রবিবার, ২৬ মার্চ ২০২৩, ১২ চৈত্র ১৪২৯ বঙ্গাব্দ

ক্ষেতলালে হাঁসের খামারে স্বপ্ন বুনছেন ভোলা

শাহিনুর ইসলাম শাহিন, ক্ষেতলাল (জয়পুরহাট)।।

জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলায় হাঁস পালন করে সফলতার স্বপ্ন দেখছেন মোঃ ওবায়দুল ইসলাম (ভোলা) নামের এক হাঁস খামারি।
জানা গেছে, হাঁস খামারি মোঃ ওবায়দুল ইসলাম ভোলা (৪০) উপজেলার তুলসীগঙ্গা ইউনিয়নের ঘুগইল গ্রামের কাফি মন্ডলের ছেলে।
অল্প শিক্ষিত-দরিদ্র ভোলা তার নিজস্ব অর্থায়নে বসতবাড়ি সহ নিজ ছোট একটি জলাশয়ে দীর্ঘ এক বছর ধরে  কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে হাঁস পালন করে আসছে। তিনি প্রথমত ৫০০ টি হাঁস দিয়ে শুরু করে তার এই হাঁসের খামার, যার মধ্যে ১০০ টি হাঁস মারা যায় আর ৪০০ টি হাঁস জীবিত থাকে এদের মধ্যে যারা ডিম দিতো সেই ডিম বাজারে বিক্রি করে তিনি দ্বিতীয় ধাপে আবারো ১০০০ টি হাঁস কিনেন তার খামারের জন্য, এই মিলে দুই ধাপে মোট ১৫০০ টি হাঁস নিয়ে তিনি ছোট পরিসরে নিজ বসতবাড়িতে গড়ে তোলেন হাঁসের খামার।
বর্তমানে তার খামারে ৬৫০ টি হাঁস জীবিত আছে। যার মধ্যে ৩০০ টি হাঁস ডিম দেয়। সেই ডিম তিনি বাজারে বিক্রি করে পরিবারের চাহিদা মেটান।
আর বাকি হাঁস গুলোর মধ্যে তিনি কিছু বাজারে বিক্রি করেছেন আর কিছু বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। ভোলার পুঁজি স্বল্পতার কারনে আক্রান্ত হাঁসদের ভালো চিকিৎসা করতে পারেনি ফলে হাঁসগুলো মারা গেছে।
ভোলার পরিবারে রয়েছে স্ত্রী, ১ কন্যা ও ১ পুত্র সন্তান চার সদস্যের পরিবারে গরিব, দিনমজুর ভোলায় একমাত্র উপার্জনকারী। তাই পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে আবার খামারের অসুস্থ হাঁসদের ভালো চিকিৎসা করানো তার পক্ষে অসম্ভব ছিলো। কিন্তুু তিনি হাল ছেড়ে দেয়নি। তার এমন স্বল্প আয়ের মধ্যে দিয়েই তিনি কঠোর পরিশ্রম করে আগামীতে স্বাবলম্বী হওয়ার চেষ্টায় কাজ করে যাচ্ছেন ফলে অত্র ইউনিয়নের মধ্যে তাকে হাঁস খামারি ভোলা হিসেবে সবাই চিনে। পরিবারের সুখের আশায় বাড়ির সবাই এই খামারে পরিশ্রম করেন। ভোলার পরিবারের স্বপ্ন তাদের এমন কঠোর পরিশ্রমের ফলে একদিন খামার থেকে অর্জিত আয় দিয়ে ছেলেমেয়েদের পড়ালেখার ও সংসারের খরচ সফলভাবে চালানো সম্ভব হবে।
হাঁস পলনের বিষয়ে ভোলার থেকে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, আমি একজন গরিব মানুষ তাই পরিবারের সুখের জন্য অর্থ উপার্জনে পূর্বে প্রবাসে ইরাক দেশে যাই। কিন্তু সেখানে গিয়ে ৭ মাস কাজ করার পর কাজ বন্ধ হয়ে গেলে, অবসর সময়ে আমি মোবাইল ফোনে এই হাঁসা পালন দেখতে থাকি সেই থেকে আমার মাথায় বুদ্ধি আসে বাড়িতে এসে হাঁসের খামার করবো। তাই দেশে ফিরে দীর্ঘ এক বছর ধরে নিজ বসতবাড়িতে স্বল্প পুঁজি নিয়ে এই হাঁসের খামার করেছি।
ভোলার দাবি, যদি কোন আর্থিক সহোযোগিতা পেতাম তাহলে আমার ছোট খামারটি আরও বড় করতাম। যাতে আমাকে দেখে এলাকার অনেক দরিদ্র পরিবার হাঁস পালনের উদ্বুদ্ধ হয়ে হাঁস পালনের মধ্য দিয়ে ভাগ্যের চাকা ঘুরাতে পারেন।
এ বিষয়ে ক্ষেতলাল উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা  ডাঃ মোঃ জহুরুল ইসলাম জানান, ‘খাল-বিল ও মৎস্য খামার হাঁস পালনের জন্য উপযোগী। হাঁস পালনের উপযোগী পরিবেশের কারণে অনেকেই নিজ উদ্যোগে হাঁসের খামার গড়ে তুলে যেমন স্বাবলম্বী হচ্ছেন, তেমনি ডিম ও মাংসের চাহিদা মেটাচ্ছেন। আমরা প্রাণিসম্পদ বিভাগের পক্ষ থেকে হাঁস পালনকারীদের পরামর্শ ও সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছি।
জনপ্রিয়

