শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সংবাদ সম্মেলনঃ জেলার এক নেতার পকেট কমিটি গঠনের চেষ্টা, তিন দফা দাবি 

কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে দলের গঠনতন্ত্র অনুসরণ না করেই অবৈধ কাউন্সিলর তালিকা দিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুর ইসলাম টিটুর পকেট কমিটি করার প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। আজ শুক্রবার দুপুরে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম চত্বরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের একাংশের নেতাকর্মীরা এই অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ১৯৯৭ সালের ২ এপ্রিল তৎকালীন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এড. আব্দুল হামিদ উপস্থিতিতে সদর আওয়ামী লীগের অনুষ্ঠিত সম্মেলনে সভাপতি হিসেবে এড. আতাউর রহমান এবং সাধারণ সম্পাদক হিসেবে অধ্যাপক শরীফ আহমদ সাদীর নাম ঘোষণা করা হয়েছিল। পরে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করা হলেও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের অনুমোদন নেওয়া হয়নি। ফলে দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে অনুমোদনহীন পূর্ণাঙ্গ কমিটি পরিচালিত হয়ে আসছে। পরে সদর উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে ২০০৩ এবং ২০১৪ সালে কমিটি গঠন করা হলেও সেসব কমিটিরও দেননি আতাউর রহমান ও শরীফ আহমদ সাদীর নেতৃত্বাধীন কমিটি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৯৭ সালে গঠিত সদর উপজেলা কমিটি এবং ২০১৪ সালে করা ইউনিয়ন কমিটিগুলো অনুমোদনহীন অবৈধ যা দলীয় গঠনতন্ত্র পরিপন্থী এবং মেয়াদোত্তীর্ণ। অবৈধ ও মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটিগুলোর যে কাউন্সিলর তালিকা তৈরি করা হয়েছে সেই তালিকা কখনোই বৈধ হতে পারে না। এমন পরিস্থিতিতে আগামী ২৫ মে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে কাউন্সিল অধিবেশন করাও দলের গঠনতান্ত্রিক নিয়মে সম্ভব নয় বলেও আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন সদর আ’লীগের একাংশের নেতাকর্মীরা।
জেলা কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ টিটু প্রতি ইঙ্গিত করে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, ২৫ মে সদর উপজেলা সম্মেলনকে সামনে রেখে বর্তমান সদর কমিটির সভাপতি ও ‘কতিত’ ভারপ্রাপ্ত সাঃ সম্পাদক জেলা কমিটির এই নেতার কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে ১১ ইউনিয়নের একটি অবৈধ কাউন্সিলর তালিকা প্রণয়ন করেছেন। আরোও অভিযোগ করে তারা বলেন সম্মেলনকে সামনে রেখে উপজেলা আওয়ামী লীগের কোন বর্ধিত সভাও করা হয়নি। সৈয়দ টিটু নির্দেশনায় অনেক ইউনিয়ন কমিটির সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষর না নিয়ে অত্যন্ত গোপনে কাউন্সিলর তালিকা প্রস্তুত করে তা গোপন রাখা হয়েছে। প্রস্তুতকৃত তালিকা কোন ইউনিয়নের সভাপতি সাধারণ সম্পাদকের কাছেও দেয়া হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে দীর্ঘ ২৫ বছর পর অনুষ্ঠিত সম্মেলনে যোগ উৎসাহ-উদ্দীপনা ও উৎসব আমেজ থাকার কথা কথা ছিল তার বিপরীতে রয়েছে ক্ষোভ ও হতাশা।
আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের কাছে তিন দফা দাবি তুলে ধরেন তারা। এরমধ্যে দীর্ঘ ২৫ বছরের মেয়াদোত্তীর্ণ সদর উপজেলা কমিটি বাতিল করে একজন গ্রহণযোগ্য ও পরিচ্ছন্ন ব্যক্তির নেতৃত্বে ১১ ইউনিয়ন থেকে পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তির ৩/৪ জন সদস্য এনে মোট ৫১ সদস্য বিশিষ্ট একটি এডহক আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা। এই এডহক আহ্বায়ক কমিটি ৪/৫ মাসের মধ্যে প্রত্যেক ইউনিয়নের ওয়ার্ড কমিটি গঠন করে ইউপি কমিটি সম্মেলনের মাধ্যমে গঠন করবেন। প্রত্যেক ইউনিয়ন কমিটির সভা করে সভাপতি সাধারণ সম্পাদকের যৌথ স্বাক্ষরে সদর উপজেলা সম্মেলনের কাউন্সিলর তালিকা প্রণয়ন করবে ও উপজেলা এডহক আহ্বায়ক কমিটি বর্ধিত সভা ডেকে প্রস্তুতকৃত তালিকা যাচাই-বাছাই করে চূড়ান্ত কাউন্সিলর তালিকা প্রকাশ করবে। জেলা ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনা করে একটি বর্ণাঢ্য জাঁকজমকপূর্ণ সম্মেলন ও কাউন্সিল অধিবেশনের তারিখ নির্ধারণ করবেন।
সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি  বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিদ্দিক হোসাইন স্বাক্ষরিত লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন রশিদাবাদ ইউনিয়ন আ’লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এম এ জুবায়ের। সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মামুন আল মামুন খান। সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য গিয়াস উদ্দিন মোঃ মফিজের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে উপজেলা কমিটির সদস্য ইব্রাহিম খলিল, মারিয়া ইউপি কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান, দানাপাটুলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউপি আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম মাসুদ, লতিফাবাদ ইউপি আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক তাজুল ইসলামসহ সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনঃ জেলার এক নেতার পকেট কমিটি গঠনের চেষ্টা, তিন দফা দাবি 

