বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এসিডের ক্ষত নিয়ে বিচারের অপেক্ষায় মাহমুদা

দেখে শুনে টাকা পয়সা নিয়ে   বিয়ে করে আমাকে একটি সন্তানের মা হই আমি কিন্তু  শশুর শাশুড়ী ও টাকার জন্য   আমি এখন কালো।  স্বামী আমাকে নিয়ে সংসার করতে চায় না । শুনেছি সে ঢাকায় নাকি আরো বিয়ে করেছে। আমি সেখানে সংসার করার জন্য অনেক অত্যাচার সহ্য করেছি। তারপরও আমাকে এসিড দিয়ে মেরে ফেলার চেষ্টা করে আমার শ্বশুর বাড়ির লোকজন। আমি কালো হওয়ায় আমার শ্বশুর-শাশুড়ি আমার গায়ে এসিড দিয়েছে। কালো হওয়া কি আমার অপরাধ? আমি স্বামীর সংসার করতে চাই। এভাবেই কথাগুলো বলতে বলতে হাউমাউ করে কেঁদে ফেলেন এসিড আক্রান্তের শিকার গৃহবধু মাহমুদা বেগম।

এদিকে ঘটনার ৪১ দিন অতিবাহিত হলেও ওই ঘটনার প্রধান আসামি তার শ্বশুর আতোয়ার রহমান এখনো গ্রেপ্তার না হওয়ার অসহায়ত্ব প্রকাশ করেছেন ওই গৃহবধু ও তার পরিবার।

এসিড আক্রান্তের শিকার গৃহবধু মাহমুদা বেগম এখন তার শরীরে এসিডের ক্ষত নিয়ে বিচারের অপেক্ষায় প্রহর গুনছে বাবার বাড়িতে। তবে পুলিশ বলছে আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে আসামীদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে।

জানা যায়, লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার নওদাবাস ইউনিয়নের কেতকীবাড়ি গ্রামের আব্দুল মালেকের মেয়ে মাহমুদা বেগমের সাথে প্রায় ৪ বছর পূর্বে টংভাঙ্গা ইউনিয়নের গেন্দুকুড়ি গ্রামের আতোয়ার রহমানের ছেলে হামিদুল ইসলামের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই স্বামী হামিদুল শ্বশুর আতোয়ার শ্বাশুরী হামিদাসহ শ্বশুর বাড়ির লোকজন মাহমুদা বেগমকে কারনে অকারনে নির্যাতনসহ তালাকের হুমকি দিয়ে আসছে।

গত ১৩ জুলাই রাত সাড়ে ৮টার দিকে শ্বশুর আতোয়ার রহমান ও শ্বাশুরী হামিদা বেগমসহ শ্বশুর বাড়ির লোকজন মাহমুদা বেগমের গায়ে এসিড ঢেলে দেয়। এ সময় তার চিৎকারে স্থানীয় লোকজন ছুটে এসে মাহমুদা বেগমকে উদ্ধার করে প্রথমে হাতীবান্ধা হাসপাতাল পরে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান। এ ঘটনায় পরের দিন ১৪ জুলাই ওই গৃহবধু মাহমুদা বেগমের বাবা আব্দুল মালেক বাদি হয়ে হাতীবান্ধা থানায় ৫ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর পুলিশ আছিয়া বেগম নামে ওই গৃহবধুর এক ননদকে আটক করলেও ঘটনার ৪১ দিন অতিবাহিত হলেও প্রধান আসামি শ্বশুর আতোয়ার রহমানকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। ফলে মামলার বাদিসহ নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধু অসহায়ত্ব প্রকাশ করেছেন।

গৃহবধুর শ্বশুরবাড়ি গেন্দুকুড়ি এলাকায় গেলে স্থানীয় লোকজন জানান, বিয়ের পর থেকে কারনে অকারনে শ্বশুর আতোয়ার ও শ্বাশুরী হামিদা তাদের পূত্রবধু মাহমুদাকে নির্যাতন করে। নানা অজুহাতে স্বামী হামিদুল প্রায় সময় বাহিরে থাকে। ওই গৃহবধুকে প্রতিবেশী কারো সাথে কথা বলতে দিত না। কোন প্রতিবেশীর সাথে কথা বললে তার উপর চলতো অমানুষিক নির্যাতন।

নির্যাতনের শিকার গৃহবধু মাহমুদা বেগম বলেন, বিয়ের পর থেকেই বিভিন্ন সময়ে আমাকে নির্যাতন করতো আমার শ্বশুর বাড়ির লোকজন। আমার প্রধান অপরাধ হলো আমি দেখতে কালো। আমি কালো হওয়ায় আমার স্বামীও আমাকে নিয়ে সংসার করবে না। শুনেছি সে ঢাকায় নাকি আরো বিয়ে করেছে। আমি সেখানে সংসার করার জন্য অনেক অত্যাচার সহ্য করে ছিলাম। সর্বশেষ তারা আমাকে এসিড দিয়ে মেরে ফেলার চেষ্টা করে। আমি এর ন্যায় বিচার দাবী করছি।

তবে ওই গৃহবধুর শ্বশুর বাড়ির লোকজনের দাবি, নিজের গাঁয়ে নিজে এসিড দিয়ে তাদের ফাঁসানো হচ্ছে। তারা যড়ষন্ত্রের শিকার।

হাতীবান্ধা থানার ওসি শাহা আলম জানান, এ ঘটনার একজন কে আটক করে জেলহাজতে প্রেরন করা হয়েছে  বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

