শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

শেখ হাসিনা যতদিন থাকবে দেশ এগিয়ে যাবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, শেখ হাসিনা যতদিন থাকবে ততদিন দেশ এগিয়ে যাবে। এ দেশের উন্নয়নের জোয়ার এবং শেখ হাসিনা সরকারের জোয়ার কেউ থামাতে পারবে না। তার যোগ্যতায় এবং তার দূরদর্শি নেতৃত্বে আজ বাংলাদেশ সম্ভাবনার বাংলাদেশ পেয়েছে। পৃথিবীর যে প্রান্তে এখন আমরা যাই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে যেখানেই পাঠান সেখানেই সে দেশের রাষ্ট্র প্রধান কিংবা নেতারা জিজ্ঞাসা করেন তোমার নেত্রীর ম্যাজিক কী? কিভাবে তিনি এই দেশকে সম্ভাবনার দেশে পরিনত করলেন। আমরা তখন বলি তার ধমনিতে বঙ্গবন্ধুর রক্ত প্রবাহিত হচ্ছে। যিনি একটা মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমাদের দেশটিকে স্বাধীন করার যে পথ দেখিয়েছিলেন তারই কন্যা শেখ হাসিনা। রবিবার জগন্নাথ বিশ^বিদ্যালয়ের (জবি) কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়ামে শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষ্যে জবি ছাত্রলীগের আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, জগন্নাথের নাম শুনলেই আমি আবেগে আপ্লুত হয়ে যাই। বাংলাদেশের যা কিছু অর্জন হয়েছে আজ, তার সবকিছুই ছাত্রলীগের অর্জন। ছাত্রলীগ কাউকে ভয় করে না এবং রাজপথে লড়াই করতে জানে। বঙ্গবন্ধু হত্যার কালো দাগটি হয়তো সমস্ত বঙ্গপসাগরের পানি দিয়ে মুছে যাবে না। তিনি যখন দেশে ফিরে এসেছে তখন সারাদেশের মানুষ নতুন করে আবার প্রাণ ফিরে পেয়েছে। বঙ্গবন্ধুর যে অসমাপ্ত কাজগুলি যে গুলি বঙ্গবন্ধু পরিকল্পনা নিয়েছিলেন সবার জন্য শিক্ষা সবার জন্য বাসস্থান সবার জন্য চাকুরি সুবিধা এই সবগুলি তিনি ঘোষণা করেছিলেন। আজকে তারই কন্যা সে গুলি একে একে সবার জন্য যে বাসস্থানের ব্যবস্থা নিয়েছেন সেটা আপনেরা সকলে জানেন। শিক্ষা ব্যবস্থাতে এমন পরিবর্তন করছেন সেটা আপনেরা দেখতে পাচ্ছেন। স্বাস্থ্যে সবার জন্য বঙ্গবন্ধু যেটা চিন্তা করতেন একটা অসাম্প্রদায়িকতা দেশের কথা চিন্তা করতেন। আজ কিন্তু আমরা সেই জায়গা চলে আসছি।
তিনি বলেন, আমরা ২০০১ সালে দেখলাম কমিউনিটি হেল্থ কেয়ারগুলো বন্ধ করে দিল। এজ এ রেজাল্ট আমাদের কি? হলো আমাদের স্বাস্থ্য খাতটা ভেঙ্গে পড়ল। আমাদের স্বাস্থ্য খাতে এই কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো যে কী অবদান রাখত তা এখন এসে আমরা তার প্রমান পাচ্ছি। এই হেল্থ ক্লিনিক গুলো আমরা আবার চালু করাতে। আমরা কোভিড মোকাবেলা করার জন্য আজকে পৃথিবীর ৫টি দেশের মধ্যে আমাদের দেশ স্থান করে নিয়েছে। আমরা দক্ষিন এশিয়ার মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করে নিয়েছি কোভিড মোকাবেলা করার জন্য। এটাই হলো দূরদর্শিতা, এটাই হলো দূরদর্শি নেতৃত্ব, এটাই হলো দক্ষতা। ২০০১ সালে যখন আমরা ক্ষমতা ছাড়ি তখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী একের পর এক বিশ^বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত করে যাচ্ছিলেন। তিনি যখন বিদায় নিচ্ছেন ঠিক তার দুই দিন আগে তেঁজগাও শেরেবাংলা কৃষিবিশ^বিদ্যালয় স্থাপন করেন। কৃষিতে সবসময় যে গুরুত্ব দিতেন বঙ্গবন্ধু তারই ধারাবাহিকতায় শেখ হাসিনা কৃষির উপর সবসময় নজর রেখেছিলেন। সেজন্য কোভিড কালে সবজায়গায় খাদ্যশস্য উৎপাদনে ব্যবহত হচ্ছিল তখন কিন্তু বাংলাদেশ তার কৃষি বিভাগটিকে সজাগ রাখছিল বলেই আমাদের খাদ্যশস্য উৎপাদনে কমতি পরে নাই। সেজন্যই আমরা পেরেছি। সেজন্যই আমরা দক্ষকতা অর্জনে মোকবেলা করে আজকে এ অবস্থানে আসছি।
