শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বেনাপোলে দুই পরিবারের মারামারি দেখতে যেয়ে প্রতিবেশী নিহত

যশোরের বেনাপোলে পোড়াবাড়ী নারায়নপুর গ্রামে আজ শুক্রবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বিকালে বিনয় বিশ্বাস ও মনি ঠাকুরের পরিবারের মধ্যে মারামারির ঘটনা দেখতে যেয়ে ধাক্কাধাক্কির এক পর্যায়ে নিহত হলো শ্বশি ভূষন বিশ্বাস (৭০)নামে এক ব্যাক্তি। এ ঘটনা জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বিনয় বিশ্বাস সহ ৬ জন কে থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে।

গ্রামবাসীরা জানান, বিকাল ৩ টার দিকে বিনয় বিশ্বাস ও মনি ঠাকুরের পরিবারের মধ্যে বাড়ীর সামনে মাটি কাটাকে কেন্দ্র করে কলহ বাধে। এক পর্যায়ে উভয়ের মধ্যে মারামারি বেধে যায়। এসময় বিনয় বিশ্বাসের ছেলে শুভ্কংর বিশ্বাস ও আব্বাসের ছেলে বাবু পাইপ দিয়ে মনি ঠাকুর ও তার স্ত্রী মামনি ঠাকুরকে পিটাতে থাকে। তাদের মারামারি মিমাংসা করার জন্য আশপাশ থেকে প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন। মনি ঠাকুর ও তার স্ত্রী মামনি ঠাকুরকে ওদের হাত থেকে বাচাতে ছুটে যান শ্বশি ভুষন বিশ্বাস । এ সময় উভযের ধাক্কাধাক্কিতে শ্বশি ভুষন মাটিতে পড়ে গেলে শ্বশি ভুষনের ছেলে বিপ্লব বিশ্বাস মাটি থেকে তুলতে গেলে বিনয় বিশ্বাস, ছেলে শুভ্কংর বিশ্বাস ও আব্বাসের ছেলে বাবু তাকে পাইপ দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করে। ছেলেকে মারতে দেখে শ্বশি ভুষন বিশ্বাস মাটিতে লুঠিয়ে পড়ে। পরে শার্শা বুরুজবাগান হাসপাতালে নেয়ার পর তিনি মারা যান। তবে কিভাবে মারা গেছেন এটা বলতে পারেনি তারা। তবে গ্রামের অনেকে বলছেন তিনি এমনিতেই হৃদরোগে আক্রান্ত ছিলেন তারপর এসব ঘটনা দেখে সয্য করতে না পেরে মারা যেতে পারেন।

নিহত শ্বশি ভুষন বিশ্বাসের ছেলে বিপ্লব বিশ্বাস বলেন, বিনয় বিশ্বাস, ছেলে শুভ্কংর বিশ্বাস ও তাদের লোকজন মনি ঠাকুর ও তার স্ত্রী মামনি ঠাকুর কে মারছিলেন। বাবা ঠেকাতে গেলে বিনয় বিশ্বাস বাবাকে ধাক্কা দিলে তিনি মাটিতে পড়ে য়ান। এসময় আমি দৌড়ে এসে বাবাকে তুলতে গেলে বিনয় বিশ্বাসের লোকজন আমাকে পাইপ দিয়ে মারতে থাকে। সে মারের আঘাত বাবার গায়েও লাগে। এসময় বাবা মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। তার পর আমি আর কিছু জানিনা। তিনি অভিযোগ করে বলেন, বিনয় বিশ্বাসের লোকজন আমার বাবাকে মেরে ফেলেছে। এসব কথা তিনি বেনাপোল থানার ওসির সাথে ঘটনাস্থলে বলছিলেন এবং বিচার দাবী করেন।

