শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নিরাপত্তা রক্ষায় অস্ত্র ব্যবহারে পিছপা হবো না: পুতিনের হুঁশিয়ারি

ছবি-সংগৃহীত

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দৃঢ় প্রত্যয় জানিয়ে বলেছেন, তার দেশের বিরুদ্ধে যেকোনো হুমকি ও বিদেশি হস্তক্ষেপের কঠোর জবাব দেয়া হবে। ‘কৌশলগত নিরাপত্তা’ হুমকির মুখোমুখি হলে রাশিয়া অস্ত্র ব্যবহারে পিছপা হবে না বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি।

গতকাল বুধবার (২৭ এপ্রিল) রুশ পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ দুমায় দেয়া এক ভাষণে এ সংকল্প ব্যক্ত করেন।

পুতিন বলেন, ‘কৌশলগত নিরাপত্তা’ হুমকির জন্য রাশিয়া কী ধরনের পদক্ষেপ নেবে, সে বিষয়ে সব সিদ্ধান্ত ইতিমধ্যে নিয়ে রেখেছে রাশিয়া।

ইউক্রেন যুদ্ধে হস্তক্ষেপ করার ব্যাপারে পশ্চিমা দেশগুলোকে সতর্ক করে তিনি বলেন, রাশিয়ায় তৈরি সর্বাধুনিক সমরাস্ত্র দিয়ে এ ধরনের হস্তক্ষেপের জবাব দেয়া হবে। বর্তমানে ইউক্রেনে যা ঘটছে, সে বিষয়ে কেউ যদি হস্তক্ষেপ করতে চায়, তাহলে তাদের জেনে রাখা উচিত যে রাশিয়ার জবাব হবে খুবই দ্রুত।

ইউক্রেনের চলমান যুদ্ধের জন্য পশ্চিমা দেশগুলোকে দায়ী করে রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, তার দেশের শীর্ষ নেতারা যেকোনো হুমকি ও হস্তক্ষেপের জবাব দেয়ার সিদ্ধান্ত আগেভাগে নিয়ে রেখেছে।

পুতিন ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় রুশ ভাষাভাষী অধ্যুষিত ডনবাস অঞ্চলকে বেসামরিকীকরণের লক্ষ্যে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরু করেন। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দেশগুলো এই অভিযানকে ‘পুতিনের ভূমি জবরদখল’ বলে উল্লেখ করেছে। এসব পশ্চিমা দেশ মস্কোর বিরুদ্ধে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। তবে রাশিয়া বলছে, ইউক্রেন মস্কোর একগুচ্ছ দাবি মেনে নিলে সামরিক অভিযান বন্ধ হবে। এসব দাবির মধ্যে রয়েছে- ইউক্রেনকে এই অঙ্গীকার করতে হবে যে, সে কখনও ন্যাটো জোটে যোগ দেবে না।

তবে ইউক্রেন রাশিয়ার আহ্বানে সাড়া না দিয়ে পশ্চিমা দেশগুলোর কাছ থেকে পাওয়া সমরাস্ত্র দিয়ে রুশ সেনাদের বিরুদ্ধে লড়াই করে যাচ্ছে। এখন পর্যন্ত ২৫টি পশ্চিমা দেশ ইউক্রেনকে সমরাস্ত্র দিয়ে সহযোগিতা করেছে।

এ বিষয়ে প্রেসিডেন্ট পুতিন সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, সমরাস্ত্র ও ভাড়াটে সেনা পাঠিয়ে পশ্চিমা দেশগুলো ইউক্রেনে আরো বেশি রক্তপাত ঘটানোর ক্ষেত্র তৈরি করে দিচ্ছে।

এদিকে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন গ্যাস কোম্পানি গ্যাজপ্রম পোল্যান্ড ও বুলগেরিয়ায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে। রাশিয়া বলছে, এ দেশগুলোর গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেবার কারণ হলো তারা রুশ মুদ্রা রুবলে গ্যাসের দাম পরিশোধ করতে অস্বীকার করেছিল।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দেশগুলোর মধ্যে পোল্যান্ড ও বুলগেরিয়াই হচ্ছে প্রথম দেশ- যাদের জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ করে দেয়া হলো। দুটি দেশই রাশিয়ার গ্যাসের ওপর বিপুলভাবে নির্ভরশীল।

এর পর ইইউ রাশিয়ার বিরুদ্ধে ‘ব্ল্যাকমেইলের’ অভিযোগ এনেছে। ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লাইন একে, ‘অগ্রহণযোগ্য ও অযৌক্তিক’ বলে অভিহিত করেছেন।

পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মাতিউজ মোরাভিস্কি অভিযোগ করেছেন যে রাশিয়া তার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞার প্রতিশোধ নিচ্ছে। বুলগেরিয়ার প্রধানমন্ত্রী কিরিল পেটকভ একে একটি চলমান চুক্তির গুরুতর লংঘন বলে অভিহিত করেন।

ইইউ সম্প্রতি স্বীকার করে যে ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে তারা রাশিয়ার গ্যাসের পেছনে কমপক্ষে ৩৫০০ কোটি ইউরো খরচ করেছে।