শেখ হাসিনা সেদিন ফিরেছিলেন বলেই আজকে এইযে সম্ভাবনার বাংলাদেশ হয়েছে বলে আমরা মনে করি। আজকে আমি বাংলাদেশের যেখাই যাই সেই চরকুকরি মুকরি থেকে তেঁতুলিয়া যেকোন প্রত্যন্ত অঞ্চলে যাই সেখানেই দেখি এ দেশের জনগণ শেখ হাসিনাকে কতখানি আস্তা কতখানি বিশ^াস তারা করে। তারা সবসময়ই বিশ^াস করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যতদিন ক্ষমতায় থাকবেন বাংলাদেশের ততদিন অগ্রগতি দ্রুততার সাথে হয়ে যাবে তাকে কেউ রুখতে পারবে না। তার জনপ্রিয়তা দেখি আকাশচুম্বি জনপ্রিয়তা। এসময় তিনি বলেন, বারবার দরকার শেখ হাসিনা সরকার। আগামীতে নির্বাচন আসছে আমরা কোন পেশি শক্তির ভরসা করে আমরা রাজনীতি করি না। কোন বন্ধুকের নলের উপরে প্রধানমন্ত্রী বিশ^াস করে না। প্রধানমন্ত্রী বিশ^াস করেন এদেশের জনগণের উপরে। এদেশের জনগণের আস্তা, বিশ^াস াবশ্যই তিনি পাবেন যেভাবে তিনি দেশকে এগিয়ে নিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী যতদিন থাকবে দেশ এগিয়ে যাবে।
অনুষ্ঠানে জবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোঃ ইব্রাহিম ফরাজীর সভাপতিত্বে প্রধান আলোচক হিসেবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আইন সম্পাদক অ্যাডভোকেট জনাব কাজী মোঃ নজিবুল্লাহ হিরু, সম্মানীত অতিথি হিসেবে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক এবং ট্রেজারার অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়াও আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলহ্বাজ নজরুল ইসলাম বাবু এম.পি, জবি ছাত্রলীগের, সাবেক সভাপতি আলহ্বাজ কামরুল হাসান রিপন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক জনাব গাজী আবু সাইদ, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি জনাব আল-নাহিয়ান খান জয় এবং সাধারণ সম্পাদক শ্রী লেখক ভট্রাচার্য উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন জবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসেন।
প্রধান আলোচকের বক্তব্য এড. কাজী মো. নাজিবুল্লাহ হিরু বলেন, সেদিন আকাশভাঙ্গা কান্নার মধ্য দিয়ে লাখো লাখো মানুষের চোখের জলের বিনিময়ে নিজের চোখের জল পেলে আমাদের স্বপ্ন দেখিয়েছেন নতুন বাংলাদেশের। তিনি বলেছিলেন, বন্দী গণতন্ত্রকে মুক্ত দিবেন, এই দেশ থেকে বিচারহীনতা দূর করবেন। তলাবিহীন ঝুড়ি থেকে এদেশকে অনেকদূর এগিয়ে নিয়ে যাবেন। আজকে সারা বাংলাদেশ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়নের রোল মডেল। আজকে তিনি শুধু বাংলাদেশের নেত্রী নন বিশ্বনেত্রী। তিনি আরও বলেন, আজকে আবারও শিক্ষাঙ্গনকে উত্তপ্ত করা চেষ্টা চলছে। আমি অত্যান্ত শংকিত আবারও শিক্ষাঙ্গনে সেই ২০১৪ সনের অগ্নি সন্ত্রাস ফিরে আসে কিনা। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সকল ভাই-বোনদের এবিষয় সর্তক থাকতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বক্তারা বলেন, ১৯৮১ সালের ১৭ মে শেখ হাসিনা রক্তের হোলিখেলায় পিচ্ছিল পথগুলো যখন রক্তাক্ত ছিল তিনি তখন ফিরে এসেছেন তখন মানুষের মুখে হাসি ফিরিয়ে আনার স্বপ্নের আশা জাগিয়ে তুলেন। সেইদিন কুর্মিটোলা এয়ারপোর্টে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ২১ বছরের মতো ভ্যানগার্ড হয়ে তার পাশে ছিলেন।