বিনয় বিশ্বাস বলেন, মনি ঠাকুর আমার বাড়ীর পাশ থেকে মাটি কাটছিল। মাটি কাটতে নিষেধ করায় মনি ঠাকুর ও তার স্ত্রী ঝগড়া বাধায়। ঝগড়ার এ পর্যায়ে আমাদের দু পরিবারের মাধ্যে মারামারি বেধে যায়। এসময় শ্বশি ভুষন বিশ্বাস মারামারির মাঝে এসে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তাকে কেউ কোন ভাবে আঘাত করেনি।

বেনাপোল ইউপি চেয়ারম্যান বজলুর রহমান জানান, বিনয় বিশ্বাস ও মনি ঠাকুরের পরিবারের ঝামেলা দীর্ঘদিনের। প্রাইয় দু পরিবারের মাধ্যে কলহ বাধতো। আজ বিকালে কলহ বাধলে প্রতিবিশীরা ছুটে আসেন মিমাংসা করার জন্য। শ্বশি ভুষন ও আসেন সেখানে। মারামারির মধ্যে পড়ে ধাক্কাধাক্কিতে মাটিতে পড়ে গেলে হার্ট এটাক করে মারা যেতে পারেন বলে ধারনা করা হচ্ছে। কারন এর আগে তার দু বার হার্ট এটাক হয়েছিল।

বেনাপোল পোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল হোসেন ভূইয়া জানান, বেনাপোল পোড়াবাড়ী নারায়নপুর গ্রামে দু পরিবারের মারামারির মাঝে পড়ে শ্বশি ভুষন বিশ্বাস নামে একজন মারা গেছেন। ময়না তদন্তের জন্য লাশ যশোর সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত কিভাবে মারা গেছেন সেটা বলা সম্ভব হচ্ছেনা। বিষয়টা তদন্ত করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বিনয় বিশ্বাস ও তার ছেলে সুভংকর বিশ্বাস, আব্বাস ও তার ছেলে বাবু, মনি ঠাকুর ও তার স্ত্রী মামনি ঠাকুরকে থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে।

 

বার্তা/এন

 

হিলিতে প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনীর উদ্বোধন

বেনাপোলে দুই পরিবারের মারামারি দেখতে যেয়ে প্রতিবেশী নিহত

প্রকাশের সময় : ০৯:০৭:১৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২২

যশোরের বেনাপোলে পোড়াবাড়ী নারায়নপুর গ্রামে আজ শুক্রবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বিকালে বিনয় বিশ্বাস ও মনি ঠাকুরের পরিবারের মধ্যে মারামারির ঘটনা দেখতে যেয়ে ধাক্কাধাক্কির এক পর্যায়ে নিহত হলো শ্বশি ভূষন বিশ্বাস (৭০)নামে এক ব্যাক্তি। এ ঘটনা জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বিনয় বিশ্বাস সহ ৬ জন কে থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে।

গ্রামবাসীরা জানান, বিকাল ৩ টার দিকে বিনয় বিশ্বাস ও মনি ঠাকুরের পরিবারের মধ্যে বাড়ীর সামনে মাটি কাটাকে কেন্দ্র করে কলহ বাধে। এক পর্যায়ে উভয়ের মধ্যে মারামারি বেধে যায়। এসময় বিনয় বিশ্বাসের ছেলে শুভ্কংর বিশ্বাস ও আব্বাসের ছেলে বাবু পাইপ দিয়ে মনি ঠাকুর ও তার স্ত্রী মামনি ঠাকুরকে পিটাতে থাকে। তাদের মারামারি মিমাংসা করার জন্য আশপাশ থেকে প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন। মনি ঠাকুর ও তার স্ত্রী মামনি ঠাকুরকে ওদের হাত থেকে বাচাতে ছুটে যান শ্বশি ভুষন বিশ্বাস । এ সময় উভযের ধাক্কাধাক্কিতে শ্বশি ভুষন মাটিতে পড়ে গেলে শ্বশি ভুষনের ছেলে বিপ্লব বিশ্বাস মাটি থেকে তুলতে গেলে বিনয় বিশ্বাস, ছেলে শুভ্কংর বিশ্বাস ও আব্বাসের ছেলে বাবু তাকে পাইপ দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করে। ছেলেকে মারতে দেখে শ্বশি ভুষন বিশ্বাস মাটিতে লুঠিয়ে পড়ে। পরে শার্শা বুরুজবাগান হাসপাতালে নেয়ার পর তিনি মারা যান। তবে কিভাবে মারা গেছেন এটা বলতে পারেনি তারা। তবে গ্রামের অনেকে বলছেন তিনি এমনিতেই হৃদরোগে আক্রান্ত ছিলেন তারপর এসব ঘটনা দেখে সয্য করতে না পেরে মারা যেতে পারেন।

