শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

দুর্দান্ত জয় পেয়ে ক্ষমতায় যাচ্ছে অস্ট্রেলিয়ার লেবার পার্টি

ছবি: এপি

জাতীয় নির্বাচনে দুর্দান্ত জয় পেয়ে অস্ট্রেলিয়ার ক্ষমতায় ফিরতে যাচ্ছে লেবার পার্টি। আনুষ্ঠানিকভাবে ভোটের ফল এখনো ঘোষণা করা হয়নি। মোট ৭১.০৩ শতাংশ ভোট গণনা সম্পন্ন হয়েছে। একক সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য অস্ট্রেলীয় পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে ১৫১ আসনের মধ্যে লেবার পার্টির দরকার ৭৬ আসন। এর মধ্যে ৭২ আসনে তাদের জয় নিশ্চিত হয়েছে। এখনো ১৪ আসনের ফল ঘোষণা বাকি। এর বেশিরভাগ আসনেই লেবার প্রার্থীরা এগিয়ে রয়েছেন। তাই এবার লেবার পার্টির একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিশ্চিত বলেই ধরে নেওয়া হচ্ছে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, এরই মধ্যে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন নিজের পরাজয় স্বীকার করে নিয়েছেন। দেশটির পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হতে চলেছেন অভিজ্ঞ রাজনীতিক লেবার পার্টির নেতা অ্যান্থনি আলবানিজ। লেবার পার্টির এই নেতাকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আন্তর্জাতিক নেতারা এরই মধ্যে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

একেবারে সাদামাটা পরিবার থেকে উঠে এসেছেন অ্যান্থনি আলবানিজ। বিশেষভাবে সক্ষমদের পেনশনে তার সিঙ্গল মাদার সংসার চালাতেন। সেই আলবানিজ অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী হওয়ায় জলবায়ু পরিবর্তন, মহিলা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়, দুর্নীতি দমনের মতো বিভিন্ন বিষয়ে আরো কাজ হবে বলে মনে করছেন অনেকেই।

পরিবর্তনের স্লোগান দিয়েই তিনি ভোটারদের মন জয় করেছেন। জয় নিশ্চিতের পর সমর্থকদের উদ্দেশে অ্যান্থনি আলবানিজ বলেন, ‘আমি দেশে পরিবর্তন আনতে চাই। এখন যে অবস্থায় দেশ চলছে এর পরিবর্তন করতে চাই। জনগণ পরিবর্তনের পক্ষে ভোট দিয়েছে। আমার কাছে, অস্ট্রেলিয়ার জনগণকে নেতৃত্ব দেওয়া এক মহান কর্তব্য।’

মধ্য-বামপন্থি এই নেতা সবাইকে নিয়ে ঐক্যের ডাক দিয়েছেন। সেইসাথে সামাজিক সেবাগুলোতে বিনিয়োগ বাড়ানো এবং জলবায়ু পরিবর্তন ও দূষণ বন্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন। আর এ জন্য লেবার পার্টির প্রধানের দায়িত্ব থেকে পদত্যাগের ঘোষণাও দিয়েছেন আলবানিজ। তিনি বলেন, ‘আমি অস্ট্রেলিয়ানদের এক জায়গায় নিয়ে আসতে চাই। আমি আমাদের অভিন্ন উদ্দেশ্য খুঁজে বের করতে চাই, আতঙ্ক ও বিভেদ নয়, ঐক্য ও আশাবাদকে ঊর্ধ্বে তুলে ধরতে চাই।’

কে এই আলবো? : ৫৯ বছর বয়সী অস্ট্রেলিয়ার পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী ‘আলবো’ নামে পরিচিত। তিনি বড় হয়েছেন সোশ্যাল হাউজিংয়ে, শারীরিকভাবে অক্ষমদের জন্য থাকা পেনসনের ওপর নির্ভরশীল মায়ের পরিচর্যায়। এভাবে বড় হওয়াই তার প্রগতিশীল বিশ্বাসের ভিত গড়ে দিয়েছিল বলে মনে করেন এ লেবার নেতা।

ছোটবেলায় আলবানিজের ধারণা ছিল, জন্মের আগেই তার বাবা মারা গেছেন। পরে কৈশোরে জানতে পারেন, ইউরোপ ভ্রমণের সময় এক বিবাহিত পুরুষের সাথে মেলামেশার পর তার মা গর্ভবতী হয়ে পড়েছিলেন। তারও তিন দশক পর কার্লো আলবানিজের খোঁজ পান; অ্যান্থনি ইতালিতে গেলে পিতা-পুত্রের প্রথমবার দেখা হয়। অ্যান্থনি তার সৎ ভাই-বোনদেরও দেখা পান সেখানে।

অ্যান্থনি আলবানিজ বলেছেন, তার মা মেরিঅ্যান এলেরি ছেলের জন্য সে সব সুযোগ নিশ্চিত করতে সঙ্কল্পবদ্ধ ছিলেন, যেগুলো তিনি নিজে পাননি। তার কারণেই আলবো পরিবারের প্রথম সদস্য হিসেবে স্কুল শেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে পেরেছেন। ছেলে নাথানের জন্য একটি সুন্দর পৃথিবী গড়ার চিন্তাই তাকে সামনে এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা দিয়েছে বলে ভাষ্য আলবানিজের।

১৯ বছরের দাম্পত্য জীবন শেষে ২০১৯ সালে স্ত্রী কারমেল টেবুটের সাথে ছাড়াছাড়ি হয় তার। এখনকার সঙ্গী জোডি হেইডন এবং ছেলে নাথান তার নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যাপকভাবে অংশগ্রহণ করেছেন। দেশটির নতুন ফার্স্টলেডি হতে যাচ্ছেন আলবানিজের পার্টনার জোডি হেইডন। ৪৩ বছর বয়সী হেইডন গত দুই বছর ধরে আলবানিজের বান্ধবী। তিনি হতে যাচ্ছেন দেশটির ইতিহাসে দ্বিতীয় ফার্স্টলেডি, যিনি প্রধানমন্ত্রীর স্ত্রী নন তবে বান্ধবী।

আলবানিজের বয়স যখন ২০ এর ঘরে ছিল, তখন থেকেই তিনি লেবার পার্টির একনিষ্ঠ কর্মী। ১৯৯৬ সালে নিজের ৩৩তম জন্মদিনে সিডনির একটি আসন থেকে নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে তিনি সামনের কাতারে চলে আসেন। ২০০৭ সালে কেভিন রুডের হাত ধরে লেবার পার্টি অস্ট্রেলিয়ার ক্ষমতায় এলে আলবানিজ অবকাঠামো ও পরিবহন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান।

লেবার পার্টির সবশেষ নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী ছিলেন কেভিন রুড। ২০১৩ সালের নির্বাচনে কনজারভেটিভ লেবারেল ন্যাশনাল কোয়ালিশনের কাছে বিপুল ভোটের ব্যবধানে হেরে যান রুড। ২০১৯ সালের নির্বাচনে দলটির পরাজয়ের পর বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন লেবার নেতা আলবানিজ। সাবেক প্রধানমন্ত্রী কেভিন রুড ও জুলিয়া গিলার্ডের শাসনামলে উপপ্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন আলবানিজ।

ক্ষমতায় আসতে আগের অবস্থান পরিবর্তন : ২০১৯ সালের নির্বাচনে লেবার পার্টিকে ত্যাগ করা রক্ষণশীল ভোটারদের সমর্থন পেতে এবারের নির্বাচনী প্রচারে আলবানিজকে অনেক ইস্যুতে তার আগের অবস্থান থেকে পিছু হটতে দেখা গেছে। তিনি জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় আরো আগ্রাসী পদক্ষেপ নেওয়ার অবস্থান থেকে সরে এসেছেন এবং চীন ও জাতীয় নিরাপত্তা প্রশ্নে রক্ষণশীলদের মতোই কট্টর অবস্থান নিয়েছেন। নৌকায় করে অস্ট্রেলিয়ায় পৌঁছানো অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ফিরিয়ে দেওয়ার বিতর্কিত নীতিতেও এখন তার সমর্থন আছে, যে নীতির বিরুদ্ধে তিনিই একসময় গলা ফাটিয়েছিলেন।