ক্ষেতলালে হাঁসের খামারে স্বপ্ন বুনছেন ভোলা

প্রকাশের সময় : ১০:০০:২৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ অক্টোবর ২০২১

শাহিনুর ইসলাম শাহিন, ক্ষেতলাল (জয়পুরহাট)।।

জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলায় হাঁস পালন করে সফলতার স্বপ্ন দেখছেন মোঃ ওবায়দুল ইসলাম (ভোলা) নামের এক হাঁস খামারি।
জানা গেছে, হাঁস খামারি মোঃ ওবায়দুল ইসলাম ভোলা (৪০) উপজেলার তুলসীগঙ্গা ইউনিয়নের ঘুগইল গ্রামের কাফি মন্ডলের ছেলে।
অল্প শিক্ষিত-দরিদ্র ভোলা তার নিজস্ব অর্থায়নে বসতবাড়ি সহ নিজ ছোট একটি জলাশয়ে দীর্ঘ এক বছর ধরে  কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে হাঁস পালন করে আসছে। তিনি প্রথমত ৫০০ টি হাঁস দিয়ে শুরু করে তার এই হাঁসের খামার, যার মধ্যে ১০০ টি হাঁস মারা যায় আর ৪০০ টি হাঁস জীবিত থাকে এদের মধ্যে যারা ডিম দিতো সেই ডিম বাজারে বিক্রি করে তিনি দ্বিতীয় ধাপে আবারো ১০০০ টি হাঁস কিনেন তার খামারের জন্য, এই মিলে দুই ধাপে মোট ১৫০০ টি হাঁস নিয়ে তিনি ছোট পরিসরে নিজ বসতবাড়িতে গড়ে তোলেন হাঁসের খামার।
বর্তমানে তার খামারে ৬৫০ টি হাঁস জীবিত আছে। যার মধ্যে ৩০০ টি হাঁস ডিম দেয়। সেই ডিম তিনি বাজারে বিক্রি করে পরিবারের চাহিদা মেটান।
আর বাকি হাঁস গুলোর মধ্যে তিনি কিছু বাজারে বিক্রি করেছেন আর কিছু বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। ভোলার পুঁজি স্বল্পতার কারনে আক্রান্ত হাঁসদের ভালো চিকিৎসা করতে পারেনি ফলে হাঁসগুলো মারা গেছে।
ভোলার পরিবারে রয়েছে স্ত্রী, ১ কন্যা ও ১ পুত্র সন্তান চার সদস্যের পরিবারে গরিব, দিনমজুর ভোলায় একমাত্র উপার্জনকারী। তাই পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে আবার খামারের অসুস্থ হাঁসদের ভালো চিকিৎসা করানো তার পক্ষে অসম্ভব ছিলো। কিন্তুু তিনি হাল ছেড়ে দেয়নি। তার এমন স্বল্প আয়ের মধ্যে দিয়েই তিনি কঠোর পরিশ্রম করে আগামীতে স্বাবলম্বী হওয়ার চেষ্টায় কাজ করে যাচ্ছেন ফলে অত্র ইউনিয়নের মধ্যে তাকে হাঁস খামারি ভোলা হিসেবে সবাই চিনে। পরিবারের সুখের আশায় বাড়ির সবাই এই খামারে পরিশ্রম করেন। ভোলার পরিবারের স্বপ্ন তাদের এমন কঠোর পরিশ্রমের ফলে একদিন খামার থেকে অর্জিত আয় দিয়ে ছেলেমেয়েদের পড়ালেখার ও সংসারের খরচ সফলভাবে চালানো সম্ভব হবে।
হাঁস পলনের বিষয়ে ভোলার থেকে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, আমি একজন গরিব মানুষ তাই পরিবারের সুখের জন্য অর্থ উপার্জনে পূর্বে প্রবাসে ইরাক দেশে যাই। কিন্তু সেখানে গিয়ে ৭ মাস কাজ করার পর কাজ বন্ধ হয়ে গেলে, অবসর সময়ে আমি মোবাইল ফোনে এই হাঁসা পালন দেখতে থাকি সেই থেকে আমার মাথায় বুদ্ধি আসে বাড়িতে এসে হাঁসের খামার করবো। তাই দেশে ফিরে দীর্ঘ এক বছর ধরে নিজ বসতবাড়িতে স্বল্প পুঁজি নিয়ে এই হাঁসের খামার করেছি।
ভোলার দাবি, যদি কোন আর্থিক সহোযোগিতা পেতাম তাহলে আমার ছোট খামারটি আরও বড় করতাম। যাতে আমাকে দেখে এলাকার অনেক দরিদ্র পরিবার হাঁস পালনের উদ্বুদ্ধ হয়ে হাঁস পালনের মধ্য দিয়ে ভাগ্যের চাকা ঘুরাতে পারেন।
এ বিষয়ে ক্ষেতলাল উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা  ডাঃ মোঃ জহুরুল ইসলাম জানান, ‘খাল-বিল ও মৎস্য খামার হাঁস পালনের জন্য উপযোগী। হাঁস পালনের উপযোগী পরিবেশের কারণে অনেকেই নিজ উদ্যোগে হাঁসের খামার গড়ে তুলে যেমন স্বাবলম্বী হচ্ছেন, তেমনি ডিম ও মাংসের চাহিদা মেটাচ্ছেন। আমরা প্রাণিসম্পদ বিভাগের পক্ষ থেকে হাঁস পালনকারীদের পরামর্শ ও সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছি।