শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঠাকুরগাঁওয়ে ভুট্টার ভালো দামে খুশি কৃষক!

ছবি-সংগৃহীত

ঠাকুরগাঁও জেলায় চলতি বছরে ভুট্টার দাম দ্বিগুণ হওয়ায় খুশি দেশের উত্তরের প্রান্তিক জেলা  ঠাকুরগাঁওয়ে চাষিরা। কৃষি সমৃদ্ধ ঠাকুরগাঁও  জেলায় এ বছর ভুট্টার বাম্পার ফলন হয়েছে। বাজারে ভুট্টার ব্যাপক চাহিদা থাকায় ভালো দামও পাচ্ছেন কৃষক। ভুট্টার বাম্পার ফলন ও ভালো দাম পাওয়ায় আগামীতে ঠাকুরগাঁও  জেলায় দ্বিগুণ ভুট্টা চাষের সম্ভাবনা রয়েছে বলে ধারণা করছে ঠাকুরগাঁও  জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। জানা যায়, গত বছর প্রতি বস্তা (৮০ কেজি) ভুট্টা ৯০০ টাকা থেকে ১১০০ টাকা দরে বিক্রি করলেও এ বছর কৃষকরা তা বিক্রি করছেন ২ হাজার টাকা থেকে ২৩০০টাকা দরে। গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণ দাম পেয়ে খুশি ঠাকুরগাঁও  জেলার কৃষকেরা।
মূলত আন্তর্জাতিক বাজারে ভুট্টার দাম বেড়ে যাওয়ায় কৃষক উৎপাদিত ভুট্টা বিক্রি করে অপ্রত্যাশিত লাভবান হচ্ছেন।ভূট্টার বাম্পার ফলন দেখতে সরেজমিনে রবিবার (৫ জুন ) ঠাকুরগাঁও  সদর উপজেলা সহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, অনেক ক্ষেত থেকে ভুট্টার মোচা তোলা হয়ে গেছে। কোথাও কৃষকরা মোচা সংগ্রহ করছেন, আবার অনেকেই ব্যস্ত রয়েছেন মাড়াইয়ের কাজে। কৃষকরা  সাংবাদিকদেরকে জানিয়েছেন, গত বছরের চেয়ে দ্বিগুণ দামে এবার ভূট্টা বিক্রি হচ্ছে। ফলনও হয়েছে একর প্রতি ৩ মেট্রিক টনেরও বেশি। এবছর ভালো ফলনের সঙ্গে কাঙ্ক্ষিত দাম পাওয়ায় আগামীতে ভূট্টা চাষ বাড়ার সম্ভাবনা দেখছেন তারা।  কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, দেশে বাণিজ্যিকভাবে মাছ চাষ ও গবাদিপশু লালন-পালন বেড়েছে। আর মাছের ও গবাদিপশুর খাবার তৈরিতে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন পড়ছে ভুট্টার। তাই ভুট্টার চাহিদাও থাকছে সব সময়। এ কারণে দামটা বেড়েছে। চাষিরাও লাভবান হচ্ছেন। ভুট্টা চাষে আগ্রহও বাড়ছে।
ঠাকুরগাঁও জেলার  রানীশংকৈল উপজেলার হোসেনগাঁও  ইউনিয়নের হাড়িয়া এলাকার কৃষক ফরহাদ হোসেন  বলেন, ৭ বিঘা নিজের জমিতে  ভূট্টার আবাদ করেছি। এর বাইরে বিঘা প্রতি খরচ ৮ হাজার টাকার মত। তারপরও দাম ঠিক থাকলে সবমিলিয়ে লাভ হবে ১ লাখ  ৫০ হাজার টাকা। জমি নিজের তাই বেশি লাভ হয়েছে । তবে, আশা করছি যে, দাম তাতে এবার অনেকটাই লাভবান হতে পারবো। একই ইউনিয়নের রাতনগর এলাকার কৃষক  শফিকুল ইসলাম ও মানিকুল ইসলাম বলেন, ৩ একর জমিতে ভূট্টার আবাদ করেছি। খরচ হয়েছে ৭০ হাজার টাকা। ফলন ভালো হয়েছে। আশা করছি, ৫ মেট্রিক টন ভুট্টা উৎপাদন হবে এবার। বর্তমানে দাম ভালো থাকায় আশানুরূপ ফলন পেলে দুই লাখ টাকারও বেশি ভুট্টা বিক্রি করতে পারবো। ভুট্টা ব্যবসায়ী দুলাল  বলেন, আমরা কৃষকের বাড়ি থেকে ভুট্টা কিনে নিয়ে আসি। এসব ভুট্টা কিনে গুদামজাত করি, পরে সুবিধামত সময়ে বিক্রি করি। আমাদের কাছ থেকে দেশের নানা প্রান্তের ব্যবসায়ীরা এসে ভুট্টা সংগ্রহ করে থাকেন।
ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কৃষি কর্মকর্তা সুবোধ চন্দ্র রায়
  বলেন, গত বছরের তুলনায় চলতি বছরে ভুট্টার আবাদ অনেকটাই কমেছে। আর গত বছর আবাদের পরিমাণ বেশি ছিল ।  আমরা সব সময় ভালো উৎপাদনের জন্য চাষিদের ভালো পরামর্শ দিয়ে আসছি। চাষিরা যেন ভালো বীজ পান, সেটা কৃষি বিভাগ থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে। চলতি বছর ভুট্টার বাজারও ভালো, উৎপাদনও হয়েছে ভালো। বাজার ও উৎপাদন ভালো হওয়ায় আমরা আশা করছি, আগামী বছর ভুট্টা চাষ আরও বাড়বে।

ঠাকুরগাঁওয়ে ভুট্টার ভালো দামে খুশি কৃষক!

