শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

নোয়াখালী পিডিবির বিরুদ্ধে সাংবাদিকের কবরে বৈদ্যুতিক খুঁটি  স্থাপনের অভিযোগ

নোয়াখালীতে একটি পারিবারিক কবরস্থানের জায়গায় বৈদ্যুতিক খুঁটি স্থাপনের অভিযোগ উঠেছে নোয়াখালী বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) বিরুদ্ধে ।
ভুক্তভোগী পরিবার এ ঘটনায় গত ৩০ডিসেম্বর নোয়াখালী বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ, নোয়াখালী পৌরসভাধীন প্রধান সড়কে ও বিভিন্ন ওয়ার্ডে বৈদ্যুতিক খুঁটি স্থাপনে পিডিবির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা প্রভাব খাটিয়ে এবং কবরস্থানে পাশে অবস্থিত মার্কেটের মালিক পক্ষ থেকে আর্থিক সুবিধা নিয়ে নিজেদের ইচ্ছেমত কবরস্থানের জায়গায় দুটি বৈদ্যুতিক খুঁটি স্থাপন করে।
জানা যায়, নোয়াখালীর পৌরসভার বিতরে জহুরুল হক মিয়া গ্যারেজের পশ্চিম পাশে প্রধান সড়কের ১৪৭ নং বাসায় প্রয়াত সাংবাদিক এবং নোয়াখালী প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক  আবদুল কাদেরের পারিবারিক কবরস্থানের জায়গাতে কাউকে কিছু না জানিয়ে  দুটি খুঁটি স্থাপন করে চলে যায় নোয়াখালী বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) কর্মকর্তা ও ঠিকাদারের লোকজন। কিন্তু এর আগে এর পাশে সরকারি জায়গায় ওই দুটি খুঁটি স্থাপনের জন্য গর্তও করা হয়। রহস্যজনক কারণে পরে তা সরিয়ে কবরের মাঝখান বরাবর জায়গায় নিয়ে আসা হয়।
এই কবরস্থানটি  ১৯৫৫ সালের দিকে তৈরী করেন সাংবাদিক কাদের সাহেবের পিতা মাইজদী শহরের ব্যবসায়ী প্রয়াত আব্দুর রব ডিলার। মাইজদী শহরের সবচাইতে পুরোনো কবরের মধ্যে এই কবরটি অন্যতম যা দেশ স্বাধীনের আগে তৈরী করা হয়।
পরে খুঁটি স্থাপনের বিষয়ে জানতে পেরে,প্রয়াত সাংবাদিক আবদুল কাদেরের বড় মেয়ে রাবেয়া ফেরদাউস পপি (৩৮) গত ৩০ ডিসেম্বর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন নোয়াখালী পিডিবিতে। তার দাবি ছিল তাঁর বাবার কবরের সামনে থেকে খুঁটি দুটি সরিয়ে আরাফ ফার্নিচার প্লাজার সামনের সরকারি খালি জায়গায়  স্থাপন করা হয়।
ভুক্তভোগী সাংবাদিকের ছোট ছেলে প্রবাসী নূর আল আহাদ জানান,আমাদের কবরের পাশে একটু ডান দিকে  আরাফ ফার্নিচার নামক দোকানটি যে প্লাজাতে অবস্থিত। সেই প্লাজার সৌন্দর্য রক্ষার্থে পূর্বের ড্রয়িং অনুযায়ী ট্রান্সফরমার  উক্ত স্থানে না বসিয়ে তাদের থেকে মোটা আর্থিক সুবিধা নিয়ে পিডিবির  সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার রফিক ও পিডিবির আরো কয়েকজন কর্মকর্তার যোগসাজশে সত্তর বছরের পুরোনো আমাদের এই পারিবারিক কবরের সামনে খুঁটি দুটি  স্থাপন করেছেন আমাদের অগোচরে।  খুঁটি স্থাপন করার পর সরানোর জন্য লিখিত অভিযোগ দিলে সেই জন্য ইঞ্জিনিয়ার রফিক নতুন নতুন তালবাহানা তৈরি করে অশোভন আচরণ পর্যন্ত করেছে আমার বড় বোনের সাথে। আমাদের ভূমি,আমাদের পারিবারিক কবরস্থানের জায়গাতে কিছু করতে হলে,আমাদের পরামর্শ নেওয়া উচিত ছিলো পিডিবির ।
