শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

খোশ আমদেদ মাহে রমজান

আরবি হিজরি সনের নবম মাসের নাম হলো রমজান। এই মাস জুড়ে রোজা পালন করা মুসলমানদের জন্য ফরজ বা অবশ্যকর্তব্য। রোজা হলো ফার্সি ও উর্দু শব্দ। আর আরবি রমজান শব্দটি রমজ ধাতু থেকে উৎপত্তি হয়েছে। রমজ শব্দের অর্থ হলো জ্বালিয়ে দেওয়া, পুড়িয়ে দেওয়া। সুতরাং মাহে রমজানের রোজা রাখার ফলে মুমিন বান্দাদের গোনাহসমূহকে মহান আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামিন জ্বালিয়ে দেন, পুড়িয়ে দেন। পবিত্র মাহে রমজানের রোজা রাখার ফলে পাপাচারসমূহ ভস্মীভূত হয়ে মুমিন বান্দাগণ মুত্তাকি বা পরহেজগার হয়ে ওঠেন। মাহে রমজানের রোজা পালনের মাধ্যমে তারা আত্মসংযম ও আত্মসংশোধনের দীক্ষা লাভ করেন।

রোজার আরবি শব্দ হলো সাওম। সাওমের আভিধানিক অর্থ হলো, বিরত থাকা এবং সাওমের পারিভাষিক অর্থ হলো ইবাদতের নিয়তে ছুবহে ছাদিক থেকে শুরু করে সূর্য অস্তমিত যাওয়া পর্যন্ত যাবতীয় পানাহার এবং কামাচার থেকে বিরত থাকা (তারিখু ফারজিয়াতুছ ছিয়াম)।

এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তায়ালা বলছেন, ইয়া আইয়ুহাল লাজিনা আমানু কুতিবা আলাইকুমুস সিয়ামু কামা কুতিবা আলাল লাজিনা মিন কাব্লিকুম লা আল লাকুম তাত্তাকুন। অর্থ :হে ইমানদারগণ, তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যে রকম ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী উম্মতদের ওপর। যাতে তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পারো (সুরায়ে বাক্বারা ১৮৪)। ‘মিন কাব্লিকুম’ দ্বারা বোঝানো হয়েছে যে, যারা তোমাদের পূর্বে ছিল। এটা ব্যাপক অর্থবোধক। এর দ্বারা সাইয়িদুনা হজরত আদম (আ.) থেকে শুরু করে হজরত মুছা (আ.), হজরত দাউদ (আ.), হজরত ঈসা (আ.) ও আখেরি নবি বিশ্ব নবি হজরত মুহাম্মাদুর রসুলাল্লাহ (স.) পর্যন্ত সব উম্মত এবং তাদের শরিয়তকে বোঝায়। এরপর ‘ফামান কানা মিনকুম মারিজান’ আয়াতে রোগী বলতে সে ব্যক্তিকে বোঝানো হয়েছে, যে রোগের দ্বারা প্রাণহানি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। যেমন করোনা ভাইরাস অথবা ডেঙ্গু জ্বরের মতো মারাত্মক রোগীদের জন্য রমজানের রোজা ভঙ্গ করা সুন্নত। তবে পরবর্তীকালে অসুস্থ ব্যক্তি সুস্থ হয়ে গেলে রমজানের কাজা রোজাসমূহ রাখা ওয়াজিব।

রমজান মাসে হাজির বা বর্তমান থাকার কথা বলেছেন আল্লাহ তায়ালা। মোদ্দাকথা হলো, যে ব্যক্তি সুস্থ ও সহিহ-সালামতে রোজা রাখার সামর্থ্য রাখেন, তার ওপরই রোজা ফরজ। ব্যাপক অর্থে বলতে গেলে মুসলমান, জ্ঞানসম্পন্ন ব্যক্তি, সাবালক, মুকিম এবং হায়েজ ও নেফাছ থেকে পবিত্র অবস্থায় থাকা নারীদের রমজান মাসে রোজা রাখতে হবে। মহান আল্লাহ পাক ঘোষণা করেছেন যে, তিনি তোমাদের জন্য সবকিছু সহজ করতে চান। তোমাদের জন্য কোনো জটিলতা কামনা করেন না। যাতে তোমরা (রমজান মাসের) গণনা পূরণ করো (সুরায়ে বাক্বারা, ১৮৬)।

লেখক: অতিথি অনুবাদক, মক্কা আল মুকাররামাহ ও সাবেক খতিব, জাতীয় সংসদ জামে মসজিদ

খোশ আমদেদ মাহে রমজান

প্রকাশের সময় : ০৪:১৫:১০ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ এপ্রিল ২০২২