-বিবিসি ও পার্সটুডে

নিরাপত্তা রক্ষায় অস্ত্র ব্যবহারে পিছপা হবো না: পুতিনের হুঁশিয়ারি

প্রকাশের সময় : ১১:৪১:০৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২২

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দৃঢ় প্রত্যয় জানিয়ে বলেছেন, তার দেশের বিরুদ্ধে যেকোনো হুমকি ও বিদেশি হস্তক্ষেপের কঠোর জবাব দেয়া হবে। ‘কৌশলগত নিরাপত্তা’ হুমকির মুখোমুখি হলে রাশিয়া অস্ত্র ব্যবহারে পিছপা হবে না বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি।

গতকাল বুধবার (২৭ এপ্রিল) রুশ পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ দুমায় দেয়া এক ভাষণে এ সংকল্প ব্যক্ত করেন।

পুতিন বলেন, ‘কৌশলগত নিরাপত্তা’ হুমকির জন্য রাশিয়া কী ধরনের পদক্ষেপ নেবে, সে বিষয়ে সব সিদ্ধান্ত ইতিমধ্যে নিয়ে রেখেছে রাশিয়া।

ইউক্রেন যুদ্ধে হস্তক্ষেপ করার ব্যাপারে পশ্চিমা দেশগুলোকে সতর্ক করে তিনি বলেন, রাশিয়ায় তৈরি সর্বাধুনিক সমরাস্ত্র দিয়ে এ ধরনের হস্তক্ষেপের জবাব দেয়া হবে। বর্তমানে ইউক্রেনে যা ঘটছে, সে বিষয়ে কেউ যদি হস্তক্ষেপ করতে চায়, তাহলে তাদের জেনে রাখা উচিত যে রাশিয়ার জবাব হবে খুবই দ্রুত।

ইউক্রেনের চলমান যুদ্ধের জন্য পশ্চিমা দেশগুলোকে দায়ী করে রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, তার দেশের শীর্ষ নেতারা যেকোনো হুমকি ও হস্তক্ষেপের জবাব দেয়ার সিদ্ধান্ত আগেভাগে নিয়ে রেখেছে।

পুতিন ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় রুশ ভাষাভাষী অধ্যুষিত ডনবাস অঞ্চলকে বেসামরিকীকরণের লক্ষ্যে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরু করেন। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দেশগুলো এই অভিযানকে ‘পুতিনের ভূমি জবরদখল’ বলে উল্লেখ করেছে। এসব পশ্চিমা দেশ মস্কোর বিরুদ্ধে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। তবে রাশিয়া বলছে, ইউক্রেন মস্কোর একগুচ্ছ দাবি মেনে নিলে সামরিক অভিযান বন্ধ হবে। এসব দাবির মধ্যে রয়েছে- ইউক্রেনকে এই অঙ্গীকার করতে হবে যে, সে কখনও ন্যাটো জোটে যোগ দেবে না।

তবে ইউক্রেন রাশিয়ার আহ্বানে সাড়া না দিয়ে পশ্চিমা দেশগুলোর কাছ থেকে পাওয়া সমরাস্ত্র দিয়ে রুশ সেনাদের বিরুদ্ধে লড়াই করে যাচ্ছে। এখন পর্যন্ত ২৫টি পশ্চিমা দেশ ইউক্রেনকে সমরাস্ত্র দিয়ে সহযোগিতা করেছে।

এ বিষয়ে প্রেসিডেন্ট পুতিন সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, সমরাস্ত্র ও ভাড়াটে সেনা পাঠিয়ে পশ্চিমা দেশগুলো ইউক্রেনে আরো বেশি রক্তপাত ঘটানোর ক্ষেত্র তৈরি করে দিচ্ছে।

এদিকে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন গ্যাস কোম্পানি গ্যাজপ্রম পোল্যান্ড ও বুলগেরিয়ায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে। রাশিয়া বলছে, এ দেশগুলোর গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেবার কারণ হলো তারা রুশ মুদ্রা রুবলে গ্যাসের দাম পরিশোধ করতে অস্বীকার করেছিল।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দেশগুলোর মধ্যে পোল্যান্ড ও বুলগেরিয়াই হচ্ছে প্রথম দেশ- যাদের জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ করে দেয়া হলো। দুটি দেশই রাশিয়ার গ্যাসের ওপর বিপুলভাবে নির্ভরশীল।

এর পর ইইউ রাশিয়ার বিরুদ্ধে ‘ব্ল্যাকমেইলের’ অভিযোগ এনেছে। ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লাইন একে, ‘অগ্রহণযোগ্য ও অযৌক্তিক’ বলে অভিহিত করেছেন।

পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মাতিউজ মোরাভিস্কি অভিযোগ করেছেন যে রাশিয়া তার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞার প্রতিশোধ নিচ্ছে। বুলগেরিয়ার প্রধানমন্ত্রী কিরিল পেটকভ একে একটি চলমান চুক্তির গুরুতর লংঘন বলে অভিহিত করেন।

ইইউ সম্প্রতি স্বীকার করে যে ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে তারা রাশিয়ার গ্যাসের পেছনে কমপক্ষে ৩৫০০ কোটি ইউরো খরচ করেছে।

-বিবিসি ও পার্সটুডে