শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে: পোপ

ছবি-সংগৃহীত

বিশ্বে অনেক আগেই তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়ে গিয়েছে এবং এরইমধ্যে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলছে বলে মন্তব্য করেছেন পোপ ফ্রান্সিস। 

সম্প্রতি ইউরোপিয়ান জেসুইট পাবলিকেশন্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ওই সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন সংকট এবং বিশ্বজুড়ে অন্যান্য যেসব সংঘাত চলছে সবকিছু তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের বিষয়টিকে সামনে নিয়ে এসেছে।

উল্লেখ্য, ১১১ দিন পেরিয়ে গেলেও ইউক্রেনে কথিত রাশিয়ার সামরিক অভিযান থামেনি। এমনকি যুদ্ধবিরতির কোনো সম্ভাবনাই দেখা যাচ্ছে না। বরঞ্চ সংঘাতের তীব্রতা আরো বাড়ছে। এদিকে পরাশক্তি চীন-তাইওয়ান দ্বীপ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করেছে বেইজিং। তাইওয়ান স্বাধীনতা ঘোষণা করলে সামরিক অভিযান শুরু হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছে বেইজিং।

এমন পরিস্থিতিতে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের বিষয়টি সামনে আনলেন। ওই সাক্ষাৎকারে পোপ বলেন, ‘কয়েক বছর আগে আমার মনে হয়েছিল যে আমরা তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের খণ্ড খণ্ড লড়াইয়ের মুখোমুখি হচ্ছি। আজ, আমার জন্য তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘ইউক্রেনের লড়াই যখন আমাদের সংবেদনশীলতাকে আরো বেশি আঘাত করছে, একই সময়ে উত্তর নাইজেরিয়া ও মিয়ানমারের মতো জায়গায়ও যুদ্ধ চলছে এবং কেউ পাত্তা দেয় না।

পোপ ফ্রান্সিসের মতে, ‘বিশ্ব’ যুদ্ধে লিপ্ত এবং যার পেছনে রয়েছে অস্ত্র ব্যবসা।

তবে পোপ ফ্রান্সিসের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কঠোর সমালোচনা করা থেকে নিজেকে বিরত রেখেছেন।

তিনি বলেন, ‘শরণার্থী নারীদের দেখভাল করবে কে? এরইমধ্যে শকুন বাইরে ঘুরে বেড়াচ্ছে।

পোপ ফ্রান্সিসের বক্তব্যের মতোই ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযান শুরুর পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোয় একটা প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে। তাহলে কি ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধই তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ? যুক্তরাজ্যের এক্সপ্রেস ইউকে পত্রিকা বিশ্বযুদ্ধের ট্যাগও চালু করেছে।

কেমব্রিজ ডিকশনারিতে বিশ্বযুদ্ধের সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, বিশ্বযুদ্ধ সেটাই, যখন অনেক দেশ বিশাল সামরিক বাহিনী নিয়ে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে।

এছাড়া কলিন্স ডিকশনারিতেও বিশ্বযুদ্ধের সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, বিশ্বের সব দেশ যে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে, সেটাই বিশ্বযুদ্ধ।

বিশ্বযুদ্ধ বলতে আমরা বুঝি, যে যুদ্ধে পুরো বিশ্বের সব দেশ কিংবা অধিকাংশ দেশ জড়িয়ে পড়ে। এখন পর্যন্ত এমন বিশ্বযুদ্ধ হয়েছে দুটি। সেক্ষেত্রে ইউক্রেন ও রাশিয়ার চলমান যুদ্ধকে বিশ্বযুদ্ধ বলার সুযোগ নেই। যদিও দুই দেশের কেউই একে অপরের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক যুদ্ধ ঘোষণা করেনি।

তবে এক্ষেত্রে ভিন্ন একটি বিষয় রয়েছে। বিশ্বের প্রত্যক্ষ করা দুটি বিশ্বযুদ্ধই হয়েছে ইউরোপে এবং এর শুরুটা হয়েছে দুই দেশের যুদ্ধের মধ্য দিয়ে। অস্ট্রিয়ার আর্চডিউক ফ্রাঞ্জ ফার্দিনান্দের সস্ত্রীক খুনের ঘটনায় অস্ট্রিয়া ও হাঙ্গেরি যুদ্ধ শুরু করে, যা পরে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে রূপ নেয়। ঠিক একই রকম ঘটনা ঘটে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শুরুর সময়ও। জার্মানির পোল্যান্ড আক্রমণ একসময় বিশ্বযুদ্ধে রূপ নেয়।

তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে: পোপ

প্রকাশের সময় : ১২:৪৭:১০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জুন ২০২২

বিশ্বে অনেক আগেই তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়ে গিয়েছে এবং এরইমধ্যে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলছে বলে মন্তব্য করেছেন পোপ ফ্রান্সিস। 

সম্প্রতি ইউরোপিয়ান জেসুইট পাবলিকেশন্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ওই সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন সংকট এবং বিশ্বজুড়ে অন্যান্য যেসব সংঘাত চলছে সবকিছু তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের বিষয়টিকে সামনে নিয়ে এসেছে।

উল্লেখ্য, ১১১ দিন পেরিয়ে গেলেও ইউক্রেনে কথিত রাশিয়ার সামরিক অভিযান থামেনি। এমনকি যুদ্ধবিরতির কোনো সম্ভাবনাই দেখা যাচ্ছে না। বরঞ্চ সংঘাতের তীব্রতা আরো বাড়ছে। এদিকে পরাশক্তি চীন-তাইওয়ান দ্বীপ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করেছে বেইজিং। তাইওয়ান স্বাধীনতা ঘোষণা করলে সামরিক অভিযান শুরু হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছে বেইজিং।

এমন পরিস্থিতিতে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের বিষয়টি সামনে আনলেন। ওই সাক্ষাৎকারে পোপ বলেন, ‘কয়েক বছর আগে আমার মনে হয়েছিল যে আমরা তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের খণ্ড খণ্ড লড়াইয়ের মুখোমুখি হচ্ছি। আজ, আমার জন্য তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘ইউক্রেনের লড়াই যখন আমাদের সংবেদনশীলতাকে আরো বেশি আঘাত করছে, একই সময়ে উত্তর নাইজেরিয়া ও মিয়ানমারের মতো জায়গায়ও যুদ্ধ চলছে এবং কেউ পাত্তা দেয় না।

পোপ ফ্রান্সিসের মতে, ‘বিশ্ব’ যুদ্ধে লিপ্ত এবং যার পেছনে রয়েছে অস্ত্র ব্যবসা।

তবে পোপ ফ্রান্সিসের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কঠোর সমালোচনা করা থেকে নিজেকে বিরত রেখেছেন।

তিনি বলেন, ‘শরণার্থী নারীদের দেখভাল করবে কে? এরইমধ্যে শকুন বাইরে ঘুরে বেড়াচ্ছে।

পোপ ফ্রান্সিসের বক্তব্যের মতোই ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযান শুরুর পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোয় একটা প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে। তাহলে কি ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধই তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ? যুক্তরাজ্যের এক্সপ্রেস ইউকে পত্রিকা বিশ্বযুদ্ধের ট্যাগও চালু করেছে।

কেমব্রিজ ডিকশনারিতে বিশ্বযুদ্ধের সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, বিশ্বযুদ্ধ সেটাই, যখন অনেক দেশ বিশাল সামরিক বাহিনী নিয়ে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে।

এছাড়া কলিন্স ডিকশনারিতেও বিশ্বযুদ্ধের সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, বিশ্বের সব দেশ যে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে, সেটাই বিশ্বযুদ্ধ।

বিশ্বযুদ্ধ বলতে আমরা বুঝি, যে যুদ্ধে পুরো বিশ্বের সব দেশ কিংবা অধিকাংশ দেশ জড়িয়ে পড়ে। এখন পর্যন্ত এমন বিশ্বযুদ্ধ হয়েছে দুটি। সেক্ষেত্রে ইউক্রেন ও রাশিয়ার চলমান যুদ্ধকে বিশ্বযুদ্ধ বলার সুযোগ নেই। যদিও দুই দেশের কেউই একে অপরের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক যুদ্ধ ঘোষণা করেনি।

তবে এক্ষেত্রে ভিন্ন একটি বিষয় রয়েছে। বিশ্বের প্রত্যক্ষ করা দুটি বিশ্বযুদ্ধই হয়েছে ইউরোপে এবং এর শুরুটা হয়েছে দুই দেশের যুদ্ধের মধ্য দিয়ে। অস্ট্রিয়ার আর্চডিউক ফ্রাঞ্জ ফার্দিনান্দের সস্ত্রীক খুনের ঘটনায় অস্ট্রিয়া ও হাঙ্গেরি যুদ্ধ শুরু করে, যা পরে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে রূপ নেয়। ঠিক একই রকম ঘটনা ঘটে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শুরুর সময়ও। জার্মানির পোল্যান্ড আক্রমণ একসময় বিশ্বযুদ্ধে রূপ নেয়।