শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

পঞ্চগড়ে কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে এনজিও হাওয়া

পঞ্চগড়ের কয়েকটি গ্রামের কিছু দরিদ্র নারীকে ঋণ দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে সঞ্চয়ের টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছে এক এনজিও ম্যানেজার। এ ঘটনায় ভারা অফিসের বাড়ির মালিক আব্দুল কাদের, আর্স বাংলাদেশ নামের ওই এনজিওর পরিচালক বেলাল হোসেন এবং পলাতক ওই ম্যানেজারের বিরুদ্ধে গত মঙ্গলবার রাতে সদর থানায় প্রতারণার অভিযোগ করেছেন ওই নারীরা। পলাতক ওই ম্যানেজোরের পরিচয় পাওয়া যায়নি।  জানাগেছে ওই এনজিও কর্মকর্তা ১০/১২ দিন আগে শাখা অফিস হিসেবে  পুরাতন পঞ্চগড়ের ধাক্কামাড়া এলাকার আব্দুল কাদেরের বাড়ি ভারা নিয়ে শাখা অফিস স্থাপন করে। ওই এনজিওর প্রধান অফিস যশোর সদর উপজেলার কতোয়ালী থানার কাজী পাড়া কাঠালতলার ২০৩ নাম্বার বাড়ি। পাশ বইয়ে রেজিষ্ট্রেশন নাম্বারও উল্লেখ করা হয়েছে।

অভিযোগ সূত্রে জানাগেছে আর্স বাংলাদেশেরর পঞ্চগড় শাখার ওই  কর্মকর্তা গত মে মাসের শেষের দিকে সদর উপজেলার পুর্ব ইসলামবাগ, সীতাপাড়া সহ বেশ কয়েকটি গ্রামের ৪৩ জন  নারীকে সদস্য করেন। ১০/১২ জন নারীকে নিয়ে একটি করে দল গঠন করেন তিনি । প্রত্যেক সদস্যের কাছ থেকে ২’শ টাকা করে সঞ্চয় জমা নেন। পরে তাদেরকে এক লক্ষটাকা করে ঋন দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।  ঋণ পেতে আগ্রহীদেরকে আরও ১০ হাজার টাকা সঞ্চয় জমা করার নির্দেশনাও দেন তিনি। ওই কর্মকর্তা বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন নামে নিজের পরিচয় দেন । তার মোবাইল নাম্বারও সদস্যদেরকে প্রদান করেন। তার মোবাইল নাম্বার ০১৭৫৯৯৭৩২০।   গত ৫ জুন তিনি ঋণ পেতে আগ্রহীদের কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা করে সঞ্চয় চাইলে প্রায় ওই ৪৩ সদস্য প্রায় ৪ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা তাঁকে সঞ্চয় হিসেবে জমা দেন। তিনি তাদেরকে ৭ জুন দুপুরে অফিসে এসে ঋণের টাকা গ্রহণ করতে বলেন। কিন্তু ওইদিন অফিসে ঋণ চাইতে গেলে তারা অফিসে তালা ঝোলানো দেখতে পান। পরে ওই ম্যানেজারের মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করলে তার মোবাইলও বন্ধ পাওয়া যায়। পরে তারা বাড়ির মালিক আব্দুল কাদেরের সাথে যোগাযোগ করলে অফিস বন্ধ করে ওই লোক চলে গেছে বলে জানান তিনি। এরপর তারা আর্স বাংলাদেশের ওয়েব সাইট থেকে পরিচালক বেলাল হোসেনের সাথে যোগাযোগ করেন। বেলাল হোসেন তাদেরকে জানান পঞ্চগড়ে আর্স বাংলাদেশের কোন শাখা অফিস নাই।  সীতাপাড়া গ্রামের মোছাম্মদ বেনু জানান, এক লক্ষ টাকা ঋণ দেয়ার কথা বলে ওই ম্যানেজার আমার কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা নেয় । আমার দলের অন্যান্য সদস্যদের কাছ থেকে ২শ টাকা করে নেয়। ৭ তারিখ আমাদেরকে অফিসে আসতে বলে।আমরা অফিসে এসে দেখি তালা বন্ধ। মোবাইল ফোনও বন্ধ । আমি তার নাম জানিনা। পূর্ব ইসলামবাগ এলাকার মেহেরুন আক্তার জানান, ওই ম্যানেজার আমাকে দলের নেতা বানিয়ে দেন। আমাকে তিনি জুয়েল নামে পরিচয় দেন । আমি আমার দলের বেশ কয়েকজনের কাছ থেকে প্রায় ৫০ হাজার টাকা দিয়েছি। ৭ তারিখ ওই অফিস বন্ধ পাই ।  এখন বাকি সদস্যরা আমার স্বামীর ভ্যান আটকে রেখেছে। ভ্যান চালিয়েই আমাদের সংসার চলে ।

এ ব্যাপারে ভারা অফিসের বাড়ির মালিক আব্দুল কাদের জানান, ওই ম্যানেজার একদিন আগে আমার বাড়িতে কাগজ পত্র জমা রেখে চলে গেছে। আগে ভারা নেয়নি । আমি তাদের সম্পর্কে কিছু জানিনা। তারা ভারা নেয়ার কথা ছিলো ।

আর্স বাংলাদেশের পরিচালক বেলাল হোসেন জানান, আমাদের কার্যক্রম পঞ্চগড় জেলায় নেই । কেউ আমাদের প্রতিষ্ঠানের নাম ভাঙ্গিয়ে প্রতারণা করতে পারে। আমরা বিষয়টি দেখছি ।

পঞ্চগড় সদর থানার ওসি আব্দুল লতিফ মিঞা জানান, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত চলছে।

