শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পদ্মা সেতুর উদ্বোধন

আজ ২৫ জুন পদ্মা নদীর উপর নির্মিত ‘পদ্মাসেতু’ উদ্বোধন হচ্ছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই সেতুর উদ্বোধন করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। এ জন্য সেতুর পাশে উদ্বোধনমঞ্চসহ জনসভাস্থলের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। দেশের সবচেয়ে বড় এই সেতু পদ্মার দু’পাড়ের মানুষের দীর্ঘদিনের কষ্ট লাঘব করবে। নানা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে এখন পদ্মাসেতু ঠাঁই দাঁড়িয়ে পদ্মার বুকে। দেশের একটি বড় অর্জন বলে মনে করা হচ্ছে পদ্মাসেতুকে। কেননা এতবড় প্রকৌশলীয় কর্মযজ্ঞ এর আগে এদেশে হয়নি। আমরা অনেকেই অনেক কথা বলছি। যে যাই বলুক দেশের অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির জন্য এধরণের উন্নয়নের সাথে যারাই জড়িত থাকুক লাভ কিন্তু সাধারণ মানুষের। পারষ্পরিক হিংসা-বিদ্বেষ কিংবা স্বার্থপরতা পরিহার করে জনগণের জন্যই রাজনীতি করা উচিত। কে কী বলছে, কে কী করছে – এসব ভাবলে উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হবে। সবাই তো আর সবকিছু পারেনা। রাজনৈতিক কারণে অনেকেই অনেক কথা বলেন, করেন। এগুলো নিয়ে ব্যস্ত থাকলে সমস্যা কমবেনা। যে যেটা করেছে সেটা মানুষ দেখবে, মূল্যায়ন করবে। আমরা মনে করি জনগণ কিছুই দেখেনা। আসলে তারা ঠিকই দেখে। মূলত: স্বাধীনতার পর দেশের উন্নয়নে যারাই অবদান রেখেছেন তাদের সে অবদানের কথা কখনোই ভুলে যাওয়া উচিত নয়। দলীয় মনোভাবের চেয়ে সাধারণ মানুষের কল্যাণের কথা ভাবাই হোক রাজনীতিবিদদের মূল লক্ষ্য।
দেশের বৃহৎ স্থাপনা পদ্মাসেতুর জন্য যারা শ্রম দিয়েছেন, দিনরাত খেটেছেন সবাই নি:সন্দেহে গর্বিত। পদ্মাসেতু তৈরী ও মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে অবদানের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি মানুষ মন থেকেই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবে বলে মনে করি।
টিভিতে অনেকবার দেখেছি পদ্মা পাড়ি দিতে কত ঘন্টা, কত সময় অপেক্ষা করতে হয়েছে মানুষকে। কত দুর্ঘটনায় প্রাণ গেছে কত মানুষের! অপেক্ষার পর অপেক্ষা করেও যেতে না পেরে অনেককেই ফেরত যেতে হয়েছে। এখন এসব দু:সহ সময়ের অবসান ঘটবে বলে সেই এলাকার মানুষের মনে নিশ্চিত আনন্দ বিরাজ করছে। মানুষ অপেক্ষার প্রহর গুনছে কখন পদ্মা পাড়ি দিয়ে ওপারে যাবে, নির্বিঘ্নে কাজ শেষ করে আবার দিনেদিনেই বাড়ি ফিরবে। বিশেষ করে পদ্মা পাড়ি দিতে গিয়ে দুর্যোগের সময়ের কষ্টের কথা ভুক্তভোগী মানুষ কখনোই ভুলতে পারবেনা।
পদ্মাসেতুর উদ্বোধনের দিন সারাদেশেই নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে সরকার। এ উদ্যোগের অংশ হিসেবে সারাদেশের প্রতি জেলায় অনুষ্ঠানের অায়োজন করা হচ্ছে। রাজনৈতিকভাবেও বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এরপরও আমি মনে করি, দেশের জন্য পদ্মাসেতুর উদ্বোধন একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে। যদিও এসময় সিলেট, সুনামগঞ্জসহ দেশের একটি বড় অংশ বন্যাকবলিত। যেখানে মানুষের দুখ, দুর্দশার শেষ নেই। সেখানে অবশ্য সরকার ও নানা রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠন, ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব এবং পরিচিত ব্যক্তিবর্গ সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। পদ্মাসেতুর উদ্বোধন, আয়োজনের পাশাপাশি বন্যাকবলিত সাধারণ মানুষের জন্য পর্যাপ্ত ও উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। যদিও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বন্যাদুর্গত এলাকা পরিদর্শনের সময় নানা উদ্যোগ গ্রহণের কথা বলেছেন।
দেশের জন্য পদ্মাসেতু একটি গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। এটি মানুষের কষ্ট লাঘবের পাশাপাশি দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে সহজীকরণ করবে। সময় ও অর্থের সাশ্রয় করবে। সৌন্দর্যপিপাসু মানুষ পদ্মাসেতুর দিন ও রাতের আলোকোজ্জ্বল দৃশ্য দেখতে পদ্মার পাড়ে ভিড় করবে। সেতুর নান্দনিক সৌন্দর্য ও নির্মাণশৈলী দেখে মুগ্ধ হবে তারা। নিজেদের অর্থে নির্মিত পদ্মাসেতুর উদ্বোধন দেশের যোগাযোগব্যবস্থার সমৃদ্ধিতে একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। এর মাধ্যমে দীর্ঘদিনের একটি লালিত স্বপ্ন বাস্তবে রূপ পাচ্ছে এটাই সবচেয়ে বড়কথা।
★ লেখক: শিক্ষক ও কলামিস্ট

