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে, অথচ গত ৭ মাসেও ৬০ লাখ টীকা দিতে পারেনি।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সরকার টিকা প্রাপ্তির কোনো নিশ্চয়তা ছাড়াই প্রতি মাসে ১ কোটি টিকা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। যা জনগণের সাথে প্রতারণা ব্যতীত কিছুই নয়।’

তিনি বলেন, ‘প্রতি মাসে ১ কোটি টিকা দেওয়ার জন্য টিকা প্রাপ্তির উৎস সরকার এখন পর্যন্ত জানাতে পারেনি। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর এইসব উক্তি এখন হাস্যকর হয়ে উঠেছে। এগুলো যে ফাঁকা বুলি, তা বুঝতে বাকি নেই জনগণের।’ এসব ফাঁকা বুলি না আওড়িয়ে অবিলম্বে আবারো টিকা সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও বিতরণের সুনির্দিষ্ট রোড ম্যাপ জনগণের সামনে তুলে ধরার আহ্বান জানান তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘অপরিকল্পিত লকডাউনে জনগণের ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে। বিএনপি এরআগে অনেকবার বলেছে, দিন আনে দিন খাওয়া প্রান্তিক মানুষ, অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কর্মরত, পরিবহন শ্রমিক, মাঝি, রিকশা ও ভ্যান শ্রমিকসহ সকল প্রকার নিম্ন আয়ের মানুষের খাদ্য সহায়তা এবং আর্থিক সহায়তা ব্যতীত লকডাউন কখনও কার্যকর হবে না। এজন্যই বিএনপি এসব মানুষের জন্য এককালীন ১৫ হাজার টাকা অনুদান হিসেবে প্রদানের প্রস্তাব করেছিল। সরকার সেদিকে না গিয়ে দলীয় লোকদের ২ হাজার ৫০০ টাকা করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দুর্গত মানুষের কাছে এই সহযোগিতা পৌঁছাচ্ছে না।’

তিনি বলেন, ‘একদিকে গণপরিবহন বন্ধ, অন্যদিকে কারখানায় কাজে যোগ দেওয়ার নির্দেশে তারা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটা প্রহসন ছাড়া আর কিছু নয়। অন্যদিকে ঢাকার বাইরের শ্রমিকরা এবং ঢাকার জনগণ ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের ভয়াবহ সংক্রমণের শিকার হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ছে।’

মির্জা ফখরুল দলের পক্ষ থেকে অবিলম্বে এই পরিস্থিতির পরিবর্তনের জন্য সরকারকে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘অযোগ্যতা, দুর্নীতি পরায়ণতা এবং আন্তরিকতার অভাবে এসব আত্মহননকারী সিদ্ধান্ত সরকার গ্রহণ করছে। করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় চরম ব্যর্থতার জন্য সকল দায় নিয়ে সরকারের পদত্যাগ করা উচিত।’