বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

চট্টগ্রামের দামপাড়ায় ‘পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘর’ উদ্বোধন 

বন্দর নগরী চট্টগ্রামের দামপাড়াস্থ পুলিশ লাইন্সে বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) নবনির্মিত ‘পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর’ এর উদ্বোধন করেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা আসাদুজ্জামান খান কামাল এম পি।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) উদ্যোগে নির্মিত প্রায় ছয় হাজার বর্গফুট আয়তনের জাদুঘরটিতে স্থান পেয়েছে মুক্তিযুদ্ধে শহীদ পুলিশ সদস্যদের ব্যবহৃত অস্ত্র, পোশাক ও অন্যান্য সামগ্রী।
জাদুঘরের একটি অংশজুড়ে রয়েছে ‘বঙ্গবন্ধু কর্ণার’। সেখানে বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবনের চট্টগ্রাম অংশের পাশাপাশি মহান মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন স্মারক স্থান পেয়েছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন সিএমপি কমিশনার জনাব সালেহ্ মোহাম্মদ তানভীর। এ সময় তিনি বলেন, পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের উদ্দেশ্য হচ্ছে ইতিহাসের স্মারক সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করে যথাযথভাবে উপস্থাপন। মাস্টারদা সূর্য সেনের ব্রিটিশ বিরোধী বিদ্রোহ ও মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে চট্টগ্রাম পুলিশের আত্মত্যাগ মূলত চট্টগ্রামের ইতিহাস। এ লক্ষ্যে এতদ অঞ্চলে বেড়ে উঠা নতুন প্রজন্মকে স্বাধীনতার ইতিহাস সম্পর্কে সচেতন করে তোলা। সাথে উদার, অসাম্প্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী হতে উৎসাহিত করা। যাথে তারা মাতৃভূমির জন্য গর্ববোধ ও দেশাত্মবোধে উদ্দীপ্ত হয়।
সিএমপি কমিশনার বলেন, ১৯৩০ সালের ১৮ এপ্রিল মাস্টার দা সূর্য সেনের নেতৃত্বে স্বাধীনতাকামী বিপ্লবীদের ব্রিটিশ পুলিশের চট্টগ্রামের অস্ত্রগার লুণ্ঠন, টেলিফোন ও টেলিগ্রাফ অফিস ধ্বংস ও ইউরোপিয়ান ক্লাবে হামলা চালানোর মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জনের চেষ্টার কিছু দূর্লভ চিত্র যাদুঘরটিতে স্থান পেয়েছে।
তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের মার্চে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে গিয়ে চট্টগ্রামের এসপি এম শামসুল হক, কোতোয়ালী থানার ওসি আব্দুল খালেক, দামপাড়া পুলিশ লাইন্সের আরআই আকরাম হোসেনসহ ৮১ জন পুলিশ সদস্যের শাহাদাৎ বরণ করেন। এসব ঐতিহাসিক ঘটনাবলীকে দৃষ্টিলব্দ অবয়ব প্রদানের লক্ষে মৌলিক ব্রিটিশ স্থাপত্য শৈলীতে প্রতিষ্ঠিত লাল ভবনদ্বয়ের অখন্ডতা বজায় রেখে আধুনিক তথ্য-প্রযুক্তির মাধ্যমে দামপাড়া পুলিশ লাইন্সে “পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, চট্টগ্রাম” নির্মাণ করা হয়।
অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী, সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, বিভাগীয় কমিশনার আশরাফ উদ্দিন, চট্টগ্রাম রেন্জের ডিআইজি মোঃ আনোয়ার হোসেন, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) জনাব শ্যামল কুমার নাথ, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম এন্ড অপারেশন) জনাব মোঃ শামসুল আলম, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (প্রশাসন ও অর্থ) জনাব সানা শামিনুর রহমান, উপ পুলিশ কমিশনার (সদর) জনাব মোঃ আমির জাফর, চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার এস এম রশিদুল হকসহ পুলিশের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।
 উদ্বোধন শেষে আমন্ত্রিত অতিথিগণ জাদুঘরে সংরক্ষিত বিভিন্ন সময়ের পুলিশের পোষাক, তৎকালীন সময়ের সরকারি দপ্তরের চিঠি, পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ, বীরশ্রেষ্ঠদের বৃত্তান্ত , বর্তমান পুলিশ সদস্যদের পোশাক, দামপাড়া পুলিশ লাইন্সের ম্যাপ, ফাঁসির মঞ্চ, ভিজুয়াল ডিসপ্লে সংবলিত হল রুম, মুক্তিযুদ্ধে শহীদ পুলিশ সদস্যদের ছবি, তথ্য, ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধ কেন্দ্রিক দেশি বিদেশি বিভিন্ন পত্রিকার নিউজ, বঙ্গবন্ধু কর্নার, মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক বিভিন্ন বই, বঙ্গবন্ধুর ছবি ও তাঁর লেখা বই, মুক্তিযুদ্ধে ব্যবহৃত অস্ত্র ইত্যাদি পরিদর্শন করেন।
সিএমপি সূত্রে জানা যায়, জাদুঘর সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে খুব দ্রুত। পরিদর্শনের সময়সূচি ও প্রবেশ মূল্য পরবর্তী সময় জানানো হবে। জাদুঘরের অন্যতম আকর্ষণ হিসেবে, মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক লেজার শোর সময়সূচিও জানানো হবে খুব শীঘ্রই।

