বেনাপোল প্রতিনিধি ।।
দেড় বছর পর যশোরের বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে দেশে ফিরেছেন দালালের মাধ্যমে ভারতে যাওয়া ১২ জন নারী। তারা অবৈধ পথে ভালো কাজের আশায় ভারতে গিয়েছিলেন।
বৃহস্পতিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় ভারতের পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশ বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন পুলিশের কাছে তাদের হস্তান্তর করে। পরে তাদেরকে পরিবারের কাছে তুলে দেওয়ার জন্য জাস্টিস এন্ড কেয়ার এবং বাংলাদেশ মহিলা আইনজীবি সমিতি নামে দুটি এনজিও সংস্থার কাছে তাদের হস্তান্তর করা হয়।
ফেরত আসা নারীরা হলেন- সাতক্ষীরা জেলার সদর থানা এলাকার সুইটি গাজি, যশোর রাজারহাট মুড়লী এলাকার শরিফা বিবি, নরসিংদী জেলার মনোহরদি থানার খারাবো গ্রামের সুমি ও মিতু খাতুন, বরিশাল বাকেরগঞ্জ থানার নলুয়া গ্রামের শায়লা আক্তার ও সেলিনা আক্তার, যশোরের অভয়নগর থানার ধুলগ্রামের মাহফুজা বেগম, খুলনার খালিশপুর থানার বয়রা এলাকার আসমা বেগম, নাটোর জেলার বরইগ্রাম থানার নাজিরপুর গ্রামের মুক্তি আক্তার, ঝিনাইদহ জেলার কোটচাঁদপুর এলাকার সোলেমানপুর গ্রামের নাজমা খাতুন, মানিকগঞ্জ জেলা সদরের চায়না বেগম, খুলনার পাইকগাছা থানার শ্যামনগর গ্রামের নার্গিস বেগম।
যশোর জাস্টিস এন্ড কেয়ার – এর সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার শাওলী সুলতানা বলেন, দেড় বছর আগে ভালো কাজের আশায় এ সমস্ত নারীরা দালালের মাধ্যমে ভারতের হায়দ্রাবাদ যায়।দালালরা তাদের কোন কাজ না দিয়ে কৌশলে পালিয়ে যায়। এ সময় স্থানীয় থানার পুলিশ গোপন খবর পেয়ে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে। পরে আদালতের মাধ্যমে ‘প্রোজ্বলা’ নামে একটি শেল্টার হোম তাদের ছাড়িয়ে নিজেদের হেফাজতে রাখে। ওই সমস্ত নারীরা বাংলাদেশি কিনা যাচাই-বাছাই শেষে ভারত সরকারের দেওয়া বিশেষ ট্রাভেল পারমিটের মাধ্যমে আজ বৃহস্পতিবার তারা দেশে ফিরে আসেন।১২ জন নারীর মধ্যে জাস্টিস এন্ড কেয়ার গ্রহন করেছে ১১ জনকে এবং বাংলাদেশ মহিলা আইনজীবি সমিতি ১ জনকে গ্রহন করেছে।
ফিরে আসা নারগিস বেগম জানান, আমি দরিদ্র পরিবারের মেয়ে। আমার বাবা মা নেই। ছোট দুটি ভাই বোন আছে আমার। তাদের ভরনপোষন ও লেখা-পড়ার জন্য ভালো আয়-রোজগারের আশায় দালালের মাধ্যমে ভারতে যায়। কিন্তু ভারতের হায়দ্রাবাদ এলাকায় দালালরা আমাকে ফেলে পালিয়ে যায়। পরে পুলিশের কাছে আটক হই। দুই দেশের সরকারের বিশেষ সহায়তায় আজ দেবে ফিরে আসি।
বেনাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহসান হাবিব বলেন, দালালের মাধ্যমে তারা ভারতের হায়দ্রাবাদ যান। সেখানে অবৈধভাবে বিভিন্ন বাসা বাড়িতে কাজ করার সময় পুলিশ তাদের আটক করে এবং আদালতে পাঠায়। সেখান থেকে ‘প্রোজ্বলা’ নামে একটি শেল্টার হোম ছাড়িয়ে নিজেদের হেফাজতে নেয়। ওই শেল্টার হোমের সার্বিক সহযোগিতায় দেড় বছর পর দেশে ফেরত পাঠিয়েছে ভারতীয় পুলিশ।