মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আগুন নিয়ে খেলবেন না, বাইডেনকে ফোনে হুশিয়ারী শি জিনপি ‘র

আন্তর্জাতিক ডেস্ক||r মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের মধ্যে ভিডিও কলে কথা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) প্রায় ২ ঘণ্টা ধরে চলা এই কথপোকথনে চীনের প্রেসিডেন্ট তাইওয়ান ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টকে ‘আগুন নিয়ে খেলা’র বিরুদ্ধে নতুন করে হুঁশিয়ার করেছেন। খবর আল-জাজিরা।
মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফরের পরিকল্পনা নিয়ে উত্তেজনার মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে এক ফোনকলে ‘আগুন নিয়ে না খেলার’ নতুন সতর্কবার্তা দিয়েছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং।

২ ঘণ্টার বেশি সময়ের এ ফোনালাপেই শি জিনপিং তাইওয়ান ইস্যুতে বাইডেনকে ‘আগুন নিয়ে খেলা’র বিরুদ্ধে হুঁশিয়ার করে বলেছেন, যারা আগুন নিয়ে খেলে তারা কেবলই পুড়ে যাবে। (আমরা) আশা করি যুক্তরাষ্ট্র সেটি পরিষ্কারভাবেই দেখতে পারছে।

দুই নেতার কথপোকথনের বিস্তারিত প্রকাশ করে চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্টকে শি জিনপিং বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের ‘এক-চীন নীতি’ মেনে চলা উচিত। আর তাইওয়ানের স্বাধীনতার ব্যাপারে চীন যে ঘোর বিরোধী এবং তারা তাইওয়ানে কোনও বহিঃশক্তির হস্তক্ষেপও মানতে নারাজ সেকথা আবারও জোর দিয়েই বলেছেন শি।

দীর্ঘ এ ভিডিও কনফারেন্সে দুই নেতার মধ্যে মূলত তাইওয়ান ইস্যু ও দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বিষয়ে কথা হয়েছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলো।

বর্তমানে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার সম্পর্কের টানাপোড়েন ইতিহাসের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি। কিন্তু এর মধ্যেই সম্প্রতি উভয় দেশের প্রেসিডেন্টের মধ্যে প্রায় নিয়মিতই ফোনালাপ হচ্ছে।

এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার পঞ্চমবারের মতো আলাপ করলেন বাইডেন ও জিনপিং। এর আগে সবশেষ চার মাস আগে টেলিফোন আলাপ করেন তারা।

রাশিয়ার ইউক্রেন অভিযানের এক মাস পর গেল ১৮ মার্চ এক ভিডিও কলে প্রায় দুই ঘণ্টা কথা বলেন বাইডেন ও জিনপিং। মস্কোর সঙ্গে বেইজিংয়ের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক নিয়ে ওয়াশিংটনের ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের মধ্যে চীনা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। তাতে ইউক্রেন ইস্যুই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পায়। বাইডেনকে জিনপিং বলেন, ইউক্রেন-রাশিয়ার চলমান সংঘাত ‘কারও স্বার্থেই হচ্ছে না।’

বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) ভিডিও কলে আলাপ শেষ হওয়ার পর হোয়াইট হাউজের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দুই নেতার মধ্যকার আলাপ দুই ঘণ্টা ১৭ মিনিট স্থায়ী হয়।

বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, তাইওয়ান ইস্যুতে প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র তাদের নীতি বদলায়নি। তা ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ান প্রণালীতে বিদ্যমান অবস্থা পরিবর্তন কিংবা শান্তি ও স্থিতিশীলতা ক্ষুণ্ন করার একতরফা চেষ্টারও ঘোর বিরোধী।

স্পিকার পেলোসিকে নিয়ে সবশেষ বুধবার (২৭ জুলাই) প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসনকে সতর্ক করে চীন। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়, তিনি তাইওয়ান সফরে এলে তা হবে চীনের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতার প্রতি মারাত্মক হুমকি। এর পরিণতি ভোগ করতে হবে যুক্তরাষ্ট্রকে।

এরপর সবশেষ বুধবার বেইজিংয়ে নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান বলেন, ‘আমরা স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফরের তীব্র বিরোধিতা করছি।’ তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি বিষয়টি নিয়ে এগিয়ে যায় এবং চীনের দৃঢ় অবস্থানকে চ্যালেঞ্জ জানায়, তাহলে তাদের এর পরিণাম ভোগ করতে হবে।