চট্টগ্রামের দামপাড়ায় ‘পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘর’ উদ্বোধন 

প্রকাশের সময় : ১২:০২:২৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ মার্চ ২০২২

বন্দর নগরী চট্টগ্রামের দামপাড়াস্থ পুলিশ লাইন্সে বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) নবনির্মিত ‘পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর’ এর উদ্বোধন করেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা আসাদুজ্জামান খান কামাল এম পি।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) উদ্যোগে নির্মিত প্রায় ছয় হাজার বর্গফুট আয়তনের জাদুঘরটিতে স্থান পেয়েছে মুক্তিযুদ্ধে শহীদ পুলিশ সদস্যদের ব্যবহৃত অস্ত্র, পোশাক ও অন্যান্য সামগ্রী।
জাদুঘরের একটি অংশজুড়ে রয়েছে ‘বঙ্গবন্ধু কর্ণার’। সেখানে বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবনের চট্টগ্রাম অংশের পাশাপাশি মহান মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন স্মারক স্থান পেয়েছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন সিএমপি কমিশনার জনাব সালেহ্ মোহাম্মদ তানভীর। এ সময় তিনি বলেন, পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের উদ্দেশ্য হচ্ছে ইতিহাসের স্মারক সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করে যথাযথভাবে উপস্থাপন। মাস্টারদা সূর্য সেনের ব্রিটিশ বিরোধী বিদ্রোহ ও মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে চট্টগ্রাম পুলিশের আত্মত্যাগ মূলত চট্টগ্রামের ইতিহাস। এ লক্ষ্যে এতদ অঞ্চলে বেড়ে উঠা নতুন প্রজন্মকে স্বাধীনতার ইতিহাস সম্পর্কে সচেতন করে তোলা। সাথে উদার, অসাম্প্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী হতে উৎসাহিত করা। যাথে তারা মাতৃভূমির জন্য গর্ববোধ ও দেশাত্মবোধে উদ্দীপ্ত হয়।
সিএমপি কমিশনার বলেন, ১৯৩০ সালের ১৮ এপ্রিল মাস্টার দা সূর্য সেনের নেতৃত্বে স্বাধীনতাকামী বিপ্লবীদের ব্রিটিশ পুলিশের চট্টগ্রামের অস্ত্রগার লুণ্ঠন, টেলিফোন ও টেলিগ্রাফ অফিস ধ্বংস ও ইউরোপিয়ান ক্লাবে হামলা চালানোর মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জনের চেষ্টার কিছু দূর্লভ চিত্র যাদুঘরটিতে স্থান পেয়েছে।
তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের মার্চে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে গিয়ে চট্টগ্রামের এসপি এম শামসুল হক, কোতোয়ালী থানার ওসি আব্দুল খালেক, দামপাড়া পুলিশ লাইন্সের আরআই আকরাম হোসেনসহ ৮১ জন পুলিশ সদস্যের শাহাদাৎ বরণ করেন। এসব ঐতিহাসিক ঘটনাবলীকে দৃষ্টিলব্দ অবয়ব প্রদানের লক্ষে মৌলিক ব্রিটিশ স্থাপত্য শৈলীতে প্রতিষ্ঠিত লাল ভবনদ্বয়ের অখন্ডতা বজায় রেখে আধুনিক তথ্য-প্রযুক্তির মাধ্যমে দামপাড়া পুলিশ লাইন্সে “পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, চট্টগ্রাম” নির্মাণ করা হয়।
অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী, সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, বিভাগীয় কমিশনার আশরাফ উদ্দিন, চট্টগ্রাম রেন্জের ডিআইজি মোঃ আনোয়ার হোসেন, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) জনাব শ্যামল কুমার নাথ, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম এন্ড অপারেশন) জনাব মোঃ শামসুল আলম, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (প্রশাসন ও অর্থ) জনাব সানা শামিনুর রহমান, উপ পুলিশ কমিশনার (সদর) জনাব মোঃ আমির জাফর, চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার এস এম রশিদুল হকসহ পুলিশের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।
 উদ্বোধন শেষে আমন্ত্রিত অতিথিগণ জাদুঘরে সংরক্ষিত বিভিন্ন সময়ের পুলিশের পোষাক, তৎকালীন সময়ের সরকারি দপ্তরের চিঠি, পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ, বীরশ্রেষ্ঠদের বৃত্তান্ত , বর্তমান পুলিশ সদস্যদের পোশাক, দামপাড়া পুলিশ লাইন্সের ম্যাপ, ফাঁসির মঞ্চ, ভিজুয়াল ডিসপ্লে সংবলিত হল রুম, মুক্তিযুদ্ধে শহীদ পুলিশ সদস্যদের ছবি, তথ্য, ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধ কেন্দ্রিক দেশি বিদেশি বিভিন্ন পত্রিকার নিউজ, বঙ্গবন্ধু কর্নার, মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক বিভিন্ন বই, বঙ্গবন্ধুর ছবি ও তাঁর লেখা বই, মুক্তিযুদ্ধে ব্যবহৃত অস্ত্র ইত্যাদি পরিদর্শন করেন।
সিএমপি সূত্রে জানা যায়, জাদুঘর সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে খুব দ্রুত। পরিদর্শনের সময়সূচি ও প্রবেশ মূল্য পরবর্তী সময় জানানো হবে। জাদুঘরের অন্যতম আকর্ষণ হিসেবে, মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক লেজার শোর সময়সূচিও জানানো হবে খুব শীঘ্রই।