এছাড়াও বক্তারা আরও বলেন, বাংলাদেশ আজ বিশ্ব দরবারে শেখ হাসিনার জন্য মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। বিএনপি সরকার ২০০১ -২০০৬ সাল পর্যন্ত দেশকে পাঁচবার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন করেছে। তারা আজ শেখ হাসিনা সরকারের উন্নয়ন দেখে ভয়ে থমকে গিয়ে সন্ত্রাসী হামলা চালানো শুরু করেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে। তারা এতো বছরের ক্ষমতায় থাকার পরেও কেন দেশে কোনো ধরনের উল্লেখযোগ্য উন্নয়নের উদহারন দিতে পারে না। রাজনীতিতে শেখ হাসিনা শুধু চমক নয়, উন্নয়নে তিনি চমক।
এসময় নতুন ক্যাম্পাসের প্রসঙ্গে কোষাধ্যক্ষ একটা পুলিশ ফাঁড়ির তৈরি করে দেওয়ার জন্য আবেদন করলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর তা দ্রুত বাস্তবায়নের কথা বলেন এবং প্রয়োজনে সেখানে একটি থানা বানিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেন।
আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, আমরা যখন বিদেশে যেতাম সেখানেই সবাই এক কথাই বলতো, তোমরা সেই জাতি? যারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে? এসব শুনে লজ্জায় মাথা হেট হয়ে যেতো। সেই অবস্থা থেকে পরিত্রাণ দিয়েছেন তারই সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা। যেদিন তিনি দেশে ফিরেন, লাখো মানুষের ঢল নেমেছিলো। সেদিন ঝড় বৃষ্টি হচ্ছিলো, মনে হলো যেনো প্রকৃতিও হয়ত বঙ্গবন্ধু কন্যাকে স্বাগত জানাতে এসেছে। এসেই ধানমন্ডি ৩২ এ যাবার কথা ছিলো, কিন্তু ঝড় বৃষ্টির কারণে তিনি সেখানে যেতে পারেননি। তিনি গেটে দাড়িয়েই মোনাজাত ধরলেন। সেদিনই তিনি ঠিক করে নিয়েছিলেন কিভাবে তিনি দেশের অবস্থাটা পরিবর্তন করবেন। তিনি আওয়ামীলীগের সভাপতি হয়েই সারা বাংলাদেশ ঘুরে বেড়িয়েছেন। তিনি যেখানেই যেতেন, সেখানেই সবাই তাকে বুকে জড়িয়ে ধরে বলতো, এইতো শেখের বেটি এসেছে এবার আমাদের কেউ রুখতে পারবে না।
বঙ্গবন্ধু হত্যার যে কালো দাগ আমাদের কপালে লেগেছিলো আমার মনে হয় বঙ্গোপসাগরের সব পানি দিয়ে ধুলেও সেই দাগ মুছবেনা। কিন্তু এখন আমাদের মনে একটু প্রশান্তি জাগে আমরা তাদের হত্যার বিচার করতে পেরেছি। এখন আমরা বিদেশে গেলেও বলতে পারি বঙ্গবন্ধু হত্যারবিচার আমরা করতে পারি। ১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনা বলেছিলেন আমি যদি ক্ষমতায় আসি তাহলে এই বাংলাদেশকে বদলে দিবো এবং তিনি এসেছিলেনও। এরপরেই ২০০১ সালে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে তাকে ক্ষমতা থেকে সড়ানো হয়। বঙ্গবন্ধু যে অসমাপ্ত কাজগুলো রেখেগিয়েছিলেন সে গুলি তিনি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন। তলাবিহীন ঝুড়ি থেকে বাংলাদেশকে আজকে পরিপূর্ণ ঝুড়িতে পরিণত করেছেন আমরা সম্ভাবনাময় বাংলাদেশে পরিণত হয়েছি। তার যে দূরদর্শী নেতৃত্ব এসব তারই কৃতিত্ব।

