সোমবার, ০৫ জুন ২০২৩, ২২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

লালমনিরহাটে শীতে জুবুথুবু জনজীবন, দুর্ভোগ চরমে!

মোস্তাফিজুর রহমান, লালমনিরহাট প্রতিনিধি।।

হিমালয়ের কোলে তিস্তা নদীর ও বাংলাদেশের উত্তরের সর্বশেষ জেলা লালমনিরহাট।  জেলায়

হিমেল হাওয়ায় আর ঘন কুয়াশায় কাতর লালমনিরহাটের মানুষ। গত ৪ দিন  থেকে জেঁকে বসেছে শীত। প্রতি দিনেই কমছে তাপমাত্রা। ঘন কুয়াশা আর হিমেল হাওয়ায় জুবুথুবু হয়ে পড়েছে জনজীবন। হঠাৎ শীত বেড়ে যাওয়ায় কাবু হয়ে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ, শিশু ও বৃদ্ধরা। নিউমোনিয়া আক্রান্ত হয়ে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।

গত কয়েকদিন  দুপুর ১২ টা সূর্যের দেখা দিলেও সেই সাথে বেড়েছে কনকনে ঠান্ডা। এতে কাবু হয়ে পড়েছে তিস্তাপারের শিশু,বৃদ্ধ সকলেই। তিস্তাপারের মানুষ জন খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন।

এদিকে গত সোমবার  সকালে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে নিউমোনিয়া আক্রান্ত হয়ে ৬ মাসের শিশু শিউলী নামে  মৃত্যু হয়েছে।  শিশুটি সদর উপজেলা কুলাঘাট ইউনিয়নের চর কুলাঘাটের রায়হান মিয়ার শিশু কন্যা।

লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা: আশরাফুল আলম দোলন শিশুর মৃত্যু বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

জেলার  আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের  জানাগেছে ,বৃহস্পতিবার  সকালে লালমনিরহাট সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।

ঠান্ডা বাতাসে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ বাড়ছে। গত দুই দিনে বেড়ে শীত। শহরের বাহিরে পুরো এলাকা রয়েছে ঘনকুয়াশার চাদরে ঢাকা। এতে করে চরম ভোগান্তিতে পরেছে লালমনিরহাটে তিস্তার ৬৩ চরের খেটে খাওয়া মানুষেরা।

হাড় কাঁপানো শীতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। বিশেষ করে তিস্তা তীরবর্তী এলাকার মানুষের ভোগান্তি চরমে উঠেছে। শীতের তীব্রতা ও হিমেল হাওয়া বাড়তে শুরু করেছে। ঘর থেকে বের হতে পারছে না সাধারণ মানুষ। তিস্তাপারের শিশু বৃদ্ধ সকলেই খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন।

শীতে দুর্ভোগে পড়েছে  নদ-নদী তীরবর্তী ৬৩টি চরের প্রায় লক্ষাধিক নিম্ন আয়ের মানুষ। শীতে খেটে খাওয়া মানুষ কাজকর্ম না পেয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন। গত চার দিনের শীতে তিস্তা পাড়ের হতদরিদ্র মানুষের ভোগান্তি চরমে উঠেছে। শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন শিশু ও বয়ষ্করা। হাঁপানি, অ্যাজমা, নিউমোনিয়া, হৃদরোগসহ শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে রোগীর সংখ্যা। গোবাদি পশুও রেহাই পাচ্ছে না শীতের প্রকোপ থেকে।

পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রামে বাসীন্দা রব্বু মিয়া জানান, হামার এদিক খুব ঠান্ডা, এই ঠান্ডায় ঘর থাকি বেড়ার মান চায় না। দুই দিন ধরি কাজতও যাই না। যে শীত কবে যে যায়। এই শীতে কষ্টে আছি।

কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী শোইলমারী গ্রামের আকবার আলী জানান, তিস্তার চরে শুধু হুহু করি বাতাস নাগে। দুই দিন ধরি হামাগুলার অবস্থা খারাপ। ঘুম থাকি উঠি খড়, খড়ি জড়ো করি আগুন পোয়াচ্ছি। এই চরত কাহো কম্বল ধরি আইসে না।
লালমনিরহাট জেলা সিভিল সার্জন ডা.নির্মলেন্দু রায় জানান, হাঁপানি, অ্যাজমা, নিউমোনিয়া ও ডাইরিয়ায় আক্রন্ত হয়ে পাচঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শিশু ও বয়ষ্ক ৮৬জন রোগীর ভর্তি রয়েছেন। শীতের তীব্রতা বাড়লে রোগী আরও বাড়তে পারে।

লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক আবু জাফর জানান,শীতার্ত মানুষদের এ পর্যন্ত ২২ হাজার জন মানুষের মাঝে কম্বল বিতরন করা হয়েছে। আরও শীতবস্ত্রের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়েছে।

সেনাবাহিনী দখলে নিলো কেএনএফের আস্তানা ও প্রশিক্ষণ ক্যাম্প

লালমনিরহাটে শীতে জুবুথুবু জনজীবন, দুর্ভোগ চরমে!

