শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

আজ খুলছে পদ্মাসেতুর স্বপ্নের দুয়ার

যশোর ব্যুরো।।

১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জন বাঙালী জাতির জীবনে সবচেয়ে বড় অর্জন। আর এরপরে দ্বিতীয় বড় অর্জনটি হচ্ছে স্বপ্নের পদ্মা সেতু নির্মাণ। প্রথম অর্জনটি এসেছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের নেতৃত্বে। দ্বিতীয়টি অর্জিত হলো বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে। আর এই বিশাল অর্জনের উদ্বোধনের দিন আজ ২৫ জুনও ঐতিহাসিক দিনে পরিণত হলো। এমন দিনে পদ্মাপাড়ের আয়োজনে একাকার হতে যশোরসহ গোটা দেশ হয়ে উঠবে উৎসবের নগরী। এই উৎসবে মাতোয়ারা দেশবাসীকে সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপহার দেবেন বাঙালী ও বাংলাদেশের স্বপ্নের পদ্মা সেতু।
ছিল প্রতিবন্ধকতা, ছিল সীমাবদ্ধতা। ষড়যন্ত্রেরও কমতিও ছিল না। কিন্তু সব বাধা জয় করে স্বপ্নের পদ্মা সেতু এখন বাস্তব। নিজ অর্থে বিশাল এ সেতু বানিয়ে বিশ্বকে চমকে দিয়েছে বাংলাদেশ। স্বপ্নিল সেই মাহেন্দ্রক্ষণের জন্য অপেক্ষার দিন শেষ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ শনিবার আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করবেন পদ্মা সেতুর। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের পর দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার অর্থনৈতিক অবস্থার আমূল পরিবর্তন ঘটবে। এ অঞ্চলের মানুষের ভাগ্য বদলে যাবে পদ্মা সেতুর মাধ্যমে। মোংলা ও পায়রা বন্দরের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপিত হবে। পদ্মা সেতুর মাধ্যমে বাংলাদেশ এশিয়ান হাইওয়েতে যুক্ত হতে পারবে। গড়ে উঠবে বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠান ও রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল। সারাদেশের অর্থনীতিতে এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।
আজ ২৫ জুন, প্রমত্তা পদ্মার বুকে গড়ে ওঠা স্বপ্নের সেতুর উদ্বোধনী দিন। এ মাহেন্দ্রক্ষণের অপেক্ষায় গোটা বাংলাদেশ। উৎসবের প্রস্তুতি নিয়েছে গোটা দেশ। উৎসবে মাতোয়ারা দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষ।
পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের পর যুগ যুগ ধরে পিছিয়ে থাকা খুলনা ও তার আশপাশের অঞ্চলের জনগণের জন্য ব্যাপক সম্ভাবনার দুয়ার খুলবে, তা তো অনুমেয়। সেতু খুলে দেওয়ার পর রাজধানীর সঙ্গে এ অঞ্চলের মানুষের সরাসরি যোগাযোগ সহজ হয়ে যাবে। অর্থনৈতিক প্রভাবও বাড়বে ইতিবাচক হারে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পদ্মা সেতু চালু হলে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের সুখের দ্বার উন্মোচিত হবে। এ সেতুর মাধ্যমে অর্থনীতির চাকা সচল হবে। এ অঞ্চলের ২১ জেলায় নতুন নতুন শিল্প কারখানা গড়ে উঠবে। বদলে যাবে এ অঞ্চলের আর্থসামাজিক অবস্থা।
শুধু তাই নয়, পাল্টে যাবে জীবনযাত্রার মান। মৎস্য, কৃষি ও পর্যটন ব্যবসায় আসবে নতুন নতুন সম্ভাবনা। ব্যবসা-বাণিজ্য ও কর্মসংস্থানে ছোঁয়া লাগবে আধুনিকতার।
দেশের অন্যতম বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী খাত-হিমায়িত মৎস্য ও পাট শিল্প। যার অধিকাংশ খুলনা থেকে রফতানির মাধ্যমে আয় হয়ে থাকে। পদ্মা সেতু চালু হলে এ খাতেও প্রভাব বাড়বে। পণ্য পরিবহনের খরচও কমবে।
একইভাবে পদ্মা সেতুতে রেল যোগাযোগের ব্যবস্থা থাকায় দেশের অভ্যন্তরীণ পণ্য পরিবহন ব্যবস্থার উন্নতি তো হবেই। প্রতিবেশী দেশ ভারতের সঙ্গেও রেল যোগাযোগের মাধ্যমে ব্যবসা-বাণিজ্যের নতুন সম্ভাবনা দেখা দেবে।
মোংলা বন্দর ব্যবহারকারীরা বলছেন, সেতু চালু হলে মোংলা বন্দরে গতিশীলতা আরও বাড়বে। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা অল্প সময়ের মধ্যে পণ্য পরিবহন করে মোংলা বন্দরের মাধ্যমে আমদানি-রফতানিতে উৎসাহিত হবেন।
ফেডারেশন অব বাংলাদেশ কাস্টমস ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন মোংলার মহাসচিব মো. সুলতান হোসেন খান বলেন, পদ্মা সেতু চালু হলে খুলনা থেকে ঢাকার দূরত্ব প্রায় ১০০ কিলোমিটার কমে যাবে। ফলে পরিবহন খরচ কমবে ও পরিবহন সুবিধা বৃদ্ধি পাবে। এতে মোংলা বন্দরের আমদানি-রফতানি বৃদ্ধি পাবে।
আজ ২৫ জুন যশোরে জমকালো আয়োজনে সম্প্রচার করা হবে পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। টাউনহল মাঠকে সাক্ষী করা হবে ঐতিহাসিক এই মুহূর্তের। ২৫ জুন ঐতিহাসিক ক্ষণের সাক্ষী হতে কানায় কানায় ভরে যাবে টাউনহল মাঠ। জেলা প্রশাসনের এ আয়োজনের পাশাপাশি পুলিশ প্রশাসনও ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। সন্ধ্যায় আতশবাজির আলোকচ্ছটায় আলোকিত হবে যশোরের আকাশ। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত উপভোগ্য করে সাজানো হবে গোটা অনুষ্ঠান। এ ছাড়াও জেলা পরিষদ বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা করবে। আতশবাজি উৎসব ছাড়াও তাদের রয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগ, বঙ্গবন্ধু পেশাজীবী পরিষদ, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটসহ সমমনা অজস্র সংগঠন যশোরের পাড়া-মহল্লাসহ প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে ঢোল-বাদ্য নিয়ে বের করবে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা। সব শোভাযাত্রা এসে টাউন হল মাঠে মিলিত হবে। এ ছাড়াও শহরময় থাকবে নানা আয়োজন।
যশোর জেলা আওয়ামী লীগের উপ দপ্তর সম্পাদক ওহিদুল ইসলাম তরফদার জানিয়েছেন, শহরের গাড়িখানা রোডে দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে জেলা আওয়ামী লীগ এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করবে।

