রবিবার, ২৮ মে ২০২৩, ১৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

টিকা মৃত্যুর হার কমায়, সংক্রমণ কমায় না : স্বাস্থ্যমন্ত্রী

ফাইল ছবি

ডেস্ক রিপোর্ট ।।

দেশে সম্প্রতি করোনা সংক্রমণ বাড়ছে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এমপি বলেছেন, ‘দেশে সম্প্রতি করোনা সংক্রমণ বাড়ছে। আমি আগেই বলেছিলাম, টিকা সংক্রমণ কমায় না, মৃত্যুর হার কমায়। টিকার অভাব হচ্ছে না। কিন্তু মানুষের টিকা নেওয়ার আগ্রহ কমে গেছে।’

রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আজ রোববার (৯ জানুয়ারি) সকালে দেশের বিভাগীয় ৮টি সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ক্যানসার চিকিৎসাকেন্দ্র স্থাপন প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, টিকার অভাব হচ্ছে না।কিন্তু মানুষের টিকা নেওয়ার আগ্রহ কমে গেছে। সে কারণে আমার বিভিন্ন প্রচার-প্রচারণা করছি। টিকা দেওয়ার জন্য আমরা কমিউনিটি ক্লিনিক পর্যন্ত গিয়েছিলাম। ইউনিয়নে তিনটি ওয়ার্ডে টিকা দেওয়া হতো, এখন সেটাকে ৯টি ওয়ার্ডে নিয়ে যাচ্ছি; যাতে বেশি মানুষ টিকার আওতায় আসে। আজ মৃত্যুর হার এত কম কেন? কারণ এ পর্যন্ত পৌনে ৮ কোটি মানুষ টিকা নিয়েছে। তাই মৃত্যুর হার এত কম।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমি আগেই বলেছিলাম গণজমায়েত কমাতে হবে, সামাজিক অনুষ্ঠানগুলো স্বাস্থ্যবিধি অনুযায়ী করতে হবে। কিন্তু আফসোসের বিষয় হলো, কোন একটা লোকও এসব বিষয়ে কর্ণপাত করেনি। যার ফলে দেশে সংক্রমণের হার বাড়ছে। একইসঙ্গে হাসপাতালের রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে।

জাহিদ মালেক বলেন, আপনারা জানেন দেশে সংক্রমণের হার বৃদ্ধি পাচ্ছে। গতকালও দেশের সংক্রমণের হার ৬ শতাংশের কাছাকাছি ছিল। দেখছি প্রতিদিনই সংক্রমণের হার বাড়ছে। যখন থেকে সংক্রমণ বাড়া শুরু হয়েছে, তখন থেকেই আমরা সতর্কতা নিয়ে প্রচার করে যাচ্ছি।

এ অবস্থায় করণীয় প্রসঙ্গে জাহিদ মালেক বলেন, আমরা ইতোমধ্যে সরকারিভাবে কিছু পদক্ষেপ নিয়েছি। স্বাস্থ্যবিধি মানতে আজ অথবা কালের মধ্যেই একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। এর মাধ্যমে পূর্বে যেসব নির্দেশনাগুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছিল, সেগুলো বাস্তবায়নের জন্য সারাদেশে বার্তা চলে যাবে। আমরা কেবিনেট থেকে জানতে পেরেছি এর কার্যকারিতাও খুব শিগগিরই শুরু হয়ে যাবে।

কিন্তু আমরা যতই নির্দেশনা পাঠাই না কেন, জনগণের উপর নির্ভর করবে তারা এটা মানছে কি না। কাজেই জনগণকেই সচেতন হতে হবে। কারণ তারাই সংক্রমিত হচ্ছে, তাদের পরিবার সংক্রমিত হচ্ছে। বিশেষ করে শিশুরা সংক্রমিত হচ্ছে, এমনকি বয়স্করাও সংক্রমিত হচ্ছে। কাজেই আমাদের নিজেদেরকেই সংক্রমণ মোকাবেলায় দায়িত্বশীল হতে হবে’, যোগ করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

জাহিদ মালেক আরও বলেন, আর যদি সংক্রমণ এভাবে বাড়তেই থাকে তাহলে সরকারকেই কঠোর ভূমিকা নিতে হবে। আর এই মুহূর্তে সংক্রমণের লক্ষণ আমরা দেখছি, সংক্রমণ অতিমাত্রায় অতি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত এক সপ্তাহ আগেই আমাদের দেশে সংক্রমণ নিচে ছিল। দৈনিক দুই থেকে আড়াইশ মানুষের করোনা শনাক্ত হয়েছে, এখন সংক্রমণ প্রায় ৬ শতাংশের কাছাকাছি। রোগীর সংখ্যাও আড়াইশ থেকে বেড়ে গিয়ে এগারোশর ওপরে চলে এসেছে। এটা আমাদের জন্য খুবই আশঙ্কাজনক। আমাদের সকলকেই সচেতন হতে হবে।

অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, দেশে আশঙ্কাজনকভাবে ক্যানসার বাড়ছে। ক্যানসারে প্রতি বছরে এক লাখ মানুষ মারা যায়। আক্রান্ত হয় দেড় লাখ, এখন চিকিৎসাধীন আছে, ২০ লাখ। ভেজাল খাদ্য, মাদক, অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনসহ বেশ কিছু কারণে এসব মৃত্যু হয়ে থাকে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সাবেক ভিসি ও সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত, বিএসএমএমইউ ভিসি অধ্যাপক মো. ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব লোকমান হোসেন মিয়া, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম প্রমুখ।

