রবিবার, ২৮ মে ২০২৩, ১৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

পর্দাহীনতার কুফল

হাফেজ মাওঃ মেহেদী হাসান ।।
বেপর্দা ও বেহায়াপনার গুনাহ শুধু নিজের মধ্যেই সীমিত থাকে না এবং বেপর্দা মহিলাই শুধু এর দ্বারা প্রভাবিত হয় না, বরং এর দ্বারা বেহায়াপনা, অশ্লীলতা, যিনা-ব্যভিচার, ধর্ষণ ইত্যাদি বিস্তার লাভ করে। পুরো সম্প্রদায় এর পার্থিব করুণ পরিণতি এবং আখিরাতের আযাব ভোগ করে।
পর্দা শরীয়তের অবধারিত ফরয বা অত্যাবশ্যকীয় বিধান। এটা পালন করলে যেমন প্রভূত শান্তি, সম্মান লাভ হয় এবং আল্লাহ তা‘আলার নৈকট্য লাভ হয়, তেমনিভাবে এটা লঙ্ঘন করলে হয় অসংখ্য, অপূরণীয় ক্ষতি। পর্দার বিধান লঙ্ঘন করলে ধর্মীয়, আত্মিক, পারিবারিক ও সামাজিক বিভিন্ন অনিষ্ট ও ধ্বংস-বিপর্যয় দেখা দেয়।
নারীরা যেহেতু অভিভাবকের অধীনস্থ জীবন-যাপন করে অর্থাৎ, বিয়ের পূর্বে পিতা ও ভাই, আর বিয়ের পর স্বামী ও পুত্রের তত্ত্বাবধানে থাকে, তাই নারীকে যখন বেপর্দায় চলার দরুন আযাব দেয়া হবে, তখন এই চারজন ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য পুরুষকে আল্লাহ পাকের দরবারে জবাবদিহি করতে হবে।
মোদ্দাকথা, বেপর্দা চললে, আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামের নাফরমানী বা অবাধ্যতা করা হয়। বেপর্দার দ্বারা কবীরা গুনাহের ভাগী এবং ইবলীস শয়তানের অনুসারী সাব্যস্ত হয়। পর্দাহীনতা দ্বারা মানুষ অভিশপ্ত হয় এবং আল্লাহর রহমত থেকে বিতাড়িত হয়।পর্দাহীনতা জাহান্নামের পথ। হাদীসের ভাষ্য অনুযায়ী পর্দাহীনতা সমাজে অশ্লীলতা, চারিত্রিক অবক্ষয় ও পশুত্বের খাসলত জন্ম দেয়। নারীদের বেপর্দা চলা ও দেহ প্রদর্শন পুরুষদেরকে অবৈধ ও অশ্লীল কাজের প্রতি উত্তেজিত করে তোলে। ফলে যিনা-ব্যভিচার, ধর্ষণ, অপহরণ, নির্যাতন ইত্যাকার অপরাধ বৃদ্ধি পায়।
পর্দাহীনতার দরুন মানুষ আল্লাহর শাস্তি ও গযব প্রাপ্তির উপযুক্ত হয়ে উঠে। আর এর পরিণতি আণবিক বোমা ও ভূমিকম্পের চেয়েও বেশি বিপদজনক। পর্দাহীনতা পারিবারিক প্রীতির বন্ধন ছিন্ন করে এবং পরিবারের সদস্যদের মধ্যে পারস্পরিক অবিশ্বস্ততা সৃষ্টি করে। পর্দাহীনতা তালাকের প্রসার ঘটার অন্যতম কারণ। এভাবে পর্দাহীনতা আরো বহু অনিষ্ট ও বিপর্যয় ডেকে আনে, যার থেকে বাঁচা একমাত্র পর্দার মাধ্যমেই সম্ভব।
এ ব্যাপারে মুহিউস সুন্নাহ হযরত মাওলানা শাহ আবরারুল হক সাহেব রহ. ইং ২০০৩ সালে বাংলাদেশ সফরকালে একটি ঘটনা শুনান, জনৈক ব্যক্তি তার বিশেষ প্রয়োজনে রাতে ঘুম থেকে উঠলে আপন কন্যার ঘরে আওয়াজ শুনতে পেলেন। প্রথমে ডাকাতির আশংকা করলেন, তাই বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে দিলেন। অতঃপর বন্দুক প্রস্তুত করলেন। এরপর দরজা খোলার পর দেখলেন, প্রতিবেশীর ছেলে তার কন্যার সাথে অপকর্মে লিপ্ত। ক্রোধে তিনি গুলি করে উভয়কে একসঙ্গে হত্যা করলেন। দেখুন বেপর্দা কতগুলো সমস্যার কারণ হল।
সুতরাং, আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামের বিধান পালনার্থে বর্ণিত মারাত্মক কুফলসমূহ থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য প্রত্যেক প্রাপ্ত বয়স্কা নারীর পর্দা করা অপরিহার্য ও ফরয দায়িত্ব।
বস্তুতঃ পর্দাই মানুষের মন, মস্তিষ্ক, পরিবার, সমাজ ও পরিবেশকে সুন্দর, মার্জিত ও সুখময় রাখতে পারে। আর পরকালীন প্রতিদান ও সুখকর পুরস্কার তো রয়েছেই।

