শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সম্মেলন ঘিরে মুখোমুখি অবস্থানে একাধিক গ্রুপ, চরম আতঙ্কে জনসাধারণ 

দীর্ঘ ২৫ বছর পর কিশোরগঞ্জ সদর আওয়ামী লীগের সম্মেলন ঘিরে অভিযোগ পাল্টা অভিযোগের ভিত্তিতে একাধিক গ্রুপের মুখোমুখি অবস্থানে সংঘাত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। ফলে জেলা শহরের জনসাধারণের মাঝে বিরাজ করছে চরম আতঙ্ক। সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ কমিটির নিয়ন্ত্রণ নিতে একাধিক গ্রুপের তৎপরতায় পরিস্থিতি পর্যালোচনা করলে দেখা যায় পান থেকে চুন খসলেই রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়াবেন নেতা-কর্মীরা।
জেলার আওয়ামী লীগের অন্তর্ভুক্ত ১৩টি উপজেলা ইউনিটের মধ্যে সদর উপজেলা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সাংগঠনিক ইউনিট হিসেবে বিবেচিত। ঐতিহাসিকভাবে এ উপজেলাটি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের কাছে রয়েছে আলাদা কদর। দেশের প্রথম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম ছিলেন এ আসনের সংসদ সদস্য। পরবর্তীতে এ আসন থেকে বারবার নির্বাচিত হয়েছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক প্রয়াত সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। তিনি জীবিত থাকাকালীন সময়ে এ উপজেলা আওয়ামী লীগ কমিটি কার্যক্রমে ও শৃঙ্খলায় দেশজুড়ে ছিল প্রশংসিত। সৈয়দ আশরাফের মৃত্যুর পরেই কমিটি বিভক্ত হয় একাধিক গ্রুপে ও ধারা উপ-ধারায়। কমিটির কোন্দল, গ্রুপিং অবসান করে গতিশীলতা ফেরাতে গত ২১ মার্চ সদর আ’লীগের সম্মেলন তারিখ ঘোষণা করা হয়।
সর্বশেষ ১৯৯৭ সালের ০২ এপ্রিল তৎকালীন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান মহামান্য রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদের উপস্থিতে সদর উপজেলা আ’লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতা-কর্মীদের বহুল কাঙ্ক্ষিত সম্মেলন ঘোষণার পরই তৈরি হয় মতপার্থক্য। বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ঢাকা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত মির্জা আজম এমপি সদর উপজেলার অন্তর্ভুক্ত অনুমোদনহীন ও মেয়াদোত্তীর্ণ ইউনিয়ন কমিটি সম্মেলন না করেই উপজেলা সম্মেলনের ঘোষণায় নেতাকর্মীরা হতাশা প্রকাশ করেন।
এদিকে ২৫ মে সম্মেলনকে সামনে রেখে বর্তমান সদর কমিটির প্রস্তুতি ও কার্যক্রমের স্বচ্ছতা নিয়ে অভিযোগ উঠেছে। অনুমোদনহীন ১১ ইউনিয়ন কমিটির থেকে ৩১ সদস্যের তালিকা অত্যন্ত গোপনে তৈরি করা হয়েছে। যা অনেক ইউনিয়নের সভাপতি/সাধারণ সম্পাদক জানেন না। সম্মেলনকে ঘিরে উপজেলা কমিটির বিশেষ বর্ধিত সভাও অনুষ্ঠিত হয়নি। বিশেষ বর্ধিত সভায় কাউন্সিলর তালিকা অনুমোদন নেয়ার বিধান থাকলেও তা করা হয়নি। একাধিক গ্রুপের অভিযোগ, জেলা আ’লীগের কমিটির এক প্রভাবশালী নেতার পকেট কমিটি গঠন করতেই গোপনে তৈরি করা হয়েছে অবৈধ কাউন্সিলর তালিকা। এসব বিষয়ের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সংবাদ সম্মেলনে স্বচ্ছ কাউন্সিলর তালিকা প্রস্তুত করেন সম্মেলন করার দাবি জানানো হয়েছে। সবশেষ খবর জানা গেছে প্রস্তুত করা অবৈধ কাউন্সিলর তালিকায় দ্বিতীয় অধিবেশন যে কোনো মূল্যে প্রতিহত করতে একাধিক পক্ষের মধ্যে এক সম্পন্ন হয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে পান থেকে চুন খসলেই রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ শুরুর আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এর ফলে শহরের বসবাসকারী জনমনে রয়েছে আতঙ্ক। এ নিয়ে উৎকণ্ঠায় অনেকেই শহর থেকে গ্রামে বা আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে চলে যাবার প্রস্তুতি নিয়েছেন বলেও জানা গেছে।