মহাশক্তিশালী সুপার টাইফুন ‘বেটি’ধেয়ে আসছে প্রবল শক্তিতে

টিকা মৃত্যুর হার কমায়, সংক্রমণ কমায় না : স্বাস্থ্যমন্ত্রী

প্রকাশের সময় : ০৩:৩৮:০৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ৯ জানুয়ারী ২০২২

ডেস্ক রিপোর্ট ।।

দেশে সম্প্রতি করোনা সংক্রমণ বাড়ছে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এমপি বলেছেন, ‘দেশে সম্প্রতি করোনা সংক্রমণ বাড়ছে। আমি আগেই বলেছিলাম, টিকা সংক্রমণ কমায় না, মৃত্যুর হার কমায়। টিকার অভাব হচ্ছে না। কিন্তু মানুষের টিকা নেওয়ার আগ্রহ কমে গেছে।’

রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আজ রোববার (৯ জানুয়ারি) সকালে দেশের বিভাগীয় ৮টি সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ক্যানসার চিকিৎসাকেন্দ্র স্থাপন প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, টিকার অভাব হচ্ছে না।কিন্তু মানুষের টিকা নেওয়ার আগ্রহ কমে গেছে। সে কারণে আমার বিভিন্ন প্রচার-প্রচারণা করছি। টিকা দেওয়ার জন্য আমরা কমিউনিটি ক্লিনিক পর্যন্ত গিয়েছিলাম। ইউনিয়নে তিনটি ওয়ার্ডে টিকা দেওয়া হতো, এখন সেটাকে ৯টি ওয়ার্ডে নিয়ে যাচ্ছি; যাতে বেশি মানুষ টিকার আওতায় আসে। আজ মৃত্যুর হার এত কম কেন? কারণ এ পর্যন্ত পৌনে ৮ কোটি মানুষ টিকা নিয়েছে। তাই মৃত্যুর হার এত কম।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমি আগেই বলেছিলাম গণজমায়েত কমাতে হবে, সামাজিক অনুষ্ঠানগুলো স্বাস্থ্যবিধি অনুযায়ী করতে হবে। কিন্তু আফসোসের বিষয় হলো, কোন একটা লোকও এসব বিষয়ে কর্ণপাত করেনি। যার ফলে দেশে সংক্রমণের হার বাড়ছে। একইসঙ্গে হাসপাতালের রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে।

জাহিদ মালেক বলেন, আপনারা জানেন দেশে সংক্রমণের হার বৃদ্ধি পাচ্ছে। গতকালও দেশের সংক্রমণের হার ৬ শতাংশের কাছাকাছি ছিল। দেখছি প্রতিদিনই সংক্রমণের হার বাড়ছে। যখন থেকে সংক্রমণ বাড়া শুরু হয়েছে, তখন থেকেই আমরা সতর্কতা নিয়ে প্রচার করে যাচ্ছি।

এ অবস্থায় করণীয় প্রসঙ্গে জাহিদ মালেক বলেন, আমরা ইতোমধ্যে সরকারিভাবে কিছু পদক্ষেপ নিয়েছি। স্বাস্থ্যবিধি মানতে আজ অথবা কালের মধ্যেই একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। এর মাধ্যমে পূর্বে যেসব নির্দেশনাগুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছিল, সেগুলো বাস্তবায়নের জন্য সারাদেশে বার্তা চলে যাবে। আমরা কেবিনেট থেকে জানতে পেরেছি এর কার্যকারিতাও খুব শিগগিরই শুরু হয়ে যাবে।

কিন্তু আমরা যতই নির্দেশনা পাঠাই না কেন, জনগণের উপর নির্ভর করবে তারা এটা মানছে কি না। কাজেই জনগণকেই সচেতন হতে হবে। কারণ তারাই সংক্রমিত হচ্ছে, তাদের পরিবার সংক্রমিত হচ্ছে। বিশেষ করে শিশুরা সংক্রমিত হচ্ছে, এমনকি বয়স্করাও সংক্রমিত হচ্ছে। কাজেই আমাদের নিজেদেরকেই সংক্রমণ মোকাবেলায় দায়িত্বশীল হতে হবে’, যোগ করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

জাহিদ মালেক আরও বলেন, আর যদি সংক্রমণ এভাবে বাড়তেই থাকে তাহলে সরকারকেই কঠোর ভূমিকা নিতে হবে। আর এই মুহূর্তে সংক্রমণের লক্ষণ আমরা দেখছি, সংক্রমণ অতিমাত্রায় অতি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত এক সপ্তাহ আগেই আমাদের দেশে সংক্রমণ নিচে ছিল। দৈনিক দুই থেকে আড়াইশ মানুষের করোনা শনাক্ত হয়েছে, এখন সংক্রমণ প্রায় ৬ শতাংশের কাছাকাছি। রোগীর সংখ্যাও আড়াইশ থেকে বেড়ে গিয়ে এগারোশর ওপরে চলে এসেছে। এটা আমাদের জন্য খুবই আশঙ্কাজনক। আমাদের সকলকেই সচেতন হতে হবে।

অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, দেশে আশঙ্কাজনকভাবে ক্যানসার বাড়ছে। ক্যানসারে প্রতি বছরে এক লাখ মানুষ মারা যায়। আক্রান্ত হয় দেড় লাখ, এখন চিকিৎসাধীন আছে, ২০ লাখ। ভেজাল খাদ্য, মাদক, অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনসহ বেশ কিছু কারণে এসব মৃত্যু হয়ে থাকে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সাবেক ভিসি ও সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত, বিএসএমএমইউ ভিসি অধ্যাপক মো. ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব লোকমান হোসেন মিয়া, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম প্রমুখ।