এসিডের ক্ষত নিয়ে বিচারের অপেক্ষায় মাহমুদা

প্রকাশের সময় : ১০:১৮:২৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ অগাস্ট ২০২২
দেখে শুনে টাকা পয়সা নিয়ে   বিয়ে করে আমাকে একটি সন্তানের মা হই আমি কিন্তু  শশুর শাশুড়ী ও টাকার জন্য   আমি এখন কালো।  স্বামী আমাকে নিয়ে সংসার করতে চায় না । শুনেছি সে ঢাকায় নাকি আরো বিয়ে করেছে। আমি সেখানে সংসার করার জন্য অনেক অত্যাচার সহ্য করেছি। তারপরও আমাকে এসিড দিয়ে মেরে ফেলার চেষ্টা করে আমার শ্বশুর বাড়ির লোকজন। আমি কালো হওয়ায় আমার শ্বশুর-শাশুড়ি আমার গায়ে এসিড দিয়েছে। কালো হওয়া কি আমার অপরাধ? আমি স্বামীর সংসার করতে চাই। এভাবেই কথাগুলো বলতে বলতে হাউমাউ করে কেঁদে ফেলেন এসিড আক্রান্তের শিকার গৃহবধু মাহমুদা বেগম।

এদিকে ঘটনার ৪১ দিন অতিবাহিত হলেও ওই ঘটনার প্রধান আসামি তার শ্বশুর আতোয়ার রহমান এখনো গ্রেপ্তার না হওয়ার অসহায়ত্ব প্রকাশ করেছেন ওই গৃহবধু ও তার পরিবার।

এসিড আক্রান্তের শিকার গৃহবধু মাহমুদা বেগম এখন তার শরীরে এসিডের ক্ষত নিয়ে বিচারের অপেক্ষায় প্রহর গুনছে বাবার বাড়িতে। তবে পুলিশ বলছে আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে আসামীদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে।

জানা যায়, লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার নওদাবাস ইউনিয়নের কেতকীবাড়ি গ্রামের আব্দুল মালেকের মেয়ে মাহমুদা বেগমের সাথে প্রায় ৪ বছর পূর্বে টংভাঙ্গা ইউনিয়নের গেন্দুকুড়ি গ্রামের আতোয়ার রহমানের ছেলে হামিদুল ইসলামের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই স্বামী হামিদুল শ্বশুর আতোয়ার শ্বাশুরী হামিদাসহ শ্বশুর বাড়ির লোকজন মাহমুদা বেগমকে কারনে অকারনে নির্যাতনসহ তালাকের হুমকি দিয়ে আসছে।

গত ১৩ জুলাই রাত সাড়ে ৮টার দিকে শ্বশুর আতোয়ার রহমান ও শ্বাশুরী হামিদা বেগমসহ শ্বশুর বাড়ির লোকজন মাহমুদা বেগমের গায়ে এসিড ঢেলে দেয়। এ সময় তার চিৎকারে স্থানীয় লোকজন ছুটে এসে মাহমুদা বেগমকে উদ্ধার করে প্রথমে হাতীবান্ধা হাসপাতাল পরে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান। এ ঘটনায় পরের দিন ১৪ জুলাই ওই গৃহবধু মাহমুদা বেগমের বাবা আব্দুল মালেক বাদি হয়ে হাতীবান্ধা থানায় ৫ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর পুলিশ আছিয়া বেগম নামে ওই গৃহবধুর এক ননদকে আটক করলেও ঘটনার ৪১ দিন অতিবাহিত হলেও প্রধান আসামি শ্বশুর আতোয়ার রহমানকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। ফলে মামলার বাদিসহ নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধু অসহায়ত্ব প্রকাশ করেছেন।

গৃহবধুর শ্বশুরবাড়ি গেন্দুকুড়ি এলাকায় গেলে স্থানীয় লোকজন জানান, বিয়ের পর থেকে কারনে অকারনে শ্বশুর আতোয়ার ও শ্বাশুরী হামিদা তাদের পূত্রবধু মাহমুদাকে নির্যাতন করে। নানা অজুহাতে স্বামী হামিদুল প্রায় সময় বাহিরে থাকে। ওই গৃহবধুকে প্রতিবেশী কারো সাথে কথা বলতে দিত না। কোন প্রতিবেশীর সাথে কথা বললে তার উপর চলতো অমানুষিক নির্যাতন।

নির্যাতনের শিকার গৃহবধু মাহমুদা বেগম বলেন, বিয়ের পর থেকেই বিভিন্ন সময়ে আমাকে নির্যাতন করতো আমার শ্বশুর বাড়ির লোকজন। আমার প্রধান অপরাধ হলো আমি দেখতে কালো। আমি কালো হওয়ায় আমার স্বামীও আমাকে নিয়ে সংসার করবে না। শুনেছি সে ঢাকায় নাকি আরো বিয়ে করেছে। আমি সেখানে সংসার করার জন্য অনেক অত্যাচার সহ্য করে ছিলাম। সর্বশেষ তারা আমাকে এসিড দিয়ে মেরে ফেলার চেষ্টা করে। আমি এর ন্যায় বিচার দাবী করছি।

তবে ওই গৃহবধুর শ্বশুর বাড়ির লোকজনের দাবি, নিজের গাঁয়ে নিজে এসিড দিয়ে তাদের ফাঁসানো হচ্ছে। তারা যড়ষন্ত্রের শিকার।

হাতীবান্ধা থানার ওসি শাহা আলম জানান, এ ঘটনার একজন কে আটক করে জেলহাজতে প্রেরন করা হয়েছে  বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।