রাজনীতিতে নাম লেখাতে যাচ্ছেন সানিয়া মির্জা

আজ খুলছে পদ্মাসেতুর স্বপ্নের দুয়ার

প্রকাশের সময় : ০৬:২৯:৫১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৫ জুন ২০২২

যশোর ব্যুরো।।

১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জন বাঙালী জাতির জীবনে সবচেয়ে বড় অর্জন। আর এরপরে দ্বিতীয় বড় অর্জনটি হচ্ছে স্বপ্নের পদ্মা সেতু নির্মাণ। প্রথম অর্জনটি এসেছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের নেতৃত্বে। দ্বিতীয়টি অর্জিত হলো বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে। আর এই বিশাল অর্জনের উদ্বোধনের দিন আজ ২৫ জুনও ঐতিহাসিক দিনে পরিণত হলো। এমন দিনে পদ্মাপাড়ের আয়োজনে একাকার হতে যশোরসহ গোটা দেশ হয়ে উঠবে উৎসবের নগরী। এই উৎসবে মাতোয়ারা দেশবাসীকে সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপহার দেবেন বাঙালী ও বাংলাদেশের স্বপ্নের পদ্মা সেতু।
ছিল প্রতিবন্ধকতা, ছিল সীমাবদ্ধতা। ষড়যন্ত্রেরও কমতিও ছিল না। কিন্তু সব বাধা জয় করে স্বপ্নের পদ্মা সেতু এখন বাস্তব। নিজ অর্থে বিশাল এ সেতু বানিয়ে বিশ্বকে চমকে দিয়েছে বাংলাদেশ। স্বপ্নিল সেই মাহেন্দ্রক্ষণের জন্য অপেক্ষার দিন শেষ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ শনিবার আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করবেন পদ্মা সেতুর। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের পর দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার অর্থনৈতিক অবস্থার আমূল পরিবর্তন ঘটবে। এ অঞ্চলের মানুষের ভাগ্য বদলে যাবে পদ্মা সেতুর মাধ্যমে। মোংলা ও পায়রা বন্দরের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপিত হবে। পদ্মা সেতুর মাধ্যমে বাংলাদেশ এশিয়ান হাইওয়েতে যুক্ত হতে পারবে। গড়ে উঠবে বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠান ও রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল। সারাদেশের অর্থনীতিতে এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।
আজ ২৫ জুন, প্রমত্তা পদ্মার বুকে গড়ে ওঠা স্বপ্নের সেতুর উদ্বোধনী দিন। এ মাহেন্দ্রক্ষণের অপেক্ষায় গোটা বাংলাদেশ। উৎসবের প্রস্তুতি নিয়েছে গোটা দেশ। উৎসবে মাতোয়ারা দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষ।
পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের পর যুগ যুগ ধরে পিছিয়ে থাকা খুলনা ও তার আশপাশের অঞ্চলের জনগণের জন্য ব্যাপক সম্ভাবনার দুয়ার খুলবে, তা তো অনুমেয়। সেতু খুলে দেওয়ার পর রাজধানীর সঙ্গে এ অঞ্চলের মানুষের সরাসরি যোগাযোগ সহজ হয়ে যাবে। অর্থনৈতিক প্রভাবও বাড়বে ইতিবাচক হারে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পদ্মা সেতু চালু হলে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের সুখের দ্বার উন্মোচিত হবে। এ সেতুর মাধ্যমে অর্থনীতির চাকা সচল হবে। এ অঞ্চলের ২১ জেলায় নতুন নতুন শিল্প কারখানা গড়ে উঠবে। বদলে যাবে এ অঞ্চলের আর্থসামাজিক অবস্থা।