আরবি হিজরি সনের নবম মাসের নাম হলো রমজান। এই মাস জুড়ে রোজা পালন করা মুসলমানদের জন্য ফরজ বা অবশ্যকর্তব্য। রোজা হলো ফার্সি ও উর্দু শব্দ। আর আরবি রমজান শব্দটি রমজ ধাতু থেকে উৎপত্তি হয়েছে। রমজ শব্দের অর্থ হলো জ্বালিয়ে দেওয়া, পুড়িয়ে দেওয়া। সুতরাং মাহে রমজানের রোজা রাখার ফলে মুমিন বান্দাদের গোনাহসমূহকে মহান আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামিন জ্বালিয়ে দেন, পুড়িয়ে দেন। পবিত্র মাহে রমজানের রোজা রাখার ফলে পাপাচারসমূহ ভস্মীভূত হয়ে মুমিন বান্দাগণ মুত্তাকি বা পরহেজগার হয়ে ওঠেন। মাহে রমজানের রোজা পালনের মাধ্যমে তারা আত্মসংযম ও আত্মসংশোধনের দীক্ষা লাভ করেন।

রোজার আরবি শব্দ হলো সাওম। সাওমের আভিধানিক অর্থ হলো, বিরত থাকা এবং সাওমের পারিভাষিক অর্থ হলো ইবাদতের নিয়তে ছুবহে ছাদিক থেকে শুরু করে সূর্য অস্তমিত যাওয়া পর্যন্ত যাবতীয় পানাহার এবং কামাচার থেকে বিরত থাকা (তারিখু ফারজিয়াতুছ ছিয়াম)।

এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তায়ালা বলছেন, ইয়া আইয়ুহাল লাজিনা আমানু কুতিবা আলাইকুমুস সিয়ামু কামা কুতিবা আলাল লাজিনা মিন কাব্লিকুম লা আল লাকুম তাত্তাকুন। অর্থ :হে ইমানদারগণ, তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যে রকম ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী উম্মতদের ওপর। যাতে তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পারো (সুরায়ে বাক্বারা ১৮৪)। ‘মিন কাব্লিকুম’ দ্বারা বোঝানো হয়েছে যে, যারা তোমাদের পূর্বে ছিল। এটা ব্যাপক অর্থবোধক। এর দ্বারা সাইয়িদুনা হজরত আদম (আ.) থেকে শুরু করে হজরত মুছা (আ.), হজরত দাউদ (আ.), হজরত ঈসা (আ.) ও আখেরি নবি বিশ্ব নবি হজরত মুহাম্মাদুর রসুলাল্লাহ (স.) পর্যন্ত সব উম্মত এবং তাদের শরিয়তকে বোঝায়। এরপর ‘ফামান কানা মিনকুম মারিজান’ আয়াতে রোগী বলতে সে ব্যক্তিকে বোঝানো হয়েছে, যে রোগের দ্বারা প্রাণহানি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। যেমন করোনা ভাইরাস অথবা ডেঙ্গু জ্বরের মতো মারাত্মক রোগীদের জন্য রমজানের রোজা ভঙ্গ করা সুন্নত। তবে পরবর্তীকালে অসুস্থ ব্যক্তি সুস্থ হয়ে গেলে রমজানের কাজা রোজাসমূহ রাখা ওয়াজিব।

রমজান মাসে হাজির বা বর্তমান থাকার কথা বলেছেন আল্লাহ তায়ালা। মোদ্দাকথা হলো, যে ব্যক্তি সুস্থ ও সহিহ-সালামতে রোজা রাখার সামর্থ্য রাখেন, তার ওপরই রোজা ফরজ। ব্যাপক অর্থে বলতে গেলে মুসলমান, জ্ঞানসম্পন্ন ব্যক্তি, সাবালক, মুকিম এবং হায়েজ ও নেফাছ থেকে পবিত্র অবস্থায় থাকা নারীদের রমজান মাসে রোজা রাখতে হবে। মহান আল্লাহ পাক ঘোষণা করেছেন যে, তিনি তোমাদের জন্য সবকিছু সহজ করতে চান। তোমাদের জন্য কোনো জটিলতা কামনা করেন না। যাতে তোমরা (রমজান মাসের) গণনা পূরণ করো (সুরায়ে বাক্বারা, ১৮৬)।

লেখক: অতিথি অনুবাদক, মক্কা আল মুকাররামাহ ও সাবেক খতিব, জাতীয় সংসদ জামে মসজিদ