নিহত শ্বশি ভুষন বিশ্বাসের ছেলে বিপ্লব বিশ্বাস বলেন, বিনয় বিশ্বাস, ছেলে শুভ্কংর বিশ্বাস ও তাদের লোকজন মনি ঠাকুর ও তার স্ত্রী মামনি ঠাকুর কে মারছিলেন। বাবা ঠেকাতে গেলে বিনয় বিশ্বাস বাবাকে ধাক্কা দিলে তিনি মাটিতে পড়ে য়ান। এসময় আমি দৌড়ে এসে বাবাকে তুলতে গেলে বিনয় বিশ্বাসের লোকজন আমাকে পাইপ দিয়ে মারতে থাকে। সে মারের আঘাত বাবার গায়েও লাগে। এসময় বাবা মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। তার পর আমি আর কিছু জানিনা। তিনি অভিযোগ করে বলেন, বিনয় বিশ্বাসের লোকজন আমার বাবাকে মেরে ফেলেছে। এসব কথা তিনি বেনাপোল থানার ওসির সাথে ঘটনাস্থলে বলছিলেন এবং বিচার দাবী করেন।

বিনয় বিশ্বাস বলেন, মনি ঠাকুর আমার বাড়ীর পাশ থেকে মাটি কাটছিল। মাটি কাটতে নিষেধ করায় মনি ঠাকুর ও তার স্ত্রী ঝগড়া বাধায়। ঝগড়ার এ পর্যায়ে আমাদের দু পরিবারের মাধ্যে মারামারি বেধে যায়। এসময় শ্বশি ভুষন বিশ্বাস মারামারির মাঝে এসে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তাকে কেউ কোন ভাবে আঘাত করেনি।

বেনাপোল ইউপি চেয়ারম্যান বজলুর রহমান জানান, বিনয় বিশ্বাস ও মনি ঠাকুরের পরিবারের ঝামেলা দীর্ঘদিনের। প্রাইয় দু পরিবারের মাধ্যে কলহ বাধতো। আজ বিকালে কলহ বাধলে প্রতিবিশীরা ছুটে আসেন মিমাংসা করার জন্য। শ্বশি ভুষন ও আসেন সেখানে। মারামারির মধ্যে পড়ে ধাক্কাধাক্কিতে মাটিতে পড়ে গেলে হার্ট এটাক করে মারা যেতে পারেন বলে ধারনা করা হচ্ছে। কারন এর আগে তার দু বার হার্ট এটাক হয়েছিল।

বেনাপোল পোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল হোসেন ভূইয়া জানান, বেনাপোল পোড়াবাড়ী নারায়নপুর গ্রামে দু পরিবারের মারামারির মাঝে পড়ে শ্বশি ভুষন বিশ্বাস নামে একজন মারা গেছেন। ময়না তদন্তের জন্য লাশ যশোর সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত কিভাবে মারা গেছেন সেটা বলা সম্ভব হচ্ছেনা। বিষয়টা তদন্ত করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বিনয় বিশ্বাস ও তার ছেলে সুভংকর বিশ্বাস, আব্বাস ও তার ছেলে বাবু, মনি ঠাকুর ও তার স্ত্রী মামনি ঠাকুরকে থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে।

 

বার্তা/এন