শুধু তাই নয়, পাল্টে যাবে জীবনযাত্রার মান। মৎস্য, কৃষি ও পর্যটন ব্যবসায় আসবে নতুন নতুন সম্ভাবনা। ব্যবসা-বাণিজ্য ও কর্মসংস্থানে ছোঁয়া লাগবে আধুনিকতার।
দেশের অন্যতম বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী খাত-হিমায়িত মৎস্য ও পাট শিল্প। যার অধিকাংশ খুলনা থেকে রফতানির মাধ্যমে আয় হয়ে থাকে। পদ্মা সেতু চালু হলে এ খাতেও প্রভাব বাড়বে। পণ্য পরিবহনের খরচও কমবে।
একইভাবে পদ্মা সেতুতে রেল যোগাযোগের ব্যবস্থা থাকায় দেশের অভ্যন্তরীণ পণ্য পরিবহন ব্যবস্থার উন্নতি তো হবেই। প্রতিবেশী দেশ ভারতের সঙ্গেও রেল যোগাযোগের মাধ্যমে ব্যবসা-বাণিজ্যের নতুন সম্ভাবনা দেখা দেবে।
মোংলা বন্দর ব্যবহারকারীরা বলছেন, সেতু চালু হলে মোংলা বন্দরে গতিশীলতা আরও বাড়বে। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা অল্প সময়ের মধ্যে পণ্য পরিবহন করে মোংলা বন্দরের মাধ্যমে আমদানি-রফতানিতে উৎসাহিত হবেন।
ফেডারেশন অব বাংলাদেশ কাস্টমস ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন মোংলার মহাসচিব মো. সুলতান হোসেন খান বলেন, পদ্মা সেতু চালু হলে খুলনা থেকে ঢাকার দূরত্ব প্রায় ১০০ কিলোমিটার কমে যাবে। ফলে পরিবহন খরচ কমবে ও পরিবহন সুবিধা বৃদ্ধি পাবে। এতে মোংলা বন্দরের আমদানি-রফতানি বৃদ্ধি পাবে।
আজ ২৫ জুন যশোরে জমকালো আয়োজনে সম্প্রচার করা হবে পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। টাউনহল মাঠকে সাক্ষী করা হবে ঐতিহাসিক এই মুহূর্তের। ২৫ জুন ঐতিহাসিক ক্ষণের সাক্ষী হতে কানায় কানায় ভরে যাবে টাউনহল মাঠ। জেলা প্রশাসনের এ আয়োজনের পাশাপাশি পুলিশ প্রশাসনও ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। সন্ধ্যায় আতশবাজির আলোকচ্ছটায় আলোকিত হবে যশোরের আকাশ। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত উপভোগ্য করে সাজানো হবে গোটা অনুষ্ঠান। এ ছাড়াও জেলা পরিষদ বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা করবে। আতশবাজি উৎসব ছাড়াও তাদের রয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগ, বঙ্গবন্ধু পেশাজীবী পরিষদ, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটসহ সমমনা অজস্র সংগঠন যশোরের পাড়া-মহল্লাসহ প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে ঢোল-বাদ্য নিয়ে বের করবে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা। সব শোভাযাত্রা এসে টাউন হল মাঠে মিলিত হবে। এ ছাড়াও শহরময় থাকবে নানা আয়োজন।
যশোর জেলা আওয়ামী লীগের উপ দপ্তর সম্পাদক ওহিদুল ইসলাম তরফদার জানিয়েছেন, শহরের গাড়িখানা রোডে দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে জেলা আওয়ামী লীগ এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করবে।