পদ্মা সেতুর উদ্বোধন

প্রকাশের সময় : ০১:৩০:৪২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ জুন ২০২২
আজ ২৫ জুন পদ্মা নদীর উপর নির্মিত ‘পদ্মাসেতু’ উদ্বোধন হচ্ছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই সেতুর উদ্বোধন করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। এ জন্য সেতুর পাশে উদ্বোধনমঞ্চসহ জনসভাস্থলের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। দেশের সবচেয়ে বড় এই সেতু পদ্মার দু’পাড়ের মানুষের দীর্ঘদিনের কষ্ট লাঘব করবে। নানা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে এখন পদ্মাসেতু ঠাঁই দাঁড়িয়ে পদ্মার বুকে। দেশের একটি বড় অর্জন বলে মনে করা হচ্ছে পদ্মাসেতুকে। কেননা এতবড় প্রকৌশলীয় কর্মযজ্ঞ এর আগে এদেশে হয়নি। আমরা অনেকেই অনেক কথা বলছি। যে যাই বলুক দেশের অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির জন্য এধরণের উন্নয়নের সাথে যারাই জড়িত থাকুক লাভ কিন্তু সাধারণ মানুষের। পারষ্পরিক হিংসা-বিদ্বেষ কিংবা স্বার্থপরতা পরিহার করে জনগণের জন্যই রাজনীতি করা উচিত। কে কী বলছে, কে কী করছে – এসব ভাবলে উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হবে। সবাই তো আর সবকিছু পারেনা। রাজনৈতিক কারণে অনেকেই অনেক কথা বলেন, করেন। এগুলো নিয়ে ব্যস্ত থাকলে সমস্যা কমবেনা। যে যেটা করেছে সেটা মানুষ দেখবে, মূল্যায়ন করবে। আমরা মনে করি জনগণ কিছুই দেখেনা। আসলে তারা ঠিকই দেখে। মূলত: স্বাধীনতার পর দেশের উন্নয়নে যারাই অবদান রেখেছেন তাদের সে অবদানের কথা কখনোই ভুলে যাওয়া উচিত নয়। দলীয় মনোভাবের চেয়ে সাধারণ মানুষের কল্যাণের কথা ভাবাই হোক রাজনীতিবিদদের মূল লক্ষ্য।
দেশের বৃহৎ স্থাপনা পদ্মাসেতুর জন্য যারা শ্রম দিয়েছেন, দিনরাত খেটেছেন সবাই নি:সন্দেহে গর্বিত। পদ্মাসেতু তৈরী ও মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে অবদানের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি মানুষ মন থেকেই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবে বলে মনে করি।
টিভিতে অনেকবার দেখেছি পদ্মা পাড়ি দিতে কত ঘন্টা, কত সময় অপেক্ষা করতে হয়েছে মানুষকে। কত দুর্ঘটনায় প্রাণ গেছে কত মানুষের! অপেক্ষার পর অপেক্ষা করেও যেতে না পেরে অনেককেই ফেরত যেতে হয়েছে। এখন এসব দু:সহ সময়ের অবসান ঘটবে বলে সেই এলাকার মানুষের মনে নিশ্চিত আনন্দ বিরাজ করছে। মানুষ অপেক্ষার প্রহর গুনছে কখন পদ্মা পাড়ি দিয়ে ওপারে যাবে, নির্বিঘ্নে কাজ শেষ করে আবার দিনেদিনেই বাড়ি ফিরবে। বিশেষ করে পদ্মা পাড়ি দিতে গিয়ে দুর্যোগের সময়ের কষ্টের কথা ভুক্তভোগী মানুষ কখনোই ভুলতে পারবেনা।
পদ্মাসেতুর উদ্বোধনের দিন সারাদেশেই নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে সরকার। এ উদ্যোগের অংশ হিসেবে সারাদেশের প্রতি জেলায় অনুষ্ঠানের অায়োজন করা হচ্ছে। রাজনৈতিকভাবেও বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এরপরও আমি মনে করি, দেশের জন্য পদ্মাসেতুর উদ্বোধন একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে। যদিও এসময় সিলেট, সুনামগঞ্জসহ দেশের একটি বড় অংশ বন্যাকবলিত। যেখানে মানুষের দুখ, দুর্দশার শেষ নেই। সেখানে অবশ্য সরকার ও নানা রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠন, ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব এবং পরিচিত ব্যক্তিবর্গ সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। পদ্মাসেতুর উদ্বোধন, আয়োজনের পাশাপাশি বন্যাকবলিত সাধারণ মানুষের জন্য পর্যাপ্ত ও উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। যদিও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বন্যাদুর্গত এলাকা পরিদর্শনের সময় নানা উদ্যোগ গ্রহণের কথা বলেছেন।
দেশের জন্য পদ্মাসেতু একটি গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। এটি মানুষের কষ্ট লাঘবের পাশাপাশি দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে সহজীকরণ করবে। সময় ও অর্থের সাশ্রয় করবে। সৌন্দর্যপিপাসু মানুষ পদ্মাসেতুর দিন ও রাতের আলোকোজ্জ্বল দৃশ্য দেখতে পদ্মার পাড়ে ভিড় করবে। সেতুর নান্দনিক সৌন্দর্য ও নির্মাণশৈলী দেখে মুগ্ধ হবে তারা। নিজেদের অর্থে নির্মিত পদ্মাসেতুর উদ্বোধন দেশের যোগাযোগব্যবস্থার সমৃদ্ধিতে একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। এর মাধ্যমে দীর্ঘদিনের একটি লালিত স্বপ্ন বাস্তবে রূপ পাচ্ছে এটাই সবচেয়ে বড়কথা।
★ লেখক: শিক্ষক ও কলামিস্ট