শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

দেশে পারমাণবিক শক্তি উৎপাদনের স্বপ্ন বাস্তবায়নের সূচনা হচ্ছে

ফাইল ছবি

ডেস্ক রিপোর্ট ।।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রথম ইউনিটে আনবিক চুল্লি (রি-অ্যাক্টর প্রেসার ভেসেল) বসানোর কাজ উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আজ রোববার (১০ অক্টোবর) বেলা ১১টার দিকে চুল্লি বসানোর কাজ উদ্বোধন করবেন তিনি। এ ছাড়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক শক্তি করপোরেশনের (রোসাটম) মহাপরিচালক অ্যালেক্সি লিখাচেভ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান।

এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত একজন কর্মকর্তা বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থাকে (বাসস) বলেন, এর মাধ্যমে দেশে পারমাণবিক শক্তি উৎপাদনের স্বপ্ন বাস্তবায়িত হতে যাচ্ছে।

জানা গেছে, এটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মূল অংশ। এর মাধ্যমে প্রকল্পের মাইলফলক অগ্রগতি বাস্তবায়িত হতে যাচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, রি-অ্য্যাক্টর স্থাপনের পর প্রকল্পের কাজ শেষ হতে আর বেশি সময় লাগবে না। বিদ্যুৎকেন্দ্রের জটিল কাজ এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। চলতি বছরেই প্রকল্পের প্রথম ইউনিটের অর্ধেকের বেশি কাজ শেষ হবে।

২০১৭ সালের ৩০ নভেম্বর এই প্রকল্পের রি-অ্যাক্টর ভবনে কংক্রিট ঢালাইয়ের মধ্য দিয়ে মূল কাজ শুরু হয়। এ কাজের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তখন থেকে এই প্রকল্পে প্রতিদিন প্রায় ২৫ হাজার দেশি-বিদেশি শ্রমিক, প্রকৌশলী ও বিশেষজ্ঞ কাজ করছেন। পরের বছর জুনে প্রকল্পের দ্বিতীয় ইউনিটের কংক্রিট ঢালাই উদ্বোধন করা হয়।

পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের যে যন্ত্রে নিউক্লিয়ার ফুয়েল (পারমাণবিক জ্বালানি) বা ইউরেনিয়াম থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়, তার মূল কাঠামো হচ্ছে রি-অ্যাক্টর। এটিই পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রাণ।

ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি অ্যাসোসিয়েশনের (আইএইএ) নির্দেশনা অনুযায়ী এবং সংস্থাটির কড়া নজরদারিতেই রূপপুর প্রকল্পের কাজ এগিয়ে চলছে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ পরিচালিত হচ্ছে।

রাশিয়ার আর্থিক, কারিগরিসহ সার্বিক সহযোগিতায় রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা হচ্ছে। রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক শক্তি করপোরেশন (রোসাটম) প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। রোসাটমের ডিজাইনে নির্মাণাধীন দুই ইউনিট বিশিষ্ট এই প্রকল্পে স্থাপন করা করা হচ্ছে রাশিয়ার উদ্ভাবিত এখন পর্যন্ত সর্বাধুনিক ও সর্বশেষ প্রযুক্তির ভিভিইআর-১২০০ মডেলের রি-অ্যাক্টর। এটি একমাত্র রাশিয়ার নভোভরোনেস পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে স্থাপন করা হয়েছে। তাই রূপপুর প্রকল্পকে নভোভরোনেসের রেফারেন্স প্রকল্প বলা হয়।

এদিকে, রূপপুর প্রকল্পের সব যন্ত্রপাতি তৈরি করা হয়েছে রাশিয়ায়। সেখানকার বিভিন্ন কারখানায় এই যন্ত্রগুলো তৈরি করে সমুদ্র পথে বাংলাদেশে পাঠানো হয়। এ বছর আগস্টে দ্বিতীয় ইউনিটের রি-অ্যাক্টরও এসেছে।

রূপপুরে এক হাজার ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতার ভিভিআর-প্রযুক্তির রিয়্যাক্টরের দুটি ইউনিট তৈরি হবে। আগামী ২০২৩ সালে কেন্দ্রটির প্রথম ইউনিট এবং ২০২৪ সালে দ্বিতীয় ইউনিট চালু হওয়ার কথা রয়েছে। স্বাধীনতার পর ৫০ বছরের মধ্যে রূপপুর প্রকল্পই দেশের সবচেয়ে বড় এবং অর্থনৈতিক দিক থেকে সর্বাধিক ব্যয়বহুল প্রকল্প। এখানে ব্যয় হচ্ছে প্রায় ১ লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা। এর বেশির ভাগ অর্থই সহজ শর্তে ঋণ হিসেবে দিচ্ছে রাশিয়া।