মহাশক্তিশালী সুপার টাইফুন ‘বেটি’ধেয়ে আসছে প্রবল শক্তিতে

পর্দাহীনতার কুফল

প্রকাশের সময় : ০৯:৪৭:২৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ জানুয়ারী ২০২২
হাফেজ মাওঃ মেহেদী হাসান ।।
বেপর্দা ও বেহায়াপনার গুনাহ শুধু নিজের মধ্যেই সীমিত থাকে না এবং বেপর্দা মহিলাই শুধু এর দ্বারা প্রভাবিত হয় না, বরং এর দ্বারা বেহায়াপনা, অশ্লীলতা, যিনা-ব্যভিচার, ধর্ষণ ইত্যাদি বিস্তার লাভ করে। পুরো সম্প্রদায় এর পার্থিব করুণ পরিণতি এবং আখিরাতের আযাব ভোগ করে।
পর্দা শরীয়তের অবধারিত ফরয বা অত্যাবশ্যকীয় বিধান। এটা পালন করলে যেমন প্রভূত শান্তি, সম্মান লাভ হয় এবং আল্লাহ তা‘আলার নৈকট্য লাভ হয়, তেমনিভাবে এটা লঙ্ঘন করলে হয় অসংখ্য, অপূরণীয় ক্ষতি। পর্দার বিধান লঙ্ঘন করলে ধর্মীয়, আত্মিক, পারিবারিক ও সামাজিক বিভিন্ন অনিষ্ট ও ধ্বংস-বিপর্যয় দেখা দেয়।
নারীরা যেহেতু অভিভাবকের অধীনস্থ জীবন-যাপন করে অর্থাৎ, বিয়ের পূর্বে পিতা ও ভাই, আর বিয়ের পর স্বামী ও পুত্রের তত্ত্বাবধানে থাকে, তাই নারীকে যখন বেপর্দায় চলার দরুন আযাব দেয়া হবে, তখন এই চারজন ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য পুরুষকে আল্লাহ পাকের দরবারে জবাবদিহি করতে হবে।
মোদ্দাকথা, বেপর্দা চললে, আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামের নাফরমানী বা অবাধ্যতা করা হয়। বেপর্দার দ্বারা কবীরা গুনাহের ভাগী এবং ইবলীস শয়তানের অনুসারী সাব্যস্ত হয়। পর্দাহীনতা দ্বারা মানুষ অভিশপ্ত হয় এবং আল্লাহর রহমত থেকে বিতাড়িত হয়।পর্দাহীনতা জাহান্নামের পথ। হাদীসের ভাষ্য অনুযায়ী পর্দাহীনতা সমাজে অশ্লীলতা, চারিত্রিক অবক্ষয় ও পশুত্বের খাসলত জন্ম দেয়। নারীদের বেপর্দা চলা ও দেহ প্রদর্শন পুরুষদেরকে অবৈধ ও অশ্লীল কাজের প্রতি উত্তেজিত করে তোলে। ফলে যিনা-ব্যভিচার, ধর্ষণ, অপহরণ, নির্যাতন ইত্যাকার অপরাধ বৃদ্ধি পায়।
পর্দাহীনতার দরুন মানুষ আল্লাহর শাস্তি ও গযব প্রাপ্তির উপযুক্ত হয়ে উঠে। আর এর পরিণতি আণবিক বোমা ও ভূমিকম্পের চেয়েও বেশি বিপদজনক। পর্দাহীনতা পারিবারিক প্রীতির বন্ধন ছিন্ন করে এবং পরিবারের সদস্যদের মধ্যে পারস্পরিক অবিশ্বস্ততা সৃষ্টি করে। পর্দাহীনতা তালাকের প্রসার ঘটার অন্যতম কারণ। এভাবে পর্দাহীনতা আরো বহু অনিষ্ট ও বিপর্যয় ডেকে আনে, যার থেকে বাঁচা একমাত্র পর্দার মাধ্যমেই সম্ভব।
এ ব্যাপারে মুহিউস সুন্নাহ হযরত মাওলানা শাহ আবরারুল হক সাহেব রহ. ইং ২০০৩ সালে বাংলাদেশ সফরকালে একটি ঘটনা শুনান, জনৈক ব্যক্তি তার বিশেষ প্রয়োজনে রাতে ঘুম থেকে উঠলে আপন কন্যার ঘরে আওয়াজ শুনতে পেলেন। প্রথমে ডাকাতির আশংকা করলেন, তাই বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে দিলেন। অতঃপর বন্দুক প্রস্তুত করলেন। এরপর দরজা খোলার পর দেখলেন, প্রতিবেশীর ছেলে তার কন্যার সাথে অপকর্মে লিপ্ত। ক্রোধে তিনি গুলি করে উভয়কে একসঙ্গে হত্যা করলেন। দেখুন বেপর্দা কতগুলো সমস্যার কারণ হল।
সুতরাং, আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামের বিধান পালনার্থে বর্ণিত মারাত্মক কুফলসমূহ থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য প্রত্যেক প্রাপ্ত বয়স্কা নারীর পর্দা করা অপরিহার্য ও ফরয দায়িত্ব।
বস্তুতঃ পর্দাই মানুষের মন, মস্তিষ্ক, পরিবার, সমাজ ও পরিবেশকে সুন্দর, মার্জিত ও সুখময় রাখতে পারে। আর পরকালীন প্রতিদান ও সুখকর পুরস্কার তো রয়েছেই।