আসাদুজ্জামান খান কামাল আরো বলেন, আজকে বাংলাদেশের যেখানেই যাবেন সবাই বলে বঙ্গবন্ধু কন্যা ছাড়া আমরা আর কিছু বুঝিনা। তিনিই আমাদের এগিয়ে যাওয়ার সাহস দিয়েছেন। ২০০৮ সালে যখন আওয়ামিলীগ ক্ষমতায়াসে তখন বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু আয় ছিলো ৫৬০ মার্কিন ডলার, যা এখন ২৮০০ মার্কিন ডলারের উপরে। এটি কোনো ম্যাজিক নয়, তার কাছে আলাদিনের চেরাগও নেই। এটি সম্পূর্ণ তার নেতৃত্বের কৃতিত্ব।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ২০১৮ সালে আমি ভারতে গিয়েছিলাম তখন নরেন্দ্র মোদী আমাদের বলেছিলেন, তোমাদের প্রধানমন্ত্রী কিভাবে এই পরিবর্তন আনলেন? কোনো ক্ষেত্রে তোমরা আমাদেরও ছাড়িয়ে যাচ্ছো। জবাবে আমরাও বলি আমাদের প্রধানমন্ত্রী দেশকে ও দেশের জনগণকে ভালোবাসেন। যখন মায়ানমার রোহিঙ্গাদেরকে দেশে থেকে জোড় করে বিতারিত করছিলো তখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিনিয়ত খোঁজ খবর রেখেছেন এবং বাংলাদেশে আশ্রয় দিয়েছেন। সেদিন দেখেছিলাম তিনি এবং তার বোন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ছুটে গিয়েছিলেন। সেই দৃশ্য দেখে সারা পৃথিবীর মানুষ বলে উঠলো ‘মাদার অব হিউম্যানিটি’। আজ তিনি সারা বিশ্বে ৪০টির বেশি সম্মানে ভূষিত হয়েছেন। শেখ হাসিনা সবার জন্য শিক্ষা, চিকিৎসা বাসস্থান এসব মৌলিক অধিকার নিশভিত করেছেন।

শেখ হাসিনা যতদিন থাকবে দেশ এগিয়ে যাবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রকাশের সময় : ০৯:০৩:৩১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ মে ২০২২

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, শেখ হাসিনা যতদিন থাকবে ততদিন দেশ এগিয়ে যাবে। এ দেশের উন্নয়নের জোয়ার এবং শেখ হাসিনা সরকারের জোয়ার কেউ থামাতে পারবে না। তার যোগ্যতায় এবং তার দূরদর্শি নেতৃত্বে আজ বাংলাদেশ সম্ভাবনার বাংলাদেশ পেয়েছে। পৃথিবীর যে প্রান্তে এখন আমরা যাই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে যেখানেই পাঠান সেখানেই সে দেশের রাষ্ট্র প্রধান কিংবা নেতারা জিজ্ঞাসা করেন তোমার নেত্রীর ম্যাজিক কী? কিভাবে তিনি এই দেশকে সম্ভাবনার দেশে পরিনত করলেন। আমরা তখন বলি তার ধমনিতে বঙ্গবন্ধুর রক্ত প্রবাহিত হচ্ছে। যিনি একটা মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমাদের দেশটিকে স্বাধীন করার যে পথ দেখিয়েছিলেন তারই কন্যা শেখ হাসিনা। রবিবার জগন্নাথ বিশ^বিদ্যালয়ের (জবি) কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়ামে শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষ্যে জবি ছাত্রলীগের আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, জগন্নাথের নাম শুনলেই আমি আবেগে আপ্লুত হয়ে যাই। বাংলাদেশের যা কিছু অর্জন হয়েছে আজ, তার সবকিছুই ছাত্রলীগের অর্জন। ছাত্রলীগ কাউকে ভয় করে না এবং রাজপথে লড়াই করতে জানে। বঙ্গবন্ধু হত্যার কালো দাগটি হয়তো সমস্ত বঙ্গপসাগরের পানি দিয়ে মুছে যাবে না। তিনি যখন দেশে ফিরে এসেছে তখন সারাদেশের