শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাশিয়াকে মোকাবিলায় স্থায়ীভাবে সেনা মোতায়েন করছে ন্যাটো

ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান মোকাবিলায় ন্যাটো নতুন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এর আওতায় ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর সীমান্তে স্থায়ীভাবে সেনা মোতায়েন করা হচ্ছে। রবিবার (১০ এপ্রিল) পশ্চিমা এ সামরিক জোটের মহাসচিব জেনস স্টলটেনবার্গ এ কথা জানিয়েছেন। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

জেনস স্টলটেনবার্গ জানান, ইউরোপীয়দের নিরাপত্তার জন্য নতুন করে ভাবছে ন্যাটো। ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর সেনাপ্রধানের সঙ্গে স্থায়ী সেনা মোতায়েনের বিষয়ে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

এদিকে, রাজধানী কিয়েভ ও এর পার্শ্ববর্তী শহরগুলো থেকে সেনা প্রত্যাহার করে নিলেও ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চল নিয়ন্ত্রণে অভিযান চালাচ্ছে রুশ বাহিনী। এরই ধারাবাহিকতায় দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় শহর নিপ্রোতে হামলা চালিয়েছে রাশিয়া।

হামলায় শহরের একটি বিমানবন্দর পুরোপুরি ধংস হয়ে গেছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়াও বিমানবন্দরটির কমপক্ষে ৬ কর্মী আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ৩ জনের অবস্থা গুরুতর বলেও জানানো হয়।

রবিবার (১০ এপ্রিল) এক বিবৃতিতে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা দফতর জানায়, ইউক্রেনের সামরিক স্থাপনাগুলোতে নতুন করে হামলা শুরু করেছে মস্কো। তাদের দাবি, শনিবার (৯ এপ্রিল) রাতে ইউক্রেনীয় সেনাদের ৮৬টি ঘাঁটিতে সফল অভিযান চালানো হয়েছে। গোলা ছোড়া হয় পূর্বাঞ্চলের নিপ্রো, দক্ষিণাঞ্চলের মাইকোলাইভ আর দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খারকিভে।

এর মধ্যেই রাশিয়ার বিরুদ্ধে বড় যুদ্ধের জন্য ইউক্রেন প্রস্তুত আছে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির উপদেষ্টা মিখাইল পদোলিয়াক। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, জেলেনস্কি ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে বৈঠকের আগে অবশ্যই ডনবাস অঞ্চল থেকে রুশ সেনা প্রত্যাহার করতে হবে।

প্রসঙ্গত, গত ২১ ফেব্রুয়ারি সোমবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন রুশপন্থী বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত ইউক্রেনের দুই অঞ্চল দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণা করেন। সেখানে ‘শান্তি রক্ষায়’ সেনা পাঠানোর নির্দেশ দেন তিনি। এরপর উত্তেজনা নতুন মাত্রা পায়। একই সঙ্গে ‘প্রজাতন্ত্র’ দুটিতে রুশ সেনাদের ‘শান্তিরক্ষী’ হিসেবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন তিনি। পুতিনের এই পদক্ষেপের পর পশ্চিমাদের পক্ষ থেকে বলা হয়, রাশিয়া ইউক্রেনে সামরিক আগ্রাসন শুরু করে দিয়েছে।

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সকালে টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে পূর্ব ইউক্রেনের বিদ্রোহীনিয়ন্ত্রিত ডনবাস অঞ্চলে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন। বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত পূর্ব ইউক্রেনের ওই অঞ্চলে গত আট বছরের লড়াইয়ে প্রায় ১৫ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন।

৪৬ দিনের যুদ্ধে ইউক্রেনের একাংশ এখন রাশিয়ার দখলে। আজ চলছে যুদ্ধের ৪৭তম দিন। ইউক্রেনে হামলা শুরুর পর থেকে একের পর এক আর্থিক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে পশ্চিমা শক্তিগুলো। তবে যুক্তরাষ্ট্র, ন্যাটো বা অন্য কোনো পশ্চিমা শক্তিধর দেশ সামরিক হস্তক্ষেপ করতে এগিয়ে আসেনি।