প্রকাশের সময় : ১০:৪৬:২৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ মে ২০২২
কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে দলের গঠনতন্ত্র অনুসরণ না করেই অবৈধ কাউন্সিলর তালিকা দিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুর ইসলাম টিটুর পকেট কমিটি করার প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। আজ শুক্রবার দুপুরে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম চত্বরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের একাংশের নেতাকর্মীরা এই অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ১৯৯৭ সালের ২ এপ্রিল তৎকালীন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এড. আব্দুল হামিদ উপস্থিতিতে সদর আওয়ামী লীগের অনুষ্ঠিত সম্মেলনে সভাপতি হিসেবে এড. আতাউর রহমান এবং সাধারণ সম্পাদক হিসেবে অধ্যাপক শরীফ আহমদ সাদীর নাম ঘোষণা করা হয়েছিল। পরে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করা হলেও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের অনুমোদন নেওয়া হয়নি। ফলে দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে অনুমোদনহীন পূর্ণাঙ্গ কমিটি পরিচালিত হয়ে আসছে। পরে সদর উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে ২০০৩ এবং ২০১৪ সালে কমিটি গঠন করা হলেও সেসব কমিটিরও দেননি আতাউর রহমান ও শরীফ আহমদ সাদীর নেতৃত্বাধীন কমিটি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৯৭ সালে গঠিত সদর উপজেলা কমিটি এবং ২০১৪ সালে করা ইউনিয়ন কমিটিগুলো অনুমোদনহীন অবৈধ যা দলীয় গঠনতন্ত্র পরিপন্থী এবং মেয়াদোত্তীর্ণ। অবৈধ ও মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটিগুলোর যে কাউন্সিলর তালিকা তৈরি করা হয়েছে সেই তালিকা কখনোই বৈধ হতে পারে না। এমন পরিস্থিতিতে আগামী ২৫ মে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে কাউন্সিল অধিবেশন করাও দলের গঠনতান্ত্রিক নিয়মে সম্ভব নয় বলেও আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন সদর আ’লীগের একাংশের নেতাকর্মীরা।
জেলা কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ টিটু প্রতি ইঙ্গিত করে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, ২৫ মে সদর উপজেলা সম্মেলনকে সামনে রেখে বর্তমান সদর কমিটির সভাপতি ও ‘কতিত’ ভারপ্রাপ্ত সাঃ সম্পাদক জেলা কমিটির এই নেতার কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে ১১ ইউনিয়নের একটি অবৈধ কাউন্সিলর তালিকা প্রণয়ন করেছেন। আরোও অভিযোগ করে তারা বলেন সম্মেলনকে সামনে রেখে উপজেলা আওয়ামী লীগের কোন বর্ধিত সভাও করা হয়নি। সৈয়দ টিটু নির্দেশনায় অনেক ইউনিয়ন কমিটির সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষর না নিয়ে অত্যন্ত গোপনে কাউন্সিলর তালিকা প্রস্তুত করে তা গোপন রাখা হয়েছে। প্রস্তুতকৃত তালিকা কোন ইউনিয়নের সভাপতি সাধারণ সম্পাদকের কাছেও দেয়া হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে দীর্ঘ ২৫ বছর পর অনুষ্ঠিত সম্মেলনে যোগ উৎসাহ-উদ্দীপনা ও উৎসব আমেজ থাকার কথা কথা ছিল তার বিপরীতে রয়েছে ক্ষোভ ও হতাশা।
আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের কাছে তিন দফা দাবি তুলে ধরেন তারা। এরমধ্যে দীর্ঘ ২৫ বছরের মেয়াদোত্তীর্ণ সদর উপজেলা কমিটি বাতিল করে একজন গ্রহণযোগ্য ও পরিচ্ছন্ন ব্যক্তির নেতৃত্বে ১১ ইউনিয়ন থেকে পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তির ৩/৪ জন সদস্য এনে মোট ৫১ সদস্য বিশিষ্ট একটি এডহক আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা। এই এডহক আহ্বায়ক কমিটি ৪/৫ মাসের মধ্যে প্রত্যেক ইউনিয়নের ওয়ার্ড কমিটি গঠন করে ইউপি কমিটি সম্মেলনের মাধ্যমে গঠন করবেন। প্রত্যেক ইউনিয়ন কমিটির সভা করে সভাপতি সাধারণ সম্পাদকের যৌথ স্বাক্ষরে সদর উপজেলা সম্মেলনের কাউন্সিলর তালিকা প্রণয়ন করবে ও উপজেলা এডহক আহ্বায়ক কমিটি বর্ধিত সভা ডেকে প্রস্তুতকৃত তালিকা যাচাই-বাছাই করে চূড়ান্ত কাউন্সিলর তালিকা প্রকাশ করবে। জেলা ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনা করে একটি বর্ণাঢ্য জাঁকজমকপূর্ণ সম্মেলন ও কাউন্সিল অধিবেশনের তারিখ নির্ধারণ করবেন।
সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি  বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিদ্দিক হোসাইন স্বাক্ষরিত লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন রশিদাবাদ ইউনিয়ন আ’লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এম এ জুবায়ের। সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মামুন আল মামুন খান। সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য গিয়াস উদ্দিন মোঃ মফিজের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে উপজেলা কমিটির সদস্য ইব্রাহিম খলিল, মারিয়া ইউপি কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান, দানাপাটুলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউপি আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম মাসুদ, লতিফাবাদ ইউপি আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক তাজুল ইসলামসহ সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।