অবশ্য বয়স্ক ও শিশু সেবা এবং উৎপাদন খাতে বেশি ব্যয়ের লেবার নীতি এবং আদিবাসীদের আরো ক্ষমতা দেওয়ার বিষয়ে তিনি এখনো অটল। তবে অনেক ইস্যুতে বিতর্কিত ও স্ববিরোধী অবস্থানের কারণে তার সরকার কতটা পরিবর্তন আনতে পারবে, তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে।

যদিও তিনি বিজয়ী ভাষণে বলেছেন, ‘শারীরিকভাবে অক্ষমদের জন্য থাকা পেনশনে চলা এক সিঙ্গেল মায়ের ছেলে, যে পাবলিক হাউজিংয়ে বড় হয়েছে, সে আজ রাতে আপনাদের সামনে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দাঁড়াতে পারছে। এটাই আমাদের মহান দেশ সম্পর্কে অনেক কিছু বলে দিচ্ছে। আমি চাই, অস্ট্রেলিয়া সেই দেশ হওয়া অব্যাহত রাখুক, যেখানে আপনি কোথায় থাকেন, কাকে পার্থনা করেন, কাকে ভালোবাসেন বা আপনার শেষ নাম কী, এগুলো আপনার জীবনের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াবে না। আমি আশা করছি, আমার জীবনের যাত্রা সংগ্রামে অনুপ্রেরণা যোগাবে অস্ট্রেলীয়দের।

দুর্দান্ত জয় পেয়ে ক্ষমতায় যাচ্ছে অস্ট্রেলিয়ার লেবার পার্টি

প্রকাশের সময় : ০৪:০৬:৪৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ মে ২০২২

জাতীয় নির্বাচনে দুর্দান্ত জয় পেয়ে অস্ট্রেলিয়ার ক্ষমতায় ফিরতে যাচ্ছে লেবার পার্টি। আনুষ্ঠানিকভাবে ভোটের ফল এখনো ঘোষণা করা হয়নি। মোট ৭১.০৩ শতাংশ ভোট গণনা সম্পন্ন হয়েছে। একক সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য অস্ট্রেলীয় পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে ১৫১ আসনের মধ্যে লেবার পার্টির দরকার ৭৬ আসন। এর মধ্যে ৭২ আসনে তাদের জয় নিশ্চিত হয়েছে। এখনো ১৪ আসনের ফল ঘোষণা বাকি। এর বেশিরভাগ আসনেই লেবার প্রার্থীরা এগিয়ে রয়েছেন। তাই এবার লেবার পার্টির একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিশ্চিত বলেই ধরে নেওয়া হচ্ছে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, এরই মধ্যে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন নিজের পরাজয় স্বীকার করে নিয়েছেন। দেশটির পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হতে চলেছেন অভিজ্ঞ রাজনীতিক লেবার পার্টির নেতা অ্যান্থনি আলবানিজ। লেবার পার্টির এই নেতাকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আন্তর্জাতিক নেতারা এরই মধ্যে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

একেবারে সাদামাটা পরিবার থেকে উঠে এসেছেন অ্যান্থনি আলবানিজ। বিশেষভাবে সক্ষমদের পেনশনে তার সিঙ্গল মাদার সংসার চালাতেন। সেই আলবানিজ অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী হওয়ায় জলবায়ু পরিবর্তন, মহিলা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়, দুর্নীতি দমনের মতো বিভিন্ন বিষয়ে আরো কাজ হবে বলে মনে করছেন অনেকেই।

