শাহিনুর ইসলাম শাহিন, ক্ষেতলাল উপজেলা প্রতিনিধি ।।
জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল পৌর এলাকার ইটাখোলা খাদ্য গুদাম সংলগ্ন নতুন মসজিদের উত্তর পাশে আজাদ নামে এক ব্যক্তির বসতবাড়ির সীমানা প্রাচীর অবৈধভাবে জোরপূর্বক ভেঙে দিয়েছেন প্রতিপক্ষ।
জানা গেছে, ক্ষেতলাল পৌর এলাকার রসালপাড়া গ্রামের মৃত- মেছের আলীর ছেলে মোঃ আবুল কালাম আজাদ (৫৫) পৌর এলাকার ইটাখোলা খাদ্য গুদাম সংলগ্ন নতুন মসজিদের উত্তর পাশে ক্রয় সূত্রে ৫ শতক সম্পত্তির মালিক যার দাগ নম্বর ৫৪১১ উল্লেখিত সম্পত্তির উপরে তিনি একটি বাড়ি নির্মান করে প্রাচীর দ্বারা ঘেরাও করে তা ভোগদখলে আছে।
উক্ত সম্পত্তির পার্শ্ববর্তী সম্পত্তির মালিক মোকছেদ শেখ। আজাদ এবং মোকছেদ এর সম্পত্তির মাঝামাঝি স্থানের প্রাচীর নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে দুই পক্ষের মধ্যে বিবাদ চলছে। আজাদের দাবি প্রাচীর আমার জায়গাতেই আমি দিয়েছি অন্যদিকে মোকছেদের দাবি প্রাচীর দেওয়া জায়গাটা আমার ভীতরে পরেছে, এই নিয়ে ক্ষেতলাল পৌরসভায় বিচারও চলমান রয়েছে। এমতাবস্থায় ১৭ অক্টোবর
সকাল আনুমানিক ৭ ঘটিকার সময় প্রকাশ্যে মোকছেদ ও তার তিন ছেলে সহ কতিপয় কয়েকজন ব্যক্তি মিলে দেশীয় অস্ত্র হাতুড়ি, শ্বাবল,দা ইত্যাদি দ্বারা আজাদের দেওয়া সেই বসতবাড়ির প্রাচীর ভেঙে ফেলে।
এ বিষয়ে আজাদ বাদী হয়ে ৫ জনের বিরুদ্ধে ক্ষেতলার থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন, অভিযুক্তরা হলেন ১. মোকছেদ শেখ পিতা অজ্ঞাত, ২. মানিক, ৩. সোলেমান, ৪. মাবুদ সকলের পিতাঃ মোকছেদ, ৫. মিঠু মন্ডল পিতাঃ মোতাহার, সকলের সাং ইটাখোলা, থানা ক্ষেতলাল জেলা জয়পুরহাট।
বাদী আজাদের সাথে কথা বলে তিনি জানান, আমি ক্রয় সূত্রে ৫ শতক সম্পত্তির মালিক, আমার জায়গা আমি প্রাচীর দিয়ে ঘিরে নিয়েছি, কিন্তুু বিবাদীগণ দীর্ঘদিন ধরে জোরপূর্বক আমার জায়গাটা দখল করার চেষ্টা করে আসতেছে, ক্ষেতলাল পৌরসভায় এই নিয়ে বিচার চলমান রয়েছে বিচারের কোন রায় না হতেই তারা আজ সকালে জোরপূর্বক বেআইনিভাবে আমার বসতবাড়ির প্রাচীর ভেঙে দিয়েছে, আমি বাঁধা দিতে গেলে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ সহ ভয় ভীতি ও প্রাণ নাশের হুমকি দেয়। আমি একজন গরিব অসহায় মানুষ তাই আমার সাথে যে অন্যায় অবিচার করা হয়েছে আমি তার সুষ্ঠ বিচাই চাই।
বিবাদী মানিকের সাথে মুঠোফোনে কথা বললে তিনি জানান, ক্রয় সূত্রে আমরাও পাশের জমির ৯ শতকের মালিক, আজাদের প্রাচীর আমাদের অংশের ভীতর পড়েছে, পৌরসভায় বিচার দেওয়া হয়েছে তাদের কে বেশ কয়েকবার ডেকেছে পৌরসভা আসেনি তাই আমরা আজ সকালে প্রাচীর ভেঙে দিয়েছি।
আজাদ এবং মোকছেদ এর ক্রয়কৃত সম্পত্তির পূর্ব মালিক পক্ষের অংশিদারদের মধ্যে ফরিদ পিতা মতুন, এর সাথে কথা বললে তিনি জানান, আমি সহ আমার পরিবার আজাজ এবং মোকছেদের কাছে জমি বিক্রি করেছি, তাদেন দুজনারি ক্রয়কৃত সম্পত্তি বৈধ আছে। কিন্তু আমরা যখন জমি বিক্রি করি তখন রাস্তা ছিলো অনেক ছোট কিন্তু বর্তমান সময়ে রাস্তা অনেক বড় হয়েছে তাই দুজনারি সামনের অংশে জায়গা কমে যাবে এটাই স্বাভাবিক। দুই পক্ষকেই রাস্তা বাদে জায়গার হিসাব করতে হবে কিন্তু সেটা মোকছেদ বা তার পরিবার মানছে না তারা রাস্তার ভিতর যাওয়া জায়গা বাদেই তাদের ক্রয়কৃত সম্পত্তির দাবি করছে এবং মেপে নিচ্ছে তাই এমন বিবাদ হচ্ছে। রাস্তার জায়গা বাদ দিয়ে জমির হিসাব করলে প্রাচীর আজাদের জায়গাতেই হবে।
ক্ষেতলাল পৌরসভার শালিশী বোর্ডের সভাপতি ও ৫ নং ওয়ার্ড কাউন্সিল আজিজার রহমানের সাথে মুঠোফোনে কথা বললে তিনি জানান, দুই পক্ষের বিচার আমরা অনেক কয়বার করেছি বর্তমানেও চলমান রয়েছে কিন্তু তারা আজকের প্রাচীর ভাঙ্গার বিষয়টি আমরা অবগত নয়। তিনি আরো জানান, কারো প্রচীর কেউ ভেঙে জায়গা দখল করবে এমন আইন নেই প্রাচীর ভাংতে হলে কোর্টের অনুমতি নিয়ে ভাংতে হবে।
এবিষয়ে মুঠোফোনে সব কিছু শোনার পর জয়পুরহাট জেলা জজ কোর্টের এ্যাডভোকেট মিলন কুমার মহন্ত জানান, প্রাচীর নিয়ে দুই পক্ষের এমন ঝামেলা মেটাতে হলে দুই পক্ষকেই বসে মিমাংসাতে আসতে হবে। কেউ জোর পূর্বক কারো প্রাচীর ভাংতে পারবে না, যদি ভাংতে চায় কোর্টের অনুমতি নিয়ে ভাংতে হবে, তাই যদি কেউ জোর পূর্বক এমন কাজ করে থাকে তাহলে সেটা অন্যায় হবে।
ক্ষেতলাল থানা অফিসার ইনচার্জ নীরেন্দ্রনাথ মন্ডলের সাথে মুঠোফোনে কথা বললে তিনি জানান, আমরা ইতিমধ্যে ঘটনার একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি, ঘনটার সুষ্ঠ তদন্তের জন্য এস.আই শাহাদাত হোসেন কে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বার্তাকণ্ঠ/এন