 
জনপ্রিয়

আগুন নিয়ে খেলবেন না, বাইডেনকে ফোনে হুশিয়ারী শি জিনপি ‘র

প্রকাশের সময় : ০৯:৪২:৩৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ জুলাই ২০২২
আন্তর্জাতিক ডেস্ক||r মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের মধ্যে ভিডিও কলে কথা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) প্রায় ২ ঘণ্টা ধরে চলা এই কথপোকথনে চীনের প্রেসিডেন্ট তাইওয়ান ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টকে ‘আগুন নিয়ে খেলা’র বিরুদ্ধে নতুন করে হুঁশিয়ার করেছেন। খবর আল-জাজিরা।
মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফরের পরিকল্পনা নিয়ে উত্তেজনার মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে এক ফোনকলে ‘আগুন নিয়ে না খেলার’ নতুন সতর্কবার্তা দিয়েছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং।

২ ঘণ্টার বেশি সময়ের এ ফোনালাপেই শি জিনপিং তাইওয়ান ইস্যুতে বাইডেনকে ‘আগুন নিয়ে খেলা’র বিরুদ্ধে হুঁশিয়ার করে বলেছেন, যারা আগুন নিয়ে খেলে তারা কেবলই পুড়ে যাবে। (আমরা) আশা করি যুক্তরাষ্ট্র সেটি পরিষ্কারভাবেই দেখতে পারছে।

দুই নেতার কথপোকথনের বিস্তারিত প্রকাশ করে চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্টকে শি জিনপিং বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের ‘এক-চীন নীতি’ মেনে চলা উচিত। আর তাইওয়ানের স্বাধীনতার ব্যাপারে চীন যে ঘোর বিরোধী এবং তারা তাইওয়ানে কোনও বহিঃশক্তির হস্তক্ষেপও মানতে নারাজ সেকথা আবারও জোর দিয়েই বলেছেন শি।

দীর্ঘ এ ভিডিও কনফারেন্সে দুই নেতার মধ্যে মূলত তাইওয়ান ইস্যু ও দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বিষয়ে কথা হয়েছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলো।

বর্তমানে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার সম্পর্কের টানাপোড়েন ইতিহাসের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি। কিন্তু এর মধ্যেই সম্প্রতি উভয় দেশের প্রেসিডেন্টের মধ্যে প্রায় নিয়মিতই ফোনালাপ হচ্ছে।

এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার পঞ্চমবারের মতো আলাপ করলেন বাইডেন ও জিনপিং। এর আগে সবশেষ চার মাস আগে টেলিফোন আলাপ করেন তারা।

রাশিয়ার ইউক্রেন অভিযানের এক মাস পর গেল ১৮ মার্চ এক ভিডিও কলে প্রায় দুই ঘণ্টা কথা বলেন বাইডেন ও জিনপিং। মস্কোর সঙ্গে বেইজিংয়ের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক নিয়ে ওয়াশিংটনের ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের মধ্যে চীনা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। তাতে ইউক্রেন ইস্যুই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পায়। বাইডেনকে জিনপিং বলেন, ইউক্রেন-রাশিয়ার চলমান সংঘাত ‘কারও স্বার্থেই হচ্ছে না।’

বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) ভিডিও কলে আলাপ শেষ হওয়ার পর হোয়াইট হাউজের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দুই নেতার মধ্যকার আলাপ দুই ঘণ্টা ১৭ মিনিট স্থায়ী হয়।

বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, তাইওয়ান ইস্যুতে প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র তাদের নীতি বদলায়নি। তা ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ান প্রণালীতে বিদ্যমান অবস্থা পরিবর্তন কিংবা শান্তি ও স্থিতিশীলতা ক্ষুণ্ন করার একতরফা চেষ্টারও ঘোর বিরোধী।

স্পিকার পেলোসিকে নিয়ে সবশেষ বুধবার (২৭ জুলাই) প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসনকে সতর্ক করে চীন। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়, তিনি তাইওয়ান সফরে এলে তা হবে চীনের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতার প্রতি মারাত্মক হুমকি। এর পরিণতি ভোগ করতে হবে যুক্তরাষ্ট্রকে।

এরপর সবশেষ বুধবার বেইজিংয়ে নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান বলেন, ‘আমরা স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফরের তীব্র বিরোধিতা করছি।’ তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি বিষয়টি নিয়ে এগিয়ে যায় এবং চীনের দৃঢ় অবস্থানকে চ্যালেঞ্জ জানায়, তাহলে তাদের এর পরিণাম ভোগ করতে হবে।