শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঠাকুরগাঁওয়ে মাটি ছাড়াই অভিনব পদ্ধতিতে সবজি চাষ

দুরত্ব নগরায়নে কারণে কমছে কৃষি জমি। ফলে ইচ্ছে সত্বেও অনেকে বাগান কিংবা সবজি চাষ করতে পারেন না। তবে আশার কথা হচ্ছে  মাটি ছাড়াই অভিনব পদ্ধতিতে মাটির সংস্পর্শ ছাড়াই বিষ মুক্ত লেটুসসহ শাক-সবিজ ও ফল চাষ হচ্ছে ঠাকুরগাঁওয়ে। গ্রীন হাউসের মতো বিশেষ পদ্ধতিতে উৎপাদিত নিরাপদ ও বিষমুক্ত এই সব শাক-সবজি সরবরাহ করা  হচ্ছে রাজধানী ঢাকার নামী-দামি রেস্টুরেন্ট গুলোতে। তবে সরকারি সহায়তা পেলে আরও বেশ কয়েকটি খামার গড়তে চান উদ্যোক্তারা।
সরেজমিনে সদর উপজেলার খলিশাখুড়ি গ্রামে সবজি খামারে  গিয়ে দেখা যায়, প্লাস্টিক পাইপের মাধ্যমে ১৬টি খাদ্য উপাদান মিশ্রিত পানি অটো পাম্পের মাধ্যমে সঞ্চালন করে মাটি ছাড়া চাষাবাদ চলছে। আর পাইপ ছিদ্র করে বেড়ে উঠা লাগোনো গাছে স্বল্পপরিসরে চাষ করা হচ্ছে শসা, লাউ, মরিচ, ধনেপাতা, টমেটো, ক্যাপসিকাম, স্ট্রবেরি, পেঁয়াজ, রসুন, তরমুজ, করলাসহ আরও কয়েক ধরনের সবজি। একটি পানির পাম্প দিয়ে দিনে দুবার মাটির বিভিন্ন উপাদানমিশ্রিত পানি আদানপ্রদান করা হয়। উৎপাদিত এই সব শাক-সবজি রাজধানী সহ বিভিন্ন জেলায় বাজারজাত করছেন বাগানের  উদ্যোক্তারা ।
জানা যায় ২০১৭ সালে ৬০শতক জমি নিয়ে পরীা মুলক মাটি ছাড়া এই বিশেষ পদ্ধতিতে ওই  গ্রামের ৬ বন্ধু  যৌথভাবে লেটুস সহ শাক-সবজি ও ফল চাষ শুরু করেন । অভিনব এই পদ্ধতিতে আবাদ করে সফলও হয়েছেন তারা। ২০১৯ সাল থেকে  বানিজ্যিক ভাবে উৎপাদিত হচ্ছে তাদের খামারে বিদেশী সবজি লেটুসসহ দেশীয় ফল ও শাক-সবিজ। হাইড্রোপনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদের এ ছয়জন উদ্যোক্তা হলেন জাফর ইবনে হাসান, নাহিদ হোসেন, আল আমিন, সাবাহ্ সাঈদ, আব্দুল্লাহ আল মামুন ও শাহরিয়ার।
সবজির খামারের নিয়মিত শ্রমিকেরা বলেন, অত্যাধুনিক পদ্ধতিতে চাষ করা খামারে কাজ করছি। এখানে বিষ মুক্ত সবজি উৎপাদন করা হয়।কোন বিষয়ে সীদ্ধান্ত নিতে না পারলে বসদের কথা অনুযায়ি কাজ করি।
উদ্দ্যোক্তা নাহিদ হোসেন বলেন, হাইড্রোপনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদে অনেক বায়োসিকিউরিটি অনুশীলন করা হয় সে জন্য খেতে পোকা-মাকড়ের আক্রমন নেই। তাছাড়া কিছু ডিভাইস ব্যবহারের ফলে বণ্যপ্রাণী ভিতরে প্রবেশ করতে পারে না। বিষমুক্ত সবজি উৎপাদনে আমরা সম। আগামীতে আরও বেশি পরিমাণে লেটুসের সাথে টমোটো, শশা, মরিচ, তরমুজ চাষের পরিকল্পনা রয়েছে।
