শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

কাউকে ধরে বেঁধে নির্বাচনে আনা হবে না: সিইসি

ছুিব-সংগৃহীত

নির্বাচন কমিশন (ইসি) সক্রিয় অংশগ্রহণমূলক ভোট চায় বলে মন্তব্য করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, কোন দল ভোটে না আসলে কাউকে ধরে–বেঁধে নির্বাচনে আনবে না ইসি। তবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য ইসির পক্ষ থেকে সবার প্রতি আহ্বান থাকবে।

সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সিইসি এসব কথা বলেন।

হাবিবুল আউয়াল বলেন, নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হলে নির্বাচনের মাঠে ভারসাম্য তৈরি হয়। বিএনপি অংশ নিলে নির্বাচন আরও বেশি অংশগ্রহণমূলক হবে। বিএনপির যদি কোনো রাজনৈতিক কৌশল থাকে, সে বিষয়ে ইসির হস্তক্ষেপ করার কোনো এখতিয়ার নেই।

সিইসি বলেন, ‘অনেকের সন্দেহ-অবিশ্বাস থাকতে পারে। তবে ইভিএম নিয়ে নির্বাচন কমিশন কমফোর্টেবল (চিন্তামুক্ত)। নির্বাচন কমিশন সর্বোচ্চ দেড় শ আসনে ইভিএমে ভোট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে এটি সম্ভব হবে কি না, তা নির্ভর করবে ইভিএম সংগ্রহের ওপর। কারণ, এই মেশিনের যন্ত্রাংশ আসবে বিদেশ থেকে।’

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিএনপি অন্যতম প্রধানতম দল। তারা যদি অংশগ্রহণ করে তাহলে নির্বাচনটা অধিক অংশগ্রহণমূলক হবে। এখন বিএনপির যে রাজনৈতিক কৌশল, আমরা কিন্তু কোনো রাজনৈতিক দলের কৌশলের উপর হস্তক্ষেপ করব না, করতে পারি না, সে এখতিয়ার আমাদের নেই।

এখন বিএনপি যেটা চাচ্ছে, সে ব্যাপারের আমাদের কোনো রকম বাধা নেই। কিন্তু আমাদের ওপর যে দায়িত্ব অর্পিত রয়েছে, সে দায়িত্বের পথে আমরা এগিয়ে যাবো। কালকে যদি আমাকে উচ্ছেদ করে দেন, হবে। সেটার জন্য আমি তো মর্মামত হব না, যোগ করেন তিনি।

সিইসি বলেন, ‘আজকে দুটো দলের সঙ্গে সংলাপ হলো এই অর্থে সংলাপ শেষ হলো। সিদ্ধান্ত গ্রহণে যাতে সহায়ক হয় সেজন্যই সংলাপ করেছি। সংলাপ করে আমরা লিখিত আকারে সিদ্ধান্ত জানিয়েছি তাদের। ইভিএম নিয়েও বৈঠক করেছি। ইভিএম নিয়েও একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে। আমরা আমাদের নিজস্ব বিবচেনায় দলগুলোর মতামতের ভিত্তিতে ৩০০, ১০০, ১০ বা ২০টা নয়, আমরা একটা যৌক্তিকভাবে ব্যালট পেপারে ১৫০ আসন ও ১৫০ আসনে ইভিএমে ভোট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তাদের লিখিত বক্তব্য আছে।’

সেগুলোও পর্যালোচনা করে একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। অনেকে বিশ্বাস করেন, অনেকে করেন না এই মেশিন নিয়ে। তবে আমাদের সিদ্ধান্ত আদৌ বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে কি না সেটা নির্ভর করবে এটা পাওয়া যাবে কি না, তার উপর। কারণ, এটার বেশিরভাগ পার্টস আসবে বিদেশ থেকে।

কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, আমরা শুধু দলকে নয়, সরকারকেও সংলাপ থেকে আসার মতামত জানিয়েছি। কেন না, দলগুলো কী বলছে তা সরকারেরও জানা উচিত। সরকার কিন্তু কোনো দলের নয়। সেই বিভাজনটাকে মাথায় রেখে আমরা সরকারকে জানিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চায় বিরোধী দলগুলো। সেটা আমরা দলগুলোকে জানিয়েছি। ভোটার তালিকা আগামী বছর মার্চ মাসে চূড়ান্তভাবে প্রকাশ করব। রোডম্যাপ সপ্তাহ দুই সপ্তাহের মধ্যে চূড়ান্তভাবে অবহিত করতে পারব।

ইভিএম নিয়ে আমরা খুব খুঁটিনাটি কাজ করছি। ইভিএমের মধ্যে ওই ধরনের কারচুপি, এইটা সেইটা এবং কার্ডের মাধ্যমে কী সম্ভব, আমরা তা খতিয়ে দেখিছি। কারচুপির বিষয় কিন্তু পাইনি। ব্যক্তি সনাক্তকরণের পর আঙ্গুলের ছাপ দিলেই ছবি ভেসে আসবে। এরপর ব্যালট ওপেন হবে। ৪০ সেকেন্ড থাকবে। এর মধ্যেই ভোট দিতে হবে।

সিইসি বলেন, ‘ইভিএমে ভোট নেওয়ার ক্ষেত্রে একটা অসুবিধা কেউ কেউ লক্ষ্য করেছেন, যে একজন লোক বুথে যদি দাঁড়িয়ে থাকে। তিনি যদি ভোটারকে বলেন-আপনি যান, ভোটটা আমি দিয়ে দেব। সেই সংকটটা আমাদের মাথায় আছে। এ জন্য আমরা সিসি ক্যামেরা দেব। আমরা কিন্তু কঠিন দায়িত্ব অর্পন করব প্রিজাইডিং কর্মকর্তার উপর। কেউ যদি বৈধ বা অবৈধভাবে ভোট বাধাগ্রস্ত করে তবে তাৎক্ষণিক ভোট বন্ধ করে ওই লোককে বের করে দেবেন।

তিনি না পারলে পুলিশ ডেকে বের করে দেবেন। তিনিও পাললেন না, পুলিশও পারলেন না, তাহেল ভোট বন্ধ করে দেবেন। এ ছাড়া প্রিজাইডিং কর্মকর্তা যদি মাস্তানকে অ্যালাইউ করেন তবে শাস্তির ব্যবস্থা রেখেছি।

অন্য এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘নতুন প্রকল্পে ইভিএম সংরক্ষণের ব্যবস্থা আমাদের করতে হবে। এটা আমাদের প্ল্যান। প্রকল্প যদি অনুমোদন হয়, বাস্তবায়ন যদি করতে পারি আর যদি না পারি তবে ব্যালটে নির্বাচন করব।

দলগুলোর উদ্দেশে তিনি বলেন, ইসি একা অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে পারবে না। দলগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে। ইসির ওপর ছেড়ে দিলে একারপক্ষে সম্ভব নাও হতে পারে, যদিও আমরা চেষ্টা করব।

ইসির অধীনে স্বরাষ্ট্রসহ চার মন্ত্রণালয় নেওয়ার বিষয়ে সিইসি আরও বলেন, সংশ্লিষ্ট সংস্থার ওপর ইসির কর্তৃত্ব আছে। এতদিন হয়তো প্রয়োগ করা হয়নি। মন্ত্রণালয় ন্যাস্ত করার বিষয়টি এটা ইসির অধীনে হতে পারে না। এটা সংবিধানে বলা আছে। কাজেই আপিন যদি চান আমরা মন্ত্রী হব, এটা সংবিধান অ্যালাউ করবে না। যে ক্ষমতা আছে সেটাই প্রয়োগ করলে আমরা সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক করতে পারি।

 

