বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তী অভিনেত্রী আনোয়ারা বেগম। ষাটের দশকে থেকে অভিনয় শুরু করা এই অভিনেত্রী বর্তমানে গুরুতর অসুস্থ। ১১ মার্চ রাতে হঠাৎ মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হলে ঢাকার রামপুরার বনশ্রীর একটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় এই অভিনয়শিল্পীকে। টানা ১০ দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর দুই দিন আগে তাকে বাসায় আনা হয়। চোখে এখনো সবকিছু ঝাপসা দেখছেন। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের কারণে এমন পরিস্থিতি হয়েছে বলে সময় সংবাদকে জানিয়েছেন তার মেয়ে অভিনয়শিল্পী রুমানা ইসলাম মুক্তি।
বুধবার (২৩ মার্চ) ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে হল অব ফেম মিলনায়তনে বসতে যাচ্ছে ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০২০’–এর এবারের আসর। এবার যুগ্মভাবে আজীবন সম্মাননা প্রদান করা হচ্ছে আনোয়ারা বেগম ও রাইসুল ইসলাম আসাদকে। এই অনুষ্ঠানে পুরস্কার নিতে সুদূর আমেরিকা থেকে এরই মধ্যে ঢাকায় এসেছেন আসাদ। কিন্তু অসুস্থতার কারণে সশরীরে উপস্থিত থেকেও পুরস্কার নিতে পারছেন না আনোয়ারা। তার হয়ে পুরস্কার গ্রহণ করবেন তার মেয়ে মুক্তি।
মুক্তি বলেন, ‘স্ট্রোক করার পর কয়েক দিন তো আম্মা আমাকেই চিনতে পারেননি। এখন আমাকে চিনছেন। কিন্তু আত্মীয়স্বজন কেউ এসে নাম বললেও তাদের চিনতে পারছেন না। চোখে ঝাপসা দেখছেন। ধরে ধরে হাঁটাতে হয়। কিছু দূর হাঁটলে দুর্বল হয়ে পড়েন। সামান্য হাঁটাতেই কাহিল হয়ে যান। তাই কালকে কোনোভাবেই যাওয়া সম্ভব নয়।
ঠিক এভাবেই সিনেমাতে যাত্রা হলেও তার অভিনেত্রী হওয়ার শুরুটা একটু দেরিতেই হয়েছিল। ১৯৬৪ সালে তিনি জহির রায়হানের ‘সংগম’ চলচ্চিত্রে প্রথম সহ-অভিনেত্রী হিসেবে অভিনয় করেন। ১৯৬২ – ১৯৬৬ সালে তিনি মোট ১৯টি চলচ্চিত্রে বিভিন্ন পার্শ্বচরিত্রে অভিনয় করেন। অবশেষে ১৯৬৭ সালে ‘বালা’ চলচ্চিত্রে তিনি নায়িকা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। তবে নবাব সিরাজউদ্দৌল্লা চলচ্চিত্রটি ছিল আনোয়ারার জীবনের টার্নিং পয়েন্ট। এ চলচ্চিত্রে তিনি আলেয়া চরিত্রে অভিনয় করেন। তার বিপরীতে খ্যাতিমান অভিনেতা আনোয়ার হোসেন যিনি নবাব সিরাজউদ্দৌল্লা চরিত্রে অভিনয় করেন।