পঞ্চগড়ে কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে এনজিও হাওয়া

প্রকাশের সময় : ১১:০৮:২৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ জুন ২০২২
পঞ্চগড়ের কয়েকটি গ্রামের কিছু দরিদ্র নারীকে ঋণ দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে সঞ্চয়ের টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছে এক এনজিও ম্যানেজার। এ ঘটনায় ভারা অফিসের বাড়ির মালিক আব্দুল কাদের, আর্স বাংলাদেশ নামের ওই এনজিওর পরিচালক বেলাল হোসেন এবং পলাতক ওই ম্যানেজারের বিরুদ্ধে গত মঙ্গলবার রাতে সদর থানায় প্রতারণার অভিযোগ করেছেন ওই নারীরা। পলাতক ওই ম্যানেজোরের পরিচয় পাওয়া যায়নি।  জানাগেছে ওই এনজিও কর্মকর্তা ১০/১২ দিন আগে শাখা অফিস হিসেবে  পুরাতন পঞ্চগড়ের ধাক্কামাড়া এলাকার আব্দুল কাদেরের বাড়ি ভারা নিয়ে শাখা অফিস স্থাপন করে। ওই এনজিওর প্রধান অফিস যশোর সদর উপজেলার কতোয়ালী থানার কাজী পাড়া কাঠালতলার ২০৩ নাম্বার বাড়ি। পাশ বইয়ে রেজিষ্ট্রেশন নাম্বারও উল্লেখ করা হয়েছে।

অভিযোগ সূত্রে জানাগেছে আর্স বাংলাদেশেরর পঞ্চগড় শাখার ওই  কর্মকর্তা গত মে মাসের শেষের দিকে সদর উপজেলার পুর্ব ইসলামবাগ, সীতাপাড়া সহ বেশ কয়েকটি গ্রামের ৪৩ জন  নারীকে সদস্য করেন। ১০/১২ জন নারীকে নিয়ে একটি করে দল গঠন করেন তিনি । প্রত্যেক সদস্যের কাছ থেকে ২’শ টাকা করে সঞ্চয় জমা নেন। পরে তাদেরকে এক লক্ষটাকা করে ঋন দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।  ঋণ পেতে আগ্রহীদেরকে আরও ১০ হাজার টাকা সঞ্চয় জমা করার নির্দেশনাও দেন তিনি। ওই কর্মকর্তা বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন নামে নিজের পরিচয় দেন । তার মোবাইল নাম্বারও সদস্যদেরকে প্রদান করেন। তার মোবাইল নাম্বার ০১৭৫৯৯৭৩২০।   গত ৫ জুন তিনি ঋণ পেতে আগ্রহীদের কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা করে সঞ্চয় চাইলে প্রায় ওই ৪৩ সদস্য প্রায় ৪ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা তাঁকে সঞ্চয় হিসেবে জমা দেন। তিনি তাদেরকে ৭ জুন দুপুরে অফিসে এসে ঋণের টাকা গ্রহণ করতে বলেন। কিন্তু ওইদিন অফিসে ঋণ চাইতে গেলে তারা অফিসে তালা ঝোলানো দেখতে পান। পরে ওই ম্যানেজারের মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করলে তার মোবাইলও বন্ধ পাওয়া যায়। পরে তারা বাড়ির মালিক আব্দুল কাদেরের সাথে যোগাযোগ করলে অফিস বন্ধ করে ওই লোক চলে গেছে বলে জানান তিনি। এরপর তারা আর্স বাংলাদেশের ওয়েব সাইট থেকে পরিচালক বেলাল হোসেনের সাথে যোগাযোগ করেন। বেলাল হোসেন তাদেরকে জানান পঞ্চগড়ে আর্স বাংলাদেশের কোন শাখা অফিস নাই।  সীতাপাড়া গ্রামের মোছাম্মদ বেনু জানান, এক লক্ষ টাকা ঋণ দেয়ার কথা বলে ওই ম্যানেজার আমার কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা নেয় । আমার দলের অন্যান্য সদস্যদের কাছ থেকে ২শ টাকা করে নেয়। ৭ তারিখ আমাদেরকে অফিসে আসতে বলে।আমরা অফিসে এসে দেখি তালা বন্ধ। মোবাইল ফোনও বন্ধ । আমি তার নাম জানিনা। পূর্ব ইসলামবাগ এলাকার মেহেরুন আক্তার জানান, ওই ম্যানেজার আমাকে দলের নেতা বানিয়ে দেন। আমাকে তিনি জুয়েল নামে পরিচয় দেন । আমি আমার দলের বেশ কয়েকজনের কাছ থেকে প্রায় ৫০ হাজার টাকা দিয়েছি। ৭ তারিখ ওই অফিস বন্ধ পাই ।  এখন বাকি সদস্যরা আমার স্বামীর ভ্যান আটকে রেখেছে। ভ্যান চালিয়েই আমাদের সংসার চলে ।

এ ব্যাপারে ভারা অফিসের বাড়ির মালিক আব্দুল কাদের জানান, ওই ম্যানেজার একদিন আগে আমার বাড়িতে কাগজ পত্র জমা রেখে চলে গেছে। আগে ভারা নেয়নি । আমি তাদের সম্পর্কে কিছু জানিনা। তারা ভারা নেয়ার কথা ছিলো ।

আর্স বাংলাদেশের পরিচালক বেলাল হোসেন জানান, আমাদের কার্যক্রম পঞ্চগড় জেলায় নেই । কেউ আমাদের প্রতিষ্ঠানের নাম ভাঙ্গিয়ে প্রতারণা করতে পারে। আমরা বিষয়টি দেখছি ।

পঞ্চগড় সদর থানার ওসি আব্দুল লতিফ মিঞা জানান, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত চলছে।