বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

গরীবের চাল নিয়ে চালবাজি ,তালিকায় ইউপি সদস্যের স্বজনরা

যশোরের মনিরামপুর উপজেলার ১নং রোহিতা ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড (স্মরণপুর -পটি গ্রাম) এ সরকারি ফেয়ার প্রাইসের চালের কার্ড নিয়ে চলছে চালবাজি। স্থানীয় দুই ইউ পি সদস্য ষড়যন্ত্র মুলক ভাবে গ্রামের অসহায় দরিদ্র মানুষের নাম তালিকা থেকে কেটে নিজেদের পছন্দের লোককে অন্তর্ভুক্ত করেছেন মর্মে অভিযোগ উঠেছে। হতদরিদ্রের বাদ দিয়ে সেই তালিকায় স্থান পেয়েছে পুরুষ ইউপি সদস্য আমিনুর রহমানের আপন দুইভাই,  মহিলা ইউপি সদস্য ইসমোতারা বেগমের আপন দেবর সহ গ্রামের ধনাঢ্য ব্যক্তির নাম। আর বাদ পড়েছে গ্রামের খেটে খাওয়া দিনমজুর, বিধবা, ছিন্নমূল মানুষের নাম।
অনুসন্ধানে জানা যায় অতি দরিদ্রদের জন্য সরকার ঘোষিত ফেয়ার প্রাইস চালের জন্য পূর্বে যে তালিকা ছিলো সেই তালিকার ১৩৭ জন থেকে ৪০/৪৫ জনের নাম কেটে নিজেদের পছন্দের লোকের নাম অন্তর্ভুক্ত করেছেন স্মরণপুর-পটি গ্রামের ইউ পি সদস্য আমিনুর রহমান এবং সংরক্ষিত মহিলা সদস্য ইসমোতারা বেগম। এ ছাড়াও মহিলা ইউ পি সদস্যের বিরুদ্ধে এক গ্রামের কার্ড তার নিজ গ্রামের মানুষের নামে করে দেওয়ার অভিযোগও পাওয়া গেছে।

পুরাতন তালিকার ৭০ নং সিরিয়ালের খাদিজা বেগমের নাম কেটে রহিমা বেগম কে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে এছাড়া ৯২ নং এর ইসমাইলের পরিবর্তে রবিন হোসেন, ১০১ নং এর আবুল হোসেনের পরিবর্তে সাথী খাতুন, ১২০ নং এর আবুল কালাম এর পরিবর্তে সাইফুল ইসলাম, ১২৩ নং এর মোস্তফার পরিবর্তে রুবেল রানা, ৩৭ নং এর কুলসুম এর পরিবর্তে লাভলী খাতুন, ৪০ নং এর হাবিবুর এর পরিবর্তে নওশাদ, ৪১ নং এর মর্জিনার পরিবর্তে রেহেনা বেগমের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
তালিকায় স্হান পেয়েছে স্হানীয় স্মরণপুর জামতলা বাজারের রড, সিমেন্ট ব্যবসায়ী ইসরাইল হোসেনের স্ত্রী জোহরা বেগম, গ্রামের মাঠে ১০ বিঘা জমির মালিক, একতলা বাড়ি সহ বাজারের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী পটি গ্রামের শফিকুল ইসলামের স্ত্রী লিপি খাতুনের নাম। তালিকাও নাম আছে বিদেশে অবস্হানরত সিরাজুলের স্ত্রী তহুরা বেগম, মৃত ইমদাদুল হক বকুলের ছেলে তরিকুল ইসলামের নাম। অথচ গ্রামের অসহায় ছিন্নমূল বিধবা তাছলিমা, শামসুন্নাহার, কদভানু সহ আরও অনেক মানুষের নাম ইচ্ছাকৃত ভাবে কেটে দিয়েছেন দুই ইউ পি সদস্য।
এ প্রসঙ্গে সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য ইসমোতারা বেগম বলেন, একই ব্যক্তি একাধিক তালিকায় থাকায় কিছু নাম কাটা হয়েছে। এক গ্রামের কার্ড কেটে অন্য গ্রামে নেয়ার বিষয়ে তিনি কোনো কথা বলতে রাজি হননি।
ইউ পি সদস্য আমিনুর রহমান বলেন, আমি আমার ওয়ার্ডে কারো নাম কাটিনি। যেটা হয়েছে সেটা চেয়ারম্যানের কথামতো হয়েছে। নিজের দুই ভাইয়ের নাম অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে তিনি বলেন, তারা গরীব তাই তাদের নাম ঢোকানো হয়েছে।
রোহিতা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জনাব হাফিজুর রহমান বলেন, নতুন তালিকায় কিছু সমস্যা হয়েছে। আমি সেগুলো সমাধান করেছি।তারপরও যদি কোনো দুস্থ মানুষ বাদ পড়ে তারা আমার সাথে যোগাযোগ করলে সেগুলো ঠিক করে দেবো।
মনিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান বেশকিছু ইউনিয়নে অনিয়মের অভিযোগ এসেছে। আমরা সেগুলো তদন্ত করছি। এরপরও কেউ সুনির্দিষ্ট অভিযোগ করলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
এদিকে ভুক্তভোগী গ্রামবাসী বিষয়টি তদন্ত করতে যথাযথ কতৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।

