
রাখে আল্লাহ মারে কে কথাটি আবারো প্রমাণ করলো রেজ্জেক ব্যাপারী (৩০)। বঙ্গোপসাগরে ঝড়ে উল্টে যাওয়া ডুবন্ত প্রায় এফবি মা-বাবার দোয়া ফিশিংবোটের ইঞ্জিন রুমে পানির মধ্যে আটকে ছিলেন তিনি। দূর্ঘটনার ১৬ ঘন্টা পরে এক জেলের লাশ সহ তাকে উদ্ধার করা হয়। ঘটনাটি ঘটেছে ৫ ফেব্রুয়ারি দুবলারচরের দক্ষিণে গভীর বঙ্গোপসাগরে।
মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে আসা বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জের বৌলপুর ইউনিয়নের শৌলখালী বড়হরিপুর গ্রামের সাহেব আলী ব্যাপারীর পুত্র ফিশিংবোট এফবি মা-বাবার দোয়ার মিস্ত্রী (ইঞ্জিন চালক) রেজ্জেক ব্যাপারী (৩৫) মঙ্গলবার সকালে এ প্রতিনিধিকে বলেন, মহান আল্লাহ আমাকে নতুন জীবন দান করেছেন। সাগর থেকে জীবিত ফেরার আশা ছেড়েই দিয়েছিলাম। ৪ ফেব্রæয়ারী রাতের ভয়াবহ টর্ণেডোর দুঃসহ স্মৃতির বর্ণনা করে জানান, সেদিন রাতে আমরা দুবলারচর থেকে প্রায় দুই ঘন্টার দুরত্বে গভীর সাগরে ৫০/৬০ টা ফিশিংবোট মাছ ধরার জন্য নোঙ্গরে ছিলাম সাগর শান্ত ও আকাশ তারা ভরা মেঘমুক্ত পরিষ্কার ছিলো। রাত আনুমানিক নয়টার দিকে আকষ্মিক চারদিক কালো হয়ে ঘূর্ণীঝড় শুরু হয়ে যায় আমরা তাৎক্ষনিক তিনটি বোট পাশাপাশি থেকে দ্রুত বেগে বোট নিয়ে দুবলারচরের দিকে ছুটতে থাকি। ঝড়ের তান্ডব দেখে মনে হচ্ছিলো ঝড় শুধুমাত্র আমাদের তিনটি বোটকে তাড়া করছে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই আমাদের বোট মা-বাবার দোয়াসহ ্এক সাথে থাকা অপর দুটি বোট সাগরে উল্টে যায়। আমাদের বোটে থাকা সব জেলে সাগরে পড়ে যায়। আমিসহ আমার সঙ্গীয় দুই জেলে মামুন ও আবু বকর মোল্লা বোটের ইঞ্জিন রুমে আটকা পড়ি। আমি ছিটকে চলন্ত ইঞ্জিনের উপর পড়ে মারাত্মকভাবে ঝলসে আহত হই। মুহুর্তের মধ্যে বোটের ভিতরে পানিতে ভরে যায়। বোট থেকে বের হবার কোন পথ খুঁজে পাচ্ছিলামনা। আমার পাশে থাকা মামুন বোটের মধ্যে পানিতে ডুবে মারা যায়। অপর জেলে আবু বকর পানির মধ্যে ছোটাছুটির এক পর্যায়ে বোট থেকে বের হয়ে সাগরে নিখোঁজ হয়েছে। আমি বোটের মধ্যে একবার ডুবি একবার ভাসি এভাবে কোন রকমে পানির উপরে নাক রেখে একটু একটু করে নিশ্বাস নিচ্ছিলাম আর আল্লাহকে স্মরণ করছি। দূর্ঘটনার প্রায় ১৬ ঘন্টা পরে আমদের বোট উল্টে ভাসতে দেখে অপর ফিশিংবোট এফবি সাব্বিরসহ আরো ২/১টি বোট আমাদের বোটটিকে টেনে স্বাভাবিক অবস্থায় সাগরে ভাসাতে সক্ষম হয় । এ সময় ঐ বোটের জেলেরা অর্ধ ডুবন্ত বোট থেকে নিহত জেলে মামুনের লাশ সহ প্রায় অচেতন অবস্থায় আমাকে উদ্ধার করে দুবলার ভেদাখালী নিয়ে যায়। তিন কণ্যা সন্তানের জনক হতদরিদ্র রেজ্জেক দুঃখ প্রকাশ করে জানান, দীর্ঘ প্রায় ১১ বছর যাবৎ সমুদ্রে মহাজনের বোটে ফিশিং করি আজ পর্যন্ত সরকারী কোন সহায়তা পাইনি তার নামে কোন জেলে কার্ড হয়নি।
উদ্ধারকারী বোট এফবি সাব্বিরের মালিক বাগেরহাটের কচুয়ার বগা গ্রামের মিজানুর রহমান বলেন, রেজ্জেককে বোটের পানিতে ডুবন্ত ও আহত অবস্থায় উদ্ধার করি। উদ্ধারের পরে প্রায় তিনঘন্টা রেজ্জেক অচেতন ছিলো। অবস্থাদৃষ্টে রেজ্জেকের সাগর থেকে বেঁেচ ফিরে আসা একটা বিষ্ময়কর ঘটনা বলে মিজানুর রহমান মনে করেন।
বার্তা/এন
সম্পাদক ও প্রকাশক: মহসিন মিলন
সম্পাদকীয় পরিষদ
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি: নুরুজ্জামান লিটন, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: রোকনুজ্জামান রিপন, নির্বাহী সম্পাদক: আব্দুল লতিফ, যুগ্ন নির্বাহী সম্পাদক: আলহাজ্ব মতিয়ার রহমান, সহকারী সম্পাদক: সাজ্জাদুল ইসলাম সৌরভ, মামুন বাবু, বার্তা সম্পাদক: নজরুল ইসলাম
সম্পাদকীয় কার্যালয়
বার্তা ও বানিজ্যক কার্যালয়: গাজীপুর আবাসিক এলাকা, বেনাপোল, যশোর। ইমেইল: mohsin.milon@gmail.com, bartakontho@gmail.com ফোন: ৭৫২৮৯, ৭৫৬৯৫ মোবা: ০১৭১১৮২০৩৯৪
All Rights Reserved © Barta Kontho