পরিবর্তনের স্লোগান দিয়েই তিনি ভোটারদের মন জয় করেছেন। জয় নিশ্চিতের পর সমর্থকদের উদ্দেশে অ্যান্থনি আলবানিজ বলেন, ‘আমি দেশে পরিবর্তন আনতে চাই। এখন যে অবস্থায় দেশ চলছে এর পরিবর্তন করতে চাই। জনগণ পরিবর্তনের পক্ষে ভোট দিয়েছে। আমার কাছে, অস্ট্রেলিয়ার জনগণকে নেতৃত্ব দেওয়া এক মহান কর্তব্য।’

মধ্য-বামপন্থি এই নেতা সবাইকে নিয়ে ঐক্যের ডাক দিয়েছেন। সেইসাথে সামাজিক সেবাগুলোতে বিনিয়োগ বাড়ানো এবং জলবায়ু পরিবর্তন ও দূষণ বন্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন। আর এ জন্য লেবার পার্টির প্রধানের দায়িত্ব থেকে পদত্যাগের ঘোষণাও দিয়েছেন আলবানিজ। তিনি বলেন, ‘আমি অস্ট্রেলিয়ানদের এক জায়গায় নিয়ে আসতে চাই। আমি আমাদের অভিন্ন উদ্দেশ্য খুঁজে বের করতে চাই, আতঙ্ক ও বিভেদ নয়, ঐক্য ও আশাবাদকে ঊর্ধ্বে তুলে ধরতে চাই।’

কে এই আলবো? : ৫৯ বছর বয়সী অস্ট্রেলিয়ার পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী ‘আলবো’ নামে পরিচিত। তিনি বড় হয়েছেন সোশ্যাল হাউজিংয়ে, শারীরিকভাবে অক্ষমদের জন্য থাকা পেনসনের ওপর নির্ভরশীল মায়ের পরিচর্যায়। এভাবে বড় হওয়াই তার প্রগতিশীল বিশ্বাসের ভিত গড়ে দিয়েছিল বলে মনে করেন এ লেবার নেতা।

ছোটবেলায় আলবানিজের ধারণা ছিল, জন্মের আগেই তার বাবা মারা গেছেন। পরে কৈশোরে জানতে পারেন, ইউরোপ ভ্রমণের সময় এক বিবাহিত পুরুষের সাথে মেলামেশার পর তার মা গর্ভবতী হয়ে পড়েছিলেন। তারও তিন দশক পর কার্লো আলবানিজের খোঁজ পান; অ্যান্থনি ইতালিতে গেলে পিতা-পুত্রের প্রথমবার দেখা হয়। অ্যান্থনি তার সৎ ভাই-বোনদেরও দেখা পান সেখানে।

অ্যান্থনি আলবানিজ বলেছেন, তার মা মেরিঅ্যান এলেরি ছেলের জন্য সে সব সুযোগ নিশ্চিত করতে সঙ্কল্পবদ্ধ ছিলেন, যেগুলো তিনি নিজে পাননি। তার কারণেই আলবো পরিবারের প্রথম সদস্য হিসেবে স্কুল শেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে পেরেছেন। ছেলে নাথানের জন্য একটি সুন্দর পৃথিবী গড়ার চিন্তাই তাকে সামনে এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা দিয়েছে বলে ভাষ্য আলবানিজের।

১৯ বছরের দাম্পত্য জীবন শেষে ২০১৯ সালে স্ত্রী কারমেল টেবুটের সাথে ছাড়াছাড়ি হয় তার। এখনকার সঙ্গী জোডি হেইডন এবং ছেলে নাথান তার নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যাপকভাবে অংশগ্রহণ করেছেন। দেশটির নতুন ফার্স্টলেডি হতে যাচ্ছেন আলবানিজের পার্টনার জোডি হেইডন। ৪৩ বছর বয়সী হেইডন গত দুই বছর ধরে আলবানিজের বান্ধবী। তিনি হতে যাচ্ছেন দেশটির ইতিহাসে দ্বিতীয় ফার্স্টলেডি, যিনি প্রধানমন্ত্রীর স্ত্রী নন তবে বান্ধবী।