গরীবের চাল নিয়ে চালবাজি ,তালিকায় ইউপি সদস্যের স্বজনরা

প্রকাশের সময় : ০১:৩৭:৪৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২২
যশোরের মনিরামপুর উপজেলার ১নং রোহিতা ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড (স্মরণপুর -পটি গ্রাম) এ সরকারি ফেয়ার প্রাইসের চালের কার্ড নিয়ে চলছে চালবাজি। স্থানীয় দুই ইউ পি সদস্য ষড়যন্ত্র মুলক ভাবে গ্রামের অসহায় দরিদ্র মানুষের নাম তালিকা থেকে কেটে নিজেদের পছন্দের লোককে অন্তর্ভুক্ত করেছেন মর্মে অভিযোগ উঠেছে। হতদরিদ্রের বাদ দিয়ে সেই তালিকায় স্থান পেয়েছে পুরুষ ইউপি সদস্য আমিনুর রহমানের আপন দুইভাই,  মহিলা ইউপি সদস্য ইসমোতারা বেগমের আপন দেবর সহ গ্রামের ধনাঢ্য ব্যক্তির নাম। আর বাদ পড়েছে গ্রামের খেটে খাওয়া দিনমজুর, বিধবা, ছিন্নমূল মানুষের নাম।
অনুসন্ধানে জানা যায় অতি দরিদ্রদের জন্য সরকার ঘোষিত ফেয়ার প্রাইস চালের জন্য পূর্বে যে তালিকা ছিলো সেই তালিকার ১৩৭ জন থেকে ৪০/৪৫ জনের নাম কেটে নিজেদের পছন্দের লোকের নাম অন্তর্ভুক্ত করেছেন স্মরণপুর-পটি গ্রামের ইউ পি সদস্য আমিনুর রহমান এবং সংরক্ষিত মহিলা সদস্য ইসমোতারা বেগম। এ ছাড়াও মহিলা ইউ পি সদস্যের বিরুদ্ধে এক গ্রামের কার্ড তার নিজ গ্রামের মানুষের নামে করে দেওয়ার অভিযোগও পাওয়া গেছে।

পুরাতন তালিকার ৭০ নং সিরিয়ালের খাদিজা বেগমের নাম কেটে রহিমা বেগম কে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে এছাড়া ৯২ নং এর ইসমাইলের পরিবর্তে রবিন হোসেন, ১০১ নং এর আবুল হোসেনের পরিবর্তে সাথী খাতুন, ১২০ নং এর আবুল কালাম এর পরিবর্তে সাইফুল ইসলাম, ১২৩ নং এর মোস্তফার পরিবর্তে রুবেল রানা, ৩৭ নং এর কুলসুম এর পরিবর্তে লাভলী খাতুন, ৪০ নং এর হাবিবুর এর পরিবর্তে নওশাদ, ৪১ নং এর মর্জিনার পরিবর্তে রেহেনা বেগমের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
তালিকায় স্হান পেয়েছে স্হানীয় স্মরণপুর জামতলা বাজারের রড, সিমেন্ট ব্যবসায়ী ইসরাইল হোসেনের স্ত্রী জোহরা বেগম, গ্রামের মাঠে ১০ বিঘা জমির মালিক, একতলা বাড়ি সহ বাজারের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী পটি গ্রামের শফিকুল ইসলামের স্ত্রী লিপি খাতুনের নাম। তালিকাও নাম আছে বিদেশে অবস্হানরত সিরাজুলের স্ত্রী তহুরা বেগম, মৃত ইমদাদুল হক বকুলের ছেলে তরিকুল ইসলামের নাম। অথচ গ্রামের অসহায় ছিন্নমূল বিধবা তাছলিমা, শামসুন্নাহার, কদভানু সহ আরও অনেক মানুষের নাম ইচ্ছাকৃত ভাবে কেটে দিয়েছেন দুই ইউ পি সদস্য।
এ প্রসঙ্গে সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য ইসমোতারা বেগম বলেন, একই ব্যক্তি একাধিক তালিকায় থাকায় কিছু নাম কাটা হয়েছে। এক গ্রামের কার্ড কেটে অন্য গ্রামে নেয়ার বিষয়ে তিনি কোনো কথা বলতে রাজি হননি।
ইউ পি সদস্য আমিনুর রহমান বলেন, আমি আমার ওয়ার্ডে কারো নাম কাটিনি। যেটা হয়েছে সেটা চেয়ারম্যানের কথামতো হয়েছে। নিজের দুই ভাইয়ের নাম অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে তিনি বলেন, তারা গরীব তাই তাদের নাম ঢোকানো হয়েছে।
রোহিতা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জনাব হাফিজুর রহমান বলেন, নতুন তালিকায় কিছু সমস্যা হয়েছে। আমি সেগুলো সমাধান করেছি।তারপরও যদি কোনো দুস্থ মানুষ বাদ পড়ে তারা আমার সাথে যোগাযোগ করলে সেগুলো ঠিক করে দেবো।
মনিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান বেশকিছু ইউনিয়নে অনিয়মের অভিযোগ এসেছে। আমরা সেগুলো তদন্ত করছি। এরপরও কেউ সুনির্দিষ্ট অভিযোগ করলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
এদিকে ভুক্তভোগী গ্রামবাসী বিষয়টি তদন্ত করতে যথাযথ কতৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।