শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মহাশূন্যে বিলাসবহুল হোটেল

বার্তাকণ্ঠ ডেস্ক।। 
বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তির অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে পর্যটনশিল্প এক নতুন মাত্রায় উন্নীত হয়েছে। মানুষের দৃষ্টি এখন পৃথিবীর সীমানা ছাড়িয়ে অন্তহীন এবং রহস্যময় মহাকাশের দিকে।
এ বছর জুলাই মাসেই ভার্জিন গ্যালাকটিকের প্রতিষ্ঠাতা স্যার রিচার্ড ব্যার্নসন এবং বিশ্বখ্যাত আমাজানের কর্ণধার জেফ বেজোস উদ্বোধন করলেন মহাকাশ পর্যটনের। তারা দুজনেই পৃথিবী থেকে মহাকাশে খানিকটা কম-বেশি ৬০ মাইল দূরত্বে কার্মান লাইন ছুঁয়ে মাত্র চার-পাঁচ মিনিট সেখানে ভরশূন্যতা উপভোগ করে নিরাপদে পৃথিবীতে ফিরে এসেছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বেঁধে দেওয়া এই কার্মান লাইনের দূরত্ব থেকেই শুরু হয় মহাকাশ।
কিন্তু এবার আর তা নয়, পৃথিবী ছেড়ে রীতিমতো ১৯০০ কিলোমিটার অর্থাত্ ১১৮১ মাইল দূর মহাকাশে পুরোদস্তুর এক একটি পূর্ণাঙ্গ এবং বিলাসবহুল হোটেল। ক্যালিফোর্নিয়ার স্টার্ট-আপ, অরবিটাল অ্যাসেম্বলি কর্পোরেশন ‘ভয়েজার স্টেশন’ নামে এই হোটেলটি চালু করার ঘোষণা দিয়েছে। এটিই হতে যাচ্ছে পৃথিবীর কক্ষপথে প্রথম স্পেস হোটেল। হোটেলটি চালু হবে ২০২৭ সাল থেকে।
মাটির পৃথিবীতে একটি হোটেলে যা যা থাকে, সেখানেও সেসবের কমতি হবে না। সেখানে থাকবে রেস্তোরাঁ, জিম, বার, সিনেমা হল, কনসার্টসহ সবরকম বিনোদনের ব্যবস্থা। তবে আকার আর গঠনে আছে বিস্তর পার্থক্য, হোটেলটি হবে ৪৮৮ মিটার (১৬০০ ফুট) ব্যাসের চক্রাকার, দেখতে অনেকটা বিশালকায় চাকতির মতন। মোট ২৪টি মডিউল বা কক্ষ থাকবে। প্রতিটি কক্ষ হবে ২৪০ বর্গমিটার বা ২৫৮৫ বর্গফুটের। মহাশূন্যে মডিউল এবং অন্যান্য যন্ত্রাংশ সংযোজন করা হবে পৃথিবী থেকে নিয়ন্ত্রিত রোবট দ্বারা। এ হোটেলে একসঙ্গে ৪৫০ জন অতিথির থাকার ব্যবস্থা থাকবে। আর তাঁদের সেবার জন্য থাকবে ১৫০ জন ত্বরিৎকর্মা কর্মচারী। প্রতি রাতের জন্য কত ভাড়া পড়বে, তা এখনো নির্দিষ্ট করে না বলা হলেও, তা যে তিন লাখ ডলারের নিচে হবে না, এমনটিই বলছেন অনেকেই।
হোটেলটি কক্ষপথে প্রতি ৯০ মিনিটে একবার পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে আসবে এবং সেইসঙ্গে নিজের অক্ষের ওপর প্রতি এক মিনিটে একবার ঘুরে আসবে। অনবরত এমন ঘূর্ণনের ফলে সেখানে কৃত্রিম অভিকর্ষ বল তৈরি হবে। এই অভিকর্ষ বলের কারণে অতিথিরা ভরশূন্য হয়ে ভেসে বেড়াবেন না, হোটেলের ভিতর হেঁটে হেঁটে ঘুরে বেড়াতে পারবেন। তবে এই অভিকর্ষ বল হবে পৃথিবীর অভিকর্ষ বলের ছয় ভাগের এক ভাগ, ঠিক চাঁদের অভিকর্ষ বলের সমান। সে কারণে সেখানে নিজেকে অনেক হালকা মনে হবে। সবকিছুর ওজন হবে পৃথিবীতে যে ওজন তার থেকে ছয় ভাগের এক ভাগ।
হোটেলটি নির্মাণের সুবিশাল কর্মযজ্ঞের দায়িত্বে রয়েছেন টিম আলাতোরে, অরবিটাল অ্যাসেম্বলি কর্পোরেশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট। তিনি খুব আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, মহাশূন্যে এমন স্থাপনা হবে এই শতকের এক চরম বিস্ময়।