প্রকাশের সময় : ০১:১৫:৪৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ জুন ২০২২
ঠাকুরগাঁও জেলায় চলতি বছরে ভুট্টার দাম দ্বিগুণ হওয়ায় খুশি দেশের উত্তরের প্রান্তিক জেলা  ঠাকুরগাঁওয়ে চাষিরা। কৃষি সমৃদ্ধ ঠাকুরগাঁও  জেলায় এ বছর ভুট্টার বাম্পার ফলন হয়েছে। বাজারে ভুট্টার ব্যাপক চাহিদা থাকায় ভালো দামও পাচ্ছেন কৃষক। ভুট্টার বাম্পার ফলন ও ভালো দাম পাওয়ায় আগামীতে ঠাকুরগাঁও  জেলায় দ্বিগুণ ভুট্টা চাষের সম্ভাবনা রয়েছে বলে ধারণা করছে ঠাকুরগাঁও  জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। জানা যায়, গত বছর প্রতি বস্তা (৮০ কেজি) ভুট্টা ৯০০ টাকা থেকে ১১০০ টাকা দরে বিক্রি করলেও এ বছর কৃষকরা তা বিক্রি করছেন ২ হাজার টাকা থেকে ২৩০০টাকা দরে। গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণ দাম পেয়ে খুশি ঠাকুরগাঁও  জেলার কৃষকেরা।
মূলত আন্তর্জাতিক বাজারে ভুট্টার দাম বেড়ে যাওয়ায় কৃষক উৎপাদিত ভুট্টা বিক্রি করে অপ্রত্যাশিত লাভবান হচ্ছেন।ভূট্টার বাম্পার ফলন দেখতে সরেজমিনে রবিবার (৫ জুন ) ঠাকুরগাঁও  সদর উপজেলা সহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, অনেক ক্ষেত থেকে ভুট্টার মোচা তোলা হয়ে গেছে। কোথাও কৃষকরা মোচা সংগ্রহ করছেন, আবার অনেকেই ব্যস্ত রয়েছেন মাড়াইয়ের কাজে। কৃষকরা  সাংবাদিকদেরকে জানিয়েছেন, গত বছরের চেয়ে দ্বিগুণ দামে এবার ভূট্টা বিক্রি হচ্ছে। ফলনও হয়েছে একর প্রতি ৩ মেট্রিক টনেরও বেশি। এবছর ভালো ফলনের সঙ্গে কাঙ্ক্ষিত দাম পাওয়ায় আগামীতে ভূট্টা চাষ বাড়ার সম্ভাবনা দেখছেন তারা।  কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, দেশে বাণিজ্যিকভাবে মাছ চাষ ও গবাদিপশু লালন-পালন বেড়েছে। আর মাছের ও গবাদিপশুর খাবার তৈরিতে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন পড়ছে ভুট্টার। তাই ভুট্টার চাহিদাও থাকছে সব সময়। এ কারণে দামটা বেড়েছে। চাষিরাও লাভবান হচ্ছেন। ভুট্টা চাষে আগ্রহও বাড়ছে।
ঠাকুরগাঁও জেলার  রানীশংকৈল উপজেলার হোসেনগাঁও  ইউনিয়নের হাড়িয়া এলাকার কৃষক ফরহাদ হোসেন  বলেন, ৭ বিঘা নিজের জমিতে  ভূট্টার আবাদ করেছি। এর বাইরে বিঘা প্রতি খরচ ৮ হাজার টাকার মত। তারপরও দাম ঠিক থাকলে সবমিলিয়ে লাভ হবে ১ লাখ  ৫০ হাজার টাকা। জমি নিজের তাই বেশি লাভ হয়েছে । তবে, আশা করছি যে, দাম তাতে এবার অনেকটাই লাভবান হতে পারবো। একই ইউনিয়নের রাতনগর এলাকার কৃষক  শফিকুল ইসলাম ও মানিকুল ইসলাম বলেন, ৩ একর জমিতে ভূট্টার আবাদ করেছি। খরচ হয়েছে ৭০ হাজার টাকা। ফলন ভালো হয়েছে। আশা করছি, ৫ মেট্রিক টন ভুট্টা উৎপাদন হবে এবার। বর্তমানে দাম ভালো থাকায় আশানুরূপ ফলন পেলে দুই লাখ টাকারও বেশি ভুট্টা বিক্রি করতে পারবো। ভুট্টা ব্যবসায়ী দুলাল  বলেন, আমরা কৃষকের বাড়ি থেকে ভুট্টা কিনে নিয়ে আসি। এসব ভুট্টা কিনে গুদামজাত করি, পরে সুবিধামত সময়ে বিক্রি করি। আমাদের কাছ থেকে দেশের নানা প্রান্তের ব্যবসায়ীরা এসে ভুট্টা সংগ্রহ করে থাকেন।
ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কৃষি কর্মকর্তা সুবোধ চন্দ্র রায়
  বলেন, গত বছরের তুলনায় চলতি বছরে ভুট্টার আবাদ অনেকটাই কমেছে। আর গত বছর আবাদের পরিমাণ বেশি ছিল ।  আমরা সব সময় ভালো উৎপাদনের জন্য চাষিদের ভালো পরামর্শ দিয়ে আসছি। চাষিরা যেন ভালো বীজ পান, সেটা কৃষি বিভাগ থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে। চলতি বছর ভুট্টার বাজারও ভালো, উৎপাদনও হয়েছে ভালো। বাজার ও উৎপাদন ভালো হওয়ায় আমরা আশা করছি, আগামী বছর ভুট্টা চাষ আরও বাড়বে।