আলবানিজের বয়স যখন ২০ এর ঘরে ছিল, তখন থেকেই তিনি লেবার পার্টির একনিষ্ঠ কর্মী। ১৯৯৬ সালে নিজের ৩৩তম জন্মদিনে সিডনির একটি আসন থেকে নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে তিনি সামনের কাতারে চলে আসেন। ২০০৭ সালে কেভিন রুডের হাত ধরে লেবার পার্টি অস্ট্রেলিয়ার ক্ষমতায় এলে আলবানিজ অবকাঠামো ও পরিবহন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান।

লেবার পার্টির সবশেষ নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী ছিলেন কেভিন রুড। ২০১৩ সালের নির্বাচনে কনজারভেটিভ লেবারেল ন্যাশনাল কোয়ালিশনের কাছে বিপুল ভোটের ব্যবধানে হেরে যান রুড। ২০১৯ সালের নির্বাচনে দলটির পরাজয়ের পর বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন লেবার নেতা আলবানিজ। সাবেক প্রধানমন্ত্রী কেভিন রুড ও জুলিয়া গিলার্ডের শাসনামলে উপপ্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন আলবানিজ।

ক্ষমতায় আসতে আগের অবস্থান পরিবর্তন : ২০১৯ সালের নির্বাচনে লেবার পার্টিকে ত্যাগ করা রক্ষণশীল ভোটারদের সমর্থন পেতে এবারের নির্বাচনী প্রচারে আলবানিজকে অনেক ইস্যুতে তার আগের অবস্থান থেকে পিছু হটতে দেখা গেছে। তিনি জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় আরো আগ্রাসী পদক্ষেপ নেওয়ার অবস্থান থেকে সরে এসেছেন এবং চীন ও জাতীয় নিরাপত্তা প্রশ্নে রক্ষণশীলদের মতোই কট্টর অবস্থান নিয়েছেন। নৌকায় করে অস্ট্রেলিয়ায় পৌঁছানো অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ফিরিয়ে দেওয়ার বিতর্কিত নীতিতেও এখন তার সমর্থন আছে, যে নীতির বিরুদ্ধে তিনিই একসময় গলা ফাটিয়েছিলেন।

অবশ্য বয়স্ক ও শিশু সেবা এবং উৎপাদন খাতে বেশি ব্যয়ের লেবার নীতি এবং আদিবাসীদের আরো ক্ষমতা দেওয়ার বিষয়ে তিনি এখনো অটল। তবে অনেক ইস্যুতে বিতর্কিত ও স্ববিরোধী অবস্থানের কারণে তার সরকার কতটা পরিবর্তন আনতে পারবে, তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে।

যদিও তিনি বিজয়ী ভাষণে বলেছেন, ‘শারীরিকভাবে অক্ষমদের জন্য থাকা পেনশনে চলা এক সিঙ্গেল মায়ের ছেলে, যে পাবলিক হাউজিংয়ে বড় হয়েছে, সে আজ রাতে আপনাদের সামনে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দাঁড়াতে পারছে। এটাই আমাদের মহান দেশ সম্পর্কে অনেক কিছু বলে দিচ্ছে। আমি চাই, অস্ট্রেলিয়া সেই দেশ হওয়া অব্যাহত রাখুক, যেখানে আপনি কোথায় থাকেন, কাকে পার্থনা করেন, কাকে ভালোবাসেন বা আপনার শেষ নাম কী, এগুলো আপনার জীবনের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াবে না। আমি আশা করছি, আমার জীবনের যাত্রা সংগ্রামে অনুপ্রেরণা যোগাবে অস্ট্রেলীয়দের।