তিনি আরো অভিযোগ করে বলেন, দেশ স্বাধীনের এতগুলো বছরে আমাদের পারিবারিক কবরস্থান নিয়ে কোনো প্রকার ঝামেলা পোহাতে হয়নি। কিন্তু পিডিবি নোয়াখালীর এহেন কর্মকান্ডের কারণে প্রায় সত্তর বছরের পুরোনো এই কবরস্থানের সম্মাান হানি হয়েছে। বর্তমানে দেখা যায়, আরাফ ফানির্চারের প্লাজার সামনে বিদ্যুতের ট্রান্সফরমার আছে বসানো এবং সেই খুঁটির পাশে গর্ত করা হয়েছে আরেকটা খুঁটি স্থাপনের জন্য,কিন্তুু খুঁটি সেই গর্তে না স্থাপন করে যা বস্তা দিয়ে ডেকে রাখা হয়। পরবর্তীকালে রহস্যজনক ভাবে কবরের উপর খুঁটি স্থাপন করে পিডিবি। আবার প্লাজার সামনের পুরো জায়গাটুকুই সরকারি। তাহলে এত সরকারি জায়গা খালি রেখে ট্রান্সফরমার অন্যদিকে সরানোর পেছনে যে অর্থনৈতিক লেনদেন জড়িত তা বুঝার আর বাকি নেই।
নোয়াখালী পিডিবি’তে দীর্ঘদিন কর্মরত সিনিয়র ইঞ্জিনিয়ার মামুনের নিকট এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান,আরাফ ফার্নিচার ও উক্ত প্লাজার সামনে ট্র্যান্সফার খুঁটির ড্রয়িং আমার সময় করা,আমি নিজে দাড়িয়ে থেকে ঐ স্থানে কাজ সম্পন্ন করেছি। আজ কেন পূর্বের স্থানে খুঁটি ও ট্র্যান্সফার বসানো হয়নি,ড্রয়িং পরিবর্তন করে কবরের সামনে খুঁটি স্থাপন রহস্যজনক বলে মনে হয় আমার। কবরস্থানটি পারিবারিক ও সাংবাদিক পরিবারের নিজস্ব ভূমিতে স্থাপন, যা পূর্বে সকল কাগজপত্র প্রমাণাদিসহ দেখেছি সেই সময়েও আমরা।
এবিষয়ে নোয়াখালী পিডিবি’র নির্বাহী প্রকৌশলী নুরুল আমিন জানান, খুঁটি স্থাপনের করলে ওই খুঁটি সরানোর জন্য একটি লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে সত্য। তবে তাদের কবর স্থানের জায়গায় খুঁটি স্থাপন করা হয়নি। ওই জায়গার মালিক রোডস। এরপরও অভিযোগাকারীকে বলা হয় জায়গার মালিকানার কাগজ নিয়ে আসার জন্য। তাহলে খুঁটি সরিয়ে ফেলা হবে। তারা জায়গার মালিকানার কাগজ নিয়ে আসেনি। তবে এ কবরস্থানের মূল মালিক দাবিদার ৭জন। এদের মধ্যে বেলায়েত হোসেন নামে একজন তাঁর জায়গায় খুঁটি স্থাপন করলে কোন আপত্ত্বি নেই বলে লিখিত দেয়।
তিনি আরো বলেন, পিডিবির কর্মকর্তা রফিকের বিরুদ্ধে আর্থিক সুবিধা নেওয়ার অভিযোগ মিথ্যা। এ বিষয়ে অভিযোগকারীরা কোন প্রমাণ দেখাতে পারেনি।