মানুষ নতুন করে আবার প্রাণ ফিরে পেয়েছে। বঙ্গবন্ধুর যে অসমাপ্ত কাজগুলি যে গুলি বঙ্গবন্ধু পরিকল্পনা নিয়েছিলেন সবার জন্য শিক্ষা সবার জন্য বাসস্থান সবার জন্য চাকুরি সুবিধা এই সবগুলি তিনি ঘোষণা করেছিলেন। আজকে তারই কন্যা সে গুলি একে একে সবার জন্য যে বাসস্থানের ব্যবস্থা নিয়েছেন সেটা আপনেরা সকলে জানেন। শিক্ষা ব্যবস্থাতে এমন পরিবর্তন করছেন সেটা আপনেরা দেখতে পাচ্ছেন। স্বাস্থ্যে সবার জন্য বঙ্গবন্ধু যেটা চিন্তা করতেন একটা অসাম্প্রদায়িকতা দেশের কথা চিন্তা করতেন। আজ কিন্তু আমরা সেই জায়গা চলে আসছি।
তিনি বলেন, আমরা ২০০১ সালে দেখলাম কমিউনিটি হেল্থ কেয়ারগুলো বন্ধ করে দিল। এজ এ রেজাল্ট আমাদের কি? হলো আমাদের স্বাস্থ্য খাতটা ভেঙ্গে পড়ল। আমাদের স্বাস্থ্য খাতে এই কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো যে কী অবদান রাখত তা এখন এসে আমরা তার প্রমান পাচ্ছি। এই হেল্থ ক্লিনিক গুলো আমরা আবার চালু করাতে। আমরা কোভিড মোকাবেলা করার জন্য আজকে পৃথিবীর ৫টি দেশের মধ্যে আমাদের দেশ স্থান করে নিয়েছে। আমরা দক্ষিন এশিয়ার মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করে নিয়েছি কোভিড মোকাবেলা করার জন্য। এটাই হলো দূরদর্শিতা, এটাই হলো দূরদর্শি নেতৃত্ব, এটাই হলো দক্ষতা। ২০০১ সালে যখন আমরা ক্ষমতা ছাড়ি তখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী একের পর এক বিশ^বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত করে যাচ্ছিলেন। তিনি যখন বিদায় নিচ্ছেন ঠিক তার দুই দিন আগে তেঁজগাও শেরেবাংলা কৃষিবিশ^বিদ্যালয় স্থাপন করেন। কৃষিতে সবসময় যে গুরুত্ব দিতেন বঙ্গবন্ধু তারই ধারাবাহিকতায় শেখ হাসিনা কৃষির উপর সবসময় নজর রেখেছিলেন। সেজন্য কোভিড কালে সবজায়গায় খাদ্যশস্য উৎপাদনে ব্যবহত হচ্ছিল তখন কিন্তু বাংলাদেশ তার কৃষি বিভাগটিকে সজাগ রাখছিল বলেই আমাদের খাদ্যশস্য উৎপাদনে কমতি পরে নাই। সেজন্যই আমরা পেরেছি। সেজন্যই আমরা দক্ষকতা অর্জনে মোকবেলা করে আজকে এ অবস্থানে আসছি।
শেখ হাসিনা সেদিন ফিরেছিলেন বলেই আজকে এইযে সম্ভাবনার বাংলাদেশ হয়েছে বলে আমরা মনে করি। আজকে আমি বাংলাদেশের যেখাই যাই সেই চরকুকরি মুকরি থেকে তেঁতুলিয়া যেকোন প্রত্যন্ত অঞ্চলে যাই সেখানেই দেখি এ দেশের জনগণ শেখ হাসিনাকে কতখানি আস্তা কতখানি বিশ^াস তারা করে। তারা সবসময়ই বিশ^াস করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যতদিন ক্ষমতায় থাকবেন বাংলাদেশের ততদিন অগ্রগতি দ্রুততার সাথে হয়ে যাবে তাকে কেউ রুখতে পারবে না। তার জনপ্রিয়তা দেখি আকাশচুম্বি জনপ্রিয়তা। এসময় তিনি বলেন, বারবার দরকার শেখ হাসিনা সরকার। আগামীতে নির্বাচন আসছে আমরা কোন পেশি শক্তির ভরসা করে আমরা রাজনীতি করি না। কোন বন্ধুকের নলের উপরে প্রধানমন্ত্রী বিশ^াস করে না। প্রধানমন্ত্রী বিশ^াস করেন এদেশের জনগণের উপরে। এদেশের জনগণের আস্তা, বিশ^াস াবশ্যই তিনি পাবেন যেভাবে তিনি দেশকে এগিয়ে নিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী যতদিন থাকবে দেশ এগিয়ে যাবে।