দেশে পারমাণবিক শক্তি উৎপাদনের স্বপ্ন বাস্তবায়নের সূচনা হচ্ছে

প্রকাশের সময় : ১১:১৪:৩৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১০ অক্টোবর ২০২১

ডেস্ক রিপোর্ট ।।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রথম ইউনিটে আনবিক চুল্লি (রি-অ্যাক্টর প্রেসার ভেসেল) বসানোর কাজ উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আজ রোববার (১০ অক্টোবর) বেলা ১১টার দিকে চুল্লি বসানোর কাজ উদ্বোধন করবেন তিনি। এ ছাড়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক শক্তি করপোরেশনের (রোসাটম) মহাপরিচালক অ্যালেক্সি লিখাচেভ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান।

এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত একজন কর্মকর্তা বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থাকে (বাসস) বলেন, এর মাধ্যমে দেশে পারমাণবিক শক্তি উৎপাদনের স্বপ্ন বাস্তবায়িত হতে যাচ্ছে।

জানা গেছে, এটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মূল অংশ। এর মাধ্যমে প্রকল্পের মাইলফলক অগ্রগতি বাস্তবায়িত হতে যাচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, রি-অ্য্যাক্টর স্থাপনের পর প্রকল্পের কাজ শেষ হতে আর বেশি সময় লাগবে না। বিদ্যুৎকেন্দ্রের জটিল কাজ এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। চলতি বছরেই প্রকল্পের প্রথম ইউনিটের অর্ধেকের বেশি কাজ শেষ হবে।

২০১৭ সালের ৩০ নভেম্বর এই প্রকল্পের রি-অ্যাক্টর ভবনে কংক্রিট ঢালাইয়ের মধ্য দিয়ে মূল কাজ শুরু হয়। এ কাজের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তখন থেকে এই প্রকল্পে প্রতিদিন প্রায় ২৫ হাজার দেশি-বিদেশি শ্রমিক, প্রকৌশলী ও বিশেষজ্ঞ কাজ করছেন। পরের বছর জুনে প্রকল্পের দ্বিতীয় ইউনিটের কংক্রিট ঢালাই উদ্বোধন করা হয়।

পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের যে যন্ত্রে নিউক্লিয়ার ফুয়েল (পারমাণবিক জ্বালানি) বা ইউরেনিয়াম থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়, তার মূল কাঠামো হচ্ছে রি-অ্যাক্টর। এটিই পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রাণ।

ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি অ্যাসোসিয়েশনের (আইএইএ) নির্দেশনা অনুযায়ী এবং সংস্থাটির কড়া নজরদারিতেই রূপপুর প্রকল্পের কাজ এগিয়ে চলছে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ পরিচালিত হচ্ছে।

রাশিয়ার আর্থিক, কারিগরিসহ সার্বিক সহযোগিতায় রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা হচ্ছে। রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক শক্তি করপোরেশন (রোসাটম) প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। রোসাটমের ডিজাইনে নির্মাণাধীন দুই ইউনিট বিশিষ্ট এই প্রকল্পে স্থাপন করা করা হচ্ছে রাশিয়ার উদ্ভাবিত এখন পর্যন্ত সর্বাধুনিক ও সর্বশেষ প্রযুক্তির ভিভিইআর-১২০০ মডেলের রি-অ্যাক্টর। এটি একমাত্র রাশিয়ার নভোভরোনেস পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে স্থাপন করা হয়েছে। তাই রূপপুর প্রকল্পকে নভোভরোনেসের রেফারেন্স প্রকল্প বলা হয়।

এদিকে, রূপপুর প্রকল্পের সব যন্ত্রপাতি তৈরি করা হয়েছে রাশিয়ায়। সেখানকার বিভিন্ন কারখানায় এই যন্ত্রগুলো তৈরি করে সমুদ্র পথে বাংলাদেশে পাঠানো হয়। এ বছর আগস্টে দ্বিতীয় ইউনিটের রি-অ্যাক্টরও এসেছে।

রূপপুরে এক হাজার ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতার ভিভিআর-প্রযুক্তির রিয়্যাক্টরের দুটি ইউনিট তৈরি হবে। আগামী ২০২৩ সালে কেন্দ্রটির প্রথম ইউনিট এবং ২০২৪ সালে দ্বিতীয় ইউনিট চালু হওয়ার কথা রয়েছে। স্বাধীনতার পর ৫০ বছরের মধ্যে রূপপুর প্রকল্পই দেশের সবচেয়ে বড় এবং অর্থনৈতিক দিক থেকে সর্বাধিক ব্যয়বহুল প্রকল্প। এখানে ব্যয় হচ্ছে প্রায় ১ লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা। এর বেশির ভাগ অর্থই সহজ শর্তে ঋণ হিসেবে দিচ্ছে রাশিয়া।