নোয়াখালী পিডিবির বিরুদ্ধে সাংবাদিকের কবরে বৈদ্যুতিক খুঁটি  স্থাপনের অভিযোগ

প্রকাশের সময় : ০৬:৩৭:৩৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২২
নোয়াখালীতে একটি পারিবারিক কবরস্থানের জায়গায় বৈদ্যুতিক খুঁটি স্থাপনের অভিযোগ উঠেছে নোয়াখালী বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) বিরুদ্ধে ।
ভুক্তভোগী পরিবার এ ঘটনায় গত ৩০ডিসেম্বর নোয়াখালী বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ, নোয়াখালী পৌরসভাধীন প্রধান সড়কে ও বিভিন্ন ওয়ার্ডে বৈদ্যুতিক খুঁটি স্থাপনে পিডিবির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা প্রভাব খাটিয়ে এবং কবরস্থানে পাশে অবস্থিত মার্কেটের মালিক পক্ষ থেকে আর্থিক সুবিধা নিয়ে নিজেদের ইচ্ছেমত কবরস্থানের জায়গায় দুটি বৈদ্যুতিক খুঁটি স্থাপন করে।
জানা যায়, নোয়াখালীর পৌরসভার বিতরে জহুরুল হক মিয়া গ্যারেজের পশ্চিম পাশে প্রধান সড়কের ১৪৭ নং বাসায় প্রয়াত সাংবাদিক এবং নোয়াখালী প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক  আবদুল কাদেরের পারিবারিক কবরস্থানের জায়গাতে কাউকে কিছু না জানিয়ে  দুটি খুঁটি স্থাপন করে চলে যায় নোয়াখালী বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) কর্মকর্তা ও ঠিকাদারের লোকজন। কিন্তু এর আগে এর পাশে সরকারি জায়গায় ওই দুটি খুঁটি স্থাপনের জন্য গর্তও করা হয়। রহস্যজনক কারণে পরে তা সরিয়ে কবরের মাঝখান বরাবর জায়গায় নিয়ে আসা হয়।
এই কবরস্থানটি  ১৯৫৫ সালের দিকে তৈরী করেন সাংবাদিক কাদের সাহেবের পিতা মাইজদী শহরের ব্যবসায়ী প্রয়াত আব্দুর রব ডিলার। মাইজদী শহরের সবচাইতে পুরোনো কবরের মধ্যে এই কবরটি অন্যতম যা দেশ স্বাধীনের আগে তৈরী করা হয়।
পরে খুঁটি স্থাপনের বিষয়ে জানতে পেরে,প্রয়াত সাংবাদিক আবদুল কাদেরের বড় মেয়ে রাবেয়া ফেরদাউস পপি (৩৮) গত ৩০ ডিসেম্বর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন নোয়াখালী পিডিবিতে। তার দাবি ছিল তাঁর বাবার কবরের সামনে থেকে খুঁটি দুটি সরিয়ে আরাফ ফার্নিচার প্লাজার সামনের সরকারি খালি জায়গায়  স্থাপন করা হয়।
ভুক্তভোগী সাংবাদিকের ছোট ছেলে প্রবাসী নূর আল আহাদ জানান,আমাদের কবরের পাশে একটু ডান দিকে  আরাফ ফার্নিচার নামক দোকানটি যে প্লাজাতে অবস্থিত। সেই প্লাজার সৌন্দর্য রক্ষার্থে পূর্বের ড্রয়িং অনুযায়ী ট্রান্সফরমার  উক্ত স্থানে না বসিয়ে তাদের থেকে মোটা আর্থিক সুবিধা নিয়ে পিডিবির  সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার রফিক ও পিডিবির আরো কয়েকজন কর্মকর্তার যোগসাজশে সত্তর বছরের পুরোনো আমাদের এই পারিবারিক কবরের সামনে খুঁটি দুটি  স্থাপন করেছেন আমাদের অগোচরে।  