অনুষ্ঠানে জবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোঃ ইব্রাহিম ফরাজীর সভাপতিত্বে প্রধান আলোচক হিসেবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আইন সম্পাদক অ্যাডভোকেট জনাব কাজী মোঃ নজিবুল্লাহ হিরু, সম্মানীত অতিথি হিসেবে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক এবং ট্রেজারার অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়াও আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলহ্বাজ নজরুল ইসলাম বাবু এম.পি, জবি ছাত্রলীগের, সাবেক সভাপতি আলহ্বাজ কামরুল হাসান রিপন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক জনাব গাজী আবু সাইদ, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি জনাব আল-নাহিয়ান খান জয় এবং সাধারণ সম্পাদক শ্রী লেখক ভট্রাচার্য উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন জবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসেন।
প্রধান আলোচকের বক্তব্য এড. কাজী মো. নাজিবুল্লাহ হিরু বলেন, সেদিন আকাশভাঙ্গা কান্নার মধ্য দিয়ে লাখো লাখো মানুষের চোখের জলের বিনিময়ে নিজের চোখের জল পেলে আমাদের স্বপ্ন দেখিয়েছেন নতুন বাংলাদেশের। তিনি বলেছিলেন, বন্দী গণতন্ত্রকে মুক্ত দিবেন, এই দেশ থেকে বিচারহীনতা দূর করবেন। তলাবিহীন ঝুড়ি থেকে এদেশকে অনেকদূর এগিয়ে নিয়ে যাবেন। আজকে সারা বাংলাদেশ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়নের রোল মডেল। আজকে তিনি শুধু বাংলাদেশের নেত্রী নন বিশ্বনেত্রী। তিনি আরও বলেন, আজকে আবারও শিক্ষাঙ্গনকে উত্তপ্ত করা চেষ্টা চলছে। আমি অত্যান্ত শংকিত আবারও শিক্ষাঙ্গনে সেই ২০১৪ সনের অগ্নি সন্ত্রাস ফিরে আসে কিনা। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সকল ভাই-বোনদের এবিষয় সর্তক থাকতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বক্তারা বলেন, ১৯৮১ সালের ১৭ মে শেখ হাসিনা রক্তের হোলিখেলায় পিচ্ছিল পথগুলো যখন রক্তাক্ত ছিল তিনি তখন ফিরে এসেছেন তখন মানুষের মুখে হাসি ফিরিয়ে আনার স্বপ্নের আশা জাগিয়ে তুলেন। সেইদিন কুর্মিটোলা এয়ারপোর্টে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ২১ বছরের মতো ভ্যানগার্ড হয়ে তার পাশে ছিলেন।
এছাড়াও বক্তারা আরও বলেন, বাংলাদেশ আজ বিশ্ব দরবারে শেখ হাসিনার জন্য মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। বিএনপি সরকার ২০০১ -২০০৬ সাল পর্যন্ত দেশকে পাঁচবার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন করেছে। তারা আজ শেখ হাসিনা সরকারের উন্নয়ন দেখে ভয়ে থমকে গিয়ে সন্ত্রাসী হামলা চালানো শুরু করেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে। তারা এতো বছরের ক্ষমতায় থাকার পরেও কেন দেশে কোনো ধরনের উল্লেখযোগ্য উন্নয়নের উদহারন দিতে পারে না। রাজনীতিতে শেখ হাসিনা শুধু চমক নয়, উন্নয়নে তিনি চমক।
এসময় নতুন ক্যাম্পাসের প্রসঙ্গে কোষাধ্যক্ষ একটা পুলিশ ফাঁড়ির তৈরি করে দেওয়ার জন্য আবেদন করলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর তা দ্রুত বাস্তবায়নের কথা বলেন এবং প্রয়োজনে সেখানে একটি থানা বানিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেন।
আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, আমরা যখন বিদেশে যেতাম সেখানেই সবাই এক কথাই বলতো, তোমরা সেই জাতি? যারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে? এসব শুনে লজ্জায় মাথা হেট হয়ে যেতো। সেই অবস্থা থেকে পরিত্রাণ দিয়েছেন তারই সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা। যেদিন তিনি দেশে ফিরেন, লাখো মানুষের ঢল নেমেছিলো। সেদিন ঝড় বৃষ্টি হচ্ছিলো, মনে হলো যেনো প্রকৃতিও হয়ত বঙ্গবন্ধু কন্যাকে স্বাগত জানাতে এসেছে। এসেই ধানমন্ডি ৩২ এ যাবার কথা ছিলো, কিন্তু ঝড় বৃষ্টির কারণে তিনি সেখানে যেতে পারেননি। তিনি গেটে দাড়িয়েই মোনাজাত ধরলেন। সেদিনই তিনি ঠিক করে নিয়েছিলেন কিভাবে তিনি দেশের অবস্থাটা পরিবর্তন করবেন। তিনি আওয়ামীলীগের সভাপতি হয়েই সারা বাংলাদেশ ঘুরে বেড়িয়েছেন। তিনি যেখানেই যেতেন, সেখানেই সবাই তাকে বুকে জড়িয়ে ধরে বলতো, এইতো শেখের বেটি এসেছে এবার আমাদের কেউ রুখতে পারবে না।
বঙ্গবন্ধু হত্যার যে কালো দাগ আমাদের কপালে লেগেছিলো আমার মনে হয় বঙ্গোপসাগরের সব পানি দিয়ে ধুলেও সেই দাগ মুছবেনা। কিন্তু এখন আমাদের মনে একটু প্রশান্তি জাগে আমরা তাদের হত্যার বিচার করতে পেরেছি। এখন আমরা বিদেশে গেলেও বলতে পারি বঙ্গবন্ধু হত্যারবিচার আমরা করতে পারি। ১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনা বলেছিলেন আমি যদি ক্ষমতায় আসি তাহলে এই বাংলাদেশকে বদলে দিবো এবং তিনি এসেছিলেনও। এরপরেই ২০০১ সালে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে তাকে ক্ষমতা থেকে সড়ানো হয়। বঙ্গবন্ধু যে অসমাপ্ত কাজগুলো রেখেগিয়েছিলেন সে গুলি তিনি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন। তলাবিহীন ঝুড়ি থেকে বাংলাদেশকে আজকে পরিপূর্ণ ঝুড়িতে পরিণত করেছেন আমরা সম্ভাবনাময় বাংলাদেশে পরিণত হয়েছি। তার যে দূরদর্শী নেতৃত্ব এসব তারই কৃতিত্ব।

আসাদুজ্জামান খান কামাল আরো বলেন, আজকে বাংলাদেশের যেখানেই যাবেন সবাই বলে বঙ্গবন্ধু কন্যা ছাড়া আমরা আর কিছু বুঝিনা। তিনিই আমাদের এগিয়ে যাওয়ার সাহস দিয়েছেন। ২০০৮ সালে যখন আওয়ামিলীগ ক্ষমতায়াসে তখন বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু আয় ছিলো ৫৬০ মার্কিন ডলার, যা এখন ২৮০০ মার্কিন ডলারের উপরে। এটি কোনো ম্যাজিক নয়, তার কাছে আলাদিনের চেরাগও নেই। এটি সম্পূর্ণ তার নেতৃত্বের কৃতিত্ব।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ২০১৮ সালে আমি ভারতে গিয়েছিলাম তখন নরেন্দ্র মোদী আমাদের বলেছিলেন, তোমাদের প্রধানমন্ত্রী কিভাবে এই পরিবর্তন আনলেন? কোনো ক্ষেত্রে তোমরা আমাদেরও ছাড়িয়ে যাচ্ছো। জবাবে আমরাও বলি আমাদের প্রধানমন্ত্রী দেশকে ও দেশের জনগণকে ভালোবাসেন। যখন মায়ানমার রোহিঙ্গাদেরকে দেশে থেকে জোড় করে বিতারিত করছিলো তখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিনিয়ত খোঁজ খবর রেখেছেন এবং বাংলাদেশে আশ্রয় দিয়েছেন। সেদিন দেখেছিলাম তিনি এবং তার বোন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ছুটে গিয়েছিলেন। সেই দৃশ্য দেখে সারা পৃথিবীর মানুষ বলে উঠলো ‘মাদার অব হিউম্যানিটি’। আজ তিনি সারা বিশ্বে ৪০টির বেশি সম্মানে ভূষিত হয়েছেন। শেখ হাসিনা সবার জন্য শিক্ষা, চিকিৎসা বাসস্থান এসব মৌলিক অধিকার নিশভিত করেছেন।