রাজধানী কামরাঙ্গীরচরে “দাওয়াতুল কুরআন তৃতীয় লিঙ্গের মাদরাসার শিক্ষার্থীরা সিলেট ও সুনামগঞ্জের বানভাসি মানুষদের জন্য ত্রান প্রস্তুত করেন।
এতে প্রায় অর্ধশত তৃতীয় লিঙ্গের শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। এছাড়া বিভিন্ন মসজিদের ইমাম ও স্বেচ্ছাসেবকগণ তাদের এ কাজে সহযোগিতা করেন। এটা যেন পৃথিবীতে এক নতুন ইতিহাস সৃষ্টি হলো। সার্বিক তত্বাবধানে ছিলেন তৃতীয় লিঙ্গের মাদরাসা মহাপরিচালক মুফতি মুহাম্মাদ আবদুর রহমান আজাদ। মূলত তার মেধা ও অক্লান্ত পরিশ্রমের কারণেই হিজড়া জনগোষ্ঠী আজ এতদূর পর্যন্ত এগিয়ে গিয়েছে।
“মরহুম আহমেদ ফেরদৌস বারী চৌধুরী ফাউণ্ডেশন” এর পৃষ্ঠপোষকতায় ২০২০ সনের ৬ নভেম্বর বিশ্বের প্রথম রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরে এ মাদরাসাটি প্রতিষ্ঠিত হয়। এখন সারা দেশে এর ৩৮টি শাখা রয়েছে।
মাদরাসার মহাপরিচালক মুফতি আবদুর রহমান আজাদ বলেন, আজকে আমরা এক হাজার প্যাকেট প্রস্তুত করছি। প্রতিটি প্যাকেটে দুই কেজি চিড়া, খেজুর, একটা করে সাবান, এক প্যাকেট লবন, চিনি, মুড়ি, ওরস্যালাইন ও দুই লিটার পানি রয়েছে। তিনি আরো বলেন, বানভাসি মানুষের জন্য আমাদের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। ইনশাআল্লাহ- পানি শুকিয়ে যাবার পর আমরা তাদের পুনর্বাসনের কাজও করবো। আপনারা দুআ করবেন, আমরা যেন ইখলাসের সাথে এ খেদমত চালিয়ে যেতে পারি। বাইতুল হালিম জামে মসজিদের খতিব মুফতি আবু সুফিয়ান মোমেনী বলেন, তৃতীয় লিঙ্গের শিক্ষার্থীদের এই উদ্যোগ ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। বানভাসি মানুষদের জন্য কাজ করতে পেরে আমরাও নিজেদেরকে ধন্য মনে করছি।এ সময় মাদরাসার শিক্ষক হাফেজ মাওলানা মাহমুদুল হাসান, হাফেজ মাওলানা রায়হান, মাওলানা মাঈনুদ্দীন বিন মুসলিম, বাইতুল আমান জামে মসজিদের খতিব মুফতি ফজলুল করিম সহ অনেক আলেম উপস্থিত ছিলেন। প্রায় শতাধিক স্বেচ্ছাসেবক এ কাজে অংশ নেন এবং প্রত্যেকেই হাতে হ্যান্ডগ্লাফস ও মাথায় ক্যাপ পরে স্বস্থ্যসম্মতভাবে কাজ করেন। কামরাঙ্গীরচরের হিজড়া সভাপতি চ্যামিলি বলেন, আজ আমরা আর্তমানবতার পাশে দাঁড়াতে পেরে নিজেরা গর্ববোধ করছি। আর এটা দাওয়াতুল কুরআন তৃতীয় লিঙ্গের মাদরাসার মাধ্যমেই সম্ভব হয়েছে। তৃতীয় লিঙ্গের শিক্ষার্থী সোনালী, সোনীয়া, এরিনা, তুতুল ও কুটুম সহ প্রায় অর্ধশত হিজড়া স্বেচ্ছাসেবকের কাজ করেছেন।