রাশিয়াকে মোকাবিলায় স্থায়ীভাবে সেনা মোতায়েন করছে ন্যাটো

প্রকাশের সময় : ০৫:২৭:১২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ এপ্রিল ২০২২

ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান মোকাবিলায় ন্যাটো নতুন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এর আওতায় ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর সীমান্তে স্থায়ীভাবে সেনা মোতায়েন করা হচ্ছে। রবিবার (১০ এপ্রিল) পশ্চিমা এ সামরিক জোটের মহাসচিব জেনস স্টলটেনবার্গ এ কথা জানিয়েছেন। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

জেনস স্টলটেনবার্গ জানান, ইউরোপীয়দের নিরাপত্তার জন্য নতুন করে ভাবছে ন্যাটো। ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর সেনাপ্রধানের সঙ্গে স্থায়ী সেনা মোতায়েনের বিষয়ে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

এদিকে, রাজধানী কিয়েভ ও এর পার্শ্ববর্তী শহরগুলো থেকে সেনা প্রত্যাহার করে নিলেও ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চল নিয়ন্ত্রণে অভিযান চালাচ্ছে রুশ বাহিনী। এরই ধারাবাহিকতায় দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় শহর নিপ্রোতে হামলা চালিয়েছে রাশিয়া।

হামলায় শহরের একটি বিমানবন্দর পুরোপুরি ধংস হয়ে গেছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়াও বিমানবন্দরটির কমপক্ষে ৬ কর্মী আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ৩ জনের অবস্থা গুরুতর বলেও জানানো হয়।

রবিবার (১০ এপ্রিল) এক বিবৃতিতে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা দফতর জানায়, ইউক্রেনের সামরিক স্থাপনাগুলোতে নতুন করে হামলা শুরু করেছে মস্কো। তাদের দাবি, শনিবার (৯ এপ্রিল) রাতে ইউক্রেনীয় সেনাদের ৮৬টি ঘাঁটিতে সফল অভিযান চালানো হয়েছে। গোলা ছোড়া হয় পূর্বাঞ্চলের নিপ্রো, দক্ষিণাঞ্চলের মাইকোলাইভ আর দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খারকিভে।

এর মধ্যেই রাশিয়ার বিরুদ্ধে বড় যুদ্ধের জন্য ইউক্রেন প্রস্তুত আছে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির উপদেষ্টা মিখাইল পদোলিয়াক। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, জেলেনস্কি ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে বৈঠকের আগে অবশ্যই ডনবাস অঞ্চল থেকে রুশ সেনা প্রত্যাহার করতে হবে।

প্রসঙ্গত, গত ২১ ফেব্রুয়ারি সোমবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন রুশপন্থী বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত ইউক্রেনের দুই অঞ্চল দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণা করেন। সেখানে ‘শান্তি রক্ষায়’ সেনা পাঠানোর নির্দেশ দেন তিনি। এরপর উত্তেজনা নতুন মাত্রা পায়। একই সঙ্গে ‘প্রজাতন্ত্র’ দুটিতে রুশ সেনাদের ‘শান্তিরক্ষী’ হিসেবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন তিনি। পুতিনের এই পদক্ষেপের পর পশ্চিমাদের পক্ষ থেকে বলা হয়, রাশিয়া ইউক্রেনে সামরিক আগ্রাসন শুরু করে দিয়েছে।

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সকালে টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে পূর্ব ইউক্রেনের বিদ্রোহীনিয়ন্ত্রিত ডনবাস অঞ্চলে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন। বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত পূর্ব ইউক্রেনের ওই অঞ্চলে গত আট বছরের লড়াইয়ে প্রায় ১৫ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন।

৪৬ দিনের যুদ্ধে ইউক্রেনের একাংশ এখন রাশিয়ার দখলে। আজ চলছে যুদ্ধের ৪৭তম দিন। ইউক্রেনে হামলা শুরুর পর থেকে একের পর এক আর্থিক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে পশ্চিমা শক্তিগুলো। তবে যুক্তরাষ্ট্র, ন্যাটো বা অন্য কোনো পশ্চিমা শক্তিধর দেশ সামরিক হস্তক্ষেপ করতে এগিয়ে আসেনি।