প্রকাশের সময় : ১১:৫২:৩৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ জানুয়ারী ২০২২
মোস্তাফিজুর রহমান, লালমনিরহাট প্রতিনিধি।।

হিমালয়ের কোলে তিস্তা নদীর ও বাংলাদেশের উত্তরের সর্বশেষ জেলা লালমনিরহাট।  জেলায়

হিমেল হাওয়ায় আর ঘন কুয়াশায় কাতর লালমনিরহাটের মানুষ। গত ৪ দিন  থেকে জেঁকে বসেছে শীত। প্রতি দিনেই কমছে তাপমাত্রা। ঘন কুয়াশা আর হিমেল হাওয়ায় জুবুথুবু হয়ে পড়েছে জনজীবন। হঠাৎ শীত বেড়ে যাওয়ায় কাবু হয়ে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ, শিশু ও বৃদ্ধরা। নিউমোনিয়া আক্রান্ত হয়ে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।

গত কয়েকদিন  দুপুর ১২ টা সূর্যের দেখা দিলেও সেই সাথে বেড়েছে কনকনে ঠান্ডা। এতে কাবু হয়ে পড়েছে তিস্তাপারের শিশু,বৃদ্ধ সকলেই। তিস্তাপারের মানুষ জন খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন।

এদিকে গত সোমবার  সকালে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে নিউমোনিয়া আক্রান্ত হয়ে ৬ মাসের শিশু শিউলী নামে  মৃত্যু হয়েছে।  শিশুটি সদর উপজেলা কুলাঘাট ইউনিয়নের চর কুলাঘাটের রায়হান মিয়ার শিশু কন্যা।

লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা: আশরাফুল আলম দোলন শিশুর মৃত্যু বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

জেলার  আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের  জানাগেছে ,বৃহস্পতিবার  সকালে লালমনিরহাট সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।

ঠান্ডা বাতাসে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ বাড়ছে। গত দুই দিনে বেড়ে শীত। শহরের বাহিরে পুরো এলাকা রয়েছে ঘনকুয়াশার চাদরে ঢাকা। এতে করে চরম ভোগান্তিতে পরেছে লালমনিরহাটে তিস্তার ৬৩ চরের খেটে খাওয়া মানুষেরা।

হাড় কাঁপানো শীতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। বিশেষ করে তিস্তা তীরবর্তী এলাকার মানুষের ভোগান্তি চরমে উঠেছে। শীতের তীব্রতা ও হিমেল হাওয়া বাড়তে শুরু করেছে। ঘর থেকে বের হতে পারছে না সাধারণ মানুষ। তিস্তাপারের শিশু বৃদ্ধ সকলেই খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন।

শীতে দুর্ভোগে পড়েছে  নদ-নদী তীরবর্তী ৬৩টি চরের প্রায় লক্ষাধিক নিম্ন আয়ের মানুষ। শীতে খেটে খাওয়া মানুষ কাজকর্ম না পেয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন। গত চার দিনের শীতে তিস্তা পাড়ের হতদরিদ্র মানুষের ভোগান্তি চরমে উঠেছে। শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন শিশু ও বয়ষ্করা। হাঁপানি, অ্যাজমা, নিউমোনিয়া, হৃদরোগসহ শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে রোগীর সংখ্যা। গোবাদি পশুও রেহাই পাচ্ছে না শীতের প্রকোপ থেকে।

পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রামে বাসীন্দা রব্বু মিয়া জানান, হামার এদিক খুব ঠান্ডা, এই ঠান্ডায় ঘর থাকি বেড়ার মান চায় না। দুই দিন ধরি কাজতও যাই না। যে শীত কবে যে যায়। এই শীতে কষ্টে আছি।

কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী শোইলমারী গ্রামের আকবার আলী জানান, তিস্তার চরে শুধু হুহু করি বাতাস নাগে। দুই দিন ধরি হামাগুলার অবস্থা খারাপ। ঘুম থাকি উঠি খড়, খড়ি জড়ো করি আগুন পোয়াচ্ছি। এই চরত কাহো কম্বল ধরি আইসে না।
লালমনিরহাট জেলা সিভিল সার্জন ডা.নির্মলেন্দু রায় জানান, হাঁপানি, অ্যাজমা, নিউমোনিয়া ও ডাইরিয়ায় আক্রন্ত হয়ে পাচঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শিশু ও বয়ষ্ক ৮৬জন রোগীর ভর্তি রয়েছেন। শীতের তীব্রতা বাড়লে রোগী আরও বাড়তে পারে।

লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক আবু জাফর জানান,শীতার্ত মানুষদের এ পর্যন্ত ২২ হাজার জন মানুষের মাঝে কম্বল বিতরন করা হয়েছে। আরও শীতবস্ত্রের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়েছে।