রাজনীতিতে নাম লেখাতে যাচ্ছেন সানিয়া মির্জা

কাউকে ধরে বেঁধে নির্বাচনে আনা হবে না: সিইসি

প্রকাশের সময় : ০৫:০৯:১৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২২

নির্বাচন কমিশন (ইসি) সক্রিয় অংশগ্রহণমূলক ভোট চায় বলে মন্তব্য করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, কোন দল ভোটে না আসলে কাউকে ধরে–বেঁধে নির্বাচনে আনবে না ইসি। তবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য ইসির পক্ষ থেকে সবার প্রতি আহ্বান থাকবে।

সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সিইসি এসব কথা বলেন।

হাবিবুল আউয়াল বলেন, নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হলে নির্বাচনের মাঠে ভারসাম্য তৈরি হয়। বিএনপি অংশ নিলে নির্বাচন আরও বেশি অংশগ্রহণমূলক হবে। বিএনপির যদি কোনো রাজনৈতিক কৌশল থাকে, সে বিষয়ে ইসির হস্তক্ষেপ করার কোনো এখতিয়ার নেই।

সিইসি বলেন, ‘অনেকের সন্দেহ-অবিশ্বাস থাকতে পারে। তবে ইভিএম নিয়ে নির্বাচন কমিশন কমফোর্টেবল (চিন্তামুক্ত)। নির্বাচন কমিশন সর্বোচ্চ দেড় শ আসনে ইভিএমে ভোট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে এটি সম্ভব হবে কি না, তা নির্ভর করবে ইভিএম সংগ্রহের ওপর। কারণ, এই মেশিনের যন্ত্রাংশ আসবে বিদেশ থেকে।’

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিএনপি অন্যতম প্রধানতম দল। তারা যদি অংশগ্রহণ করে তাহলে নির্বাচনটা অধিক অংশগ্রহণমূলক হবে। এখন বিএনপির যে রাজনৈতিক কৌশল, আমরা কিন্তু কোনো রাজনৈতিক দলের কৌশলের উপর হস্তক্ষেপ করব না, করতে পারি না, সে এখতিয়ার আমাদের নেই।

এখন বিএনপি যেটা চাচ্ছে, সে ব্যাপারের আমাদের কোনো রকম বাধা নেই। কিন্তু আমাদের ওপর যে দায়িত্ব অর্পিত রয়েছে, সে দায়িত্বের পথে আমরা এগিয়ে যাবো। কালকে যদি আমাকে উচ্ছেদ করে দেন, হবে। সেটার জন্য আমি তো মর্মামত হব না, যোগ করেন তিনি।

সিইসি বলেন, ‘আজকে দুটো দলের সঙ্গে সংলাপ হলো এই অর্থে সংলাপ শেষ হলো। সিদ্ধান্ত গ্রহণে যাতে সহায়ক হয় সেজন্যই সংলাপ করেছি। সংলাপ করে আমরা লিখিত আকারে সিদ্ধান্ত জানিয়েছি তাদের। ইভিএম নিয়েও বৈঠক করেছি। ইভিএম নিয়েও একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে। আমরা আমাদের নিজস্ব বিবচেনায় দলগুলোর মতামতের ভিত্তিতে ৩০০, ১০০, ১০ বা ২০টা নয়, আমরা একটা যৌক্তিকভাবে ব্যালট পেপারে ১৫০ আসন ও ১৫০ আসনে ইভিএমে ভোট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তাদের লিখিত বক্তব্য আছে।’

সেগুলোও পর্যালোচনা করে একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। অনেকে বিশ্বাস করেন, অনেকে করেন না এই মেশিন নিয়ে। তবে আমাদের সিদ্ধান্ত আদৌ বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে কি না সেটা নির্ভর করবে এটা পাওয়া যাবে কি না, তার উপর। কারণ, এটার বেশিরভাগ পার্টস আসবে বিদেশ থেকে।

কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, আমরা শুধু দলকে নয়, সরকারকেও সংলাপ থেকে আসার মতামত জানিয়েছি। কেন না, দলগুলো কী বলছে তা সরকারেরও জানা উচিত। সরকার কিন্তু কোনো দলের নয়। সেই বিভাজনটাকে মাথায় রেখে আমরা সরকারকে জানিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চায় বিরোধী দলগুলো। সেটা আমরা দলগুলোকে জানিয়েছি। ভোটার তালিকা আগামী বছর মার্চ মাসে চূড়ান্তভাবে প্রকাশ করব। রোডম্যাপ সপ্তাহ দুই সপ্তাহের মধ্যে চূড়ান্তভাবে অবহিত করতে পারব।

ইভিএম নিয়ে আমরা খুব খুঁটিনাটি কাজ করছি। ইভিএমের মধ্যে ওই ধরনের কারচুপি, এইটা সেইটা এবং কার্ডের মাধ্যমে কী সম্ভব, আমরা তা খতিয়ে দেখিছি। কারচুপির বিষয় কিন্তু পাইনি। ব্যক্তি সনাক্তকরণের পর আঙ্গুলের ছাপ দিলেই ছবি ভেসে আসবে। এরপর ব্যালট ওপেন হবে। ৪০ সেকেন্ড থাকবে। এর মধ্যেই ভোট দিতে হবে।

সিইসি বলেন, ‘ইভিএমে ভোট নেওয়ার ক্ষেত্রে একটা অসুবিধা কেউ কেউ লক্ষ্য করেছেন, যে একজন লোক বুথে যদি দাঁড়িয়ে থাকে। তিনি যদি ভোটারকে বলেন-আপনি যান, ভোটটা আমি দিয়ে দেব। সেই সংকটটা আমাদের মাথায় আছে। এ জন্য আমরা সিসি ক্যামেরা দেব। আমরা কিন্তু কঠিন দায়িত্ব অর্পন করব প্রিজাইডিং কর্মকর্তার উপর। কেউ যদি বৈধ বা অবৈধভাবে ভোট বাধাগ্রস্ত করে তবে তাৎক্ষণিক ভোট বন্ধ করে ওই লোককে বের করে দেবেন।

তিনি না পারলে পুলিশ ডেকে বের করে দেবেন। তিনিও পাললেন না, পুলিশও পারলেন না, তাহেল ভোট বন্ধ করে দেবেন। এ ছাড়া প্রিজাইডিং কর্মকর্তা যদি মাস্তানকে অ্যালাইউ করেন তবে শাস্তির ব্যবস্থা রেখেছি।

অন্য এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘নতুন প্রকল্পে ইভিএম সংরক্ষণের ব্যবস্থা আমাদের করতে হবে। এটা আমাদের প্ল্যান। প্রকল্প যদি অনুমোদন হয়, বাস্তবায়ন যদি করতে পারি আর যদি না পারি তবে ব্যালটে নির্বাচন করব।

দলগুলোর উদ্দেশে তিনি বলেন, ইসি একা অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে পারবে না। দলগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে। ইসির ওপর ছেড়ে দিলে একারপক্ষে সম্ভব নাও হতে পারে, যদিও আমরা চেষ্টা করব।

ইসির অধীনে স্বরাষ্ট্রসহ চার মন্ত্রণালয় নেওয়ার বিষয়ে সিইসি আরও বলেন, সংশ্লিষ্ট সংস্থার ওপর ইসির কর্তৃত্ব আছে। এতদিন হয়তো প্রয়োগ করা হয়নি। মন্ত্রণালয় ন্যাস্ত করার বিষয়টি এটা ইসির অধীনে হতে পারে না। এটা সংবিধানে বলা আছে। কাজেই আপিন যদি চান আমরা মন্ত্রী হব, এটা সংবিধান অ্যালাউ করবে না। যে ক্ষমতা আছে সেটাই প্রয়োগ করলে আমরা সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক করতে পারি।