খুঁটি স্থাপন করার পর সরানোর জন্য লিখিত অভিযোগ দিলে সেই জন্য ইঞ্জিনিয়ার রফিক নতুন নতুন তালবাহানা তৈরি করে অশোভন আচরণ পর্যন্ত করেছে আমার বড় বোনের সাথে। আমাদের ভূমি,আমাদের পারিবারিক কবরস্থানের জায়গাতে কিছু করতে হলে,আমাদের পরামর্শ নেওয়া উচিত ছিলো পিডিবির ।
তিনি আরো অভিযোগ করে বলেন, দেশ স্বাধীনের এতগুলো বছরে আমাদের পারিবারিক কবরস্থান নিয়ে কোনো প্রকার ঝামেলা পোহাতে হয়নি। কিন্তু পিডিবি নোয়াখালীর এহেন কর্মকান্ডের কারণে প্রায় সত্তর বছরের পুরোনো এই কবরস্থানের সম্মাান হানি হয়েছে। বর্তমানে দেখা যায়, আরাফ ফানির্চারের প্লাজার সামনে বিদ্যুতের ট্রান্সফরমার আছে বসানো এবং সেই খুঁটির পাশে গর্ত করা হয়েছে আরেকটা খুঁটি স্থাপনের জন্য,কিন্তুু খুঁটি সেই গর্তে না স্থাপন করে যা বস্তা দিয়ে ডেকে রাখা হয়। পরবর্তীকালে রহস্যজনক ভাবে কবরের উপর খুঁটি স্থাপন করে পিডিবি। আবার প্লাজার সামনের পুরো জায়গাটুকুই সরকারি। তাহলে এত সরকারি জায়গা খালি রেখে ট্রান্সফরমার অন্যদিকে সরানোর পেছনে যে অর্থনৈতিক লেনদেন জড়িত তা বুঝার আর বাকি নেই।
নোয়াখালী পিডিবি’তে দীর্ঘদিন কর্মরত সিনিয়র ইঞ্জিনিয়ার মামুনের নিকট এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান,আরাফ ফার্নিচার ও উক্ত প্লাজার সামনে ট্র্যান্সফার খুঁটির ড্রয়িং আমার সময় করা,আমি নিজে দাড়িয়ে থেকে ঐ স্থানে কাজ সম্পন্ন করেছি। আজ কেন পূর্বের স্থানে খুঁটি ও ট্র্যান্সফার বসানো হয়নি,ড্রয়িং পরিবর্তন করে কবরের সামনে খুঁটি স্থাপন রহস্যজনক বলে মনে হয় আমার। কবরস্থানটি পারিবারিক ও সাংবাদিক পরিবারের নিজস্ব ভূমিতে স্থাপন, যা পূর্বে সকল কাগজপত্র প্রমাণাদিসহ দেখেছি সেই সময়েও আমরা।
এবিষয়ে নোয়াখালী পিডিবি’র নির্বাহী প্রকৌশলী নুরুল আমিন জানান, খুঁটি স্থাপনের করলে ওই খুঁটি সরানোর জন্য একটি লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে সত্য। তবে তাদের কবর স্থানের জায়গায় খুঁটি স্থাপন করা হয়নি। ওই জায়গার মালিক রোডস। এরপরও অভিযোগাকারীকে বলা হয় জায়গার মালিকানার কাগজ নিয়ে আসার জন্য। তাহলে খুঁটি সরিয়ে ফেলা হবে। তারা জায়গার মালিকানার কাগজ নিয়ে আসেনি। তবে এ কবরস্থানের মূল মালিক দাবিদার ৭জন। এদের মধ্যে বেলায়েত হোসেন নামে একজন তাঁর জায়গায় খুঁটি স্থাপন করলে কোন আপত্ত্বি নেই বলে লিখিত দেয়।
তিনি আরো বলেন, পিডিবির কর্মকর্তা রফিকের বিরুদ্ধে আর্থিক সুবিধা নেওয়ার অভিযোগ মিথ্যা। এ বিষয়ে অভিযোগকারীরা কোন প্রমাণ দেখাতে পারেনি।