মহাশূন্যে বিলাসবহুল হোটেল

প্রকাশের সময় : ০৭:১৭:২১ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২১
বার্তাকণ্ঠ ডেস্ক।। 
বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তির অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে পর্যটনশিল্প এক নতুন মাত্রায় উন্নীত হয়েছে। মানুষের দৃষ্টি এখন পৃথিবীর সীমানা ছাড়িয়ে অন্তহীন এবং রহস্যময় মহাকাশের দিকে।
এ বছর জুলাই মাসেই ভার্জিন গ্যালাকটিকের প্রতিষ্ঠাতা স্যার রিচার্ড ব্যার্নসন এবং বিশ্বখ্যাত আমাজানের কর্ণধার জেফ বেজোস উদ্বোধন করলেন মহাকাশ পর্যটনের। তারা দুজনেই পৃথিবী থেকে মহাকাশে খানিকটা কম-বেশি ৬০ মাইল দূরত্বে কার্মান লাইন ছুঁয়ে মাত্র চার-পাঁচ মিনিট সেখানে ভরশূন্যতা উপভোগ করে নিরাপদে পৃথিবীতে ফিরে এসেছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বেঁধে দেওয়া এই কার্মান লাইনের দূরত্ব থেকেই শুরু হয় মহাকাশ।
কিন্তু এবার আর তা নয়, পৃথিবী ছেড়ে রীতিমতো ১৯০০ কিলোমিটার অর্থাত্ ১১৮১ মাইল দূর মহাকাশে পুরোদস্তুর এক একটি পূর্ণাঙ্গ এবং বিলাসবহুল হোটেল। ক্যালিফোর্নিয়ার স্টার্ট-আপ, অরবিটাল অ্যাসেম্বলি কর্পোরেশন ‘ভয়েজার স্টেশন’ নামে এই হোটেলটি চালু করার ঘোষণা দিয়েছে। এটিই হতে যাচ্ছে পৃথিবীর কক্ষপথে প্রথম স্পেস হোটেল। হোটেলটি চালু হবে ২০২৭ সাল থেকে।
মাটির পৃথিবীতে একটি হোটেলে যা যা থাকে, সেখানেও সেসবের কমতি হবে না। সেখানে থাকবে রেস্তোরাঁ, জিম, বার, সিনেমা হল, কনসার্টসহ সবরকম বিনোদনের ব্যবস্থা। তবে আকার আর গঠনে আছে বিস্তর পার্থক্য, হোটেলটি হবে ৪৮৮ মিটার (১৬০০ ফুট) ব্যাসের চক্রাকার, দেখতে অনেকটা বিশালকায় চাকতির মতন। মোট ২৪টি মডিউল বা কক্ষ থাকবে। প্রতিটি কক্ষ হবে ২৪০ বর্গমিটার বা ২৫৮৫ বর্গফুটের। মহাশূন্যে মডিউল এবং অন্যান্য যন্ত্রাংশ সংযোজন করা হবে পৃথিবী থেকে নিয়ন্ত্রিত রোবট দ্বারা। এ হোটেলে একসঙ্গে ৪৫০ জন অতিথির থাকার ব্যবস্থা থাকবে। আর তাঁদের সেবার জন্য থাকবে ১৫০ জন ত্বরিৎকর্মা কর্মচারী। প্রতি রাতের জন্য কত ভাড়া পড়বে, তা এখনো নির্দিষ্ট করে না বলা হলেও, তা যে তিন লাখ ডলারের নিচে হবে না, এমনটিই বলছেন অনেকেই।
হোটেলটি কক্ষপথে প্রতি ৯০ মিনিটে একবার পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে আসবে এবং সেইসঙ্গে নিজের অক্ষের ওপর প্রতি এক মিনিটে একবার ঘুরে আসবে। অনবরত এমন ঘূর্ণনের ফলে সেখানে কৃত্রিম অভিকর্ষ বল তৈরি হবে। এই অভিকর্ষ বলের কারণে অতিথিরা ভরশূন্য হয়ে ভেসে বেড়াবেন না, হোটেলের ভিতর হেঁটে হেঁটে ঘুরে বেড়াতে পারবেন। তবে এই অভিকর্ষ বল হবে পৃথিবীর অভিকর্ষ বলের ছয় ভাগের এক ভাগ, ঠিক চাঁদের অভিকর্ষ বলের সমান। সে কারণে সেখানে নিজেকে অনেক হালকা মনে হবে। সবকিছুর ওজন হবে পৃথিবীতে যে ওজন তার থেকে ছয় ভাগের এক ভাগ।
হোটেলটি নির্মাণের সুবিশাল কর্মযজ্ঞের দায়িত্বে রয়েছেন টিম আলাতোরে, অরবিটাল অ্যাসেম্বলি কর্পোরেশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট। তিনি খুব আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, মহাশূন্যে এমন স্থাপনা হবে এই শতকের এক চরম বিস্ময়।