সম্মেলন ঘিরে মুখোমুখি অবস্থানে একাধিক গ্রুপ, চরম আতঙ্কে জনসাধারণ 

প্রকাশের সময় : ১০:৩৫:৫০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ মে ২০২২
দীর্ঘ ২৫ বছর পর কিশোরগঞ্জ সদর আওয়ামী লীগের সম্মেলন ঘিরে অভিযোগ পাল্টা অভিযোগের ভিত্তিতে একাধিক গ্রুপের মুখোমুখি অবস্থানে সংঘাত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। ফলে জেলা শহরের জনসাধারণের মাঝে বিরাজ করছে চরম আতঙ্ক। সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ কমিটির নিয়ন্ত্রণ নিতে একাধিক গ্রুপের তৎপরতায় পরিস্থিতি পর্যালোচনা করলে দেখা যায় পান থেকে চুন খসলেই রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়াবেন নেতা-কর্মীরা।
জেলার আওয়ামী লীগের অন্তর্ভুক্ত ১৩টি উপজেলা ইউনিটের মধ্যে সদর উপজেলা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সাংগঠনিক ইউনিট হিসেবে বিবেচিত। ঐতিহাসিকভাবে এ উপজেলাটি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের কাছে রয়েছে আলাদা কদর। দেশের প্রথম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম ছিলেন এ আসনের সংসদ সদস্য। পরবর্তীতে এ আসন থেকে বারবার নির্বাচিত হয়েছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক প্রয়াত সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। তিনি জীবিত থাকাকালীন সময়ে এ উপজেলা আওয়ামী লীগ কমিটি কার্যক্রমে ও শৃঙ্খলায় দেশজুড়ে ছিল প্রশংসিত। সৈয়দ আশরাফের মৃত্যুর পরেই কমিটি বিভক্ত হয় একাধিক গ্রুপে ও ধারা উপ-ধারায়। কমিটির কোন্দল, গ্রুপিং অবসান করে গতিশীলতা ফেরাতে গত ২১ মার্চ সদর আ’লীগের সম্মেলন তারিখ ঘোষণা করা হয়।
সর্বশেষ ১৯৯৭ সালের ০২ এপ্রিল তৎকালীন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান মহামান্য রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদের উপস্থিতে সদর উপজেলা আ’লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতা-কর্মীদের বহুল কাঙ্ক্ষিত সম্মেলন ঘোষণার পরই তৈরি হয় মতপার্থক্য। বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ঢাকা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত মির্জা আজম এমপি সদর উপজেলার অন্তর্ভুক্ত অনুমোদনহীন ও মেয়াদোত্তীর্ণ ইউনিয়ন কমিটি সম্মেলন না করেই উপজেলা সম্মেলনের ঘোষণায় নেতাকর্মীরা হতাশা প্রকাশ করেন।
এদিকে ২৫ মে সম্মেলনকে সামনে রেখে বর্তমান সদর কমিটির প্রস্তুতি ও কার্যক্রমের স্বচ্ছতা নিয়ে অভিযোগ উঠেছে। অনুমোদনহীন ১১ ইউনিয়ন কমিটির থেকে ৩১ সদস্যের তালিকা অত্যন্ত গোপনে তৈরি করা হয়েছে। যা অনেক ইউনিয়নের সভাপতি/সাধারণ সম্পাদক জানেন না। সম্মেলনকে ঘিরে উপজেলা কমিটির বিশেষ বর্ধিত সভাও অনুষ্ঠিত হয়নি। বিশেষ বর্ধিত সভায় কাউন্সিলর তালিকা অনুমোদন নেয়ার বিধান থাকলেও তা করা হয়নি। একাধিক গ্রুপের অভিযোগ, জেলা আ’লীগের কমিটির এক প্রভাবশালী নেতার পকেট কমিটি গঠন করতেই গোপনে তৈরি করা হয়েছে অবৈধ কাউন্সিলর তালিকা। এসব বিষয়ের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সংবাদ সম্মেলনে স্বচ্ছ কাউন্সিলর তালিকা প্রস্তুত করেন সম্মেলন করার দাবি জানানো হয়েছে। সবশেষ খবর জানা গেছে প্রস্তুত করা অবৈধ কাউন্সিলর তালিকায় দ্বিতীয় অধিবেশন যে কোনো মূল্যে প্রতিহত করতে একাধিক পক্ষের মধ্যে এক সম্পন্ন হয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে পান থেকে চুন খসলেই রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ শুরুর আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এর ফলে শহরের বসবাসকারী জনমনে রয়েছে আতঙ্ক। এ নিয়ে উৎকণ্ঠায় অনেকেই শহর থেকে গ্রামে বা আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে চলে যাবার প্রস্তুতি নিয়েছেন বলেও জানা গেছে।