হাইড্রোপনিকের আরেক উদ্দ্যোক্তা আল আমিন বলেন, আমরা লেটুসকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছি কারণ এর চাহিদা সারা বছর। তবে উৎপাদনে সফলতা আসলেও খরচের তুলনাই দাম সেই রকম পাওয়া যায় না। পরিকল্পনা রয়েছে দেশের চাহিদা পূরণ করে বিদেশে রফতানি করা কিন্তু সেই রকম যোগাযোগ পাচ্ছি না। বর্তমানে ঢাকায় বাজাবজাত করছি কিন্তু আশানুরুপ ফল পাচ্ছিনা। এ পদ্ধতিতে অল্প জায়গাতে বেশি পরিমাণ বিষ মুক্ত সবজি উৎপাদন করা সম্ভব। যার গুণগত মান অনেক বেশি। তবে এ পদ্ধতিতে উৎপাদন খরচ  বেশি। এ পদ্ধতিতে বীজ বোপণ থেকে লেটুসপাতা উৎপাদন পর্যন্ত সময় লাগে ৩৫-৩৮ দিন।
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আবু হোসেন বলেন, উপজেলার ভূল্লী এলাকায় নিজস্ব উদ্দ্যোগে বৃহৎ আকারে বানিজ্যিক ভাবে হাইড্রোপনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ শুরু হয়েছে। সনাতন পদ্ধতি বর্তমানে দেশে যে হারে আবাদি জমি কমছে তাতে অনেকে চাইলেই এই পদ্ধতিতে চাষাবাদ করে সারা বছর সবজি- ফলমুল উৎপাদন করতে পারে।

ঠাকুরগাঁওয়ে মাটি ছাড়াই অভিনব পদ্ধতিতে সবজি চাষ

প্রকাশের সময় : ০৩:৫৮:৪৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ এপ্রিল ২০২২
দুরত্ব নগরায়নে কারণে কমছে কৃষি জমি। ফলে ইচ্ছে সত্বেও অনেকে বাগান কিংবা সবজি চাষ করতে পারেন না। তবে আশার কথা হচ্ছে  মাটি ছাড়াই অভিনব পদ্ধতিতে মাটির সংস্পর্শ ছাড়াই বিষ মুক্ত লেটুসসহ শাক-সবিজ ও ফল চাষ হচ্ছে ঠাকুরগাঁওয়ে। গ্রীন হাউসের মতো বিশেষ পদ্ধতিতে উৎপাদিত নিরাপদ ও বিষমুক্ত এই সব শাক-সবজি সরবরাহ করা  হচ্ছে রাজধানী ঢাকার নামী-দামি রেস্টুরেন্ট গুলোতে। তবে সরকারি সহায়তা পেলে আরও বেশ কয়েকটি খামার গড়তে চান উদ্যোক্তারা।
সরেজমিনে সদর উপজেলার খলিশাখুড়ি গ্রামে সবজি খামারে  গিয়ে দেখা যায়, প্লাস্টিক পাইপের মাধ্যমে ১৬টি খাদ্য উপাদান মিশ্রিত পানি অটো পাম্পের মাধ্যমে সঞ্চালন করে মাটি ছাড়া চাষাবাদ চলছে। আর পাইপ ছিদ্র করে বেড়ে উঠা লাগোনো গাছে স্বল্পপরিসরে চাষ করা হচ্ছে শসা, লাউ, মরিচ, ধনেপাতা, টমেটো, ক্যাপসিকাম, স্ট্রবেরি, পেঁয়াজ, রসুন, তরমুজ, করলাসহ আরও কয়েক ধরনের সবজি। একটি পানির পাম্প দিয়ে দিনে দুবার মাটির বিভিন্ন উপাদানমিশ্রিত পানি আদানপ্রদান করা হয়। উৎপাদিত এই সব শাক-সবজি রাজধানী সহ বিভিন্ন জেলায় বাজারজাত করছেন বাগানের  উদ্যোক্তারা ।
