জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) একমাত্র হল বেগম ফলিজাতুন্নেছা মুজিব হলে ১৭ মার্চ থেকে শিক্ষার্থী উঠানো শুরু করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ১২০০ মেয়ে শিক্ষার্থী এই হলে আসন নিশ্চিত করেছে। হলে উঠার ২ সপ্তাহ না গড়াতে প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী ডায়রিয়া, বমিসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়েছেন।
হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা জানান, ১৬ তলার এই হলে প্রতি তলাতেই একাধিক মেয়ে ডায়রিয়া, বমিতে আক্রান্ত। ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ১২ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মুক্তি ২৮ মার্চ হঠাৎ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে গেলে ডাক্তার ফুড পয়জনিং নিশ্চিত করেন। এরপর তৎক্ষণাৎ হল ত্যাগ করে আত্নীয়ের বাসায় অবস্থান নেন। উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের ১৩ ব্যাচের সামিরা মাহমুদ মিথী ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে ২৭ মার্চ রাতে ন্যাশনাল হাসপাতালে ভর্তি হন। ইসলাম শিক্ষা বিভাগের ১৪ ব্যাচের ফৌজিয়া অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। এছাড়াও ১৫ ব্যাচের তৃনা, মারজানা, ইয়ারুন্নেসা, ১৩ব্যাচের ফারহানা সহ প্রায় ৫০ জন শিক্ষার্থী ডায়রিয়া ও বমির সমস্যায় ভুগেছেন।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, হলে একরুমে ৮ জন শিক্ষার্থী ছোট বেড শেয়ার করে গাদাগাদি করে থাকতে হয়। ক্যান্টিনে অধিকাংশ সময়ই জগে ভরে ট্যাপের পানি খাওয়ানো হয়। ১২০০ শিক্ষার্থীর জন্য রয়েছে একটি ফিল্টার। খাবর দেয় নিম্নমানের, দাম রাখে বেশি। খাবারে পোকা পাওয়ারও অভিযোগ রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, হল করেছে, নেই কোন ক্লিনার। আমরা পড়তে এসে কি বাথরুম পরিষ্কার করবো! করিডর, সিড়ি ঝাড়ু দেব! হল রেখে হোটেলে খাইতে যাবো!
এ বিষয়ে বেগম ফলিজাতুন্নেছা মুজিব হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. শামীমা বেগম বলেন, অনেকে ডায়ারিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে শুনে আমি গতকাল ৮টা ফ্লোর ভিজিট করেছি। গরমের কারনে অনেকে অসুস্থ হচ্ছে। পানির ব্যাকটেরিয়া টেষ্ট করিয়েছি। পানিতে সমস্যা নেই। এতদিন ১টা ফিল্টার ছিল, এখন ১৬ তলায় ১৬ টি ফিল্টার বসাবো।
ড. শামীমা আরও বলেন, মেয়েরা ১৫ দিনে হল নষ্ট করে ফেলছে। লিফটের মধ্যে কফির কাপ ফেলে রাখছে। এক ফ্লোরে বড় সাইজের ৪ টা বিন কিনে দিয়েছি, কেউ বিনে ময়লা ফেলেনা, যেখানে সেখানে ফেলে রাখে। ১৫ তারিখে ক্লিনার এনেছি, সব রুম পরিষ্কার করিয়েছি। নিজেরা সচেতন থাকলে হল পরিষ্কার থাকে, সবাই সুস্থ্য থাকে। জগন্নাথে নতুন হল, আমি প্রচুর কাজ করি, নিজে হলে থাকি। আস্তে আস্তে সব সমস্যা সমাধান হবে।
বার্তা/এন