জানা যায় ২০১৭ সালে ৬০শতক জমি নিয়ে পরীা মুলক মাটি ছাড়া এই বিশেষ পদ্ধতিতে ওই  গ্রামের ৬ বন্ধু  যৌথভাবে লেটুস সহ শাক-সবজি ও ফল চাষ শুরু করেন । অভিনব এই পদ্ধতিতে আবাদ করে সফলও হয়েছেন তারা। ২০১৯ সাল থেকে  বানিজ্যিক ভাবে উৎপাদিত হচ্ছে তাদের খামারে বিদেশী সবজি লেটুসসহ দেশীয় ফল ও শাক-সবিজ। হাইড্রোপনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদের এ ছয়জন উদ্যোক্তা হলেন জাফর ইবনে হাসান, নাহিদ হোসেন, আল আমিন, সাবাহ্ সাঈদ, আব্দুল্লাহ আল মামুন ও শাহরিয়ার।
সবজির খামারের নিয়মিত শ্রমিকেরা বলেন, অত্যাধুনিক পদ্ধতিতে চাষ করা খামারে কাজ করছি। এখানে বিষ মুক্ত সবজি উৎপাদন করা হয়।কোন বিষয়ে সীদ্ধান্ত নিতে না পারলে বসদের কথা অনুযায়ি কাজ করি।
উদ্দ্যোক্তা নাহিদ হোসেন বলেন, হাইড্রোপনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদে অনেক বায়োসিকিউরিটি অনুশীলন করা হয় সে জন্য খেতে পোকা-মাকড়ের আক্রমন নেই। তাছাড়া কিছু ডিভাইস ব্যবহারের ফলে বণ্যপ্রাণী ভিতরে প্রবেশ করতে পারে না। বিষমুক্ত সবজি উৎপাদনে আমরা সম। আগামীতে আরও বেশি পরিমাণে লেটুসের সাথে টমোটো, শশা, মরিচ, তরমুজ চাষের পরিকল্পনা রয়েছে।
হাইড্রোপনিকের আরেক উদ্দ্যোক্তা আল আমিন বলেন, আমরা লেটুসকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছি কারণ এর চাহিদা সারা বছর। তবে উৎপাদনে সফলতা আসলেও খরচের তুলনাই দাম সেই রকম পাওয়া যায় না। পরিকল্পনা রয়েছে দেশের চাহিদা পূরণ করে বিদেশে রফতানি করা কিন্তু সেই রকম যোগাযোগ পাচ্ছি না। বর্তমানে ঢাকায় বাজাবজাত করছি কিন্তু আশানুরুপ ফল পাচ্ছিনা। এ পদ্ধতিতে অল্প জায়গাতে বেশি পরিমাণ বিষ মুক্ত সবজি উৎপাদন করা সম্ভব। যার গুণগত মান অনেক বেশি। তবে এ পদ্ধতিতে উৎপাদন খরচ  বেশি। এ পদ্ধতিতে বীজ বোপণ থেকে লেটুসপাতা উৎপাদন পর্যন্ত সময় লাগে ৩৫-৩৮ দিন।
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আবু হোসেন বলেন, উপজেলার ভূল্লী এলাকায় নিজস্ব উদ্দ্যোগে বৃহৎ আকারে বানিজ্যিক ভাবে হাইড্রোপনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ শুরু হয়েছে। সনাতন পদ্ধতি বর্তমানে দেশে যে হারে আবাদি জমি কমছে তাতে অনেকে চাইলেই এই পদ্ধতিতে চাষাবাদ করে সারা বছর সবজি- ফলমুল উৎপাদন করতে পারে।